নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:০১ পিএম, ০৫ মে, ২০২১
আজ ৫ মে। ২০১৩ সালের এই দিনে হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বে ঢাকা ঘেড়াও কর্মসূচি এবং তাণ্ডব চালানো হয়েছিলো। সেই দিনটিকে বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য একটি কালো দিন। তবে হেফাজত শুধু ৫ মে নয়, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধীতা করে এবং সর্বশেষ স্বার্ধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধীতা করে সারাদেশে তারা তাণ্ডব চালায়। হেফাজতের ৫ মের তাণ্ডব এবং সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদের বিভিন্ন দিক নিয়ে বাংলা ইনসাইডার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মতামত নিয়ে বিশেষ আয়োজন করছে। পাঠকদের জন্য প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন বাংলা ইনসাইডারের নিজস্ব প্রতিবেদক জুয়েল খান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, হেফাজতে বাংলাদেশের রাজনীতি এবং শিক্ষা দুই জায়গাতেই আঘাত করেতে চেয়েছিলো। তারা নিজেদের মতো করে ইসলামী রাষ্ট্র বানিয়ে নারী নেতৃত্ব, নারীদের বোরখা পড়তে বাধ্য করা এবং নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে অনেক বড় বাধা সৃষ্টি করতে চেয়েছিলো কিন্তু শেখ হাসিনার ধর্মনিরপেক্ষ নীতি এবং রাজনৈতিক দূরদর্শীতার কারণে পারেন। তবে এবার মুজিববর্ষে নরেন্দ্র মেদির বাংলাদেশ সফলের বিরোধীতা করে তারা প্রমাণ করে দিলো তারা দেশে উন্নয়ন ও প্রতিবেশির সঙ্গে সসম্পর্ক চায় না। তাই আমি মনে করি তাণ্ডব চালানোর জন্য আইন অনুযায়ি হেফাজতের তাণ্ডবকারীদের বিচার হওয়ার দরকার।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবু উল আলম হানিফ বলেছেন, হেফাজতে ইসলাম সারাদেশে যে তাণ্ডব চালিয়েছে আইন অনুযায়ি তার বিচার হবে। অপরাধীদের ভিডিও ফুটেজ ও তথ্য প্রমাণসহ গ্রেফতার করা হচ্ছে এবং আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। যে অপরাধী তার শাস্তি হবেই। যারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ পুড়িয়ে দেয়, মানুষ হত্যা করে, থানা জ্বালিয়ে দেয় তাদেরকে ইসলামের হেফাজতকারী হিসেবে বিবেচনা করার সুযোগ নেই, এরা সন্ত্রাসী। আমরা চাই হেফাজতের নামে যারা নাশকতা করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা। হেফাজতের বিরুদ্ধে দুই ভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে, প্রথমত এরা যাতে ধর্মের নাম ব্যবহার করে নাশকতা না করতে পারে সেটি বন্ধ করতে হবে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। দ্বিতীয়ত হচ্ছে, সামাজিকভাবে জনগণকে সচেতন করতে হবে যে এরা আসলে ধর্ম ব্যবসায়ী তবে ধর্মপরায়ণ না। এরা ধর্মের আড়ালে রাজনীতি করে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করেত চায় এদেরকে জনগণের যেন কোনো ধরনের সহানুভূতি না থাকে সেজন্য জনগণকে সচেতন করতে হবে। এভাবে তাদেরকে সামাজিকভাবে কোণঠাসা করা দরকার।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেছেন, হেফাজতের মতো উগ্র মৌলবাদী সংগঠনের বাংলাদেশে কোনো প্রয়োজন নেই। ইসলামের ‘হেফাজত’ করবেন মহান আল্লাহ কিন্তু হেফাতের ইসলামের ‘হেফাজত’ করা দায়িত্ব না। তাই আমি মনে করি হেফাজতের ইসলামের কর্মকাণ্ড বন্ধ করা দরকার এই সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা নেই। এটা ধর্মকে ব্যবসা হিসেবে ব্যবহার করে নিজেদের আখের গোছায় আর এজন্য ঢাল হিসেবে কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে ব্যবহার করে। তাই সরকারের উচিৎ হবে কওমি মাদ্রাসায় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়া এবং সেখানে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা আর সেখানে রাজনীতি নিষিদ্ধ হলে ‘হেফাজতে ইসলাম’ নামক সংগঠনের কোনো প্রয়োজনীয়তা বাংলাদেশে থাকবে না।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের বলেছেন, হেফাজতের মতো একটি সংগঠন বাংলাদেশে থাকতে পারে না। যারা বাংলাদেশকে মানে না, জাতির পিতাকে মানে তাদের বাংলাদেশে সংগঠন করার অধিকার নেই। এতোদিন রাষ্ট্রের মদদে তারা সংগঠন করেছি কিন্তু ৫ মের পর মজিববর্ষের অনুষ্ঠানে তাণ্ডবের পর তাদের লাগাম টানা সময় এসেছে। ইতিমধ্যে সরকার ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যে অবস্থান নিয়েছে সেই অবস্থান ধরে রেখে ধর্ম ব্যবসায়ী এই অপশক্তিতে এখনই নির্মূল করতে হবে। এবার যদি এই গোষ্ঠিকে ছাড় দেয়া হয় তাহলে এটা অনেক বড় ভুল হবে আর এই ভুলের মাসুল শুধু রাজনীতিবিদরাই দেবে না পুরো বাংলাদেশের মানুষেকে দিতে হবে। সুতরাং এই মৌলবাদী, সন্ত্রাসী ও ধর্ম ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে এবার কোনোভাবেই ছাড় দেয়া যাবে না। এদেরকে কঠোর হস্তে দমন করত হবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এর মধ্য দিয়ে একটি স্পষ্ট হয়েছে যে, রাজনীতির মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রীর উত্থান হয়েছে এবং তিনি যে দল ও ত্যাগী নেতাদের ভালোবাসেন, তাদের প্রতি যে তার মমত্ববোধ সেটি প্রকাশ পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই সিদ্ধান্তের কারণে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা রাজনীতিতে নতুন আলোর সঞ্চার দেখছেন এবং তারা নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তারা আশ্বস্ত হয়েছেন যে, রাজনীতি রাজনীতিবিদদের কাছেই থাকবে।
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, কেউ যদি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় তাহলে তাকে যত দ্রুত সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে। ঘরে থাকলে ফ্যান ও এসি চালু করে তাকে ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। বেশি বেশি পানি, ফলের জুস পান করাতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির প্রেশার কমে যাওয়া, প্রস্রাব বন্ধ, পালস কমে যাওয়া বা অজ্ঞান হয়ে গেলে দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না বলেছেন, বুয়েটে শুধু ছাত্রলীগ ছাত্ররাজনীতি চায় না। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোও তো ছাত্ররাজনীতি চায়। তাহলে কেন শুধু এখন সামনে ছাত্রলীগের নাম সামনে আসছে। বুয়েটে যারা ছাত্ররাজনীতি চাচ্ছে তাদের প্রথম পরিচয় তারা বুয়েটের ছাত্র। আর বুয়েট কর্তৃপক্ষ যেটা করেছে যে, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করেছে, এটা বুয়েট প্রশাসন করতে পারে না। তাদের এখতিয়ার নেই। দেশের প্রচলিত মৌলিক আইন যেখানে আমাকে অধিকার দিয়েছে বুয়েট সেটা নিষিদ্ধ করতে পারে না। আইনে বলা হয়েছে, দেশের প্রচলিত আইন এবং নিয়মের মধ্যেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হবে। সেখানে বুয়েট তো বাংলাদেশের বাইরের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়। দেশের নিয়মেই তো বুয়েট চলার কথা। কিন্তু সেখানে বুয়েট প্রশাসন কীভাবে আমার মৌলিক অধিকার রহিত করে? আমার ক্যাম্পাসে আমি মুক্ত চিন্তায় ঘুরবো, আমি কথা বলবো, আমি স্লোগান দিবো, আমি বক্তৃতা দিবো, আমি পড়াশুনা করবো। এটা থেকে বুয়েট কর্তৃপক্ষ কীভাবে আমাকে বঞ্চিত করতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিআইডিএস যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটাই হচ্ছে প্রকৃত চিত্র। বিআইডিএসের গবেষণার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। কারণ তারা কতগুলো গবেষণা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করে যেগুলোর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। সুতরাং বিআইডিএস যেটা বলছে সেটার সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করছি না।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ঘরের দরজা ভেঙে বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কুমিল্লা শহরে নিজেদের বাড়িতে আত্মহত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। এ ধরনের আত্মহত্যার ঘটনা চলছে। আত্মহত্যা প্রতিরোধের উপায় কী অথবা আত্মহত্যা করতে চাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ মানুষটির প্রতি পরিবার, সমাজ, গণমাধ্যমের ভূমিকা কতটুকু—এসব নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে কথা বলেছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দীন আহমেদ। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের প্রতিবেদক খাদিজা ভৌমী।