নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৪৭ এএম, ২৫ জুলাই, ২০২১
আফগানিস্তান এমন একটি ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ দেশ, যা নিয়ে আসলে বিশ্লেষণ করা চাট্টিখানি কথা নয়। এখানে আন্তধর্মীয় নানা গোষ্ঠী রয়েছে, এবং এদের মধ্যে মতাদর্শগত নানা পার্থক্য ও বিরোধ স্পষ্ট।
আফগানিস্তানের প্রধান শহর হলো কাবুল, হেরাত, জালালাবাদ, মাজার-ই-শরিফ, কান্দাহার ও কুন্দুজ। আফগানিস্তানের জাতিগত গোষ্ঠীগুলো হলো পশতুন, তাজিক, হাজারা, উজবেক, আইমাক, তুর্কমেন, বালুচ, পাশাই, নুরস্তিনি, গুজ্জর, আরব, ব্রাহুই, কিজিলবাশ, পামিরি, কিরগিজ, সাদাত প্রভৃতি। এর মধ্যে পশতুন মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫০ শতাংশ। বেশির ভাগ তালেবান হয় আফগান এবং পাকিস্তানের পশতুন অথবা বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ভাড়াটে সৈন্য।
সত্যি কথা বলতে গেলে, তালেবান কোনো ধর্মীয় মন্ত্রে দীক্ষিত হয়নি, কিংবা জাতীয়তাবাদীর অদম্য নেশাও তাদের পেয়ে বসেনি। এদের মধ্যে অনেকেই নিয়মিত বেতনে কাজ করে এবং মাদক সেবন করে। তাদের ব্যয়ের প্রধান উৎসগুলো হলো তাদের দখল করা অঞ্চলে উৎপাদিত পপি, আফিম ও অন্যান্য ড্রাগ বিক্রি করে আয়, যা তাদের নিয়ন্ত্রিত।
আমেরিকানরা এসব অঞ্চল পপি ও আফিমের পরিবর্তে বিকল্প ফসলের জন্য কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছিল। তবে অঞ্চলগুলোর মানুষের নোংরা মানসিকতার কারণে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের নেতাদের অনেক সন্তানের সঙ্গে অনেক স্ত্রী রয়েছেন এবং তাঁরা তাঁদের পরিবার ও বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ নিয়েও সংকটে রয়েছেন। তাঁদের বাচ্চারাও বর্তমানে স্কুলে পড়াশোনা করছে এবং মুঠোফোন, টেলিভিশন ও আধুনিক পোশাকে অভ্যস্ত হয়ে সাধারণ জীবন যাপন করছে।
তালেবানদের বেশির ভাগই পশতুন, আফগানিস্তান বা পাকিস্তানের। তাজিক, হাজারা বা উজবেক জনবহুল অঞ্চল তালেবানদের অধিকার নেই এবং তারা যদি কাউকে খুঁজে পায়, তবে সাধারণ জনগণ তাদের হত্যা করবে। তালেবানরাও তাদের সঙ্গে একই কাজ করে। অন্যদিকে পশতুন পরোক্ষভাবে তালেবানদের সমর্থন করে। এটি মারাত্মক বিদ্বেষের এক রাজনীতি।
ধারণা করা হচ্ছে, তালেবান আফগানিস্তানের কোনো বড় শহর, এমনকি কাবুল, হেরাত, জালালাবাদ, মাজার-ই-শরিফ, কান্দাহার এবং কুন্দুজও দখল করতে সক্ষম হবে না। তালেবানরা দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধেও অনেক ক্লান্ত। তারাও শিগগিরই ফলাফল পেতে চায়। অন্যথায় যদি খুব শিগগির কিছু না ঘটে, তবে তাদের অনেকেই যুদ্ধের মাঠ ছেড়ে চলে যাবে। তারা সবাই জানে যে তারা ইরান ও পাকিস্তান বাদে এখন মধ্যপ্রাচ্যের সমর্থন পাবে না।
বর্তমানে আফগানিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার এবং তাদের রয়েছে পর্যাপ্তসংখ্যক আধুনিক অস্ত্র, গোলাবারুদসহ বিমানবাহিনী। এ ছাড়া রয়েছে প্রায় ১৫ হাজার সদস্যের স্পেশাল অপারেশন ফোর্স। আমেরিকানরা অত্যাধুনিক রসদ, সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করেছে। তালেবান সেনার সংখ্যা নিয়ে প্রচুর বিভ্রান্তি রয়েছে। অনেকের মতে, এই সংখ্যা ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার হতে পারে। একটি বিশেষ শহর দখল করতে এসব বাহিনীকে এক করা তাদের জন্য কঠিন হবে। এটি একটি সত্য যে আমেরিকানরা আফগানিস্তান ছাড়ার পরও তারা তালেবানকে যুদ্ধের মাধ্যমে পুরো দেশ দখল করতে দেবে না।
এটা হতে পারে ৬০/৪০-এর মতো ক্ষমতার ভাগাভাগি, যেখানে বর্তমান সরকারের ৬০ শতাংশ এবং তালেবানদের ৪০ শতাংশ থাকবে। ক্ষমতা ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে কিছু মন্ত্রণালয়, প্রাদেশিক গভর্নরের পদ এবং কিছু সংস্থার পরিচালনা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
অন্যদিকে আফগানিস্তানে তালেবানের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া, রাশিয়ানদের জন্য তাজিকিস্তান, চীনের জন্য উইঘুর, ভারতের পক্ষে কাশ্মীর এবং অন্য অনেক দেশের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। এ পরিস্থিতিতে সম্পূর্ণ যুদ্ধ পরিচালনা তালেবানদের পক্ষে সম্ভব হবে না এ কারণে যে আফগানিস্তান পুরোপুরি পশ্চিমা অর্থের ওপর নির্ভরশীল, যেখানে সমস্ত উন্নয়ন সংস্থা তাৎক্ষণিকভাবে তহবিল বন্ধ করে দেবে।
প্রচারযন্ত্র ব্যবহারে আফগান সরকার অত্যন্ত দুর্বল। তবে তালেবান একেবারে বিপরীত। যেখানে তালেবানরা শূন্য থেকে ১০০ দেখায়, সেখানে সরকার প্রায় নীরব। তালেবানদের সঙ্গে তাদের লড়াইয়ের ফলাফল প্রতিদিন সংবাদমাধ্যমে আসছে না। জনগণের জন্য তারা যে যথাসম্ভব সবকিছুই করছে, সেটা সরকারকে জানাতে হবে। সেনাবাহিনীর প্রধান প্রধান যানবাহন এবং কাফেলা আজকাল আর কাবুলে চলাচল করছে না। ফলে সাধারণ জনগণ বুঝতে পারছে না, যেকোনো আক্রমণ সম্পর্কে সরকার সজাগ রয়েছে। কৌশলগত সম্পদের ১০ শতাংশ সংস্থানও যে তালেবানদের হাতে নেই এবং সরকারের কাছে যে সমস্ত আধুনিক অস্ত্র, সরঞ্জাম এবং উচ্চ প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনী রয়েছে, সেটা তারা জনগণকে বোঝাতে পারছে না। তবে সময় এখনো শেষ হয়ে যায়নি। এখনো সব দল একসঙ্গে বসে সম্মিলিত হওয়ার বিষয়ে একমত হলে আফগানিস্তানের আশার আলো রয়েছে।
মন্তব্য করুন
এক ভিন্ন ধরনের আবহ নিয়ে শুরু হয় রমজান মাস। রমজানকে ঘিরে নানা আমেজ বিরাজ করে সব এলাকার মানুষের মধ্যেই। ধর্মীয় আচার ও সাংস্কৃতিক রীতি মেনে রমজান উদযাপন করাটা বেশ জনপ্রিয়।
ইফতারের আগে আগেই পুরুষরা বেরিয়ে যান মসজিদের উদ্দেশ্যে, আর বাহারি রকম শাহী খাবারের পসরা সাজিয়ে নারীরা একত্রিত হন বাড়ির উঠানে। এভাবে ইফতার করা তাদের প্রথাগত ঐতিহ্য। ঠিকই ভেবেছেন বলছি, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠের অন্যতম দেশ পাকিস্তানের কথা।
বাংলা ইনসাইডার আয়োজিত 'ইনসাইড রমজান' ধারাবাহিক এর আজকের পর্বে আমরা জানবো পাকিস্তানি মুসলিমদের রমজান ও ইফতার সংস্কৃতি-
পবিত্র এই রমজান মাসে ইফতার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চিকেন স্যুপ, আলুর পাকোড়া, ফলের কাস্টার্ড পাকিস্তানের প্রচলিত স্বাস্থ্যসম্মত ইফতারের উল্লেখযোগ্য উপকরণ। ছোট-বড় সবাই মিলে বেশ আনন্দ-ফূর্তিতে যাপন করেন ইফতার-মুহূর্ত।
পাকিস্তানে ইফতার আয়োজনে পানি এবং খেজুর তো থাকেই তবে সেখানে প্রাধান্য পেতে দেখা যায় মাংস ও রুটির মতো সেখানকার ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো। নানা ধরনের কাবাব, তান্দুরি, কাটলেট, টিক্কার উপস্থিতি প্রায় প্রতিদিনের ইফতারেই রেখে থাকেন বড় অংশের পাকিস্তানি।
পাকিস্তানের ইফতার আয়োজন হয় করা হয় বেশ বাহারি ও উৎসবমুখর ভাবে। সাধারণত ইফতারের তিন-চার ঘন্টা আগে থেকেই এখানে শুরু হয় ইফতার তৈরির দীর্ঘ প্রক্রিয়া। পাকিস্তানে ইফতারের খাবার সাধারণত ভারী হয়। তবে মিষ্টি ও মুখরোচক খাবার প্রাধান্য পায় তাদের কাছে। যদিও, এ অঞ্চলের ইফতারে মাংসের পদ বেশি থাকে।
পাকিস্তানের মরু অঞ্চলে বিশেষ করে আফগান-পাকিস্তান সীমান্তবর্তী অঞ্চলে মাংসই প্রোটিনের প্রধান উৎস। পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলের ইফতারের আইটেমে অবশ্যই রুটি ও মাংস থাকবে। এটা তাদের ঐতিহ্যবাহী খাবার।
এছাড়াও এখানকার জনপ্রিয় ইফতার আইটেমগুলো হলো- জালেবি, সমোসা, চানা চাট, পাকোড়া, হালিম, দহি বড়া, চিকেন তন্দুরি, চিকেন টিক্কা, ঘিলোটি কাবাব, কড়হাই মাটন, পেশোয়ারি মাংসের পদ, শামি কাবাব, রেশা কাবাব, চাপালি কাবাব, বিরিয়ানি, ফলের সালাদ, ফালুদা, জুস, বাদাম ও দুধের নানান শরবত ইত্যাদি।
এদের মধ্যে, পাঞ্জাবি, সিন্ধি এবং মোহাজির পরিবারে ইফতারের পর অন্যান্য সময়ের মতো রাতের খাবারও খাওয়া হয়। অন্যদিকে, পশতুন, বেলুচি এবং তাজিকসহ উত্তর ও পশ্চিমের লোকেরা রাতের খাবার এবং ইফতার একসাথে করে। চিত্রাল এবং গিলগিটের কিছু অংশে ইফতারের প্রধান খাবার হলো লাগমান স্যুপ (নুডল স্যুপ, কিছুটা রামেনের মতো), স্থানীয়ভাবে এটি কাল্লি নামেও পরিচিত।
চাঁদ রাতের উৎসবে ব্যতিক্রম
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর রমজান ও ঈদের ঐতিহ্যের মধ্যে থাকলেও পাকিস্তানের চাঁদ রাতের উৎসবে কিছুটা ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যায়। এখানে রমজানের শেষ দিনে অর্থাৎ চাঁদ রাতে ইফতারের পর পাকিস্তানের কিশোরী, তরুণী, যুবতী, নারী সবাই বাজারে ছোটে ঈদের কেনাকাটা করতে। চুড়ি, মালা, ফিতা, সালোয়ার-কামিজ আর অবশ্যই মেহেদি। মেহেদিতে হাত রাঙানো পাকিস্তানি নারীদের প্রিয় কাজ। বাড়িতে ফিরে রয়েছে ঈদের বিশেষ রান্নার ব্যস্ততা। এসব কারণে পাকিস্তানি নারীরা বাজার করতে করতেই হাতে মেহেদির নকশা করে থাকে। এই একটি ব্যাপারই পাকিস্তানের চাঁদ রাতকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের চাঁদ রাত থেকে আলাদা করেছে।
রমজান ইফতার সংস্কৃতি পাকিস্তান
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ‘স্পেসভিআইপি’ নামে একটি পর্যটন কোম্পানি মহাকাশের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ভাসমান রেস্তোরাঁ খুলতে যাচ্ছে। রেস্তোরাঁর জন্য বিশ্বের অন্যতম খ্যাতনামা এক ড্যানিশ শেফকে নিয়োগ দিয়েছে তারা।
‘স্পেসভিআইপি’ তাদের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে রেস্তোরাঁর বেশ কিছু ছবি শেয়ার করেছে। তাতে দেখা যায়, রেস্তোরাঁটি দেখতে অনেকটা বেলুনের মতো। ছয় ঘণ্টার জন্য সেই হাইটেক স্পেস-বেলুনে মহাকাশ-সফরে নিয়ে যাওয়া হবে অতিথিদের। তার জন্য মাথাপিছু খরচ প্রায় ৫ লাখ ডলার।
আপাতত ছয় জন অতিথির জন্য টেবিল থাকছে রেস্তোরাঁয়। চারপাশে বড় বড় জানালা, চোখ চলে যাবে সুদূরে। ভূপৃষ্ঠ থেকে ১ লাখ ফুট উচ্চতায় বসে সূর্যোদয় দেখতে দেখতে খাবার উপভোগ করতে পারবেন অতিথিরা। ওয়াইফাইও থাকবে।
বিশ্বের অন্যতম সেরা ড্যানিশ রেস্তোরাঁ ‘অ্যালকেমিস্ট’-এর শেফ রাসমুস মাঙ্ক মেনু তৈরি করছেন। এখনো মেনু চূড়ান্ত হয়নি, তবে ৩২ বছর বয়সী শেফ জানিয়েছেন, মহাকাশ সফরের মতো মেনুতেও স্বাদে-গন্ধে চমক থাকবে।
তবে এখনো আরও কিছু কাজ বাকি। তাই অতিথিদের স্বাগত জানাতে আরও একটি বছর অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
মাঙ্ক জানান, খরচ অনেকটাই বেশি, তবু মানুষের মধ্যে প্রবল উৎসাহ। তার কথায়, এই সফরের বিপুল খরচ সম্পর্কে আমরা ওয়াকিবহাল। তবে এটাই প্রথম যাত্রা কি না, তাই এতটা দামি।
মাঙ্ক নিজেও প্রথম সফরে অংশ নেবেন। জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে আরও অনেক সফর হবে। টিকিটের দাম ধীরে ধীরে কমবে। আরও বেশি মানুষ এ অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে পারবেন।
‘স্পেসভিআইপি’র প্রতিষ্ঠাতা রোমান চিপোরুখা বলেন, ইতোমধ্যে কয়েক ডজন আবেদন জমা পড়েছে আমাদের কাছে। সবাই খুব উৎসাহী। কিন্তু আমাদের কাছে মাত্র ছয়টি আসন রয়েছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে যাত্রী-তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।
মহাকাশে ভাসমান বেলুন-রেস্তোরাঁটি নির্মাণ করেছে ‘স্পেস পারসপেকটিভস’। অতিথিদের কোনো বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে হবে না। জানা গেছে, রকেট নয়, একটি স্পেস বেলুনের সাহায্যের এক ধরনের ক্যাপসুলে বসিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে যাত্রীদের। প্রযুক্তিটির পেছনে রয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। আগামী মাস থেকে পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন শুরু হবে।
তবে শুধু ‘স্পেসভিআইপি’ নয়, ২০২৫ সালের পর্যটন-বাজারে তাদের প্রতিযোগীরাও হাজির হচ্ছে। গত বছর ফ্রান্সের একটি সংস্থা ‘জেফাল্টো’ ঘোষণা করেছিল, তারাও মহাকাশ-রেস্তোরাঁ খুলতে যাচ্ছে। খরচ অবশ্য অনেক কম, একটি টিকিটের দাম ১ লাখ ৩২ হাজার ডলার।
মন্তব্য করুন
গ্রীষ্মের শুরুতেই রেকর্ড তাপপ্রবাহে পুড়ছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। দেশটির রাজধানী রিও ডি জেনেরিওতে ৪২ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কিন্তু মানুষ এখন প্রায় সাড়ে ৬২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা অনুভব করছে।
সোমবার(১৮ মার্চ) দেশটিতে গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপপ্রবাহ ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া কর্তৃপক্ষ।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনেরিওতে সোমবার সকালে ৪২ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। দেশটির আবহাওয়া দফতর বলেছে, মানুষ যে উত্তাপ অনুভব করছে তার বিচারে ফিলস লাইক টেম্পারেচার ৬২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তীব্র গরমের কারণে রিও ডি জেনেরিওতে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে স্কুল, কলেজ ও বেশ কিছু অফিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তীব্র গরম থেকে বাঁচতে শত শত মানুষ ভিড় জমিয়েছেন কোপাকাবানা ও ইপানেমা সমুদ্র সৈকতে।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, শুধু আবহাওয়া অফিসের রেকর্ড করা তাপমাত্রা দিয়ে গরমের তীব্রতা বিচার করলে হবে না। এর সঙ্গে আদ্রতাসহ বেশ কিছু জিনিস বিবেচনায় নিতে হবে। সেসব জিনিস বিবেচনায় নিলে রিও ডি জেনেরিওর মানুষ এখন প্রায় সাড়ে ৬২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা অনুভব করছে।
তবে, ব্রাজিলের একদিক তীব্র তাপে পুড়ে গেলেও দেশের দক্ষিণাঞ্চল ভারী বৃষ্টিপাতে বিপর্যস্ত। দেশটির আবহাওয়া সংস্থা মেটসুল জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহটি দক্ষিণাঞ্চলের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ সপ্তাহজুড়েই তীব্র ঝড়–বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
মন্তব্য করুন
টানা পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। নির্বিচার এই হামলার জেরে গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, দেখা দিয়েছে তীব্র মানবিক সংকট। এমন অবস্থায় গাজার ফিলিস্তিনিরা ‘দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে’ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘের একটি সংস্থা।
সম্প্রতি জাতিসংঘের একটি সংস্থা মন্তব্য করেছে, গাজার ফিলিস্তিনিরা ‘দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে’ রয়েছে বলে । এমন অবস্থায় গাজার বিপর্যয়কর খাদ্য ঘাটতির মানে আরও ব্যাপক সংখ্যক মানুষের মৃত্যু আসন্ন।
এমনকি দুর্ভিক্ষ-অনাহারে মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়তে পারেন ৩ লাখ ফিলিস্তিনি। এই অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে ভূখণ্ডটিতে যুদ্ধবিরতি ও ত্রাণসহায়তা নিশ্চিত করতে হবে বলে জানিয়েছে বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড-সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকার কিছু অংশে চরম খাদ্য ঘাটতি ইতোমধ্যেই দুর্ভিক্ষের মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে এবং তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধবিরতি এবং যুদ্ধের কারণে বিচ্ছিন্ন অঞ্চলে খাদ্য সরবরাহ করা না হলে সেখানে ব্যাপক সংখ্যক মানুষের মৃত্যু আসন্ন বলে আইপিসি সোমবার জানিয়েছে।
জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার তথ্যের ওপর নির্ভর করে প্রস্তুত করা নিজেদের মূল্যায়নে ইন্টিগ্রেটেড ফুড-সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) বলেছে, গাজার উত্তরাঞ্চলের কিছু অংশের ৭০ শতাংশ মানুষ সবচেয়ে মারাত্মক স্তরের খাদ্য ঘাটতিতে ভুগছে। মূলত কোনও অঞ্চলে ২০ শতাংশ মানুষ এই মাত্রায় খাদ্যসংকটে থাকলে তাকে দুর্ভিক্ষ বলে বিবেচনা করা হয়। আর গাজার এই অঞ্চলে সেই অবস্থার ৩ গুণেরও বেশি মানুষ খাদ্য সংকটে রয়েছেন।
আইপিসি বলেছে, তাদের কাছে মৃত্যুর হারের পর্যাপ্ত তথ্য নেই। তবে সংস্থাটির অনুমান, দুর্ভিক্ষের কারণে যে হারে মানুষ মরতে শুরু করে, গাজায়ও সেই পরিস্থিতি শুরু হয়ে যাবে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে ক্ষুধা, অপুষ্টি আর বিভিন্ন রোগে সাধারণত প্রতি ১০ হাজার জনে দুজন মারা যায়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অপুষ্টিতে এ পর্যন্ত ২৭ জন শিশু ও তিনজন প্রাপ্তবয়স্কের মৃত্যু হয়েছে।
আইপিসি বলছে, ‘দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধে যেসব পদক্ষেপ প্রয়োজন, তার মধ্যে গাজার সমগ্র জনসংখ্যার জন্য মানবিক সহায়তার প্রবেশের পাশাপাশি ও বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড শুরুর করাটা উল্লেখযোগ্য এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তও প্রয়োজন।’
সংস্থাটি বলছে, সব মিলিয়ে গাজার ১১ লাখ মানুষ খাদ্যের ‘বিপর্যয়কর’ ঘাটতিতে রয়েছে এবং ভূখণ্ডটির প্রায় ৩ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের কারণে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছেন।
মূলত গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষের এই আশঙ্কার ফলে পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে ইসরায়েল। ইইউর পররাষ্ট্র নীতির প্রধান জোসেপ বোরেল ব্রাসেলসে এক কনফারেন্সে বলেছেন, ‘গাজায় আমরা এখন আর দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে নেই। আমরা দুর্ভিক্ষের ভেতরেই রয়েছি... অনাহারকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ইসরায়েল দুর্ভিক্ষকে উস্কে দিচ্ছে।’
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, বোরেলের উচিত ‘ইসরায়েলে আক্রমণ করা বন্ধ করা এবং হামাসের অপরাধের বিরুদ্ধে আমাদের আত্মরক্ষার অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া’।
এর আগে ইউএন রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইন রিফিউজিস (ইউএনআরডব্লিউএ) জানায়, উত্তর গাজায় দুই বছরের কম বয়সী প্রতি তিনজন শিশুর মধ্যে একজন শিশু এখন তীব্রভাবে অপুষ্টিতে ভুগছে।
সংস্থাটি সতর্ক করে আরও জানায়, পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে নিরলস ইসরায়েলি বোমা হামলার সম্মুখীন হওয়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে।
এদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আইপিসি রিপোর্টকে ‘ভয়ঙ্কর অভিযোগ’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ইসরায়েলকে অবশ্যই গাজার সমস্ত অংশে সম্পূর্ণ এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে।
ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, তিনি সতর্কতার সাথে প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করবেন। তিনি বলছেন, এটি স্পষ্ট সেখানে স্থিতাবস্থা টেকসই নয়। দুর্ভিক্ষ এড়াতে আমাদের এখনই জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।’
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণের ফলে এখন পর্যন্ত ৩১ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৭৪ হাজার মানুষ।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
গাজা ফিলিস্তিন জাতিসংঘ দুর্ভিক্ষ
মন্তব্য করুন
সম্প্রতি মারণব্যধি ক্যান্সার ধরা পড়েছে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন। তবে, এরই মধ্যে রাজা চার্লসের মৃত্যুর ভুয়া খবর ছড়িয়ে পড়ে রুশ গণমাধ্যমে। পরে অবশ্য রাজার বেঁচে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে একটি বিবৃতি দিয়েছে মস্কোর ব্রিটিশ দূতাবাস।
সোমবার (১৮ মার্চ) এক প্রতিবেদনে ডেইলি মেইল জনিয়েছে, সোমবার রাশিয়ার গণমাধ্যম ও তাদের পরিচালিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলোতে রাজা তৃতীয় চার্লসের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে। রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুটনিক এক প্রতিবেদনে জানায়, ‘গ্রেট ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস ৭৫ বছর বয়সে মারা গেছেন’।
এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলোতে রাজার আকস্মিক মৃত্যু নিয়ে বাকিংহাম প্যালেসের দেয়া একটি ভুয়া বিবৃতিও ভাইরাল হয়।
এ ঘটনার পর রাশিয়ায় অবস্থিত ব্রিটিশ দূতাবাস তাদের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে পোস্ট করে, ‘গ্রেট ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের মৃত্যুর খবরটি ভুয়া।’
এরপরই ইউক্রেনের ব্রিটিশ দূতাবাসও একটি বিবৃতি দেয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা আপনাদের জানাতে চাই, রাজা তৃতীয় চার্লসের মৃত্যুর খবরটি ভুয়া।’
এদিকে অবশ্য খবরটি প্রকাশের কিছুক্ষণ পরই স্পুটনিক আরও একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে জানানো হয়, রাজা আসলে মারা যাননি। রাজপরিবারের ওয়েবসাইট বা ব্রিটিশ গণমাধ্যমে এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই।'
গত ৫ ফেব্রুয়ারি বাকিংহাম প্যালেস এক বিবৃতিতে জানায়, রাজা তৃতীয় চার্লসের ক্যান্সার ধরা পড়েছে। তার চিকিৎসা চলছে। দ্রুতই তিনি সুস্থ হয়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরবেন। এ বিষয়ে তার সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রিটেনের রাজা হিসেবে অভিষেক হয় ৭৫ বছর বয়সী রাজা চার্লসের।
ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস সম্প্রতি মারণব্যধি ক্যান্সার ভুয়া মৃত্যুর খবর
মন্তব্য করুন
এক ভিন্ন ধরনের আবহ নিয়ে শুরু হয় রমজান মাস। রমজানকে ঘিরে নানা আমেজ বিরাজ করে সব এলাকার মানুষের মধ্যেই। ধর্মীয় আচার ও সাংস্কৃতিক রীতি মেনে রমজান উদযাপন করাটা বেশ জনপ্রিয়। ইফতারের আগে আগেই পুরুষরা বেরিয়ে যান মসজিদের উদ্দেশ্যে, আর বাহারি রকম শাহী খাবারের পসরা সাজিয়ে নারীরা একত্রিত হন বাড়ির উঠানে। এভাবে ইফতার করা তাদের প্রথাগত ঐতিহ্য। ঠিকই ভেবেছেন বলছি, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠের অন্যতম দেশ পাকিস্তানের কথা। বাংলা ইনসাইডার আয়োজিত 'ইনসাইড রমজান' ধারাবাহিক এর আজকের পর্বে আমরা জানবো পাকিস্তানি মুসলিমদের রমজান ও ইফতার সংস্কৃতি-
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ‘স্পেসভিআইপি’ নামে একটি পর্যটন কোম্পানি মহাকাশের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ভাসমান রেস্তোরাঁ খুলতে যাচ্ছে। রেস্তোরাঁর জন্য বিশ্বের অন্যতম খ্যাতনামা এক ড্যানিশ শেফকে নিয়োগ দিয়েছে তারা। ‘স্পেসভিআইপি’ তাদের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে রেস্তোরাঁর বেশ কিছু ছবি শেয়ার করেছে। তাতে দেখা যায়, রেস্তোরাঁটি দেখতে অনেকটা বেলুনের মতো। ছয় ঘণ্টার জন্য সেই হাইটেক স্পেস-বেলুনে মহাকাশ-সফরে নিয়ে যাওয়া হবে অতিথিদের। তার জন্য মাথাপিছু খরচ প্রায় ৫ লাখ ডলার।
গ্রীষ্মের শুরুতেই রেকর্ড তাপপ্রবাহে পুড়ছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। দেশটির রাজধানী রিও ডি জেনেরিওতে ৪২ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কিন্তু মানুষ এখন প্রায় সাড়ে ৬২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা অনুভব করছে। সোমবার(১৮ মার্চ) দেশটিতে গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপপ্রবাহ ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া কর্তৃপক্ষ।