রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ চৌধুরী এখন বিদায়ী লগ্নে। তাঁর বিদায় লগ্নে তিনি ‘আমার জীবননীতি আমার রাজনীতি’ শিরোনামে একটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। যদিও গ্রন্থটি তাঁর জন্ম থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত কিন্তু এর মধ্যেই একজন দুরন্ত, ডানপিটে, অজপাড়া গায়ের বালকের বেড়ে উঠা এবং পরবর্তিতে তাঁর রাষ্ট্রপতি হয়ে উঠার চমকপ্রদ একটা গল্প আছে। আমরা পাঠকদের আগ্রহের কথা বিবেচনা করে এই গ্রন্থটির কিছু কিছু অংশ তুলে ধরছি-
‘এই সময়টাতে ছাত্রদের মধ্যে পৌরুষ প্রদর্শনের জন্য উত্তম কুমারের মতো সিগারেট খাওয়ার বাতিক ধরলো আমাকে। এই নিয়ে একটা মজার ঘটনা আমার স্মৃতির আকাশে ঝলমল করছে। তখন নবম শ্রেণিতে পড়ি। সহপাঠী একেকজন বলিষ্ঠ যুবক। তখনকার দিনে বেশ বয়সকালে স্কুলে যেত ছাত্ররা। সবারই মনে নব বসন্তের খোলা জানালা। নাকের নিচে কচি গোঁফের রেখা জানান দিচ্ছে মনের অবস্থা। স্কুলের কাছেই আনু মিয়া আর রাজ্জাক মিয়ার চায়ের দোকান। আমরা দল বেঁধে প্রতিদিন বিকেলে আসর জমাতাম এই চায়ের দোকানে। নানা রকম হাসি, তামাশা, পরিহাস চলতো চায়ের কাপ হাতে নিয়ে। মাঝে থানার সামনে ওয়াহাব আলীর চায়ের দোকান। ওটা অন্যগুলোর চেয়ে একটু বেশি স্ট্যান্ডার্ড ছিল। তখন ভৈরবের অন্যতম সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি হাজি আসমত বেঁচে আছেন। আমাদের কেবি স্কুলের দোতালাটাই ছিল হাজি আসমত কলেজ। কিশোরগঞ্জ মহকুমার গুরুদয়াল কলেজের পরেই ছিল এর স্থান। সেই দানবীর হাজী আসমতের নাতি মুজিবর ও জালাল ছিল আমার সহপাঠীতখন আমার রুমমেট সিজার সিগারেট খেতো। আমি টানতাম ক্যাপস্ট্যান। এক প্যাকেট সাড়ে আট আনায় কিনতাম। এক বিকেলে ওয়াহাব আলীর চায়ের দোকানে আসর জমিয়ে চা পান করছিএর মধ্যে মুজিবর এসে উপস্থিত। একটা আসন দখল করেই পৌরুষালি ভাব ধরে দোকানিকে বললো, ‘এই এক প্যাকেট গোল্ডফ্লাক সিগারেট আন।তার কথাটা আমার দেমাকে লাগলো। আমি সঙ্গে সঙ্গেই অর্ডার দিলাম এক প্যাকেট থ্রি ক্যাসল সিগারেট আনাওতখন থ্রি ক্যাসলের প্যাকেট এক টাকা বারো আনা। বিষয়টি মুজিবর টের পেয়ে সে আবারও অর্ডার দিলো এক প্যাকেট 'প্লেয়ার্স নং থ্রি' সিগারেট আনতে। সাইকেল পাঠিয়ে আনানো হলো। এর দাম এক টাকা চৌদ্দ আনা। আমি ভেতরে ভেতরে বেশ উত্তেজিত হয়ে পড়লামহোক না ভৈরবের স্থানীয় এবং হাজি আসমতের নাতি। আমিও কম কীসে? কিন্তু হেরে তো যাচ্ছি। এর উপরে দামি সিগারেট ভৈরবে আর নেইকী করা যায়মাথা গরম হয়ে আগুন জ্বলে উঠল ।
এসব দেখে ইতিমধ্যে চা দোকানের চারপাশে
উৎসুক জনতার ভিড় জমে উঠল এর মধ্যে আমার
মাথায় চট করে এক
দুষ্টু বুদ্ধি খেলল। পকেট থেকে একটা নতুন দশ টাকার নোট
বের করে থ্রি ক্যাসল সিগারেটের সঙ্গে প্যাচিয়ে আগুন ধরালাম। অনাহত মুজিবর প্রমাদ গুনল। চারদিকে গুঞ্জন, উত্তইরা বেডা টেক্কা মেরে দিলোবে। এর মধ্যে গুঞ্জনকে
অনুসরণ করে এক পুলিশ এসে
হাজির। সে প্যাচ কষলো
টাকা পোড়ানো বেআইনি কাজ। আমাকে আইনের হেফাজতে নিয়ে যেতে চায়। স্থানীয়রা হেরে যাওয়া মুজিবরের পক্ষ নিয়ে পুলিশকে বাতাস দিতে থাকে। শেষমেশ ওয়াহাব আলী পুলিশকে চা-মিষ্টি খাইয়ে
ঠান্ডা করে বিষয়টি নিষ্পত্তি করলেন। বিষয়টি স্কুলে চাউড় হলো ঘটনার বিচিত্র রং নিয়ে। আমি
এরই মধ্যে স্কুলে ব্রান্ডেড হয়ে গেলাম। কেউ কেউ আমাকে নিয়ে পরিহাসের ছড়া কাটতে লাগলো। “উত্তইরা ভূত, বাপ ডাইক্যা উঠ'। আমিও
ছড়া কেটে এর সমুচিত জবাব
দিতাম। কড়া জবাব পেয়ে থেমে যায় পরিহাসের প্রপাগান্ডা।‘
আমার জীবননীতি, আমার রাজনীতি
মো: আবদুল হামিদ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হয়েছে ওয়াসীম পলাশের গল্পগ্রন্থ জানালাবিহীন ঘর। বইটি প্রকাশ করেছে কাগজা প্রকাশন। ১০ টি গল্প নিয়ে সাজানো হয়েছে এই বইটি। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন সব্যসাচী হাজরা। মূল্য ২৩০ টাকা।
ওয়াসীম পলাশ
বইটি সম্পর্কে বলেন, "আসলে আমরা তো একটা বদ্ধ সময়ের মধ্যে আছি। মাঝে মাঝে আমাদের
দম বন্ধ হয়ে আসে, নি:শ্বাস নিতে পারি না। এখানে মূলত রাজনৈতিক-সামাজিক যে সংকট আমাদের
রয়েছে, ভূবনবিহীন মানুষের সংকট, সর্বোপরি বৈশ্বিক সংকটই আমি উঠিয়ে আনার চেষ্টা করেছি।
এই যে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন বা অগ্রগিত, এর কারণেই অনেক মানুষ প্রান্তিক হয়ে গেছে, বিপন্ন
হয়ে গেছে। পৃথিবীজুড়ে এই সংকটাপন্ন মানুষগুলো একই দুর্দশায় আবদ্ধ। সেই কথাগুলোই আমি
আমার গল্পে বলতে চেয়েছি।"
বইটির পাঠকপ্রিয়তা
নিয়ে লেখক বলেন, "আমার বইটি মেলায়ায় একটু দেরিতে এসেছে। গত সপ্তাহে এসেছে৷ বইটি।
এই এক সপ্তাহেই বইটিকে পাঠক যেভাবে গ্রহণ করেছে তাতে আমি আপ্লুত।"
লেখক ওয়াসীম পলাশ পেশায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষক। বর্তমানে তিনি সেপিয়েঞ্জা ইউনিভার্সিটি অফ রোমের রিসার্চ স্কলার।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বইমেলার
শেষ সময়ে বেচা-বিক্রিতে হাসি ফুটেছে প্রকাশকদের মুখে। ২১ শে ফেব্রুয়ারি
পর্যন্ত ব্যাবসায়িক হিসেবে বইমেলা জমেনি বলে শোনা যাচ্ছিলো। তবে মেলার ২৬ তম দিনে
সার্বিক বেচা-বিক্রিতে সন্তুষ্ট প্রকাশকরা।
অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২৩ এর শুরু থেকে ২১ এ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বইমেলায় বিকি-কিনি নিয়ে অসন্তোষ ছিলো প্রকাশকদের। বৈশ্বিক সংকটের এ সময়ে কাগজ থেকে শুরু করে প্রকাশনা খাতের সাথে যুক্ত সবকিছুর মূল্য বেড়ে যাওয়ায় গত বছরগুলোর তুলনায় এবছর বইয়ের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে কয়েক শতাংশ। একইসাথে ক্রয়ক্ষমতা কমেছে জনসাধারণের। সব মিলয়ে এবছর বইমেলায় বইয়ের বাজার কিছুটা মন্দাই যাচ্ছিলো। তবে মেলা শেষের সময়ে সেই মন্দা কাটিয়ে বই কিনছেন পাঠকরা।
বইমেলার সার্বিক বিক্রি নিয়ে সন্তোষ জানিয়ে ছাপাখানার ভূত প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত রেদওয়ানুল ইসলাম বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, "আমাদের বিক্রি এবার অনেক ভালো। শুরুর দিকে কিছুটা কম হলেও গত এক সপ্তাহে বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে। আমাদের একটি বই এর গত কয়েকদিন এতো চাহিদা ছিলো যে বই শেষ হয়ে যাওয়ায় পাঠককে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে।"
একই সুরে গলা মিলিয়ে বাংলা একাডেমির কর্মকর্তা মোহাম্মাদ হায়দার হোসেন বলেন, "এবার বইমেলার অবস্থা গত বছরগুলোর তুলনায় ভালো। আমাদের বিক্রির যে প্রত্যাশা ছিলো তা আমরা পূরণ করতে পেরেছি। আশা করি সামনের দুইদিনও অনেক ভালো যাবে।"
শুধু প্রকাশক নন, শেষ সপ্তাহে বইমেলার এ পালটে যাওয়া চিত্রে খুশী লেখকরাও। দেরিতে আসলেও বইয়ের আশানুরূপ বিক্রি হয়েছে বলেই জানিয়েছেন লেখক মহসিন পলাশ। তিনি বলেন, "আমার বইটা বইমেলায় একটু দেরিতেই এসেছে। গত সপ্তাহে এসেছে বইটি। তবে এই এক সপ্তাহেই যে পরিমাণ সাড়া পেয়েছি তাতে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আশা করি সামনের দুইদিনও একইভাবে সাড়া পাবো।"
বইমেলার শেষ দু'দিনের বিক্রি প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে যাবে এমনই আশা করছেন প্রকাশক ও বিক্রেতারা।
মন্তব্য করুন
এবারের
অমর একুশে বইমেলায় শাহরিয়ার সোহাগের উপন্যাস ‘প্রাক্তন’ প্রকাশিত হয়েছে। এটি একটি রোম্যান্টিক উপন্যাস। এই বইটি লেখকের
প্রকাশিত ১১ তম বই।
‘প্রাক্তন’ বইটি প্রকাশ করেছে শোভা প্রকাশ, প্যাভিলিয়ন ১১। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন প্রখ্যাত শিল্পী জান্নাতুল ফেরদৌস জিনিয়া। মূল্য ২২৫ টাকা।
শাহরিয়ার সোহাগ বলেন, ‘বইটির নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে এটি রোম্যান্টিক ঘরানার একটি উপন্যাস। উপন্যাসটিতে আমি বলতে চেয়েছি যে আমাদের জীবনে ভালোবাসার মানুষ থাকে। কিন্তু দেখা যায় কালের আবর্তনে সেই মানুষটির সাথে আমাদের যোগাযোগ থাকে না, একটি দূরত্ব তৈরী হয়ে যায়। অনেকগুলো বছর যদি দূরত্ব তৈরী হয়ে যাওয়া ঐ ভালোবাসার মানুষটির সাথে হঠাৎ দেখা হয় তাহলে ঐ সময়টাতে আমরা কী অনুভব করি। ঐ দিনটি আসলে আমাদের কেমন যায়। বর্তমানে থেকেও অতীতের সেই স্মৃতিচারণ, বর্তমান সময়ের ব্যস্ততার সাথে অতীতের যে মিশেল সেটিই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি এই উপন্যাসে। এই উপন্যাসে আসলে একটি দিনের গল্প বলা হয়েছে। অনেক বছর দুজন ভালোবাসার মানুষের দেখা হয়েছে, তাঁদের ঐ দিনটি আসলে কেমন যেতে পারে সেটিই বলতে চেয়েছি আমি।‘
তিনি আরও যোগ করেন, ‘এটি কিন্তু আমার নিজের জীবনের গল্প নয়। আমি একজন পেশাদার লেখক। মানুষের অনুভূতি নিয়েই লিখি। সেই জায়গা থেকেই লেখা।‘
টিভি নাটক লেখা, টিভি ও মঞ্চতে অভিনয় এবং ফটোগ্রাফিতে ব্যস্ত সময় পার করেন সময়ের এই ব্যস্ততম লেখক। সামাজিক দায়বন্ধতা থেকে বেশকিছু সামাজিক সংগঠনের সাথেও যুক্ত আছেন এই লেখক
মন্তব্য করুন
‘চেতনায় ঐতিহ্য’ শ্লোগানকে ধারণ করে ‘দেশ পাবলিকেশন্স’ পথ চলছে একযুগ ধরে। দেশ প্রতিবছর নির্বাচিত বই প্রকাশ করে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় অমর একুশে বইমেলায় (২০২৩) ‘দেশ পাবলিকেশন্স’ প্রকাশ করেছে ৫৭টি নতুন বই। প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে বিক্রির শীর্ষে থাকা ‘দেশের সেরা ১০ বই’ শিরোনামে একটি তালিকা প্রকাশ করেছে দেশ পাবলিকেশন্স...
অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২৩ এর শুরু থেকে ২১ এ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বইমেলায় বিকি-কিনি নিয়ে অসন্তোষ ছিলো প্রকাশকদের। বৈশ্বিক সংকটের এ সময়ে কাগজ থেকে শুরু করে প্রকাশনা খাতের সাথে যুক্ত সবকিছুর মূল্য বেড়ে যাওয়ায় গত বছরগুলোর তুলনায় এবছর বইয়ের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে কয়েক শতাংশ। একইসাথে ক্রয়ক্ষমতা কমেছে জনসাধারণের। সব মিলয়ে এবছর বইমেলায় বইয়ের বাজার কিছুটা মন্দাই যাচ্ছিলো। তবে মেলা শেষের সময়ে সেই মন্দা কাটিয়ে বই কিনছেন পাঠকরা।