নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ১৭ অক্টোবর, ২০২০
ভ্যাকসিন নিয়ে আপাতত কোন সুখবর পাওয়া যাচ্ছে না। জনসন অ্যান্ড জনসনের পর অক্সফোর্ডে ভ্যাকসিনের ট্রায়ালও স্থগিত করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিন নিয়ে বাংলাদেশের তৎপরতা ও ভাবনা নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সাথে কথা বলছেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসির) চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা: সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের নিজস্ব প্রতিবেদক মির্জা মাহমুদ আহমেদ।
বাংলা ইনসাইডার: সিনোভ্যাক ভ্যাকসিন ট্রায়ালের জন্য বাংলাদেশের কাছে অর্থ সহায়তা চেয়েছে। সরকার এ ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে?
সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী: আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন বাংলাদেশ সরকার কোন অর্থ দিয়ে ভ্যাকসিন ট্রায়ালে অংশগ্রহণ করবে না। বিএমআরসি যখন ভ্যাকসিন ট্রায়ালের জন্য সিনোভ্যাককে অনুমতি দেয় তখন তারা যেই শর্ত দিয়েছিলো সেই শর্ত থেকে তারা নিজেরাই সরে গেছে।
এর আগে আমরা পত্রিকা মারফত দেখেছি চীন এক রকম প্রতিশ্রুতি দেয়। পরে আর ঠিকমতো প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে না।
সিনোভ্যাক যখন ভ্যাকসিন ট্রায়ালের জন্য অনুমতি চাইলো তখন আমরা বিএমআরসি থেকে অনুমতি দিলাম। সরকারও অনুমতি দিলো। তারপর তারা বললো আমাদের নাকি সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হয়েছে।
ভ্যাকসিন এমন একটা জিনিস না; যে দোকানে গেলাম আর মুড়ি মুরকীর মতো কিনে খেলাম। বাংলাদেশের তরফ থেকে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হয়েছে এটা আমি মনে করি না।
বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার বিশ্লেষণ করে এবং সরকারের নিয়ম নীতি অনুযায়ী তাদেরকে আমরা অনুমতি দিয়েছি। তারা নিজেরাই চলে যাওয়ার ছুতো হিসেবে দেরি করার অযুহাত দাঁড় করিয়েছে।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কোন দেশ বা কোন কোম্পানী আরেকটি দেশ বা কোম্পানীর সঙ্গে চুক্তি বা সমঝোতা করলে সেটা একতরফা ভাবে পরিবর্তন করার অধিকার রাখে না।
সিনোভ্যাক কোম্পানী বাংলাদেশে কখনো ভ্যাকসিন ট্রায়াল হোক এটা চেয়েছি কিনা তাতে আমার ব্যাক্তিগতভাবে সন্দেহ আছে।
বাংলা ইনসাইডার: গ্লোব বায়োটেক ভ্যাকসিন ট্রায়ালের জন্য বিএমআরসির কাছে আবেদন করবে। এর বাইরে আর কোন বৈশ্বিক ভ্যাকসিনের ট্রায়াল কী বাংলাদেশে হতে পারে?
সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী: আমাদের জানা মতে বাংলাদেশে গ্লোব বায়োটেক’ই ভ্যাকসিন রিসার্চের সাথে যুক্ত আছে। আমরা পত্রিকায় দেখেছি তারা আইসিডিডিআরবি’র সাথে একটা এমইউ স্বাক্ষর করেছে। যখন বিএমআরসিতে প্রটোকল জমা দিবে সেটা আইসিডিডিআর’বি জমা দেবে। নিয়ম অনুযায়ী গ্লোব বায়োটেকের সঙ্গে আমাদের সরাসরি কোন যোগাযোগ থাকবে না। যোগাযোগের সুযোগও নাই।
অন্য কোন ব্যাক্তি বা সংস্থা বাংলাদেশে ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করেছে এরকম খবর আমাদের কাছে নাই।
ভ্যাকসিনের ব্যাপারে ভারত সব সময় একই ধরনের বক্তব্য দিচ্ছে। ভারতের বক্তব্যে আমরা আস্থা রাখতে পারি। ভারত যদি কোন ভ্যাকসিন পায় সেক্ষেত্রে বাংলাদেশও ভ্যাকসিন পাবে এই ক্ষেত্রে আমরা আশাবাদ ব্যাক্ত করতে পারি।
একটা বিষয় আমাদের মনে রাখা দরকার; বিশ্বে এখন পর্যন্ত কোন ভ্যাকসিনই সাকসেসফুল হয়নি। চীন নিজেরা তাদের ভ্যাকসিন সফল বলে দাবী করেছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক মানদন্ডে বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে ওই ভ্যাকসিন যে সফল সেটার কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
রাশিয়া তাদের ভ্যাকসিন সফল বলে দাবী করেছে। যদি রাশিয়ান ভ্যাকসিন সফল হতো তাহলে ওদের দেশে দ্বিতীয় দফায় করোনা সংক্রমন এত বাড়লো কেন?
এই মূর্হুতে বিশ্বের কোথাও কোন সাকসেসফুল ভ্যাকসিন নাই। ভ্যাকসিন ট্রায়ালের যে ফেজগুলো আছে করোনা ইমাজেন্সীর কারণে সেগুলোর সময় কমিয়ে দেয়া হয়েছে। সময় কমিয়ে দেয়ার ফলে ভ্যাকসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি এবং কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ রয়ে যাচ্ছে।
সাফসেসফুল ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত করোনাকে আমরা ঠিকমতো পরাস্ত করতে পারবো না। সাকসেসফুল ভ্যাকসিন সত্যিকার অর্থে কবে আসবে এটা এখনো অনিশ্চিত। ভ্যাকসিন নিয়ে আপতত কোন সুখবর নেইা অক্সফোর্ড, জনসন অ্যান্ড জনসনের মতো নামকরা প্রতিষ্ঠানের ভ্যাকসিনও ম্যাস ট্রায়ালে যেয়ে বন্ধ করে দিতে হয়েছে।
ভ্যাকসিন এমন একটা জিনিস যেটা প্রয়োগ করা হয় রোগ প্রতিষেধক এর জন্য সেই ভ্যাকসিন যদি নতুন আরেক রোগে আক্রান্ত করে তাহলে তো লাভ হবে না। ভ্যাকসিন নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা আছে।
পুরো করোনাভাইরাস নিয়ে বৈজ্ঞানিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সবাই ধোঁয়াশার মধ্যে আছে। এর রুপ প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে।
যেসব ভ্যাকসিন বানানোর প্রক্রিয়া পরে শুরু হবে আমার মতে তারা কতগুলো অ্যাডভান্সটেজ পাবে। রুপ পরিবর্তনের ধরণ জেনে যাওয়ায় অন্যদের চেয়ে তাদের ভ্যাকসিন বেশি কাজ করবে। এরপরেও যদি করোনা রুপ পরিবর্তন করে তাহলে নতুন ভ্যাকসিনও কাজে আসবে না।
অনেকে বলছেন বাংলাদেশ টাকা দিয়ে আগে ভ্যাকসিন বুক করে রাখুক আমার মনে হয় এগুলোর বৈজ্ঞানিক কোন ভিত্তি নাই। বাংলাদেশ সবার সাথে আলাপ আলোচনা করে রাখছে। পৃথিবীতে সফল ভ্যাকসিন আবিস্কৃত হলেই আমরা সেটা পাবো।
আমার ব্যাক্তিগত মত হলো কোথায় টাকা দিয়ে এখনই ভ্যাকসিন বুক করে রাখা বাংলাদেশের জন্য সঠিক পদক্ষেপ হবে না।
বাংলা ইনসাইডার: বাংলাদেশ কী ভ্যাকসিন দৌড়ে পিছিয়ে পড়েছে?
সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী: ভ্যাকসিন পাওয়ার দৌড়ে বাংলাদেশ কোনরকম পিছিয়ে পড়ছে না। কারণ এখন পর্যন্ত কোন ভ্যাকসিন সফল হয়েছে এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পৃথিবীর সবচেয়ে আশাব্যাঞ্জক ভ্যাকসিন ছিলো অক্সফোর্ড। সেটাও ট্রায়ালের মাঝপথে এসে বন্ধ করে দিতে হয়েছে। বাংলাদেশের মতো দেশ যদি এক মিলিয়ন ডলার দিয়ে ভ্যাকসিন বুক করে রাখতো তাহলে অবস্থা কি দাঁড়াতো?
বাংলাদেশ ভ্যাকসিনের ব্যাপারে বিশ্বব্যাপী যে যোগাযোগ রাখছে এটা ঠিক আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং তার টিম সর্ম্পূণ বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে যেভাবে যোগাযোগ রাখছেন এটাই ঠিক। এর বাইরে যারা যেটা বলছেন তারা অনুমানের ওপর ভিত্তি করে কথা বলছেন।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিআইডিএস যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটাই হচ্ছে প্রকৃত চিত্র। বিআইডিএসের গবেষণার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। কারণ তারা কতগুলো গবেষণা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করে যেগুলোর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। সুতরাং বিআইডিএস যেটা বলছে সেটার সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করছি না।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ঘরের দরজা ভেঙে বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কুমিল্লা শহরে নিজেদের বাড়িতে আত্মহত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। এ ধরনের আত্মহত্যার ঘটনা চলছে। আত্মহত্যা প্রতিরোধের উপায় কী অথবা আত্মহত্যা করতে চাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ মানুষটির প্রতি পরিবার, সমাজ, গণমাধ্যমের ভূমিকা কতটুকু—এসব নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে কথা বলেছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দীন আহমেদ। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের প্রতিবেদক খাদিজা ভৌমী।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, ভারতের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও মদদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে বা আছে—বিএনপির এধরনের কথাবার্তা স্রেফ তাদের হঠকারিতা। ভারত আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা যেভাবে আমাদের সহযোগিতা করেছে আপনি কি সেটা অস্বীকার করতে পারবেন কিংবা তাদের অবদানকে কোন ভাবে অবমূল্যায়ন করতে পারবেন? এটা কোন ভাবেই সম্ভব না। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ভারতের অবদানের জন্যই তারা আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু রাষ্ট্র।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক বলেছেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্বাস্থ্য খাতের দায়িত্ব পেয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। গতকাল তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে এই দায়িত্ব ভার গ্রহণ করেছেন। এর আগে বাংলাদেশের কেউই এই দায়িত্বে ছিলেন না। আমরা খুবই সৌভাগ্যবান যে, আমরা সায়মা ওয়াজেদকে আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে পাচ্ছি। এটা বাংলাদেশ তথা এদেশের জনগণের জন্য একটি বিরাট প্রাপ্তি। সায়মা ওয়াজেদ স্বাস্থ্য খাতে খুব অভিজ্ঞ একজন ব্যক্তিত্ব। আমরা জানি সে অনেক দিন ধরে সারা বিশ্বে অটিজম এবং নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা প্যানেলেরও সদস্য। তাছাড়া ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে ‘অটিজম-বিষয়ক শুভেচ্ছা দূত’ হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেছেন, টিআইবি এখন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর ভূমিকা পালন করছে। টিআইবি এবং সিপিডি যারা করে এরা একই ঘরানার। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন পদ্মা সেতু জনগণের অর্থায়নে করার ঘোষণা করেন সে সময় এরা বলেছিল বাংলাদেশে এটা অসম্ভব। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করলে অর্থনীতির একটা ধস নামবে, অর্থের অপচয় হবে। টিআইবি তো কোন সময় বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ভালো চোখে দেখে না। টিআইবি’র এখানে (বাংলাদেশ) যারা নেতৃত্ব দেন তারা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুমে বসে মনগড়া বিবৃতি দেয়। তারা জনগণের চোখের ভাষা বুঝে না বরং তারা পিছনের দরজা দিয়ে কোনো রকম নিজের গাড়িতে একটি পতাকা লাগানো যায় কিনা সেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে এবং এই স্বপ্নে বিভোর থাকে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে টিআইবি মনগড়া তথ্য-উপাত্ত জাতির সামনে হাজির করে জাতিকে বিভ্রান্তি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।