লিভিং ইনসাইড

আপনার শিশু কি স্কুলে যেতে অনাগ্রহী?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ২১ জানুয়ারী, ২০১৯


Thumbnail

মেয়ে নেহাকে নিয়ে রেহনুমা খুব দুশ্চিন্তায় ভুগছে আজকাল। মাত্র ক্লাস ওয়ানে উঠলো নেহা, ভালো একটি স্কুলে চান্সও পেয়েছে। পড়ালেখায়ও সে যথেষ্ট ভালো। তাহলে দুশ্চিন্তা কি নিয়ে তাই তো? দুশ্চিন্তা হলো মেয়ে সকালে উঠে স্কুলে যেতে চায় না একদমই। বাবা-মা সবাই মিলে ঘুম থেকে ডেকে তুলতে পারে না। স্কুলে না যাওয়ার জন্য বিছানাতেই ঝিম ধরে শুয়ে থাকে। কখনো কখনো উঠে বসে কান্নাকাটিও করে। বাবা-মা কখনো বুঝায়, প্রশ্ন করে, কখনো বকাঝকাও করে। কিন্তু সমস্যা কোথায় সেটা রেহনুমা বা তার স্বামী কেউই বুঝে উঠতে পারে না। নেহা স্কুলের বিষয়ে কোনো কথাও বলে না, স্কুলের কথা সে এড়িয়েও যায়।

এটাকেই মূলত স্কুলভীতি বলে। এই সমস্যা অনেক শিশুর মধ্যে রয়েছে। নতুন স্কুলে ভর্তি বা স্কুলের নানা পরিবেশে খাপ খাওয়াতে না পেরে শিশুরা স্কুলের প্রতি কোনো আগ্রহবোধ করেনা। এর পেছনে থাকতে পারে নানাবিধ কারণ। তাই প্রথমেই এর কারণ খুঁজে বের করুন, তারপর পরামর্শ নিন-

কেন যেতে চাচ্ছে না স্কুলে

১. ছোট শিশুরা তাদের মা-বাবা ও তার বাসার নিরাপদ একটা আশ্রয় থেকে বেরিয়েই মূলত প্রতিদিন স্কুলে যায়। ভাবলেই বোঝা যায় এটা বেশ কঠিন। এরকম আলাদা বা অপরিচিত পরিবেশে অন্য শিশুদের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে সমস্যা হয়, কখনোবা অনেক সময় লেগে যায়। এতে সে স্কুলে যেতে চায় না।

২. প্রায়ই দেখা যায় আপনার সন্তানটি তার সহপাঠী অথবা অন্য ক্লাসের শিক্ষার্থীদের টিপ্পনি, মানসিক, শারীরিক আঘাতের শিকার হচ্ছে। সে হয়ত আপনাকে কখনো বলছে, কখনোবা সেটি লুকিয়ে যাচ্ছে। এতে করে শিশুটি স্কুলে অনিরাপদবোধ করছে। ফলে ভীতি আর অনীহার কারণে যেতে চায় না স্কুলে।

৩. স্কুলে যাওয়ার পথে নানা প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়ে অনেক মেয়েশিশু স্কুলে যেতে চায় না। নিজের ক্লাসে সহকর্মী বা শিক্ষক যদি বাজে ব্যবহার করে তাহলে শিশুরা স্কুলে যেতে চায় না। অনেক লাজুক ছেলেমেয়েরাও স্কুলে যেতে বেশ ভয় পায়।

৪. আপনার সন্তানের যদি ক্লাসের পড়া বুঝতে যদি কঠিন লাগে বা শিক্ষকের সহযোগিতা যদি না পায় তাহলে তার স্কুলে যেতে একদমই ভালো লাগে না। অনেক সময় দেখা যায় শ্রেণীশিক্ষক যদি কড়া হয়, তাহলেও তারা স্কুলে যেতে গড়িমসি করে।

৫. স্কুলে শিক্ষার্থীদের শারীরিক শাস্তি একেবারেই নিষিদ্ধ। সরকার আইন করে এই ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করেছে। কিন্তু এখনও অনেক স্কুলে বিভিন্ন শাস্তি দেওয়া হয়। এটা শিশু এবং অভিভাবক- উভয়ের জন্যই আতঙ্কজনক। ফলে শিশুরা এই শাস্তির ভয়ে স্কুলমুখো হতে চায় না।

৬. পারিবারিক অশান্তিও স্কুল অনীহার অন্যতম কারণ। বাবা-মায়ের ঝগড়া, অন্যান্য পারিবারিক বিবাদ শিশুর মনের মধ্যে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। পরিবারের অশান্তি থেকেই শিশুর মনে চলে আসে নিরাপত্তার অভাব। সে তার স্কুলে যেতে বিরক্ত, অসহ্য লাগে।

৭. স্কুলে তো একটা শিশু শুধু পড়াশুনাই করতে যায়না, তার খেলাধুলাসহ শারীরিক ও মানসিক বিকাশ সাধনের বিভিন্ন সৃজনশীল কাজ, শিক্ষাসফর তার প্রতিভাকে বিকশিত করে তোলে। স্কুলে খেলার মাঠ বা অন্যান্য সুবিধাগুলো না থাকলে সে স্কুলের প্রতি আগ্রহবোধ করে না। সে শুধু পড়াশুনার চাপে হিমশিম খেতে চায়।

কী করবেন তাহলে

১. সবার আগে আপনার শিশুকে স্কুলের প্রতি আগ্রহী আর কৌতুহলী করে তুলতে হবে। প্রথমে অল্প অল্প করে তাকে স্কুলে নিয়ে যান। আস্তে আস্তে সময় বাড়িয়ে অভ্যস্ত করে ফেলুন।

২. আপনার সন্তান লাজুক স্বভাবের হলে শিশুরা নিজেদের মধ্যে গুটিয়ে থাকে। তাই তার সঙ্গে অভিভাবক হিসেবে সহজ হওয়ার চেষ্টা করুন। তার সঙ্গে বেশি করে কথা বলুন, ফ্রি হওয়ার চেষ্টা করুন। স্কুলে কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন করুন। তাকে বেশি করে সময় দিয়ে তাকে সহজ করুন, লজ্জা কমান।

৩. স্কুলে যেতে না চাইলে তাকে জোরাজুরি করবেন না। সময় নিন। আর ভুলেও কখনো স্কুলে যাওয়ার ব্যাপারে কোনোরকম চাপাচাপি করবেন, কোনো প্রলোভনও দেখাবেন না। এতে তার সুশিক্ষাটা হবে না।  

৪. শিশুকে স্কুলের ব্যাপারে উৎসাহিত করে তোলার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে তার স্কুল শিক্ষকের সঙ্গে পরামর্শ করতে পারেন। সে কেন স্কুলে যেতে চায় না, সে ব্যাপারে সবসময় জানার চেষ্টা চালিয়ে যান।

৫. কেন স্কুলে যেতে চাচ্ছো না- সেটা নিয়ে অকারণে সন্তানকে বকাঝকা করবেন না। আশেপাশে সমবয়সি কোনো শিশু বা বন্ধুদের সঙ্গে তুলনা করতে যাবেন না। এতে সে নিজেকে আরও ছোট মনে করবে, অপমানিত বোধ করবে।

৬. শিশুর শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক সুস্থতার দিকে সবসময় নজর রাখুন। তাকে আশ্বস্ত করুন। স্কুল সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা দিন। সন্তানকে প্রশ্ন করে বুঝুন যে সে হীনম্মন্যতার শিকার কিনা। তার মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যান পুরোদমে।

৭. আর সমস্যার যদি কোনো সমাধান না পান, প্রয়োজনে স্কুল পরিবর্তনের মাধ্যমে শেষ চেষ্টা করে দেখতে পারেন।

 

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ



মন্তব্য করুন


লিভিং ইনসাইড

মস্তিস্কই আপনার শনাক্তকারী!

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ১৪ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

প্রাণিজগতের মধ্যে মানব মস্তিষ্কই সবচেয়ে জটিল। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মস্তিষ্কের আয়তন পুরুষের প্রায় ১৫০০ সিসি ও মহিলাদের প্রায় ১৩০০ সিসি এবং মানব ভ্রূণের প্রাথমিক অবস্থায় মস্তিষ্ক প্রধান তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত থাকে। পূর্ণাঙ্গ মানুষে এটি আরও জটিল রূপ ধারণ করে এবং বিভিন্ন অংশে বিভক্ত হয়।

কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স ২০১৯ এর তথ্য মতে, মানুষের মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতা কমপক্ষে ২.৫ পেটাবাইট অথবা ১ মিলিয়ন বা ১০ লক্ষ গিগাবাইট।

দেখা যায়, সাধারণভাবে, মানুষ কিছু মানসিক ঘটনা-যেমন বিষণ্নতা এবং স্পর্শের মাধ্যমে তাপমাত্রা শনাক্ত করার ক্ষমতা - অন্যদের তুলনায় বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা করার মতো আরও বেশি কার্যকর..! যেমন গর্ব অনুভব করা বা প্রথম দর্শনে প্রেমের অভিজ্ঞতা।

তবে, দ্য ডেভিলস ডিকশনারি ইন, অ্যামব্রোস বীরস মনকে "মস্তিষ্কের গোপন বিষয়টির একটি রহস্যময় রূপ" বলে বর্ণনা করেছেন, যা নিজেকে বুঝা "ইহা নিজেকে চেনা, অর্থাত নিজেকে বুঝা ছাড়া আর কিছু না" বা বোঝার নিরর্থক প্রচেষ্টা নিয়ে জড়িত।

বায়ার্সের ১৯১১ সালের প্রকাশের পরে দীর্ঘসময় ধরে আত্মবিজ্ঞান সীমা সম্পর্কে প্রশ্ন উঠেছে। কোন এক কোরা ব্যবহারকারী জিজ্ঞেস করে: "মানব মস্তিষ্ক কি নিজেকে বুঝতে যথেষ্ট বুদ্ধিমান?"

দ্য অনিয়ানের একটি বিদ্রুপমূলক শিরোনাম রিপোর্ট করেছে যে, মনোবিজ্ঞানটি স্থগিত হয়েছে কারণ "ক্লান্ত গবেষকরা বলেছিলেন যে মন সম্ভবত নিজেকে অধ্যয়ন করতে পারে না।"

কিন্তু ক্রমবর্ধমান প্রমাণ দেখায় যে মস্তিষ্কে মন আপনার মস্তিষ্কের শারীরিক কর্মকাণ্ডের বাইরে চলে গেছে। তাই সতর্ক হোন। নিজেকে বুঝার চেষ্টা করুন। নিজেকে নিজের আয়েত্বে রাখুন। আপনার জীবনটা আপনারই।

মনোবিজ্ঞানে মস্তিস্কের শনাক্ত করার জন্য অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে গবেষণা, পর্যবেক্ষণ এবং ইমেজিং স্ক্যানিং সহ কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। MRI (Magnetic Resonance Imaging), CT scan (Computed Tomography), EEG (Electroencephalogram), PET scan (Positron Emission Tomography) ইত্যাদি পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করা হয় মস্তিস্কের অবস্থান ও কার্যাবলী নির্ধারণে। এই স্ক্যানিং পদ্ধতিগুলি মস্তিস্কের আনুমানিক অবস্থান এবং কার্যাবলীর উপর আলোকপাত করে এবং মস্তিস্কের বিভিন্ন অংশের ক্ষমতা এবং সংযোগস্থলের কার্যক্ষমতা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে।

এছাড়াও মানুষ মস্তিস্কের কথা বা মনোবিজ্ঞানিক ধারণা শোনা বা বোঝা সম্পর্কে সাধারণভাবে, মনোবিজ্ঞানের সম্পর্কে সাক্ষাৎকার করা, সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর দেখা, মনোবিজ্ঞান নিয়ে পুস্তিকা পড়া, বিভিন্ন মাধ্যমে প্রশ্ন করা এবং মনোবিজ্ঞানে সম্পর্কিত মাধ্যমের মাধ্যমে তথ্য প্রাপ্ত করা হতে পারে। আরও পেশাদার উপায়ে, যেমন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক বা পরামর্শদাতা মানুষকে মস্তিস্কের বিষয়ে সাথে কাজ করা হতে পারে।


মস্তিস্ক   মনোবিজ্ঞানে   কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স   প্রাণিজগত  


মন্তব্য করুন


লিভিং ইনসাইড

আপনি বদলান বিপরীতের মানুষ নয়

প্রকাশ: ০৮:৩৫ এএম, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

মানুষের পরিবর্তন হওয়া নিয়ে আমরা প্রতিনিয়তই শুনতে পাই। বছরের পর বছর যেভাবে কাউকে দেখছেন, হয়ত হঠাৎ করেই তিনি হয়ে যেতে পারেন ‘অচেনা’। আচরণ থেকে শুরু করে বদলে যায় অনেক কিছুই। মানুষের এই হঠাৎ ‘বদল’ বিস্ময়কর হলেও বদলে যায় মানুষের চলা, কিংবা কথাবলার ধরন বা তার ব্যবহার।

বিজ্ঞান বলছে, বদলে যাওয়াটা কোনো সহজ কিছু নয়। এখনকার ‘অচেনা’ মানুষটি হয়ত তার নিজ স্বভাবেই আছেন, তাকে চেনার ভুলটি করছেন আপনি নিজেই।

মানুষের বদলানোর কাজটি কিছু কিছু ক্ষেত্রে সফল করতে দরকার ব্যক্তির সচেতন চেষ্টা। খুব কম মানুষই পারেন এই কাজটি, ফলে বেশিরভাগ মানুষ জীবন কাটিয়ে দেন একমুখী বৈশিষ্ট্য নিয়ে। তাদের সেই সহজাত বৈশিষ্ট্যকে অনেক সময় আমরা চিনতে ভুল করি বলেই পরে ভাবি, ‘মানুষটি বদলে গেছে’।

মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, মাঝে মাঝে বদলে গেলে বাস্তবতাও উপলব্ধি করা যেতে পারে। আপনি বুঝে যাবেন আর ওইসব মানুষদের দেখতে পাবেন যারা কখনোই আপনার কাছের মানুষ ছিলো না। অথচ তারাই সবসময় দাবী করে তারা আপনার খুব কাছের। একদম আত্মার আত্মীয়।

আপনি চাইলেও তাদের থেকে দূরত্ব সৃষ্টি করতে পারবেন না কারণ আপনি তাদের মত না। আপনি একদম আলাদা। এটা বলা যায় না যে আপনি খুব ভালো মানুষ কিন্তু আপনি সত্যিই আলাদা। আপনি তাদের মূল্যায়ন করেন মানুষ হিসেবে কিন্তু তারা আপনাকে মূল্যায়ন করবে যন্ত্রের মত করে। অনেকটা পুতুলও ভাবতে পারেন। 

সর্বোপরি, মানুষ প্রিয়জনদের কাছে প্রয়োজনটাই বেশি থাকে। আর এভাবেই চলতে থাকবে। আপনাকে তারা কখনোই আপনার মত করে বুঝতে চায় নি। তারা আপনাকে একদমই যে বোঝে না তাও কিন্তু নয়। তারাও আপনাকে বোঝে কিন্তু তাদের মত করে। আপনি কি বলতে চাইছেন বা কি করতে চাইছেন এটা কেবল আপনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। 

আপনি তাদের ভালোবাসবেন আগের মতই কিন্তু তাদের জন্য আপনার মধ্যে থাকা সেই ফিলিংস গুলো ধীরে ধীরে ধ্বংস হতে থাকবে। একটা সময় আপনিই থেকে যাবেন কিন্তু তারা কেউই আর থাকবে না। আর এটাই চিরন্তন ধ্রুব সত্য।

মনোবিজ্ঞান  


মন্তব্য করুন


লিভিং ইনসাইড

দাম্পত্যে বয়সের ব্যবধান কতটা ঝুঁকির?

প্রকাশ: ০১:০০ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

প্রেমের নির্দিষ্ট বয়স বা আকর্ষণ কোন বাঁধ দিয়েও রাখা যায় না। যেকোনো বয়সেই আসতে পারে প্রেম। তবে, সাধারণত তরুণ বয়সটাতেই প্রেমে পড়তে বেশি দেখা যায়। কারণ এই তরুণ বয়সটাতেই ভাললাগা থেকে ভালোবাসা হক সেটা ৬০ বছরের বৃদ্ধা কিংবা ৪০ এর পুরুষ। তারপর হয় পরিণয় এবং বাকি জীবন একসঙ্গে কাটানো।

সম্প্রতি রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সিনথিয়া তিশা কে বিয়ে করেছেন ওই প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদ। যা নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় হয়েছে মিডিয়া পাড়ায়। কারণ সেই শিক্ষার্থীর বয়স ২০ এর নিচে এবং গভর্নিং বডির সদস্যের বয়স হচ্ছে ৬০ এর উপরে। বয়সের ফারাক উপেক্ষা করেই প্রেমে জড়িয়ে পরিবারের অগোচরে বিয়েও করেছেন। যা সমাজ এবং পারিবারক স্থান থেকে প্রশ্নবিদ্ধ করে রেখেছেন দায়িত্বশীল বাবা মা।

সমাজের সচেতন মহল মনে করছেন, মুশতাক এবং তিশা ঘটনা সমাজের জন্য অসহনীয়। এই ধরনের বিয়েকে না দিয়েছেন ‘অসম’ বিয়ে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠরা ‘অসম’ বিয়েকে মেনে নেয় না, তাই এটি অসহনীয় পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। যুগ যুগ ধরে সমাজ যে ভাব বহন করছে, তাই সঠিক বলে মেনে নিচ্ছে।

বর্তমান যুগ পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, যেসব মেয়ে ২০ বছর বয়সে ৬০ বছর এর বেশি বয়সী পুরুষকে বিয়ে করেছেন তারা আগামী ১০ বছর পরে কোথায় থাকবে তাদের দাম্পত্য জীবন, কতটুকু নীড়াতে পারবে জীবনের পথচলা সেটিই দেখার বিষয়।

যেখানে বাংলাদেশের গড় আয়ু ৭২.৪ বছর সেখানে এমন দম্পতী সমাজে অবস্থান করবে ১০-১৫ বছর। যা কিনা প্রজন্মকে মারাত্মক হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এছাড়াও দাম্পত্য জীবনে পুরুষের শারীরিক বা যৌন ক্ষমতা থাকা অতিব জরুরি। যদি তা না থাকে তাহলে ওই নারী যৌন আকাঙ্ক্ষায় অন্য পুরুষে আসক্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এতে করে বেড়ে যায় পরকীয়া। যা সমাজকে অবনতির দিকে একধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

মায়ো ক্লিনিক’য়ের নারী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিচালক ডা. ফাবিয়ন সিএনএন’কে বলেন, “যৌনতাকে ভিন্নভাবে দেখতে হচ্ছে। ২০ বছর বয়সে যেমন চল্লিশে সেরকম না, ষাটে যেমন চল্লিশে তেমন না, আবার আশিতে যেরকম ষাটে তেমন না।

ন্যাপলিয়নের বলেছিলেন, আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও আমি একটি শিক্ষিত জাতি দিবো’। তবে কি সেই শিক্ষিত মায়ের প্রভাব এই ব্যপক পার্থক্যের বিয়ে, এতে করে এই মায়ের সন্তান যদিও পৃথিবীতে আসে তাহলে সেই সন্তানের অভিবাবক হয়ে কে থাকবে, কেই বা সেই সন্তানের ভবিষ্যৎ দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে? তা এখন প্রশ্নমুখর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কেননা একজন নারী মানে একটি সমাজ। নারী মানে রাস্ট্র, নারী মানে এক সচেতন জাতী।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘আটলান্টার এমরি ইউনিভার্সিটি’র করা গবেষণায় বিজ্ঞানীরা গাণিতিকভাবে গণনা করে দম্পতিদের মধ্যে একটি নিখুঁত বয়সের পার্থক্য বের করেছেন। যাতে বলা হয়েছে, ‘বয়সের পার্থক্য যত বেশি হবে, বিচ্ছেদের ঝুঁকি তত বেশি।’ এই গবেষণার পরিসংখ্যান বলছে, ৫ বছরের বেশি বয়সের পার্থক্য থাকা দম্পতিদের মধ্যে বিচ্ছেদের ঝুঁকি ১৮ শতাংশ।

যদিও প্রচলিত ধারনা হল, বিয়ের ক্ষেত্রে পুরুষের বয়স হবে নারীর বয়সের তুলনায় বেশি। অনেক সময় দেখা যায়, বিস্তর ব্যবধান থাকে নারী পুরুষ বয়সের, কিন্তু প্রেমটা ঠিকই হয়ে যাচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বয়স্ক পুরুষের প্রেমে পড়তে দেখা ‍যায় তরুণীদের। যারা চাইলেই একজন সমবয়সী সঙ্গী পেতে পারেন। তবুও প্রেমের আকাঙ্ক্ষায় বয়স হয়ে উঠে তুচ্ছ।

কিন্তু এ প্রেম ভালোবাসার দাম্পত্য জীবনের ক্ষেত্রে তুচ্ছ মনে হওয়া বয়সটাই হয়ে দাড়ায় প্রশ্নমূখি। কেননা, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দাম্পত্য জীবনের বিষয়টি প্রচলিত রয়েছে হয়ত সমবয়সি, নয়ত নারী প্রেমিকা থেকে পুরুষ প্রেমিকা কিছু বয়সের বড় বা পার্থক্য।

পুরুষ যদি নারী থেকে বয়সে বড় হয় তাহলে তাদের মধ্যে ম্যাচিওরিটিটা থাকে পরিপূর্ণ। এতে করে সমাজ বা জীবন চলার পথ সহজ হয়, যা কিনা প্রেমিক প্রেমিকার বিয়ে বা দাম্পত্য পর্যন্ত গড়ানোর সম্ভাবনা থাকে। নারী-পুরুষের কেবল শারীরিক গঠনই নয়, মানসিক গঠনও আলাদা।

গবেষণা বলছে, বেশি বয়সের পুরুষের ভেতরে কম বয়সী নারীর প্রেমে পড়ার প্রবণতা থাকে। আবার অনেক কম বয়সী নারীও বয়স্ক পুরুষকে বেশি পছন্দ করেন প্রেমিক বা জীবনসঙ্গী হিসেবে।

কিন্তু বয়সের এই পার্থক্যে দাম্পত্য জীবন সূচনা করলে সামাজিক এবং পারিবারিক স্থান থেকে হতে পারে বিপুল বিতর্ক, অসান্তি কিংবা প্রজন্মের হুমকি। যা কিনা পরবর্তী প্রজন্মকে ধ্বংসের দিকে একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

অনেকেই মনে করেন, শারীরিকভাবে প্রাপ্ত হওয়ার ক্ষেত্রে মেয়েরা ছেলেদের থেকে একটু এগিয়ে থাকেন। অর্থাৎ মেয়েদের শরীর ছেলেদের আগেই প্রাপ্ত বয়স্কদের শরীরের বৈশিষ্ট্যগুলো লাভ করে। আবার  অনেকেরই মত, ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা কয়েক বছর আগে শারীরিক পূর্ণতা পায়।

তাহলে কি ২০ বছরের এক তরুণী ৬০ বছরের বৃদ্ধার কাছে জিম্মি। নাকি এটা প্রেম বা ভালোবাসার আকাঙ্ক্ষা? যেখানে মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় কম বয়সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং পরিস্থিতি বোঝার ক্ষেত্রে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে সক্ষমতা রাখে সেখানে ২০ বছরের একজন তরুণী তিন চার দশক বয়সে বড় পুরুষকে ঠিক কতটুকু আপন করার সঠিক সিদ্ধান্ত রাখে। তা নিয়েই চিন্তিত অভিবাবক মহল।

গবেষকরা বলছেন, দম্পতিদের মধ্যে বয়সের পার্থক্য ১০ বছর হলে, বিচ্ছেদের ঝুঁকিও নাটকীয়ভাবে বাড়ে অর্থাৎ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত। আর ২০ বা তার বেশি বয়সের পার্থক্য থাকা দম্পতিদের জন্য, ভবিষ্যদ্বাণী সত্যিই নেতিবাচক, কারণ তাদের মধ্যে বিচ্ছেদের ঝুঁকি হতে পারে ৯৫ শতাংশ বেশি।

এছাড়াও ১০ বছরের ব্যবধানে দাম্পত্য জীবন শুরু করলে থাকে বিচ্ছেদের ঝুঁকি, সেখানে যদি কয়েকযুগ ব্যবধানে দাম্পত্য জীবন শুরু করে তাহলে তার দায়ভার সমাজ নিবে? তা ছাড়া বয়সের ব্যবধানে বিয়ে করলে শারীরিক অক্ষমতায় বিচ্ছেদ হওয়ার সম্ভাবনা কয়েকগুন বেড়ে যায়।  

বিজ্ঞান বলছে, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে দ্রুত হরমোনজনিত পরিবর্তন আসে। এর জেরে মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় আগে থেকেই শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে পারে।

স্ত্রীর বয়সের চেয়ে ৪০ বছরের বড় স্বামী সমাজে এমন গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে না। সমাজের চোখে এমন বিয়েকেও ‘অসম বিয়ে’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। এমন ‘অসময়’ বিয়েগুলো শেষ অবধি পরিনত হয়ে বিবাহ বিচ্চছেদ কিংবা তলাক।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, এক বছরের ব্যবধানে দেশে তালাকের হার বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। তার প্রধান এক কারণ ‘অসময়’ বা বয়সের ব্যবধানের বিয়ে।

‘বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস’ অনুযায়ী ২০২২ সালে দেশে তালাকের স্থুল হার বেড়ে প্রতি হাজারে ১ দশমিক ৪টি হয়েছে। ২০২১ সালে এই হার ছিল প্রতি হাজারে ০ দশমিক ৭টি। এর মধ্যে গ্রামে তালাকের প্রবণতা বেড়েছে বেশি। গ্রামাঞ্চলে প্রতি হাজারে ১ দশমিক ৫টি আর শহরে হাজারে একটি বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে গত বছর।

এরুপ চলতে থাকলে সমাজে নারীদের অবস্থান যেমন ভাসমান হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তেমনি রাষ্ট্রীয় ভাবে এর প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।


দাম্পত্য   ঝুঁকি   মুশতাক আহমেদ   শিক্ষার্থী   সিনথিয়া তিশা   বিবাহ   তালাক   গড় আয়ু   ন্যাপলিয়ন   গবেষণা   বিজ্ঞান  


মন্তব্য করুন


লিভিং ইনসাইড

যুগের পরিবর্তনে আধুনিক সম্পর্কের দৃষ্টি ভঙ্গিতেই কি বাড়ছে বিবাহবিচ্ছেদ?

প্রকাশ: ০৮:৫৬ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

সামাজিক একটি বন্ধন হচ্ছে বিয়ে। বিয়ের মাধ্যমে একটি বৈধ চুক্তিতে নারী-পুরুষ দুজন দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপন করে, কখনও পারিবারিক সম্মতিতে, আবার কখনওবা নিজেদের পছন্দে। তবে দেশ, কাল, পাত্র, ধর্ম ও বর্ণভেদে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা অনেকটাই ভিন্ন হয়ে থাকে।

বিয়ে মানব জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ, যার মাধ্যমে নারী-পুরুষ একত্রে বৈধভাবে মিলিত হয়, রচনা করে স্বপ্নের সুখী নীড় এবং গড়ে তোলে পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন। আবার এই সামাজিক বন্ধন বিয়ে টা যেমন সামাজিক মর্যাদায় পারিবারিক দাম্পত্য জীবন শুরু করে তেমন করে বিয়ে বা বিবাহ বিচ্ছেদ ও হয়ে থাকে নিমিশেই। কেননা বিয়ে হচ্ছে একটি শক্তিশালী ও পবিত্র বন্ধন।

একটি বিয়ে শুরু হয় উদযাপন ও ভালবাসায়। এই বন্ধন ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত অনেক কঠিন হলেও জীবন চলার পথে বিভিন্ন কারণে অনেককে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

যুগের পরিবর্তন কালের বিবর্তনে পরিবার ও সমাজের নানান অসঙ্গতির কারনে বিচ্ছেদ হতে পারে। যদি স্বার্থপর বা অসমান যৌথ জীবনের সমস্যা উঠে এবং এটি সমাধান করা সম্ভব না থাকে, তাহলে একটি দাম্পত্য জীবনের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যেতে পারে।

এমনকি স্বামী স্ত্রীর মধ্যে অসম্মান আচরণ বা আধুনিক সম্পর্কের দৃষ্টিভঙ্গি যদি অবধারিত থাকে তাহলে সেই আচরণের বা সম্পর্কের ভিত্তিতে আধুনিক সম্পর্ক সংরক্ষণ করা সম্ভব না হলে বিবাহ বিচ্ছেদ হতে পারে। সবচেয়ে বড় কারন হতে পারে অর্থনৈতিক সমস্যা।

কেননা সংসার জীবনে আর্থিক বিপদ হলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক দূরত্ব তৈরি করতে পারে, এতে করে বিবাহ বিচ্ছেদটা এক ধাপ বেড়ে যায়। যদি একটি পরিবার সামাজিক মূল্যবোধের স্থান থেকে চিন্তাকরা হয় তাহলে, একটা পরিবারের পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে বা কোন মামলা বা আইনি জটিলতার কোন বিতর্কের অবস্থা থাকে সে ক্ষেত্রেও পারিবারিক কলরহ হতে পারে এবংকি সেটা বিবাহ বিচ্ছেদ পর্যন্ত ও যাওার সম্ভাবনা থেকে যায়।

দেখা যায়, দম্পতিদের মধ্যে মনোমালিন্য, মারামারি, তর্ক ও, বিশ্বাসঘাতকতা করার কারণেও অনেকেরই বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক দাম্পত্য জীবন ধ্বংস করে দেয়। অ্যালকোহল, ড্রাগে আসক্ত ব্যক্তিরাও সম্পর্ক ও সঙ্গীকে ধরে রাখতে পারেন না. অতিরিক্ত উচ্চাকাঙ্খা কিংবা লোভী নারী-পুরুষ অর্থ, ক্ষমতা, সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির লোভে তার চেয়ে তিনগুণ বয়সী নারী-পুরুষ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছে। রিবারিক নির্যাতনের কারণেও একটি সংসার ভেঙে যায়।

বিশেষ করে অনেক নারী তার সঙ্গীর কাছ থেকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটান। শুধু নারীরাই নন, পুরুষদের ক্ষেত্রেও অনেক সময় এটি দেখা যায়।

বিবাহ বিচ্ছেদের প্রতিকার বিভিন্ন দেশে এবং ধর্মে বিভিন্ন হতে পারে এবং কানুনি নির্ধারণে ভিন্ন হতে পারে। তবে, কিছু সাধারিতভাবে অনুভব হওয়া প্রতিকার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে:

আলিমোনি (অনুগ্রহিতা): কিছু দেশে, বিচ্ছেদের পর এক পক্ষে অপর পক্ষকে আলিমোনি বা অনুগ্রহিতা দেওয়া হতে পারে, যা আত্মা-নির্ভরশীলতা এবং আর্থিক সহায়ক সরবরাহ করতে সাহায্য করে।

বাচ্চাদের জন্য পুনর্নির্মাণ অধিকার: বিবাহ বিচ্ছেদ হলে, সাধারণভাবে বাচ্চাদের জন্য পুনর্নির্মাণ অধিকার দেওয়া হতে পারে, এটি তাদের দেখভাল এবং শিক্ষার জন্য অভিভাবকের সাথে মিলে। যা বিচ্ছেদের প্রতিকার হতে পারে।

সম্পত্তির বন্টন: বিবাহ বিচ্ছেদের পর সম্পত্তির মামলা বন্টন করা হতে পারে, এটি বৈধ সম্পত্তি এবং অধিকারের ভিন্নতা নিরসন করে এর ফলে দাম্পত্য জীবনে বিচ্ছেদের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যেতে পারে।

আলোচনা এবং সম্ঝোদন: কিছু ক্ষেত্রে, বিচ্ছেদের পর আলোচনা এবং সম্ঝোদনের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে, যাতে দুই পক্ষের মধ্যে সমস্যা সমাধান হতে পারে। যা বিচ্ছেদের পরও সঠিক সমাধান করতে সহায়তা করে।

এই প্রতিকারগুলি একে অপরের মধ্যে ভিন্নতা দেখায় এবং কানুনি নিয়মাবলীর মধ্যে ভিন্নতা থাকতে পারে। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে বিবাহবিচ্ছেদ বেড়ে পড়ছে অসংখ্য পরিবারে এর প্রভাব। যা কিনা সমাজ ও জাতিগত দিক থেকে সঠিক নিরসন হওয়া একান্তই জরুরি নলে মনে করেন বিশ্বের একাধিক সমাজবিজ্ঞানীরা।


বিবাহবিচ্ছেদ   দাম্পত্য   বিচ্ছেদ   আধুনিক সম্পর্ক   নির্যাতন  


মন্তব্য করুন


লিভিং ইনসাইড

শীতে যে খাবারে শরীর হবে গরম, কমবে রোগবালাই

প্রকাশ: ১১:১৯ এএম, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

শীতকালে তাপমাত্রা কম থাকার কারণে আপনার দেহকে অতিরিক্ত তাপ উৎপাদন করার জন্য বেশি শক্তি ব্যয় করতে হয়। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয়ে আসে। আপনার দেহকে যেহেতু অতিরিক্ত তাপ উৎপাদনে করতে গিয়ে অতিরিক্ত শক্তি ব্যয় করতে হয় সেহেতু এই সময়ে আপনি নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। শীতকালের সচরাচর রোগগুলো হলো, ঠাণ্ডা-সর্দি, ভাইরাল ফ্লু, শ্বাসকষ্ট, কফ এবং অন্যান্য ইনফেকশন। কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো শীতকালে খেলে শরীর চাঙ্গা থাকে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়ে ওঠে। যেমন-

মধু: মধু শরীরের ভেতর তাপ উৎপাদনে সাহায্য করে। মধুতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল ও আন্টি অক্সিডেন্ট যা আমাদের ইমিউনিটি বজায় রাখে। ঠান্ডাজনিত অসুখ থেকে রক্ষা করে। সর্বোপরি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

ঘি: যদিও অনেকেই মনে করেন ঘি খেলে মুটিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি আছে তথাপি সীমিত পরিমাণে ঘি খেলে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। বিশেষ করে শীতকালে ঘি দেহের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। কারণ ঘি-তে আছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড।

খেজুর: শীতকালে আপনাকে ভেতর থেকে গরম রাখতে খেজুরের জুড়ি মেলা ভার। এই সুস্বাদু এবং উচ্চ পুষ্টিকর খাবারটি বছরের যে কোনো সময়ই খেলে স্বাস্থ্য চাঙ্গা থাকে।

কিসমিস: কিসমিস একটি স্বাস্থ্যগুণ সম্পন্ন খাবার। কিসমিস ভেজানো পানি শরীরের পক্ষে বিশেষ উপকারী। কিসমিসে থাকা কার্বোহাইড্রেট শরীরে অতিরিক্ত শক্তির জোগান দেয়। শুধু স্বাদেই অতুলনীয় নয় ছোট এই ড্রাই ফ্রুট শীতে শরীরের ভেতর গরম রাখে।

ডিম: পুরুষের ক্ষেত্রে শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে ডিম। এটি পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ একটি খাবার। ডিমের মধ্যে রয়েছে প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড। এছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন এ, বি৫, বি১২, বি৬, ডি, ই, কে, ফোলেট, ফসফরাস, সেলিনিয়াম, ক্যালিয়াম ও জিংক। প্রতিটি ডিমের মধ্যে রয়েছে পাঁচ গ্রাম প্রোটিন।

আদা চা: শীতকালে নিজেকে গরম রাখার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো এক কাপ আদা চা। থার্মোজেনিক উপাদানের কারণে আদা শরীর উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে। এটি হজমে সহায়তা করে এবং রক্ত প্রবাহ বাড়িয়ে দেয়।

রসুন: শরীরের ভেতর গরম রাখার জন্য খাবারের তালিকায় অবশ্যই রাখুন রসুন। রান্নার সঙ্গে উপকরণ তো বটেই, খেতে পারেন গার্লিক ব্রেড বা রসুনের আচারও।

মরিচ: শরীরে উষ্ণতা ধরে রাখতে শুকনো মরিচের জুড়ি নেই ৷ শুকনা মরিচে আছে পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজের মতো উপকারী উপাদান, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই উপকারী।

কমলা লেবু: ভিটামিন সি এবং এ রয়েছে এমন ধরনের ফল শীতকালে বেশি মাত্রায় খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। কারণ এই দুটি উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তুলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

মাখন: সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর খাবারগুলোর একটি মাখন। এতে আছে উচ্চমাত্রার ক্যালোরি এবং চর্বি। শীতকালে সামান্য পরিমাণে মাখন খেলে দেহের তাপমাত্রা ঠিক থাকে।

বাদাম: বাদাম খুবই স্বাস্থ্যকর। খাবারের স্বাদ বাড়াতে এই বাদাম ব্যবহৃত হয়। প্রতিদিন এক মুঠো বাদাম খেলে হৃদরোগ এবং মানসিক অবসাদের মতো সমস্যা প্রতিরোধ হয়। তবে বাদাম আপনার দেহের তাপমাত্রা বাড়াতে এবং শীতকালে আপনাকে সুস্থ রাখতেও বেশ কার্যকর।

গোল মরিচ: শীতকালে খাবারের সঙ্গে গোলমরিচ দিলে রোগ-বালাই দূরে রাখে। কালো গোল মরিচে আছে প্রদাহরোধী উপাদান যা নানা ধরনের শীতকালীন রোগের চিকিৎসায় বেশ কার্যকর। যেমন শ্বাসকষ্ট, ঠাণ্ডা-সর্দি, কফ এবং জয়েন্ট পেইন।

গুড়: প্রচুর আয়রন, এনার্জির উৎস ছাড়াও গুড় কিন্তু হজমশক্তিও বৃদ্ধি করে। যাদের ডায়াবিটিস রয়েছে তারাও কিন্তু নির্ভয়ে গুড় খেতে পারেন। শীতে শরীরকে গরম রাখতে জুড়ি নেই গুড়ের।


শীতকাল   খাবার   গরম থাকার কৌশল  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন