নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ১৮ জুলাই, ২০২১
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেছেন, স্বাস্থ্যবিধির বাস্তবায়ন তো আমরা দেখতে পাচ্ছি। সবাইকে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। এটা সামাজিক আন্দোলনের মতো করতে হবে। শুধু নির্দেশনা দিয়ে বা আইনের কথা বলে তো মানুষ মানবে না তো। কোনো দেশের মানুষই মানে না। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করতে হবে।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে লকডাউন শিথিল, স্বাস্থ্যবিধি মানাতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলাসহ নানা বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেছেন অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের প্রধান বার্তা সম্পাদক মো. মাহমুদুল হাসান।
অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, ঈদের পরে স্বাভাবিকভাবেই আমরা মনে করি যে এই করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে। সংকট আরও বাড়বে। সংকটগুলি বাড়বে নানাবিধ। কারণ ইতিমধ্যে আমাদের বর্তমান পরিস্থিতিটা হচ্ছে গোটা বাংলাদেশে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে শহর থেকে গ্রামে সর্বত্রই এবং সেখানে বয়স নির্বিশেষে সবাই আক্রান্ত হচ্ছে। সেই হিসেবে গত সাত দিনের যে তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর এটা তো আমাদের নিয়ন্ত্রণের অনেক বাইরে চলে গেছে। এখন যদি আমরা জরুরীভাবে নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা না করি, আমরা যেহেতু ঈদে বাংলাদেশে পুরোপুরি মানুষকে চলাচল নিষিদ্ধ করা যায় না, যেটা বাস্তবতা। আর আমাদের বাংলাদেশের বাস্তব সক্ষমতা, আমাদের সার্বিক আর্থ সামাজিক প্রক্ষাপট অনুযায়ি বাস্তব সক্ষমতা এমন নাই যে পুরো জায়গাটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। আমাদের মতে কোনো দেশই পারে না। সেখানে এখন যেটা দরকার মানুষকে স্বাস্থ্যবিধিটাকে মানানোর জন্য আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করা উচিৎ।
তিনি বলেন, সেখানে আমরা যেটা দেখছি সেটা নিয়ে আমরা খুব সন্তোষ প্রকাশ করতে পারছি না। কারণ এখানে শুধুমাত্র আইন শৃঙ্খলা বাহিনী পারবে না তো। বারবার আমরা বলেছি জনপ্রতিনিধিরা মানুষের পাল্সটা বুঝতে পারে। মানুষের মনের ভাষাটা বুঝতে পারে। জনপ্রতিনিধি, স্বেচ্ছাসেবক, আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিটি গ্রামে গ্রামে আছে, প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আছে এই রকম নানান মানুষ যারা জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের সবাইকে মিলিয়ে এই সামাজিক আন্দোলনটি গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু গত দেড় বছরেও এই সামাজিক আন্দোলনটি হলো না। এই সামাজিক আন্দোলনটি খুব দরকার। আজকে যদি গ্রামে গ্রামে তরুণ, ছাত্র, যুবক এদেরকে যদি সম্পৃক্ত করা হতো সমন্বয়ের মধ্য দিয়ে তাহলে কিন্তু একটা জাগরণ হলে তখন কিন্তু সবাই সতর্ক হবে। যেমন আমি আমার গ্রামকে রক্ষা করবো। এটা আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার এলাকায় করি। আমি সবাইকে বলে দেই ঢাকা থেকে যারা যাবে তারা ঘরে থাকবে। তাদের ওপরে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। যদি কোনো সমস্যা হয় দ্রুত যেনো পরীক্ষা করানো হয়। প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাবে, হাসপাতালে নিয়ে যাবে। এই কাজটা করা কিন্তু সম্ভব। কিন্তু আমরা সেই ধরনের কোনো তৎপড়তা দেখতে পাচ্ছি না।
বিএসএমএমইউ এর এই সাবেক উপাচার্য বলেন, এখানে কেন জানি জনপ্রতিনিধিদের একেবারেই সম্পৃক্ত করা হচ্ছে না। সবস্তরের মানুষের যে প্রতিনিধিসুলভ প্রতিনিধিত্ব আছে সামাজিক শক্তির মাধ্যমে বা আমাদের অফিসিয়াল বিভিন্ন সংস্থাগুলো আছে সেগুলোকে সমন্বয় করে কাজটা করা দরকার। কারণ আমরা তো চিকিৎসা দিয়ে পারবো না। আমাদের চিকিৎসার যে সক্ষমতা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমরা কিন্তু সন্তুষ্ট। কিন্তু যখন রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাবে তখন তো আমাদের হাসপাতালের বিছানা বা আইসিইউ বা চিকিৎসার জন্য যে সরঞ্জামগুলো আছে সেগুলোতে তো হবে না। আমরা যদি ফিল্ড হাসপাতালও করি সেখানেও তো আমাদের সমস্যা হবে। চট করেই তো আমরা পারবো না। সেখানে আমাদের জনশক্তি লগবে, আমাদের সরঞ্জাম লাগবে। তারপরও আমরা বারবার বলছি প্রস্তুতি থাকতে হবে। রোগী বেড়ে গেলে তাদের তো চিকিৎসা দিতে হবে।
তিনি বলেন, এখানে পরিস্কারভাবে আমরা যেটা বলছি আমাদের পর্যবেক্ষণটা নিবিড় পর্যবেক্ষণ। ১. মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছে কিনা। না মানলে তাকে মানাতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ২. পরীক্ষাটা বাড়াতে হবে। কারণ যে সমস্ত মানুষকে পরীক্ষার মধ্যে আনার জন্য আমাদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য যাদেরকে বললাম এদেরকে নির্দেশ দিতে হবে। ৩. পরীক্ষা করে যাদের সংক্রমণ আছে তাদের দ্রুত আইসোলেশনে নিতে হবে। যাতে করে সামাজিকভাবে ছড়াতে না পারে। আর চিকিৎসার বিষয় তো আছেই। মূল কথা হলো আমরা স্বাস্থ্যবিধির বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে আমাদের মতো দেশ কিন্তু করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধির বাস্তবায়ন তো আমরা দেখতে পাচ্ছি। সবাইকে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। এটা সামাজিক আন্দোলনের মতো করতে হবে। শুধু নির্দেশনা দিয়ে বা আইনের কথা বলে তো মানুষ মানবে না তো। কোনো দেশের মানুষই মানে না। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করতে হবে।
অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, বাস্তবায়নের জায়গাটা আমরা খুব একটা দেখি না। এই জায়গাটা আমাদের বড় দুর্বলতা। স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়নের জন্য আমাদের একটি মেকানিজম ডেভেলপ করতে হবে। তার মাধ্যমেই আমাদের স্বাস্থ্যবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এখন টিকা বাংলাদেশে যে আসছে এটা কিন্তু যথেষ্ট। এটি নিয়ে আমরা স্বস্তিতে আছি। কিন্তু সময় তো লাগবে। এক দেড় বছর তো মিনিমাম লাগবে। আমরা অপেক্ষা করতে পারছি না। এখন তো আমাদের ঘরে আগুন ধরে গেছে। এখন এটি প্রতিরোধের জন্য স্বাস্থ্যবিধিই আমাদের একমাত্র অস্ত্র। সেটা যেনো যথাযথ সর্বত্র ব্যবহার করা হয়। যে চারটি কথা আমরা বলি, ১. বিধিসম্মতভাবে মাস্ক ব্যবহার করা। ২. শারীরিক দূরত্ব বজায়ে রাখা। ৩. প্রয়োজনে সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়া। ৪. সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। কোনো ধরনের ভিড় এলাউ করা যাবে না।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এর মধ্য দিয়ে একটি স্পষ্ট হয়েছে যে, রাজনীতির মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রীর উত্থান হয়েছে এবং তিনি যে দল ও ত্যাগী নেতাদের ভালোবাসেন, তাদের প্রতি যে তার মমত্ববোধ সেটি প্রকাশ পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই সিদ্ধান্তের কারণে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা রাজনীতিতে নতুন আলোর সঞ্চার দেখছেন এবং তারা নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তারা আশ্বস্ত হয়েছেন যে, রাজনীতি রাজনীতিবিদদের কাছেই থাকবে।
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, কেউ যদি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় তাহলে তাকে যত দ্রুত সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে। ঘরে থাকলে ফ্যান ও এসি চালু করে তাকে ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। বেশি বেশি পানি, ফলের জুস পান করাতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির প্রেশার কমে যাওয়া, প্রস্রাব বন্ধ, পালস কমে যাওয়া বা অজ্ঞান হয়ে গেলে দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না বলেছেন, বুয়েটে শুধু ছাত্রলীগ ছাত্ররাজনীতি চায় না। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোও তো ছাত্ররাজনীতি চায়। তাহলে কেন শুধু এখন সামনে ছাত্রলীগের নাম সামনে আসছে। বুয়েটে যারা ছাত্ররাজনীতি চাচ্ছে তাদের প্রথম পরিচয় তারা বুয়েটের ছাত্র। আর বুয়েট কর্তৃপক্ষ যেটা করেছে যে, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করেছে, এটা বুয়েট প্রশাসন করতে পারে না। তাদের এখতিয়ার নেই। দেশের প্রচলিত মৌলিক আইন যেখানে আমাকে অধিকার দিয়েছে বুয়েট সেটা নিষিদ্ধ করতে পারে না। আইনে বলা হয়েছে, দেশের প্রচলিত আইন এবং নিয়মের মধ্যেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হবে। সেখানে বুয়েট তো বাংলাদেশের বাইরের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়। দেশের নিয়মেই তো বুয়েট চলার কথা। কিন্তু সেখানে বুয়েট প্রশাসন কীভাবে আমার মৌলিক অধিকার রহিত করে? আমার ক্যাম্পাসে আমি মুক্ত চিন্তায় ঘুরবো, আমি কথা বলবো, আমি স্লোগান দিবো, আমি বক্তৃতা দিবো, আমি পড়াশুনা করবো। এটা থেকে বুয়েট কর্তৃপক্ষ কীভাবে আমাকে বঞ্চিত করতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিআইডিএস যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটাই হচ্ছে প্রকৃত চিত্র। বিআইডিএসের গবেষণার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। কারণ তারা কতগুলো গবেষণা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করে যেগুলোর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। সুতরাং বিআইডিএস যেটা বলছে সেটার সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করছি না।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ঘরের দরজা ভেঙে বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কুমিল্লা শহরে নিজেদের বাড়িতে আত্মহত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। এ ধরনের আত্মহত্যার ঘটনা চলছে। আত্মহত্যা প্রতিরোধের উপায় কী অথবা আত্মহত্যা করতে চাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ মানুষটির প্রতি পরিবার, সমাজ, গণমাধ্যমের ভূমিকা কতটুকু—এসব নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে কথা বলেছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দীন আহমেদ। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের প্রতিবেদক খাদিজা ভৌমী।