নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ১৬ অক্টোবর, ২০২০
সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণ একটি আলোচিত ইস্যু। সরকার ইতিমধ্যে ধর্ষণের সাজা যাবজ্জীবন থেকে বাড়িয়ে মৃত্যুদন্ড করেছে। সাজা বাড়ানোসহ ধর্ষনের মতো সামাজিক অপরাধের আদ্যোপান্ত নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের নিজস্ব প্রতিবেদক মির্জা মাহমুদ আহমেদ।
বাংলা ইনসাইডার: সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদন্ড করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আপনার মত কী?
ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর: ধর্ষণের ঘটনাগুলো বিচার পর্যন্ত আসতে পারছে না। নানা কারণে বিচার প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটছে। তদন্ত হচ্ছে না। গ্রেফতার হচ্ছে না। বিচার প্রক্রিয়া পর্যন্ত যেতে পারছে না। অর্থাৎ আইনের শাসন কাজ করছে না। আমার জানা মনে ভিকটিমদের পক্ষ থেকে শাস্তি বাড়াবার দাবি করা হয়নি। ইসলামিক একটি গ্রুপ থেকে প্রথমে শাস্তি বাড়াবার দাবি উঠেছে। কিন্তু যারা বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছেন, ভিকটিম যারা বা যারা মানবাধিকার কর্মী তাদের থেকে কিন্তু শাস্তি বাড়াবার দাবি কখনোই আসে নাই। কারণ সাজা বাড়বে কী কমবে সেটা অনেক পরের কথা।
ধর্ষণের সাজা যে যথাযথ না এটা নিয়ে কোন অভিযোগ নাই। অভিযোগ হচ্ছে বিচার ব্যবস্থা কাজ করছে না। বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু করা যাচ্ছে না।
ধর্ষণের শাস্তি যখন মৃত্যুদন্ড হয়ে যাবে বিচারিক প্রক্রিয়া আরও লম্বা-চওড়া হয়ে যাবে। অপরাধীর রাইট বেড়ে যাবে;হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স আসবে। একজন আইনজীবী হিসেবে আমাদের প্র্যাকটিকাল অভিজ্ঞতায় দেখেছি; যেখানে অপরাধের সাজা মৃত্যুদন্ড থাকে সেখানে আদালত খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে অনেক কিছু চুলচেরা বিশ্লেষন করেন। যেহেতু একজনের জীবন কেড়ে নেবেন সেখানে দন্ডাদেশের হার কমে যায়।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ অনান্য দেশে আমাদের অভিজ্ঞতায় আমরা দেখেছি। যখন ধর্ষণের সাজাটা কমিয়ে নিয়ে আসা হয় তখন ঝটপট বিচারিক কার্যক্রম শেষ করা যায় এবং দন্ডাদেশের হারও বেড়ে যায়। ধর্ষণের সাজা হিসেবে মৃত্যুদন্ড দেয়ার পেছনে একটা কারণ থাকতে পারে যে আমরা সতীত্বটাকে খুব বেশি মূল্যায়ন করছি। এটা তো এই মূর্হুতে প্রাসঙ্গিক না।
ধর্ষণের সাজাটা যথাযথ না এটা কোন ভিকটিম দাবি করে নাই। ভিকটিমদের কথা হচ্ছে আমি বিচার প্রক্রিয়ার ভেতরে ঢুকতে পারছি না কেন?
একটা আন্দোলন গড়ে উঠেছে ধর্ষণের সাজা মৃত্যুদন্ড ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনটাকে দাবিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
ধর্ষণের সাজা মৃত্যুদন্ড হোক এটা তো দাবি না দাবিটা হচ্ছে বিচারিক প্রক্রিয়া কেন শুরু হচ্ছে না। আইন যে নাই একথা তো বলা হচ্ছে না কথাটা হচ্ছে আইন থাকা সত্ত্বেও আইনের প্রয়োগটা কেন হচ্ছে না; বিচারিক প্রক্রিয়া কেন শুরু হচ্ছে না। এটা শুরু না হওয়ার কারণে প্রভাবশালী ব্যাক্তিরা যারা অপরাধী তাদের আড়াল করে রাখছে কি না।
বাংলা ইনসাইডার: মৃত্যুদন্ড যেহেতু সমাধান না তাহলে সমাধান কিসে?
ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর: ধর্ষণের ঘটনা তদন্তের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ইনভেস্টমেন্ট লাগবে। পুলিশ, সিআইডি যাতে ভালো করে মামলাগুলো তদন্ত করতে পারে সেজন্য ট্রেনিং প্রদান করতে হবে।
একটা বিশেষ সেল খুলতে হবে যাতে ভিকটিমদের সহায়তা দেয়া যায়। নারী পুলিশ, মানবাধিকার কর্মীদের দিয়ে ভিকটিমদের যাতে তাৎক্ষনিক সহায়তা দেয়া যায় সেজন্য পাড়া মহল্লা এলাকায় এলাকায় এনজিও, পুলিশের সমন্ধয়ে লিঁয়াজো সেল খুলতে হবে।
বিচারিক প্রক্রিয়া যাতে দ্রুত শুরু হয় সেজন্য পুলিশের বিভিন্ন সেল এবং পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ কমিটি চালু করতে হবে। প্রতিনিয়ত এগুলো মনিটর করতে হবে।
একটা কলমের খোঁচা দিয়ে আমি ডেথ পেনাল্টি দিয়ে দিলাম আর সব শেষ হয়ে গেল এটাতো হয় না। মৃত্যুদন্ডের ঘোষণা দিয়ে বরং ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলন দাবিয়ে দেয়া হচ্ছে।
ধর্ষণের সাজা মৃত্যুদন্ড হওয়ার ফলে ভিকটিমকে তো জানে বাচিঁয়ে রাখবে না । রেপ করে খুন করে ফেলবে। যাতে সাক্ষী দিতে না পারে। কারণ খুন করলেও মৃত্যুদন্ড ধর্ষণ করলেও মৃত্যুদন্ড। এই শাস্তি বাড়ানোটা বুমেরাং হবে।
বুমেরাং হবে বলছি কারণ প্রথমত অপরাধী ভিকটিমকে জানে বাচিঁয়ে রাখবে না । দ্বিতীয়ত ডেথ রেফারেন্স বাধত্যামূলক হওয়ায় বিচারিক প্রক্রিয়া অনেক দীর্ঘমেয়াদী হয়ে যাবে। অপরাধী সেটার বেনিফিট পাবেই। প্রতিটি মামলা হাইকোর্ট পর্যন্ত আসবে। সুতরাং কনভিকশন পাওয়ার দিক থেকে আমরা অনেক দুরে চলে যাবো।
বরং আমাদের যে দাবিটা ছিলো যে; বিচারিক প্রক্রিয়া কেন শুরু হচ্ছে না। যথাযথভাবে কেন বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাচ্ছে না এইসব বিষয় তদারকি করার জন্য সরকারের উচিত খুব হাই পাওয়ার একটা সেল তৈরি করা। ধর্ষণের মামলাগুলো তদন্তের জন্য আমরা যদি সিআইডিকে বিশেষায়িতভাবে প্রস্তুত করি এবং এটা মনিটর করার জন্য প্রত্যোক এলাকায় যে হাই পাওয়ার সেল আছে তাদেরকে যদি কাজে লাগাই তাহলে ধর্ষণের ঘটনা অনেক কমে আসবে।
যারা ধর্ষণ করছে আমি বলবো তাদের পুরুষত্বের অভাব আছে। একটা নারীর মন জয় করতে যে পারেনা, একজন নারীর মন জয় করার যার মুরোদ নেই সেই ধর্ষণ করে। যে একজন নারীর মন জয় করতে পারে তার তো রেপ করার প্রয়োজন হয় না।
ধর্ষণ প্রতিরোধে ক্রিকেট ষ্টার, পপষ্টার, সোশ্যাল আইকনদের এগিয়ে আসতে হবে। আমি দেখতে চাই ধর্ষণ বিরোধি আন্দোলনে তারা এগিয়ে আসছেন এবং তারা বলবেন ‘যারা ধর্ষণ করছে তারা কাপুরুষ’ তাদের পুরুষত্ব নাই। একটা নারীর মন জয়ার মুরোদ তাদের নেই।
ধর্ষণকারীদের অবস্থানটা আমি ছ্যাচড়া চোরের মতো দেখতে চাই, ডাকাতের মতো বা খুনীদের মতো দেখতে চাই না। মৃত্যুদন্ড দিয়ে তাকে এত গুরুত্ব দেয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না।
যাদের পুরুষত্ব নেই নারীর মন জয় করার মুরোদ নেই তারাই ধর্ষণ করছে।
দেশ বিদেশের বিভিন্ন পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে; ধর্ষণ করে যৌন তৃপ্তি কখনোই পাওয়া যায় না। কারণে এখানে একজন পারটিসিপেন্ট বেজার। সে খুশি না। সেখানে কোন ভালবাসা নাই। ধর্ষণ করা হয় আধিপত্য বিস্তার করার জন্য। এটা একটা ক্ষমতার খেলা।
বাংলা ইনসাইডার: ধর্ষণের ঘটনাগুলোতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভিকটিমকে দায়ী করা হয়। এ বিষয়ে কি বলবেন।
ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর: অনেক সময় দেখা যায় পুরুষে পুরুষে দ্বন্দ্ব থাকলে নারীকে হেয় করার জন্য ধর্ষণ করা হয়।
কিন্তু লজ্জাটা যে ভিকটিম তার না; লজ্জাটা হচ্ছে অপরাধীর। লজ্জাটা সামাজিকভাবে আমাদের শিফট করতে হবে। সমাজ সচেতনতা বাড়াতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। এই লজ্জাটা কিভাবে আমরা অপরাধীর ঘাড়ে শিফট করবো সেটা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।
যখনই কেউ ধর্ষণের শিকার হয় তার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। আমরা যখন ইয়াসমিনের মামলা করলাম তখন দেখলাম তাকে পতিতা বানানোর পায়ঁতারা করা হয়েছিলো। বাঁধনের মামলাতেও বাঁধনের পরনে কি ছিলো সেটা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিলো, চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিলো।
ধর্ষণের আইনী সংজ্ঞায় কিন্তু বলা নাই সেখানে কেবলমাত্র ভদ্রমহিলারা আইনী সুরক্ষা পাবেন। কেবলমাত্র ভদ্র, চরিত্রবান মহিলাদের ধর্ষণ করা যাবে না অন্য মহিলাদের ধর্ষণ করা যাবে এরকম কথা কিন্ত আইনে বলা নাই। সেজন্য ধর্ষণ মামলায় নারীর চরিত্র নিয়ে কথা বলাটাই অপ্রাসঙ্গিক। আমরা অতীতে দেখেছি এখনও দেখছি ধর্ষণের শিকার নারীদের চরিত্র নিয়ে কথা ওঠানো হয়।
কিন্তু এখানে অপরাধীর অতীত কর্মকান্ড এবং চরিত্র নিয়ে কথা বলা বেশি প্রয়োজন। আমাদের বিদ্যমান আইনে ভিকটিমকে নিয়ে মন্তব্য করা অপরাধ।
সিনিয়র অ্যাডভোকেট মইনুল হক টকশোতে একজন নারী সাংবাদিককে দুশ্চরিত্র বলেছিলেন। তাকে কিন্তু জেলে যেতে হয়েছিলো।
নারী অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে সরকার বা প্রশাসন কেন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ভিকটিমকে কেন মামলা করতে হবে?
ক্রিমিনাল অপরাধ যখন হয় এটা তো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধ। রাষ্ট্রতো নিজেই পদক্ষেপ নিতে পারে। প্রকাশ্যে সোশ্যাল মিডিয়াতে, ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে, টেলিভিশনে যখন ভিকটিমকে অবমাননা করা হয় তখন সরকার নিজেই স্ব প্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা নিতে পারে এটা আইনেই আছে। সেই আইনটা কেন প্রয়োগ হচ্ছে না?
আইন প্রয়োগ না করে আন্দোলনের মুখে সরকার ধর্ষণের সাজা বাড়িয়ে দিলো। সাজা যে কম এটা তো কেউ বলছে না। বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু করা যাচ্ছে না এটা নিয়ে সবাই কথা বলছে।
যারা ধর্ষণ করছে তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। নিজের মতামতটা করে অন্যের উপর জোরপূর্বক চাপিয়ে দিচ্ছে। ধর্ষণ একটা ক্ষমতার খেলা। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে এখানে যৌন তৃপ্তি কখনো ওভাবে হয় না। এটা একটা ক্ষমতার খেলা।
একাত্তরে আমাদের এখানে গণহত্যা হয়েছে গণধর্ষণ হয়েছে।
এক ধরনের ক্ষমতার খেলা, নির্যাতনের অংশ হিসেবেই এগুলো করা হয়েছে। একটা নেশন চেঞ্জ করে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
যারা এখন ধর্ষণ করছে তাদের আমি ধিক্কার জানাই।
কারণ স্বাধীন বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠায় ধর্ষণের বিরুদ্ধে আমরা একাত্তরে লড়েছিলাম। মুক্তিযুদ্ধে নারী পুরুষ একসাথে হাতে হাত মিলিয়ে আমরা লড়াই করেছিলাম।
একটা খুব দক্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্ব, মুজিবনগরের সফল সরকারের অধীনে আমরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। ধর্ষণের বিরুদ্ধে আমরা লড়েছিলাম।
যারা আজকে এ ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে তাদেরকে ধিক্কার দেয়া; তারা যেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে এসব অপকর্ম করে না বেড়ায়। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাইরে।
ধর্ষণের ঘটনা ঘটার পর বিচার চাইতে পুরো দেশবাসীকে আন্দোলন করতে হবে এটা লজ্জার বিষয়। প্রতিটি ধর্ষণের ঘটনার জন্য কি আমরা প্রতিবার আন্দোলন করবো? অনেকগুলো আলোচিত ধর্ষণের ঘটনা ঘটার পর পুর্নাঙ্গ আইন হয়েছে। আইনের প্রয়োগে সমস্যা রয়ে গেছে। এজন্য আমরা সরকারকে একটা ইমপ্লিমেন্টটেশন সেল করতে বলেছিলাম। মনিটরিং জোরদার করতে বলেছিলাম।
বাংলা ইনসাইডার: ধষর্ণের মতো সামাজিক অপরাধ কিভাবে রোধ করা যায়?
ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর: ধর্ষণ প্রতিরোধে পাড়া-মহল্লায় কমিটি করতে হবে। সচেতনতা বৃদ্ধি করতে উদ্যোগ নিতে হবে। অ্যাসিড সন্ত্রাস নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির পর অ্যাসিড সন্ত্রাস অনেক কমে গেছে। অ্যাসিডের সাপ্লাই কমে যাওয়ার পাশাপাশি জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতাও অনেক বেড়েছে।
ধর্ষণের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরিতে প্রথমত; আমাদের তরুণ পুরুষদের এগিয়ে আসতে হবে। তারা ধর্ষনকারীদের ধিক্কার জানাবেন। তারা জোর গলায় বলবেন যারা ধর্ষণ করে তাদের পুরুষত্ব নেই।
দ্বিতীয়ত;আমাদের ক্রিকেট ষ্টার, ফুটবল ষ্টার, সিনেমার হিরো, ইয়ুথ লিডারদের এগিয়ে আসতে হবে। আমরা যখন অ্যাসিড সন্ত্রাস নিয়ে কাজ করেছিলাম তখন এরকম অনেক পুরুষ তারকারা আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন।
ধর্ষণকারীকে সামাজিকভাবে লজ্জা দেয়া ধিক্কার দেয়া উচিত। এবং তাকে ছ্যাচরা চোরের মতো ট্রিট করা উচিত ডাকাত বা খুনীর মতো নয়। মৃত্যুদন্ড দিয়ে ধর্ষণকারীকে আমরা আরও উচ্চস্তরে নিয়ে গেলাম।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিআইডিএস যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটাই হচ্ছে প্রকৃত চিত্র। বিআইডিএসের গবেষণার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। কারণ তারা কতগুলো গবেষণা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করে যেগুলোর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। সুতরাং বিআইডিএস যেটা বলছে সেটার সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করছি না।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ঘরের দরজা ভেঙে বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কুমিল্লা শহরে নিজেদের বাড়িতে আত্মহত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। এ ধরনের আত্মহত্যার ঘটনা চলছে। আত্মহত্যা প্রতিরোধের উপায় কী অথবা আত্মহত্যা করতে চাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ মানুষটির প্রতি পরিবার, সমাজ, গণমাধ্যমের ভূমিকা কতটুকু—এসব নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে কথা বলেছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দীন আহমেদ। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের প্রতিবেদক খাদিজা ভৌমী।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, ভারতের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও মদদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে বা আছে—বিএনপির এধরনের কথাবার্তা স্রেফ তাদের হঠকারিতা। ভারত আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা যেভাবে আমাদের সহযোগিতা করেছে আপনি কি সেটা অস্বীকার করতে পারবেন কিংবা তাদের অবদানকে কোন ভাবে অবমূল্যায়ন করতে পারবেন? এটা কোন ভাবেই সম্ভব না। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ভারতের অবদানের জন্যই তারা আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু রাষ্ট্র।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক বলেছেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্বাস্থ্য খাতের দায়িত্ব পেয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। গতকাল তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে এই দায়িত্ব ভার গ্রহণ করেছেন। এর আগে বাংলাদেশের কেউই এই দায়িত্বে ছিলেন না। আমরা খুবই সৌভাগ্যবান যে, আমরা সায়মা ওয়াজেদকে আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে পাচ্ছি। এটা বাংলাদেশ তথা এদেশের জনগণের জন্য একটি বিরাট প্রাপ্তি। সায়মা ওয়াজেদ স্বাস্থ্য খাতে খুব অভিজ্ঞ একজন ব্যক্তিত্ব। আমরা জানি সে অনেক দিন ধরে সারা বিশ্বে অটিজম এবং নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা প্যানেলেরও সদস্য। তাছাড়া ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে ‘অটিজম-বিষয়ক শুভেচ্ছা দূত’ হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেছেন, টিআইবি এখন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর ভূমিকা পালন করছে। টিআইবি এবং সিপিডি যারা করে এরা একই ঘরানার। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন পদ্মা সেতু জনগণের অর্থায়নে করার ঘোষণা করেন সে সময় এরা বলেছিল বাংলাদেশে এটা অসম্ভব। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করলে অর্থনীতির একটা ধস নামবে, অর্থের অপচয় হবে। টিআইবি তো কোন সময় বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ভালো চোখে দেখে না। টিআইবি’র এখানে (বাংলাদেশ) যারা নেতৃত্ব দেন তারা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুমে বসে মনগড়া বিবৃতি দেয়। তারা জনগণের চোখের ভাষা বুঝে না বরং তারা পিছনের দরজা দিয়ে কোনো রকম নিজের গাড়িতে একটি পতাকা লাগানো যায় কিনা সেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে এবং এই স্বপ্নে বিভোর থাকে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে টিআইবি মনগড়া তথ্য-উপাত্ত জাতির সামনে হাজির করে জাতিকে বিভ্রান্তি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।