নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:০৩ পিএম, ০৯ অক্টোবর, ২০২০
দেশে করোনা সংক্রমনের সাত মাস পূর্ণ হয়েছে বৃহস্পতিবার। এই দীর্ঘ সময়ে করোনা পরিস্থিতির সামগ্রিক মূল্যায়ন, করোনাকে সঙ্গী করে আগামীর পথচলা কেমন হবে সে বিষয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ এ বি এম আব্দুল্লাহ। পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের নিজস্ব প্রতিবেদক মির্জা মাহমুদ আহমেদ।
বাংলা ইনসাইডার: দেশে করোনা সংক্রমনের সাত মাস পূর্ণ হয়েছে। সামগ্রিকভাবে দেশের করোনা পরিস্থিতিকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন।
এবি এম আবদুল্লাহ: সারা পৃথিবীতেই করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি ওঠা নামা করছে। কোন কোন দেশে আবার করোনার দ্বিতীয় টেউ আঘাত হেনেছে। বিশেষ করে ইউরোপের মতো শীত প্রধান দেশগুলোতে। আমাদের দেশে আগের তুলনায় করোনা সংক্রমন কমেছে। সংক্রমনের হার ওঠা নামা করছে। সংক্রমনের হার আগে ২০-২২ শতাংশ ছিলো যা কমে এখন ১২ থেকে ১৪ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। সংক্রমনের ঝুঁকি আগের থেকে কমেছে।
সংক্রমনের হার কমলেও মৃত্যু ঝুঁকি কমে নাই। কম বেশি মানুষ মারা যাচ্ছেন। এর পেছনে কারণও আছে বিশেষ করে যারা বয়স্ক মানুষ, ডায়বেটিকস, প্রেসার, হার্ট, কিডনিসহ অনান্য রোগে ভুগছেন তারা করোনায় আক্রান্ত হলে মারা যাচ্ছেন।
সুতরাং আমরা বলতে পারি সামগ্রিকভাবে করোনায় সুস্থ মানুষের মৃত্যু ঝুঁকি কিছুটা কমেছে। পৃথিবীর অনেক দেশের তুলনায় আমাদের দেশে সংক্রমণের হার তুলনামূলকভাবে অনেক কম বলা যায়।
সামনে শীতকাল আসছে । সবাই আশস্কা প্রকাশ করছে শীতে করোনার প্রকোপ বাড়তে পারে। শীতে করোনার প্রকোপ বাড়তে পারে আবার নাও বাড়তে পারে। বাড়বে কিনা এটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
চীনে যখন করোনা সংক্রমন শুরু হয় সেখানে তখন প্রচন্ড শীত ছিলো। তাই অনেকে ধারণা করছেন শীতে করোনার প্রকোপ বাড়বে।
অনেক বিশেষজ্ঞদের ধারণা ছিলো গরমে করোনা কমতে পারে। পরে দেখা গেল আমাদের দেশে গরমে করোনার প্রকোপ কমে নাই। মধ্যপ্রাচ্যে তো প্রচুর গরম, সেখানেও করোনার প্রকোপ কমেনি। সিঙ্গাপুর,মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ার মতো নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ার দেশেও করোনার সংক্রমণ বেড়েছে। আবহাওয়ার সঙ্গে করোনার সম্পর্ক কম ।
তবুও কয়েকটি কারণে শীতে করোনার প্রকোপ বাড়ার ঝুঁকি রয়ে গেছে। ঠান্ডা প্রধান দেশগুলোতে করোনা সংক্রমনের ঝুঁকি এখনও বেশি। ইউরোপ এবং আমেরিকার দেশগুলোতে করোনা সংক্রমণ আবারো বাড়ছে। সেই বিবেচনায় আমাদের দেশে শীতে করোনার প্রকোপ বাড়তে পারে।
দ্বিতীয়ত; শীতে কমন কোল্ড, ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়ার মতো ভাইরাস রোগের প্রার্দুভাব বাড়ে। সেই হিসেবে করোনা ভাইরাসও বাড়তে পারে। বাড়ার সম্ভাবনাও বেশি।
তৃতীয়ত; বদ্ধ ঘরে করোনার ঝুঁকি বেশি থাকে। শীতকালে মানুষ দরজা জানলা বন্ধ করে রাখে, বদ্ধ ঘরে থাকে সেই বিবেচনায় করোনার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
বাংলা ইনসাইডার: সাত মাসের অভিজ্ঞতা কি বলছে; আমরা কী করোনা মোকাবেলায় সফল নাকি ব্যর্থ?
এবি এম আবদুল্লাহ: সাত মাসের অভিজ্ঞতায় আমাদের যেটা ধারণা হয়েছে; আমাদের মন্ত্রণালয় বলেন, অধিদফতর বলেন, সরকার বলেন করোনা মোকাবেলায় আমরা অনেকটা সফল তো বটেই।
কারণটা হলো শুরুতে তো আমরা করোনা সম্বন্ধে কিছুই জানতাম না । সারা পৃথিবীতে করোনা নিয়ে কেউ কিছু জানতো না। যেহেতু এটা একটা নতুন রোগ। শুরুতে আমরা রোগের ধরণ জানতাম না, পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিয়ে কিছু জানতাম না। চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে অজ্ঞতা ছিলো। সেই সংকট কাটিয়ে ওঠা গেছে। আমাদের চিকিৎসকরা ভয় পেতেন, সাধারন মানুষ ভয় পেতেন। কিন্তু সাত মাস পার হওয়ার পর আমার মনে হয়েছে সামগ্রিকভাবে করোনাকে আমরা ভালোভাবেই সামলিয়েছি।
সাময়িক ভুল ক্রুটি হতে পারে। এটা হবেই যেহেতু রোগটা আমাদের সবার কাছেই নতুন।
আমাদের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা এখন অনেক দক্ষ। করোনা নিয়ে তাদের ভয় কেটে গেছে। তারা ফ্রন্টলাইনার যোদ্ধা হিসেবে ভালোভাবেই রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
করোনা মোকাবেলায় আমরা ব্যর্থ না বরং অনেকটাই সফল। আমি বলবো সফলতার পাল্লাই বেশি ভারী ।
বাংলা ইনসাইডার: অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে করোনাকে সঙ্গী করেই আমাদের জীবনযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনার পরামর্শ কী?
এবি এম আবদুল্লাহ: করোনা আমাদের ছাড়বে কিনা জানিনা। কবে ছাড়বে সেটাও নিশ্চিত না। এইচ আইভি ভি, হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, ফ্লু’র মতো ভাইরাস পৃথিবীতে রয়ে গেছে। এমনিভাবে করোনাও পৃথিবীতে রয়ে যেতে পারে । সেক্ষেত্রে করোনাকে সঙ্গী করেই আমাদের জীবন জীবিকা চালিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
জীবন তো আর থেমে থাকবে না। অর্থনীতির চাকা তো আর বন্ধ করে রাখা যাবে না।
গার্মেন্টস কর্মী, রিক্সাওয়ালা, ফুটপাথের ক্ষুদ্র দোকানী, শ্রমিকদের মতো নিম্ন আয়ের লোকেরা বলছে ‘করোনায় তো আমরা মারা যাবো না, আমরা না খেয়ে মরবো’। সুতরাং আমাদের জীবন জীবিকা ঠিক রাখতে হবে।
তবে আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা যেন স্বাস্থ্যবিধিটা ভালো করে মেনে চলি। তাহলে জীবন জীবিকাও চলবে করোনার ঝুঁকিও রোধ করা যাবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হলে কমপক্ষে তিনটি কাজ অবশ্যই করতে হবে।
ঘর থেকে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পড়তে হবে। হাত ধোয়ার চর্চা মেনে চলতে হবে। যতটুকু সম্ভব শারীরিক দুরত্ব বজায় রেখে চলা ফেরা করতে হবে।
অযথা ভীড় এড়িয়ে চলতে হবে। লোক সমাগম যেখানে বেশি সেখানে যাওয়া যাবে না। অযথা ঘরের বাইরে যাওয়া যাবে না। রেষ্টুরেন্ট, পার্ক, হোটেলে যতটা সম্ভব কম যাওয়া যায় ততই ভালো।
প্রয়োজনে ঘরের বাইরে গেলেও কাজ শেষ করে দ্রুত ঘরে ফিরতে হবে। ঘরে ফিরে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে উদাসীনতা দেখানো যাবে না।
করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে, সচেতন হতে হবে এর কোন বিকল্প নাই। আমাদের মনে রাখতে হবে আমি একা ভালো থাকলেই হবে না। পরিবারের সদস্য,দেশের মানুষ যাতে ভালো থাকে সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, কেউ যদি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় তাহলে তাকে যত দ্রুত সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে। ঘরে থাকলে ফ্যান ও এসি চালু করে তাকে ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। বেশি বেশি পানি, ফলের জুস পান করাতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির প্রেশার কমে যাওয়া, প্রস্রাব বন্ধ, পালস কমে যাওয়া বা অজ্ঞান হয়ে গেলে দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না বলেছেন, বুয়েটে শুধু ছাত্রলীগ ছাত্ররাজনীতি চায় না। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোও তো ছাত্ররাজনীতি চায়। তাহলে কেন শুধু এখন সামনে ছাত্রলীগের নাম সামনে আসছে। বুয়েটে যারা ছাত্ররাজনীতি চাচ্ছে তাদের প্রথম পরিচয় তারা বুয়েটের ছাত্র। আর বুয়েট কর্তৃপক্ষ যেটা করেছে যে, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করেছে, এটা বুয়েট প্রশাসন করতে পারে না। তাদের এখতিয়ার নেই। দেশের প্রচলিত মৌলিক আইন যেখানে আমাকে অধিকার দিয়েছে বুয়েট সেটা নিষিদ্ধ করতে পারে না। আইনে বলা হয়েছে, দেশের প্রচলিত আইন এবং নিয়মের মধ্যেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হবে। সেখানে বুয়েট তো বাংলাদেশের বাইরের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়। দেশের নিয়মেই তো বুয়েট চলার কথা। কিন্তু সেখানে বুয়েট প্রশাসন কীভাবে আমার মৌলিক অধিকার রহিত করে? আমার ক্যাম্পাসে আমি মুক্ত চিন্তায় ঘুরবো, আমি কথা বলবো, আমি স্লোগান দিবো, আমি বক্তৃতা দিবো, আমি পড়াশুনা করবো। এটা থেকে বুয়েট কর্তৃপক্ষ কীভাবে আমাকে বঞ্চিত করতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিআইডিএস যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটাই হচ্ছে প্রকৃত চিত্র। বিআইডিএসের গবেষণার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। কারণ তারা কতগুলো গবেষণা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করে যেগুলোর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। সুতরাং বিআইডিএস যেটা বলছে সেটার সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করছি না।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ঘরের দরজা ভেঙে বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কুমিল্লা শহরে নিজেদের বাড়িতে আত্মহত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। এ ধরনের আত্মহত্যার ঘটনা চলছে। আত্মহত্যা প্রতিরোধের উপায় কী অথবা আত্মহত্যা করতে চাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ মানুষটির প্রতি পরিবার, সমাজ, গণমাধ্যমের ভূমিকা কতটুকু—এসব নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে কথা বলেছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দীন আহমেদ। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের প্রতিবেদক খাদিজা ভৌমী।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, ভারতের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও মদদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে বা আছে—বিএনপির এধরনের কথাবার্তা স্রেফ তাদের হঠকারিতা। ভারত আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা যেভাবে আমাদের সহযোগিতা করেছে আপনি কি সেটা অস্বীকার করতে পারবেন কিংবা তাদের অবদানকে কোন ভাবে অবমূল্যায়ন করতে পারবেন? এটা কোন ভাবেই সম্ভব না। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ভারতের অবদানের জন্যই তারা আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু রাষ্ট্র।