নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:০১ পিএম, ২২ জুলাই, ২০২১
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র কেন্দ্রীয় সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, এ ক্ষেত্রে আমি জনগণকে কোনো দোষ দেই না। সরকারের পক্ষ থেকে প্রথম দিক থেকে লকডাউন মানানোর বিষয়ে কোনো সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া হয় নি। সরকার মনে করেছে একটি সিদ্ধান্ত দিলেই মানুষ শুনবে। মনে করেছে প্রশাসনিক হুঁমকি-ধামকির মধ্য দিয়ে আমরা কাজ করবো। কিন্তু এটা যে হয় না সেটাই প্রমাণ হলো।
মানুষকে লকডাউন মানাতে করণীয় এবং ২৩ জুলাই থেকে লকডাউন শুরু হওয়ায় ঢাকায় মানুষের ফিরে আসার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে ফোনে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেছেন রুহিন হোসেন প্রিন্স। পাঠকদের জন্য রুহিন হোসেন প্রিন্স`র সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের প্রধান বার্তা সম্পাদক মো. মাহমুদুল হাসান।
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, প্রথমত আমরা যে, মানুষকে ঘরে থাকতে বললাম, এটার প্রধান কারণ হোল হলো বৈজ্ঞানিক। এটা আমরা বললাম কিন্তু মানুষের বাস্তবতা ও চেতনার স্তর কি? আমাদের দেশের মানুষের বাস্তবতা ও চেতনার স্তরের দুই তিনটা বিষয়। প্রথমে তাকে চিকিৎসা সচেতন হতে হবে। দ্বিতীয়ত, শুধু চিকিৎসা সচেতন হলে হবে না বেঁচে থাকার জন্য তার জীবিকার বিষয়ে নিশ্চয়তা পেতে হবে। তৃতীয়ত, আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ যে সংস্কৃতি ধারণ করে, সে মনে করে যা কপালে লেখা আছে তাই। তাহলে আপনাকে এই ধরনের লকডাউন সফল করতে গেলে প্রথমে মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতন করা, দুই নাম্বার তার জীবিকার নিশ্চয়তা দেওয়া এবং তিন নাম্বার হচ্ছে তার যে অজ্ঞতা সেটা দূর করার জন্য ব্যাপক প্রচার প্রচারণা করা।
তিনি বলেন, এই তিনটি কাজ করা জন্য আমাদের এই ঘনবসতীপূর্ণ দেশ লকডাউন সফল করতে গেলে আমাদের দরকার ছিল চিকিৎসা বিজ্ঞানের বাইরে সমাজ বিজ্ঞানের আশ্রয় নেয়া উচিৎ ছিল। সেটা নিতে গেলে আমাদের যে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার যে ইউনিটগুলো আছে, যার ন্যূনতম ইউনিট হলো বিভিন্ন ওয়ার্ড যেটা শহর থেকে গ্রাম পর্যায়ে আছে। আমরা প্রথম দিক থেকে বলে এসেছিলাম যে, কেন্দ্র থেকে এই ওয়ার্ড পর্যায়ে আমরা দলমত নির্বিশেষে রাজনৈতিক দলের কর্মী থেকে শুরু করে মসজিদের ইমাম সাহেবদের নিয়ে আমরা যদি একটি সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা যদি তাদেরকে প্রথমে কনভিন্স করে ওই এলাকায় একটা প্রচারের ঢেউ তুলতে পারতাম , মানুষকে যদি বুঝাতে পারতাম, মানুষের বাঁচার জন্য কি কারনে ঘরে থাকা প্রয়োজন, আমরা যদি প্রয়োজনীয় মানুষদের খাদ্য -অর্থ সহায়তার নিশ্চয়তা দিতে পারতাম, মানুষদের যদি চিকিৎসার সব নিশ্চয়তা দিতে পারতাম, একই সাথে তাকে যদি অজ্ঞতা দূর করার বিষয়ে আমরা ভূমিকা নিতে পারতাম তাহলেই কেবলমাত্র আমরা সফল হতে পারতাম।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র এই নেতা বলেন, এ ক্ষেত্রে আমি জনগণকে কোনো দোষ দেই না। সরকারের পক্ষ থেকে প্রথম দিক থেকে এ ধরনের কোনো সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া হয় নি। সরকার মনে করেছে একটি সিদ্ধান্ত দিলেই মানুষ শুনবে। মনে করেছে প্রশাসনিক হুঁমকি-ধামকির মধ্য দিয়ে আমরা কাজ করবো। কিন্তু এটা যে হয় না সেটাই প্রমাণ হলো। আমি আজকের এই দুঃসময়ে পাল্টা দোষারোপের কথা বলতে চাই না। এখনও আমাদের সামনে সময় আছে আমরা এই কাজগুলো যদি করতে পারি তাহলে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ, সব মানুষ শুনবে আমি এটা মনে করি না, অধিকাংশ মানুষকে আমরা শোনাতে পারবো এবং এই কাজটি সফল করতে পারবো। এর বাইরে, আমাদের কিছু মালিক আছেন, বিশেষ করে গার্মেন্টস মালিক এবং অন্যান্য কিছু আছেন। তারা কোনো নিয়ম কানুনের ধার ধারে না। তারা বলে, এই কয়দিন আমরা যদি বন্ধ রাখি আমাদের এত এত হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হবে। ঠিক আছে তোমাদের এতদিন তো ক্ষতি হয়নি। যে লাভ করেছ সেইটা দিয়ে অন্তত দয়া করে এই কয়দিন বন্ধ রাখো। তাতে দেশের অর্থনীতিতে এমন কোনো ক্ষতি হবে না। কিছু কিছু মালিকের হয়তো বিদেশে টাকা পাঠানো বন্ধ হবে। কিন্তু আমাদের বিদেশের যে রেমিটেন্স, দেশীয় উৎপাদন, আমাদের সাধারণ মানুষের কম খেয়ে বেঁচে থাকার যে অভ্যাস তাতে খুব ক্ষতি হবে না। বরং আমরা এই দুরাবস্থা থেকে বাঁচতে পারবো। ভবিষ্যতে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে আরো ভূমিকা নিতে পারব ।
২৩ জুলাই থেকে লকডাউনের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রথমত মানুষ কেনো ফিরে আসবে? সরকার যখন সিদ্ধান্ত নিলো ২৩ জুলাই থেকে লকডাউন। তার মানে যারা বাড়ি যাবে ঈদে তারা আর ফিরে আসবে না। এই ম্যাসেজটা তো পরিস্কার করতে হবে এবং সেই মানুষকে নিশ্চিত করতে হবে যে, ২৩ তারিখ থেকে যে লকডাউন, ১৪ দিন পরে তুমি যে কর্মস্থলে কাজ করছো তাদের বেতন ও চাকরির নিশ্চয়তা থাকলো এবং লকডাউন শেষে ফিরে আসার জন্য আমরা পর্যাপ্ত সময় দেবো এবং তোমার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। এই ম্যাসেজটা কিন্তু আমরা মানুষকে দিলাম না। এটা না দেওয়ার কারণে, ইতিমধ্যে শুনলাম, ব্যাংক নাকি খোলা থাকবে, ইতিমধ্যে শুনলাম কিছু গার্মেন্টস খোলা আছে এবং তারা খোলা রাখবে। অর্থাৎ মানুষকে আজকে হুড়াহুড়ি করে ঢাকায় আসতে আমরা আবার বাধ্য করছি। তার মানে এই ম্যাসেজটা যথাযথভাবে যায় নি। আমি মনে করি আমরা যেভাবে বলেছি, এটি শুধু আমাদের কথা নয়,বিশেষজ্ঞদেরও কথা । সেইভাবে ম্যাসেজটা দেওয়া দরকার। আরেকটা কাজ হচ্ছে, আমাদের দেশে কিছু মানুষ আছে যারা মিথ্যা প্রাচরে ওস্তাদ। আমার ধারণা এই প্রোপাগান্ডার একটা বড় দল, যারা মুনাফার জন্য শুধু শ্রমিকদেরকে ব্যবহার করে।এরা মানবিক না। তারা চাচ্ছে যেকোন ভাবে পারুক শ্রমিকরা চলে আসুক।তাহলে তারা কারখানা খোলা রেখে কাজ করাতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি মানুষকে বাড়ি পাঠিয়ে ঘরে থাকার কথা বলবেন একই সাথে ফিরে আসাতে বাধ্য করবেন, তাতো হয় না। আমরা যদি নিশ্চিত করতে। পারতাম, লকডাউনে এলাকায়, ঘরে থাকলে চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। এই কথাটুকু বললে অন্তত: হুড়াহুড়ি করে ঢাকায় বা শহরে আসবে না। এছাড়া প্রয়োজনীয় ও “দিন আনি দিন খাই “ মানুষদের খাদ্য-অর্থ সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে। গ্রামসহ এলাকায় এলাকায় করোনা পরীক্ষাসহ ভ্রাম্যমান টিকিৎসা সহায়তা টিম গঠন করতে হবে। সামগ্রিকভাবে এসব কাজ সমন্বিতভাবে করতে হবে। এটা সরকারকে করতে হবে ও সমন্বিত কার্যক্রমের উদ্যোগ নিতে হবে । তাহলে লকডাউন সফল করার বিষয়ে কিছুটা নিশ্চয়তা পাওয়া যেতে পারে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এর মধ্য দিয়ে একটি স্পষ্ট হয়েছে যে, রাজনীতির মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রীর উত্থান হয়েছে এবং তিনি যে দল ও ত্যাগী নেতাদের ভালোবাসেন, তাদের প্রতি যে তার মমত্ববোধ সেটি প্রকাশ পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই সিদ্ধান্তের কারণে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা রাজনীতিতে নতুন আলোর সঞ্চার দেখছেন এবং তারা নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তারা আশ্বস্ত হয়েছেন যে, রাজনীতি রাজনীতিবিদদের কাছেই থাকবে।
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, কেউ যদি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় তাহলে তাকে যত দ্রুত সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে। ঘরে থাকলে ফ্যান ও এসি চালু করে তাকে ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। বেশি বেশি পানি, ফলের জুস পান করাতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির প্রেশার কমে যাওয়া, প্রস্রাব বন্ধ, পালস কমে যাওয়া বা অজ্ঞান হয়ে গেলে দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না বলেছেন, বুয়েটে শুধু ছাত্রলীগ ছাত্ররাজনীতি চায় না। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোও তো ছাত্ররাজনীতি চায়। তাহলে কেন শুধু এখন সামনে ছাত্রলীগের নাম সামনে আসছে। বুয়েটে যারা ছাত্ররাজনীতি চাচ্ছে তাদের প্রথম পরিচয় তারা বুয়েটের ছাত্র। আর বুয়েট কর্তৃপক্ষ যেটা করেছে যে, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করেছে, এটা বুয়েট প্রশাসন করতে পারে না। তাদের এখতিয়ার নেই। দেশের প্রচলিত মৌলিক আইন যেখানে আমাকে অধিকার দিয়েছে বুয়েট সেটা নিষিদ্ধ করতে পারে না। আইনে বলা হয়েছে, দেশের প্রচলিত আইন এবং নিয়মের মধ্যেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হবে। সেখানে বুয়েট তো বাংলাদেশের বাইরের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়। দেশের নিয়মেই তো বুয়েট চলার কথা। কিন্তু সেখানে বুয়েট প্রশাসন কীভাবে আমার মৌলিক অধিকার রহিত করে? আমার ক্যাম্পাসে আমি মুক্ত চিন্তায় ঘুরবো, আমি কথা বলবো, আমি স্লোগান দিবো, আমি বক্তৃতা দিবো, আমি পড়াশুনা করবো। এটা থেকে বুয়েট কর্তৃপক্ষ কীভাবে আমাকে বঞ্চিত করতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিআইডিএস যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটাই হচ্ছে প্রকৃত চিত্র। বিআইডিএসের গবেষণার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। কারণ তারা কতগুলো গবেষণা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করে যেগুলোর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। সুতরাং বিআইডিএস যেটা বলছে সেটার সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করছি না।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ঘরের দরজা ভেঙে বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কুমিল্লা শহরে নিজেদের বাড়িতে আত্মহত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। এ ধরনের আত্মহত্যার ঘটনা চলছে। আত্মহত্যা প্রতিরোধের উপায় কী অথবা আত্মহত্যা করতে চাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ মানুষটির প্রতি পরিবার, সমাজ, গণমাধ্যমের ভূমিকা কতটুকু—এসব নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে কথা বলেছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দীন আহমেদ। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের প্রতিবেদক খাদিজা ভৌমী।