নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৫৯ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০
করোনা পরিস্থিতির পর থেকে সৌদি আরব বাংলাদেশের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে সৌদি প্রবাসীরা তাদের ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি, আকামা নবায়ন ও সৌদি এয়ারলাইন্সের টিকেটের দাবিতে রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ করছেন। প্রবাসীরা তাদের কর্মস্থলে ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন কিন্তু কোথাও তারা এর সদুত্তর পাচ্ছেন না। চলমান অভিবাসন সংকট নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজ এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরীন। পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার নিজস্ব প্রতিবেদক মির্জা মাহমুদ আহমেদ।
বাংলা ইনসাইডার: অভিবাসী শ্রমিকদের ফেরত যাওয়া নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এর সমাধান কোন পথে?
মাহবুবা নাসরীন: আমাদের অভিবাসী শ্রমিকরা বৈধভাবে বিদেশ যাচ্ছেন। তারা যেহেতু বৈধভাবে যাচ্ছেন সেহেতু আামি মনে করি কূটনৈতিক চ্যানেলে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। অভিবাসী শ্রমিকদের ফেরত পাঠাতে সরকারের অনেক আন্তরিকতা আছে। রেমিট্যান্স বা বৈদেশিক মুন্দ্রা প্রাপ্তির অন্যতম উৎস হচ্ছেন অভিবাসী শ্রমিকরা। রেমিট্যান্স প্রাপ্তির দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে ১১ তম অবস্থানে আছে। তৈরি পোশাক শিল্পকে আমরা যেমন গুরুত্ব দেই ঠিক তেমনিভাবে অভিবাসী শ্রমিকদেরকেও গুরুত্ব দেয়া উচিত। কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে অভিবাসী সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। তাছাড়া অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়ে যারা কাজ করেন তাদেরও এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলা উচিত।
এমনিতেই কোভিড আমাদের অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্র্স্ত করেছে। অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েছে। যারা অভিবাসী শ্রমিক আছেন বাংলাদেশ তাদের কাজ নিয়ে অনিশ্চতা তৈরি হয়েছে। কারণ তারা তো এদেশে কোন কাজ করতেন না। দেশেও কাজের ক্ষেত্র অনেক সংকুচিত হয়ে গেছে। অনেক লোক ছাটাই হয়েছে। আমাদের যে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত আছে করোনায় সে খাত বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে। অনেক নারী বেকার হয়ে গেছেন। নারী পুরুষের যৌথভাবে যে আয় উর্পাজন এটাও তো কমে গেছে।
একটা পরিবার একজন চালাবেন আরেকজন বসে থাকবেন সেই সুযোগও এখন কমে গেছে। করোনার কারণে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের ব্যাপ্তি যেহেতু কমে গেছে সেক্ষেত্রে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা কাটাতে অভিবাসী খাতটাকে বাংলাদেশকে অনেক গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে। করোনায় বিশ্বের প্রায় সব দেশই অর্থনৈতিক অনিশ্চতায় পড়েছে। তারপরও যেহেতু অভিবাসী গ্রহণকারী দেশগুলোর একটা কমিটমেন্ট আছে। করোনার আগে তারা সবচেয়ে বেশি শ্রমিক আমাদের দেশ থেকে নিচ্ছিলেন। সেই ধারাবাহিকতা যাতে বজায় থাকে সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকতে হবে।
যদি পুরনো জায়গায় কাজ না থাকে তাহলে নিশ্চয়ই নতুন অনেক জায়গায় কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমার মত হচ্ছে সেক্ষেত্রে আমরা বাংলাদেশে সেই প্রশিক্ষণের জায়গা খুঁজে বের করতে পারি; এবং অভিবাসী শ্রমিকদের নতুন জব মার্কেট অরিয়েনন্টেড হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। রেমিন্টেন্স প্রবাহ না রাখতে পারলে আমাদের অর্থনীতির জন্য বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে। আমরা জানি অভিবাসী শ্রমিকদের ফেরত পাঠাতে সরকারিভাবে কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে। এই তৎপরতা আরও জোরদার করতে হবে। প্রয়োজনে জাতিসংঘের মাধ্যমে অভিবাসী গ্রহণকারী দেশগুলোকে চাপ দেয়া যেতে পারে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে বিষয়টি দেখা উচিত।
বাংলা ইনসাইডারঃ অভিবাসী শ্রমিকদের ফেরত পাঠাতে সরকার কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে।
মাহবুবা নাসরীন: প্রথমেই যে কাজটি করতে হবে সেটি হচ্ছে সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে ভিসার মেয়াদটা যাতে বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। অভিবাসী শ্রমিকরা যে খাতে দক্ষ ছিলেন দেশে তাদের সেই খাতে অর্ন্তভুক্তের ব্যবস্থা করতে হবে। পরবর্তীতে যেই সেক্টরে তারা কাজে যেতে পারেন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সেই সেক্টরের উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। কোন না কোন কাজে তাদের যুক্ত করতে হবে। অভিবাসী শ্রমিকরা বেকার থাকলে কোন ব্যাক্তির ক্ষতি হচ্ছে না বরং এটা পুরো অর্থনীতির জন্য ক্ষতি। আমাদের অভিবাসী শ্রমিকদের লো স্কিলটাকে যদি আমরা দেশে বিদেশে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আরও দক্ষ করতে পারি তাহলে তাদের একটা স্টিগমা থেকে আমরা বের করে নিয়ে আসতে পারব। হেলথ কেয়ার বা অনান্য সেক্টরের জন্য আমরা তাদের দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।
এছাড়া অভিবাসী গ্রহণকারী দেশগুলোর কাছে আমরা যদি কমিটমেন্ট করতে পারি আমাদের অভিবাসী শ্রমিকরা স্যোসাল ডিসটেন্স মেনে চলেছে। আমরা কোভিড টেস্টটাও ভালো মতো করছি। সুতরাং এই অভিবাসী শ্রমিকদের নিলে কোন দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না এই নিশ্চয়তা যদি আমরা দিতে পারি তাহলে এই সংকট অচিরেই কেটে যাবে। কূটনীতিক মহলে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে অভিবাসী গ্রহণকারী দেশগুলোতে যদি আমরা দক্ষ শ্রমিক পাঠাতে পারি এবং দক্ষ শ্রমিক তৈরিতে দেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারি তাহলে অভিবাসন খাতের সামগ্রিক চিত্রের বদল ঘটবে।
বাংলা ইনসাইডারঃ করোনা পরবর্তী ‘নিউ নরমাল’ সময়ে অভিবাসী শ্রমিক পাঠাতে কী ধরনের সর্তকর্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে মনে করেন।
মাহবুবা নাসরীন: করোনা পরবর্তী ‘নিউ নরমাল’ সময়ে অভিবাসী শ্রমিক পাঠাতে হলে স্বাস্থবিধি কঠোরভাবে মানতে হবে। করোনা প্রতিরোধে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন যেসব স্বাস্থ্যবিধি পালন করতে বলেছে সেসব স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই মানতে হবে। করোনা টেস্ট ঠিক মতো করতে হবে। মাস্ক পড়তে হবে, সোশ্যাল ডিসটেন্স মেনে চলতে হবে। আমরা করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে জীবনযাপন করছি এটা বিশ্বকে জানাতে হবে। প্রচার মাধ্যমের সুবাদে বিশ্ব যদি জানে আমরা করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছি না তার প্রভাব আমাদের অভিবাসী শ্রমিকদের ওপরেও পড়বে। তাই করোনা স্বাস্থ্যবিধি মানতে সবাই সচেতন করার পাশাপাশি এক্ষেত্রে তদারকিও বাড়াতে হবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, যারা দলের নির্দেশনা মানতে পারেননি, তারা তো না পারার দলে। দল থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, কোন মন্ত্রী-এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন না। এটা ছিল দলের বৃহত্তর স্বার্থে। সেজন্য সেটা পালন করা সবাই নৈতিক দায়িত্ব ছিল। কিন্তু যখন কেউ কেউ সেই নির্দেশ মান্য করেননি সেটার দায়-দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে। দলের প্রতি তাদের কমিটমেন্ট নিয়ে আমার বড় প্রশ্ন রয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এর মধ্য দিয়ে একটি স্পষ্ট হয়েছে যে, রাজনীতির মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রীর উত্থান হয়েছে এবং তিনি যে দল ও ত্যাগী নেতাদের ভালোবাসেন, তাদের প্রতি যে তার মমত্ববোধ সেটি প্রকাশ পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই সিদ্ধান্তের কারণে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা রাজনীতিতে নতুন আলোর সঞ্চার দেখছেন এবং তারা নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তারা আশ্বস্ত হয়েছেন যে, রাজনীতি রাজনীতিবিদদের কাছেই থাকবে।
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, কেউ যদি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় তাহলে তাকে যত দ্রুত সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে। ঘরে থাকলে ফ্যান ও এসি চালু করে তাকে ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। বেশি বেশি পানি, ফলের জুস পান করাতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির প্রেশার কমে যাওয়া, প্রস্রাব বন্ধ, পালস কমে যাওয়া বা অজ্ঞান হয়ে গেলে দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না বলেছেন, বুয়েটে শুধু ছাত্রলীগ ছাত্ররাজনীতি চায় না। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোও তো ছাত্ররাজনীতি চায়। তাহলে কেন শুধু এখন সামনে ছাত্রলীগের নাম সামনে আসছে। বুয়েটে যারা ছাত্ররাজনীতি চাচ্ছে তাদের প্রথম পরিচয় তারা বুয়েটের ছাত্র। আর বুয়েট কর্তৃপক্ষ যেটা করেছে যে, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করেছে, এটা বুয়েট প্রশাসন করতে পারে না। তাদের এখতিয়ার নেই। দেশের প্রচলিত মৌলিক আইন যেখানে আমাকে অধিকার দিয়েছে বুয়েট সেটা নিষিদ্ধ করতে পারে না। আইনে বলা হয়েছে, দেশের প্রচলিত আইন এবং নিয়মের মধ্যেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হবে। সেখানে বুয়েট তো বাংলাদেশের বাইরের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়। দেশের নিয়মেই তো বুয়েট চলার কথা। কিন্তু সেখানে বুয়েট প্রশাসন কীভাবে আমার মৌলিক অধিকার রহিত করে? আমার ক্যাম্পাসে আমি মুক্ত চিন্তায় ঘুরবো, আমি কথা বলবো, আমি স্লোগান দিবো, আমি বক্তৃতা দিবো, আমি পড়াশুনা করবো। এটা থেকে বুয়েট কর্তৃপক্ষ কীভাবে আমাকে বঞ্চিত করতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিআইডিএস যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটাই হচ্ছে প্রকৃত চিত্র। বিআইডিএসের গবেষণার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। কারণ তারা কতগুলো গবেষণা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করে যেগুলোর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। সুতরাং বিআইডিএস যেটা বলছে সেটার সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করছি না।