নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:১৪ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ বলেছেন, অ্যাটর্নি জেনারেল পদটি কোন সাংবিধানিক পদ নয়। অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দীনকে অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নয়, বরং একজন আইনজ্ঞ হিসেবে কমিটিতে রাখা হয়েছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দীনকে আওয়ামী লীগের উপকমিটির সদস্য করা নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের মন্তব্য নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ। পাঠকদের জন্য ড. সেলিম মাহমুদ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের নিজস্ব প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান তুহিন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান আজ সোমবার একটি প্রেস ব্রিফিংয়ে অভিযোগ করেন যে, অ্যাটর্নি জেনারেলের পদটি একটি সাংবিধানিক পদ। কোন সাংবিধানিক পদের অধিকারী ব্যক্তি কোন রাজনৈতিক দলের কমিটিতে থাকতে পারেন না। বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল আওয়ামী লীগের একটি উপ কমিটির সদস্য হয়েছে। এতে তারা বিস্মিত।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ বলেন যে, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দীন সুপ্রিমকোর্টের একজন আইনজীবী। তাকে বিশেষজ্ঞ সদস্য হিসেবে তথ্য ও গবেষণা উপ কমিটিতে রাখা হয়েছে, কোন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তাকে রাখা হয়নি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যে গঠনতন্ত্র সেখানে বলা আছে, বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক যে উপকমিটিগুলো হবে সেখানে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সংসদীয় কমিটির সদস্যরা থাকতে পারবেন। সেই হিসেবে আমাদের উপকমিটিতে দুই জন সদস্য রয়েছেন। একজন শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি অপর জন হলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তারা দুজনই সংসদীয় কমিটির সদস্য।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপি বলছে যে অ্যাটর্নি জেনারেল পদটি একটি সাংবিধানিক পদ। সাংবিধানিক পদের অধিকারী ব্যক্তিকে কোন রাজনৈতিক দলের কমিটিতে রাখা যায় না। কিন্তু আমাদের বক্তব্য হচ্ছে অ্যাটর্নি জেনারেল পদটি কোন সাংবিধানিক পদ নয়। তাদের ধারণা হচ্ছে এই পদটি সংবিধানে উল্লেখ আছে, তাই এটি সাংবিধানিক পদ। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভুল ব্যাখ্যা। সংবিধানে কোন পদের উল্লেখ থাকলেই সেটি সাংবিধানিক পদ নয়। সংবিধানে অনেক পদের উল্লেখ রয়েছে, যে পদ গুলো সাংবিধানিক নয়। যেমন আমাদের সংবিধানে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী সংক্রান্ত একটি অধ্যায় রয়েছে। সংবিধানে সশস্র বাহিনী সম্পর্কে উল্লেখ আছে, জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা জজ, ম্যাজিস্ট্রেট পদসমূহের উল্লেখ রয়েছে। প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল সংক্রান্ত একটি অধ্যায় রয়েছে। এই সকল পদসমূহ সাংবিধানিক পদ নয়। সাংবিধানিক পদ বলতে সেই সকল পদ কে বুঝায়, যেই পদের মেয়াদকাল সংবিধান দ্বারা রক্ষিত। এই সকল পদধারী ব্যক্তিকে তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে অপসারণ করা যায় না। যেমন সুপ্রিম কোর্টের বিচারক, কিছু কিছু কমিশনের সদস্য, কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল এই পদ গুলো সাংবিধানিক পদ। আমাদের সংবিধানের বিধান অনুযায়ী অ্যাটর্নি জেনারেল রাষ্ট্রপতির সন্তুষ্টির উপর নির্ভরশীল হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। অর্থাৎ রাষ্ট্রপতি যতক্ষণ চাইবেন ততক্ষন তিনি দায়িত্ব পালন করবেন। তার পদের কোন সাংবিধানিক প্রোটেকশন নেই। আমাদের সংবিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীর মতো অ্যাটর্নি জেনারেল পদটি সাংবিধানিক পদ নয়।’
ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ী উপ কমিটিগুলোতে বিশেষজ্ঞ সদস্য থাকবে। এই ধরণের বিশেষজ্ঞ সদস্য দলের প্রাথমিক সদস্য নাও হতে পারেন। আমদের উপকমিটিতে অনেক সদস্য আছেন যারা দলের প্রাথমিক সদস্য নন, কিন্তু তারা বিশেষজ্ঞ সদস্য। অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দীন হচ্ছেন উপ কমিটির একজন বিশেষজ্ঞ সদস্য। তিনি আওয়ামী লীগের কোন দলীয় সদস্য নন।’
‘আমাদের আইন ও প্রথা অনুযায়ী অ্যাটর্নি জেনারেল প্রাইভেট প্রাকটিস করতে পারেন, নির্বাচন করতে পারেন, বিভিন্ন সভা সমিতিতে যোগদান করতে পারেন, এমনকি রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারেন। সারা বিশ্বেই এই পদটি রাজনৈতিক পদ। এটি কোন নিরপেক্ষ পদ নয়। এটি কোন বিচারিক পদ নয়। সংবিধান ও আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে সরকারের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত সমুহ বাস্তবায়ন করাই অ্যাটর্নি জেনারেলের কাজ। যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাটর্নি জেনারেল ক্যাবিনেট সদস্য এবং তিনি রাজনৈতিক ভাবেই নিয়োগ প্রাপ্ত হন। সারা বিশ্বেই এই পদে রাজনৈতিক ভাবে নিয়োগ দেয়া হয়।’
‘তবে এটি দেখা প্রয়োজন, রাজনৈতিক দলের উপকমিটি তে থাকলে কোন ধরণের কনফ্লিকট অফ ইন্টারেস্ট থাকে কিনা। আমরা এটি আশা করবো, এই পদে থাকা অবস্থায় তিনি এমন কিছু করবেন না, যেটি ন্যায় বিচারকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।’
আরও পড়ুন: নিক্সন চৌধুরীর ঐক্যের ডাক
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
সামাজিক আন্দোলন কর্মী, নারীবাদী এবং মানবাধিকার কর্মী খুশি কবির বলেছেন, মানবাধিকার হলো অলঙ্ঘনীয় অধিকার। যা মানুষ তার জন্মগত ও অবিচ্ছেদ্যভাবেই পায়। বিশেষ করে যারা পিছিয়ে পড়ে আছেন, যারা সুবিধা বঞ্চিত আছেন, যারা কম সুযোগ সুবিধা পায়, তারা আদিবাসী হোক কিংবা ভূমিহীন হোক। দিনমজুর থেকে শুরু করে নারী, প্রতিবন্ধীসহ সকলের জন্য মানবাধিকার যে বিষয়গুলো রয়েছে সেগুলো যথার্থভাবে প্রতিপালন করা উচিত। সেটা শুধু আমাদের দেশে নয়, সারাবিশ্বে হওয়া উচিত। প্রত্যেকেই যেন সে তার অধিকার সঠিকভাবে পায়।
জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের বাংলাদেশ সফর, মানবাধিকার হাইকমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশের মানবাধিকার কর্মীদের সাক্ষাৎ, দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় খুশি কবির এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য খুশি কবির এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।
খুশি কবির বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট আমাদের আমন্ত্রণ করেছিলেন। আমরা গিয়েছিলাম। আমাদের প্রত্যেকের কাজের আলাদা সেক্টরের ব্যাপারে জানতে পাওয়া হয়েছে আমরা হাইকমিশনারের কাছে সেটা তুলে ধরেছি। প্রতিটি দেশের বা রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো সকল নাগরিকদের মানবাধিকার সমানভাবে নিশ্চিত করা। এটা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। আন্তর্জাতিক যতগুলো সনদ আছে যেগুলোতে সরকার স্বাক্ষর করেছে সে অনুসারে সকলের অধিকার নিশ্চিত করা এবং বাস্তবায়ন করা। শুধু আইন করলে হবে না এগুলোর সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা আশা করছি হাইকমিশনার মিশেল ব্যচেলেটের বাংলাদেশ সফর একটা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
তিনি আরও বলেন, সরকার বলছে যে, তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে না। কিন্তু আমরা দেখছি দেশে গুমের ঘটনা ঘটেছে। কেউ কেউ ফিরে এসেছে। কিন্তু তারা দুই একজন ফিরে এসেছে। যারা গুম হচ্ছেন তারা বলছে তারা গুম হয়েছেন কিন্তু মন্ত্রী বলছেন গুম হয়নি। শুধু গুম নয় যাদের অবৈধভাবে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, হাজতে রাখা হচ্ছে। তাদের কেউ কেউ মারাও গেছেন। যারা যারা গেছেন তারা তো হাজতের ভিতরেই মারা গেছেন সেটা তো সরকার অস্বীকার করতে পারে না। হাজতের ভিতর মারা যাওয়া সেটা তো সরকারের জন্য সাংঘাতিক নেতিবাচক দিক। সরকার তাদের হেফাজতে রেখে সঠিক চিকিৎসা করতে পারে না, চিকিৎসার জন্য মারা যাচ্ছে। সরকারের উচিত এটা নিয়ে তাদের ভাবা।
খুশি কবির বলেন, কলা বাগানের তেতুলিয়া মাঠের ঘটনার বেলায় আন্দোলনের কর্মী সৈয়দা রত্নাকে থানা ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আবার ছেড়েও দেওয়া হয়েছে। তাকে ছেড়ে দিয়েছে যখন বিরাট আন্দোলন হচ্ছে, থানার সামনে উদীচীরা বসে যখন অবস্থান নিয়েছে। যদি কিছু না হয়ে থাকে তাহলে তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হলো কেন। সরকার জনসম্মুখে কিছু বলছে না যে, আমরা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছি। কিন্তু বাস্তবতা হলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। জনসম্মুখে সেটা যুক্তরাষ্ট্র সরকারও বলে না, যুক্তরাজ্য সরকারও বলে না। ইউরোপের কোনো সরকারও বলে না। কোনো উন্নত দেশের সরকারও বলেছে না যে, তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে কিন্তু সেটা তারা মানছে। আমি আমার দেশকে চাই আমার সংবিধান অনুযায়ী আমার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল কর্মসূচি আওয়ামী লীগ ওয়ার্কার্স পার্টি ফজলে হোসেন বাদশা
মন্তব্য করুন
জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার কি বলেছে না বলেছে তাতে আমার কিছু যায় আসে না। ইউরোপীয় ইউনিয়ন কি বলে না বলে কিছু যায় আসে না। কেননা ইউরোপ, আমেরিকা এবং জাতিসংঘের যে দ্বিমুখী এবং দ্বিচারিতা তাদের এটা এখন দিবালোকের মত স্পষ্ট। কেননা আমরা দেখলাম, এদের কাছে রোহিঙ্গা শরণার্থী, শরণার্থী না। ফিলিস্তিনের শরণার্থী...
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশের সার্বক্ষণিক সদস্য ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার বাংলাদেশ সফরে এসেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে। আমাদের সাথে আলোচনা করে তিনি এসেছেন বিষয়টি এমন নয়। বাংলাদেশ সফরে এসে তিনি দেশের মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেন এমন কিছু ব্যক্তিদের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, সেটা তিনি করতেই পারেন। সেটা উনার স্বাধীনতা। উনি আলাদাভাবে আমাদের সময় দিয়েছেন। আমরা উনার সাথে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটকে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করব।
সামাজিক আন্দোলন কর্মী, নারীবাদী এবং মানবাধিকার কর্মী খুশি কবির বলেছেন, মানবাধিকার হলো অলঙ্ঘনীয় অধিকার। যা মানুষ তার জন্মগত ও অবিচ্ছেদ্যভাবেই পায়। বিশেষ করে যারা পিছিয়ে পড়ে আছেন, যারা সুবিধা বঞ্চিত আছেন, যারা কম সুযোগ সুবিধা পায়, তারা আদিবাসী হোক কিংবা ভূমিহীন হোক। দিনমজুর থেকে শুরু করে নারী, প্রতিবন্ধীসহ সকলের জন্য মানবাধিকার যে বিষয়গুলো রয়েছে সেগুলো যথার্থভাবে প্রতিপালন করা উচিত। সেটা শুধু আমাদের দেশে নয়, সারাবিশ্বে হওয়া উচিত। প্রত্যেকেই যেন সে তার অধিকার সঠিকভাবে পায়।