লিভিং ইনসাইড

বনের মধ্যে ১ ঘন্টা হাটলেই কমবে মানসিক চাপ, বলছে গবেষণা

প্রকাশ: ০৮:২৪ এএম, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২


Thumbnail বনের মধ্যে ১ ঘন্টা হাটলেই কমবে মানসিক চাপ, বলছে গবেষণা

গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, মাত্র এক ঘন্টা বনের মধ্যে হাঁটার ফলেই অংশগ্রহণকারীদের মস্তিষ্কের অ্যামিগডালা (মস্তিষ্কের যে অংশ ভয় ও দুশ্চিন্তার মতো আবেগগুলো নিয়ন্ত্রণ করে) অংশের ক্রিয়া কমে গিয়েছে।  কিন্তু শহুরে রাস্তায় হাঁটার সময় মস্তিষ্কের ঐ অংশটি সক্রিয়ই ছিল। এ থেকে বোঝা যায় যে, শহুরে পরিবেশ মানুষের মধ্যে বাড়তি দুশ্চিন্তার জন্ম দেয়।

মাত্র এক ঘণ্টা বনের মধ্যে হাঁটার ফলে মস্তিষ্কের অ্যামিগডালা (মস্তিষ্কের যে অংশ ভয় ও দুশ্চিন্তার মতো আবেগগুলো নিয়ন্ত্রণ করে) অংশের ক্রিয়া কমে যাওয়ার ফল পাওয়া গেছে এক গবেষণায়। অন্যদিকে, শহুরে রাস্তায় হাঁটার সময় মস্তিষ্কের ঐ অংশটি সক্রিয় থাকে, এতে স্পষ্ট যে- শহুরে পরিবেশ মানুষের মধ্যে বাড়তি দুশ্চিন্তার জন্ম দেয়।

গবেষকরা শহুরে ও গ্রামাঞ্চলের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য খুঁজে পেয়েছেন। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, শহুরে এলাকায় বসবাসরত মানুষেরা মানসিক অসুস্থতায় ভোগেন বেশি। ২০১২ সালের একটি মেটা-বিশ্লেষণে দেখা গেছে, শহুরে নাগরিকদের মধ্যে সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি।

এছাড়াও, ২০১১ সালে ন্যাচার জার্নালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মস্তিষ্কের যে অংশ ভয় ও দুশ্চিন্তার মতো আবেগগুলো নিয়ন্ত্রণ করে (অ্যামিগডালা), শহুরে নাগরিকদের মস্তিষ্কের সেই অংশটি বেশি সক্রিয়ভাবে কাজ করে। কিন্তু এর কারণটা কী? সম্প্রতি জার্মানির ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট ফর হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট-এ লিসে মিটনার গ্রুপ ফর এনভার্নমেন্টাল নিউরোসায়েন্সের একদল গবেষক তাদের নতুন গবেষণায় প্রকৃতির সাথে মানুষের সংযোগ এবং এর উপকারিতা নিয়ে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছেন।

শহুরে অঞ্চলের মানুষেরা প্রকৃতির সংস্পর্শে কম থাকেন বলেই তাদের মানসিক অসুস্থতা বেশি, নাকি বিভিন্ন স্বভাবের মানুষ বিভিন্ন পরিবেশে বাস করতে আগ্রহী, সেসব বিষয় তারা গবেষণার মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা করেছেন।

যেভাবে গবেষণাটি পরিচালিত হলো :
গবেষণার হাইপোথিসিস নির্ধারণের জন্য গবেষকরা ৬৩ জন সুস্থ-সবল অংশগ্রহণকারীকে বেছে নেন। তাদেরকে বলা হয় ১ ঘন্টা বনের মধ্যে হাঁটতে কিংবা কোলাহলপূর্ণ রাস্তায় এক ঘন্টা শপিং করতে। এই দুটি কাজের আগে একবার ও পরে একবার ফাংশনাল ম্যাগনেটিক রিজোন্যান্স ইমেজিং (এফএমএরআই) এর মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ পরীক্ষা করা হয়।

অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১৮ থেকে ৪৭ বছর বয়সী ২৯ জন মহিলা এবং ৩৪ জন পুরুষ  ছিল। তাদের গড় বয়স ছিল ২৭ বছর। প্রতিটি অংশগ্রহণকারীকে একটি এফএমআরআই স্ক্যান করা হয়েছিল। স্ক্যানের সময় তাদেরকে বেশ কয়েকটি টাস্ক দেওয়া হয়। এর মধ্যে দুটি টাস্কের কথা গবেষণায় আলোচনা করা হয়েছে।

প্রথম টাস্কের ক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারীদের ১৫ জন পুরুষ এবং ১৫ জন নারীর ভীত ও স্বাভাবিক অভিব্যক্তির ছবি দেখানো হয়েছিল। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে, অংশগ্রহণকারীদের একটি গাণিতিক টাস্ক দেওয়া হয়েছিল। সেটি সমাধানের জন্য যে সময় দেওয়া হয়েছিল, তা আসলে অংশগ্রহণকারীর সক্ষমতার বাইরে ছিল।

স্ক্যানিং শেষ করার পর ৩১ জনকে পাঠানো হয় বার্লিনের ব্যস্ততম রাস্তায় হাঁটতে এবং ৩২ জনকে পাঠানো হয় শহরের মধ্যেই অবস্থিত একটি বনে হাঁটতে। ২০১৯ সালের কোনো এক দিনে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টার মধ্যে এই হাঁটা-পর্ব সম্পন্ন করেন অংশগ্রহণকারীরা। বলে রাখা ভালো, দুটি দলেই নারী-পুরুষের সংখ্যা সমানভাবে ভাগ করে দেওয়া হয়।

অংশগ্রহণকারীদের সাথে ফোন দেওয়া হয়েছিল যাতে তারা সঠিক দিকনির্দেশনা বজায় রাখতে পারেন। একটি করে রিস্টব্যান্ড দেওয়া হয়েছিল তাদের ইলেক্ট্রোডার্মাল অ্যাক্টিভিটি (ইডিএ), হার্ট ভ্যারিয়েবিলিটি রেট ও হার্ট রেট পর্যবেক্ষণে রাখতে। হাঁটতে হাঁটতে ক্ষুধা পেলে খাওয়ার জন্য খাবারও প্যাকেট করে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ৩০ মিনিট পর অ্যালার্ম দেওয়া হয়েছিল যেন তারা আবার ফেরার পথে ঘুরে রওনা দিতে পারেন।

অংশগ্রহণকারীরা ফিরে আসার পর গবেষকরা তাদেরকে সেই একই টাস্ক করাতে থাকেন এবং সেই সময় আরেকটি এফএমআরআই স্ক্যান করেন।

গবেষণার ফলাফল : 
গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, মাত্র এক ঘন্টা বনের মধ্যে হাঁটার ফলেই অংশগ্রহণকারীদের মস্তিষ্কের অ্যামিগডালা অংশের ক্রিয়া কমে গিয়েছে। কিন্তু শহুরে রাস্তায় হাঁটার সময় মস্তিষ্কের ঐ অংশটি সক্রিয়ই ছিল, সেখানে দুশ্চিন্তার মাত্রা কমেনি বা বাড়েনি। এ থেকে বোঝা যায় যে, শহুরে পরিবেশ মানুষের মধ্যে বাড়তি দুশ্চিন্তার জন্ম দেয়।

বাস্তব জীবনে প্রয়োগ : 
ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউটের গবেষণাটির প্রধান লেখক সনজা সুডিম্যাক জানান, এ গবেষণার সূত্রে ধরে গবেষকরা এই সিদ্ধান্তে আসতে পেরেছেন যে প্রকৃতি-বনায়নের মধ্যে সময় কাটালে মানসিক অসুস্থতা থেকে দূরে থাকা যায়। ঠিক তেমনই, যত বেশি শহুরে জীবনে জড়িয়ে পড়বেন, মানসিক স্বাস্থ্যের উপর তত বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

সুডিম্যাক আশাবাদী যে এ ধরনের গবেষণাকে গুরুত্ব দিয়ে শহরের মধ্যে সবুজ বনায়নের পরিবেশ তৈরি করা হবে। তিনি বলেন, "যেহেতু বৈশ্বিক জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশিই শহরে থাকে এবং নগরায়ন দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই শহুরে বাসিন্দাদের জন্য এমন কিছু পার্ক বা বন থাকা জরুরি, যেখানে ঘুরেফিরে-হাঁটাহাঁটি করে তারা মানসিক চাপ কমাতে পারবেন।"

এক ঘণ্টার কম সময় হাঁটা কী উপকারী? 
যেহেতু গবেষণার কাজে অংশগ্রহণকারীদের এক ঘণ্টা হাঁটতে বলা হয়েছিল, তাহলে প্রশ্ন জাগতে পারে, এর চাইতে কম সময় হাঁটাও কার্যকরী কিনা?

তবে সুডিম্যাক জানিয়েছেন, তারা এক ঘন্টা সময়ই বেঁধে দিয়েছিলেন কারণ এর চেয়ে বেশি হাঁটলে কেউ কেউ ক্লান্ত হয়ে যেতে পারতো। তিনি বলেন, "প্রকৃতির মধ্যে ১৫ মিনিট হাঁটলেও স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল কমে যায়। তাই এক ঘণ্টার কম সময় হাটলেও অ্যামিগডালার ক্রিয়া কমে যায় কিনা তা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারলে দারুণ হবে।"

তবে অ্যালাবামার একজন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, কারেন স্টুয়ার্ট এ গবেষণার সাথে শতভাগ একমত হতে নারাজ। তিনি মনে করেছেন, মস্তিষ্কে দুশ্চিন্তা-চাপ কমানোর কাজটি প্রকৃতির সংস্পর্শ ছাড়াও, অন্যকিছুর সাথেও যুক্ত থাকতে পারে। তার ভাষ্যে, হাঁটার ফলে যে শারীরিক ব্যায়াম হচ্ছে, তার কারণেও মস্তিষ্কের অ্যামিগডালা অংশের ক্রিয়া কমে যেতে পারে।

সকল শ্রেণির মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করা :
ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউটের গবেষকরা স্বীকার করেছেন যে তাদের নমুনার মধ্যে কিছুটা সমস্যা আছে। অংশগ্রহণকারীদের বেশিরভাগই ছিলেন শিক্ষিত, আধুনিক ব্যক্তি। কিন্তু ভবিষ্যতে তারা এ গবেষণায় বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠী ও ভিন্ন ভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিবেশ থেকে উঠে আসা মানুষদের অন্তর্ভুক্ত করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে চান। সাংস্কৃতিক পরিবর্তন কিভাবে প্রকৃতির সাথে সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রেও পার্থক্য এনে দেয়, তা বুঝতে চান গবেষকরা।

এর পাশাপাশি, মস্তিষ্কের ওপর বিভিন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশ, যেমন: নদ-নদী, বোটানিক্যাল গার্ডেন, পাহাড় কী কী প্রভাব ফেলে তা নিয়েও গবেষণা করতে চান তারা। এছাড়া, প্রকৃতির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য, নির্দিষ্ট কোনো গন্ধ, শব্দ, রঙ মানুষের মস্তিষ্কের অ্যামিগডালা অংশে আলাদা আলাদা কী প্রভাব ফেলে সেটি নিয়েও কাজ করতে চান গবেষকরা।


বন   হাটা   মানসিক চাপ   কমবে   গবেষণা  


মন্তব্য করুন


লিভিং ইনসাইড

হিট স্ট্রোকের কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

এ বছর বাংলা নতুন বছরের প্রথম মাস অর্থাৎ বৈশাখ শুরুর আগেই হয়েছে দাবদাহ। ইতোমধ্যে দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। সারা দেশের উপর দিয়ে বয়ে তীব্র হিট ওয়েভ বা তাপদাহ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও তাপমাত্র বেড়েই চলেছে। তীব্র এই তাপদাহের প্রভাব পড়েছে জন জীবনেও। এতে অস্বস্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকেও চলমান এমন তাপপ্রবাহ নিয়ে কোন সুখবরই নেই। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে সামনের দিনগুলোতে তাপমাত্র আরও বাড়তে পারে বলে জানানো হয়েছে।  

এমন গরমে দীর্ঘ সময় রোদে থাকলে হিটস্ট্রোক হয়ে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে লোকজন। শিশু ও বয়স্কদের জন্য এই ঝুঁকি আরও বেশি।

ঢাকার আইসিডিডিআর’বি-এর তথ্য মতে, বাইরে তাপমাত্রা যাই হোক না কেন আমাদের শরীর স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাপমাত্রা প্রায় স্থির রাখতে সক্ষম। কিন্তু অতিরিক্ত গরমে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কাজ করা বন্ধ করে দিলে তখন তাকে হিট স্ট্রোক বলা হয়। এর ফলে ঘাম বন্ধ হয়ে গিয়ে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে শুরু করে।

হিটস্ট্রোকের লক্ষণ

শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বেড়ে যাওয়া, গরমে অচেতন হয়ে যাওয়া, মাথা ঘোরা, তীব্র মাথা ব্যথা, ঘাম কমে যাওয়া, ত্বক গরম ও শুষ্ক হয়ে যাওয়া, শারীরিক দুর্বলতা ও পেশিতে টান অনুভব করা, বমি হওয়া, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, শ্বাস কষ্ট, মানসিক বিভ্রম, খিঁচুনি মত লক্ষন গুলো দেখা দিতে পারে।

কারো হিটস্ট্রোক হলে বা অচেতন হয়ে গেলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে যে কাজগুলো করনে-

১. হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে নিয়ে যেতে হবে। রোগীর শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় কাপড় খুলে ফেলতে হবে।
২. রোগীর শরীরে বাতাস করতে হবে। কাপড় ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে গা মুছে ফেলতে হবে।
৩. শরীরের তাপমাত্রা কমাতে বগল, ঘাড়, পিঠ ও কুচকিতে আইসপ্যাক ব্যবহার করতে হবে।


হিট স্ট্রোক   লক্ষণ   চিকিৎসা  


মন্তব্য করুন


লিভিং ইনসাইড

তীব্র গরমে ঘর ঠাণ্ডা রাখার উপায়!

প্রকাশ: ০৮:২২ এএম, ২০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দেশের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। অনেকেই গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। দেশের উষ্ণতম মাস এপ্রিল। এর প্রমাণ আমরা পাচ্ছি প্রকৃতিতে। রাজধানীসহ সারা দেশে মৃদু থেকে মাঝারি, কোথাও কোথাও তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গ্রীষ্মের তাপদাহে যাদের ঘরে এয়ার কন্ডিশনার নেই তাদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। এসি কেবল ব্যয়বহুল নয়, অনেকেই আছেন যারা এসিতে অল্প সময় থাকলেই ঠাণ্ডা লেগে যায়। তাই প্রচণ্ড গরমে একটু শান্তির জন্য হলেও খুঁজতে হয় বিকল্প ব্যবস্থা। মার্কিন সংবাদ মাধ্যম বিসনেস ইনদাইডের এক প্রতিবেদনে এই গরমে কীভাবে নিজের ঘর এসি ছাড়াই ঠান্ডা রাখা যায়, সেই উপায় বলে দেয়া হয়েছে। তীব্র গরমে এসি ছাড়া ঘর ঠাণ্ডা রাখার উপায়গুলো জেনে নেয়া যাক--

সূর্যের তাপ: ঘর গরম হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে সূর্যালোক। এজন্য গরমে জানালা খোলা রাখলেও পর্দা টেনে রাখতে হবে, যাতে করে ঘরে আলো-বাতাস চলাচল করলেও সূর্যের তাপ কম আসে। প্লাস্টিকের ব্যাকিংসহ মাঝারি রংয়ের ‘ড্রেইপ’ বা পাতলা পর্দা ৩৩ শতাংশ তাপ কমায় এবং ঘরে প্রায় ৬০ শতাংশ পর্যন্ত তাপ কমাতে সহায়তা করে।

দেয়ালে হালকা রঙের ব্যবহা: রঙ যত গাঢ় হয়, তত আলো শোষিত হয় এবং যত হালকা হয়, তত আলো বেশি প্রতিফলিত হয়। ঘরে যত বেশি আলো শোষিত হয়, তত তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই ঘরের ভেতর যতটা সম্ভব হালকা রঙ ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। এতে করে দিনের বেলা ঘর তাপ ধরে রাখবে না। ফলে আলো চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘর ঠান্ডা হতে শুরু করবে।

গরম বাতাস বের করে দেয়া: ‘এক্সস্ট ফ্যান’ ঘরের গরম বাতাস বের করে দেয়। বাথরুম বা রান্না ঘরে এটা ব্যবহারে গরম ভাব কমায়। রাতে জানালা খোলা রাখার পাশাপাশি এক্সস্ট ফ্যান চালিয়ে রাখলে ঘর ঠাণ্ডা রাখতে সহায়তা করে।

আর্দ্র বাতাস:  ঘর ঠাণ্ডা রাখতে ফ্যানের পেছনে ভেজা কাপড়, ঠাণ্ডা বস্তু, এক বাটি বরফ বা ঠাণ্ডা পানির বোতল রাখলে ঠাণ্ডা বাতাস ছড়ায়, ফলে ঘর ঠান্ডা থাকে। এক্ষেত্রে টেবিল ফ্যান ব্যবহার করতে হবে।

ঘরে গাছ রাখুন: ঘরের ভেতর ছোট্ট একটি গাছ, যেমন ঘরের সৌন্দর্য বাড়ায়, তেমনি তাপমাত্রা কমাতেও সাহায্য করে। গাছ ঘরের ভেতর জমা হওয়া কার্বন ডাই-অক্সাইড শুষে নেয়, ফলে ঘরের তাপমাত্রা তুলনামূলক কম থাকে। মানিপ্ল্যান্ট, অ্যালোভেরা, অ্যারিকা পাম-জাতীয় গাছ ঘরের সৌন্দর্যবর্ধন ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, উভয় কাজেই বেশ উপকারী।

চুলা বন্ধ রাখা: চুলা গরম ঘরকে আরও উষ্ণ করে তোলে। তাই কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত চুলা বন্ধ করে দেয়া ভালো। এতে ঘর বাড়তি গরম হবে না।

অপ্রয়োজনীয় যন্ত্র বন্ধ রাখা: ডিসওয়াশার, ওয়াশিং মেশিং, ড্রায়ার এমনকি মোবাইল চার্জার ইত্যাদি ছোটখাট যন্ত্রও ঘরের তাপ মাত্রা বাড়ায়। তাই এসব যন্ত্র ব্যবহার হয়ে গেলে তা বন্ধ করে রাখা উচিত।

তাপমাত্রা কমে গেলে জানালা খোলা: দিনের বেলায় জানালার পর্দার টেনে রাখুন। এসময় বাতাস সবচেয়ে বেশি গরম থাকে। কিন্তু যখন বাইরের তাপমাত্রা ভেতরের বাতাসের চেয়ে কম থাকে, তখন জানালার পর্দা সরিয়ে দিলে ঘরে ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহিত হয়  এবং ঠাণ্ডা হয়ে আসে।

 


তীব্র গরম   ঘর ঠাণ্ডা   রাখার উপায়  


মন্তব্য করুন


লিভিং ইনসাইড

ঈদের আগে ত্বকের যত্ন

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ০৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ঈদে সুন্দর ও কোমল ত্বক পেতে কয়েক দিন আগে থেকে যত্ন নিতে হবে।

ঈদের কেনাকাটা শুরু হয়ে গেছে। উৎসবকে বরণ করে নিতে সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছে। উৎসবের দিন নিজেকে একটু সুন্দর দেখতে কে না চায়। ঈদের আগে বাড়তি কাজের চাপ থাকে।

আর সেই ক্লান্তির ছাপ পড়ে চেহারায়। এক দিন ত্বকের যত্ন নিলে তার সুফল সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যায় না। তাই ঈদের বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই নিয়মিত নিতে হবে ত্বকের যত্ন। তাহলে চোখের নিচে কালো দাগ, ত্বকে কালো ছোপ, মালিন্য কিছুটা হলেও কমে আসবে।

আপনার ত্বকের ধরন কেমন সেটির ওপর নির্ভর করে আপনার পরিচর্যার ধরনটি কেমন হবে।

তৈলাক্ত ত্বকের পরিচর্যা

তৈলাক্ত ত্বকের পরিচর্যায় একটু বাড়তি নজর দিতে হয়। শসা তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেশ ভালো কাজ করে। মুখের বাড়তি তেলতেলে ভাব কমাতে শসার রস বেশ কার্যকর।

শসার রস দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে পারেন। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে বেসন ও টক দই বেশ কার্যকর। এক চা চামচ বেসন, সামান্য টক দই ও সামান্য হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। মুখে লাগিয়ে আধাঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন। শুষ্ক ত্বকের পরিচর্যায় একটু বাড়তি নজর দিতে হয়।

কারণ এ ধরনের ত্বক সহজেই খসখসে হয়ে যায়, ফেটে যায়। শুষ্ক ত্বকে মূলত তেলগ্রন্থি কম থাকে। শুষ্ক ত্বকের জন্য সব সময় খুব ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হয়। শুষ্ক ত্বকে মধু, অ্যালোভেরা দারুণ কাজ করে। অ্যালোভেরা আর মধু একসঙ্গে মিশিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন। এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বক উজ্জ্বল ও নরম হয়।

স্বাভাবিক ত্বক

যাঁদের স্বাভাবিক ত্বক, তাঁরা বেশ ভাগ্যবান বলতে হবে। কারণ খুব বেশি বাড়তি যত্নের দরকার পড়ে না এই ত্বক সুন্দর রাখতে। এই ত্বক এমনিতেই মসৃণ ও সুন্দর থাকে। তাই ভালো মানের কোনো ফেসওয়াশ দিয়ে প্রতিদিন মুখ পরিষ্কার করুন। নিয়মমাফিক ত্বক ম্যাসাজ করতে পারেন। এতে ত্বকের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। স্বাভাবিক ত্বকে ঘরোয়া যেকোনো প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। মসুর ডাল আর হলুদ বেটে মুখে লাগিয়ে পরিষ্কার করতে পারেন। পেঁপে, মধু, আলু যেকোনো কিছুর প্যাক বানিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। এতে ত্বক সুস্থ ও সুন্দর থাকবে।

ত্বকের যত্নে সাধারণ কিছু টিপস

যেহেতু এখন গরমকাল, তাই বাইরে বের হলে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ভালো মানের সানস্ক্রিন অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। বাইরে বের হলে অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করবেন। অতিরিক্ত ঘেমে গেলে টিস্যু দিয়ে মুছে ফেলুন। বাইরে থেকে আসার পর সবার আগে মুখ পরিষ্কার করুন। ভালো ময়েশ্চারাইজার লাগান। সামনে যেহেতু ঈদ, তাই আগেভাগেই পেডিকিউর, মেনিকিউর করে রাখুন। শরীরের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ব্লিচ করতে পারেন। ত্বকের মরা কোষ দূর করতে নিয়মিত স্ক্রাব করুন। সর্বোপরি ত্বকের সৌন্দর্য ও সুস্থতার জন্য অনেক পানি খেতে হবে। আর হেলদি একটা ডায়েট প্ল্যান থাকতে হবে।  ঈদের আগে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে দুটি প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।

হলুদের প্যাক

ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য হলুদ বেশ পরিচিত একটি নাম। এর ব্যবহার সেই প্রাচীনকাল থেকেই। হলুদ রোদে পোড়া দাগ দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এক চা চামচ হলুদের গুঁড়া, দুই চা চামচ লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

টমেটো প্যাক

টমেটোতে লাইকোপিন নামে এক ধরনের উপাদান রয়েছে, যা ত্বকের পিগমেনশন কমিয়ে উজ্জ্বলতা বাড়ায়। এটি ত্বকের ডেড সেল, রোদে পোড়া দাগ দূর করতে সাহায্য করে থাকে। টমেটো ও লেবুর রস একসঙ্গে ব্লেন্ড করে মুখে লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে।


ঈদ   ত্বক   যত্ন  


মন্তব্য করুন


লিভিং ইনসাইড

বিচ্ছেদের কত দিন পরে নতুন সম্পর্কে জড়াবেন!

প্রকাশ: ০৮:০২ এএম, ০৩ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আমার দেখা চমৎকার একটা জুটি ছিল আলো-আকাশ। তাদের প্রেম ছিল সবার প্রেমের উদাহরণ। এত ভালোবাসার পরও তারা থাকতে পারেনি এক সাথে। হঠাৎ একদিন জানা গেল তাদের আর সম্পর্কে নেই। যারা একসময় সবার প্রেমের উদাহরণ ছিলো, আজ তাদের বিচ্ছেদে দেখে সবাই একটু অবাক। তবে সম্পর্ক শেষ হওয়া নিয়ে কেউ কাউকে দোষারোপ করছে না। কিন্তু জীবন তো একা কাটানো সম্ভব নয়। তাই নতুন সঙ্গী এসে জোটে তাদের জীবনেও।

গল্পটি কাল্পনিক হলেও এমন উদাহরণও অনেক পাওয়া যাবে। কিন্তু দীর্ঘদিনের সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে নতুন কোনো সম্পর্ক শুরু করার আগে কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরি-

ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করুন

মন চাইলো আর প্রেমে জড়িয়ে গেলাম- এমন মানসিকতা দূরে রাখুন। এখন কিছু দিন শুধু নিজেকে সময় দিন, নিজেকে ভালোবাসুন। প্রেম করার মানসিকতা এখন আর রাখবেন না। নতুন সম্পর্কে জড়াতে চাইলে কমপক্ষে ১ বছর সময় ননিতে হবে। তবেই নিজের আগের ভুল কিংবা অভিজ্ঞতা আপনাকে আর পিছু তারা করবে না। আর একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখবেন, যে পুরনোজনের জায়গায় নতুনজনকে রিপ্লেস করবেন। তাহলে আপনি এবং আপনার সঙ্গী ভালো থাকবেন।

তুলনা করবেন না

মনে রাখবেন প্রত্যেক মানুষই আলাদা। একজনের থেকে অন্যজনের স্বভাব, আচরণও আলাদা হবে এটাই স্বাভাবিক। আগেরজন এত ভালো ছিল, দামি উপহার দিত বা অনেক কথা না বললেই বুঝে যেত এসব ভুল তুলনা টানবেন না। প্রথমেই মাথা থেকে এসব বের করে দিন। এছাড়াও স্যালারি নিয়েও কোনো তুলনা টানবেন না।

সময় দিন নিজেকে

হুট করে প্রেম কিংবা রাগারাগি করা যাবে না। সব কিছুতেই সময় নিতে হবে। সময়ে সাথে সাথে অনেককিছু বদলঅবে যেটা অবশ্যই আপনার জন্য ভালো বিষয় হবে। এতে করে একে অপরকে বুঝুতে সহজ হবে এবং সহজেই এই সম্পর্ক খারাপ হবে না। আর একটি বিষয় মাথায় রাখবেন অতিরিক্ত ঘাঁটাবেন না। নিজেও ভাবার মতো সময় নিন। অন্যকেও দিন।

পুরনোর কথা ভাবা যাবে না

পুরনোর কাছে ফিরে যাবেন কিনা এই নিয়ে কোনো দোটানা রাখবেন না। মনে রাখবেন স্বেচ্ছায় এবং দুজনের সিদ্ধান্তেই আপনারা সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এসেছেন। যেখানে আছেন সেখানেই মন দিন।

ইতিবাচক ভাবনা রাখুন

হতাশা, দুঃখ, কান্না মনখারাপ একদম নয়। নতুনজনের কাছে সবসময় নিজের হতাশার কথা বলবেন না। ভালো সময় কাটান। গল্প করুন। ইতিবাচক ভাবনা বজায় রাখার চেষ্টা করুন।
 



প্রেম   বিচ্ছেদ  


মন্তব্য করুন


লিভিং ইনসাইড

নারীদের সন্তান জন্মদানের হার কমতে শুরু করেছে: গবেষণা

প্রকাশ: ০৯:৩২ এএম, ২৪ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্বে নারীদের সন্তান জন্মদানের ক্ষমতার হার কমতে শুরু করেছে। সামনের দিনগুলোতে এই হার এতোটাই কমবে যে চলতি শতকের শেষ নাগাদ জনসংখ্যার র্নিধারিত মাত্রা বজায় রাখার কঠিন হবে। অবশ্য বিশ্বের বেশিরভাগ জীবিত শিশুর জন্ম দরিদ্র দেশগুলোতে হবে। বুধবার (২০ মার্চ) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্সের সিনিয়র গবেষক স্টেইন এমিল ভলসেট এক বিবৃতিতে বলেন, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার জন্য বেশি সংবেদনশীল নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে কেন্দ্রীভূত হওয়ার সাথে এই প্রবণতাটি সারা বিশ্বে ‘শিশু বুম’ এবং ‘শিশু হ্রাস’ বিভাজনের দিকে নিয়ে যাবে।

দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত সমীক্ষার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ২০৪টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে ১৫৫টিতে বা ৭৬ শতাংশে ২০৫০ সালের মধ্যে জনসংখ্যা প্রতিস্থাপনের স্তরের নীচে উর্বরতার হার থাকবে। ২১০০ সালের মধ্যে এটি ১৯৮টি বা ৯৭ শতাংশে উন্নীত হবে।

চলতি শতাব্দি শেষ নাগাদ তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি শিশুর জন্ম নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ঘটবে, যার অর্ধেকেরও বেশি আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে।

পরিসংখ্যানে বলছে, ১৯৫০ সালে যেখানে প্রতি নারীর শিশু জন্মদান ক্ষমতা বা উর্বরতার হার ছিল ৫, সেখানে ২০২১ সালে এই সংখ্যা ২ দশমিক ২-এ নেমে এসেছে। ২০২১ সাল নাগাদ ১১০টি দেশ ও অঞ্চলে প্রতি নারীর জন্য জনসংখ্যা প্রতিস্থাপনের হার ছিল ২ দশমিক ১টি শিশু।


গবেষণা   দ্য ল্যানস   গর্ভবতী   শিশু জন্ম  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন