আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি এখন যদিওবা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের বাহানা করছে, কিন্তু সুযোগ পেলেই আবার নাশকতা করবে, জনগণকে ছোবল মারবে। তাই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি জানে নির্বাচনে তাদের কোন সম্ভাবনা নেই, তাই তারা অনেক ষড়যন্ত্র এঁকেছে। নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা করার ষড়যন্ত্র করেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজপথের দল। আমরা রাজপথে নেমেছি, নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথে থাকব। কাউকে দেশে বিশৃঙ্খলা করতে দেয়া হবে না। যদি কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায় আওয়ামী লীগ জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের প্রতিহত করবে।’
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বন্দরনগরীর আন্দরকিল্লা মোড়ে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘দিয়াশলাইয়ের কাঠিতে যেমন খোঁচা দিলে জ্বলে ওঠে তেমনি আমাদের নেতাকর্মীদের একটা গুণ হল খোঁচা দিলে তারা জ্বলে ওঠে। বিএনপি আমাদের খোঁচা দিয়েছে, আমরা জ্বলে উঠেছি, রাজপথে নেমেছি। আগামী নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে আনা ছাড়া আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আর ঘরে ফিরে যাবে না।’
অতীতের উদাহরণ দিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তারা ঘোষণা দিয়েছিল গত ১০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সরকারকে বিদায় করে দেবে, ১০ লক্ষ মানুষের সমাবেশ করবে, ১০ তারিখের পর বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে না কি দেশ চলবে। তারা যাতে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাবেশ করতে পারে সেজন্য আমরা বললাম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে না গেলেও বাণিজ্য মেলার মাঠ কিংবা বিশ্ব ইজতেমার মাঠে যান। তারা বলল, নয়াপল্টনের অফিসের সামনেই সমাবেশ করবেন। শেষ পর্যন্ত গরুর হাটের মাঠে সমাবেশ করল। আর তাদের অফিসে পাওয়া গেল তাজা বোমা, দুই লাখ পানির বোতল, কয়েক টন চাল। তার মানে, তাদের পরিকল্পনা ছিল ঢাকা শহরে বোমাবাজি করে বিশৃঙ্খলা তৈরী করা।’
তিনি বলেন, ‘এরপর বিএনপি দিল হাঁটা কর্মসূচি, পদযাত্রা। মানুষ বলে, বিএনপির মনে হয় দম ফুরিয়ে গেছে। দুর্মূখেরা এও বলছে যে বিএনপি ভবিষ্যতে হামাগুড়ি দেওয়া শুরু করবে। এখন তারা সমগ্র বাংলাদেশে আটটি জায়গায় সমাবেশের ডাক দিয়েছে। তাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে একটি বিশৃঙ্খলা তৈরী করা।’
‘বাংলাদেশে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না’ সাফ জানিয়ে মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘দুনিয়ার কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই, আছে শুধু একমাত্র পাকিস্তানে। বাংলাদেশ পাকিস্তানকে অনুকরণ করে না, পাকিস্তান এখন বাংলাদেশকে অনুকরণ করে। সংসদীয় গণতান্ত্রিক সকল দেশে যেই সরকার ক্ষমতায় থাকে তারাই নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালন করে। আমাদের দেশেও নির্বাচনকালীন জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকবেন, তার সরকার নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। আর নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে।’
মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদের সঞ্চালনায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। সমাবেশে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য আলহাজ নঈম উদ্দিন চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন, এডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, উপদেষ্টা আলহাজ্ব শফর আলী, কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ প্রমুখ।
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন তথ্যমন্ত্রী। এ সময় তিনি চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের মধ্যে সহায়তা চেক বিতরণ করেন এবং উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।
ড. হাছান বলেন, ‘এটি নির্বাচনের বছর। সাংবাদিকরা জনমত গঠন করে, মানুষের মনন তৈরি করে। অবশ্যই সাংবাদিকরা সমালোচনাও করবেন, কিন্তু একটি কথা আমাদের মাথায় রাখতে হবে- দেশ কি এগুবে, না কি পশ্চাৎপদ হবে! দেশ কি পাকিস্তান হবে না কি মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুর হবে!’
দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করে মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী নির্বাচন দেশের জন্য এবং জাতির জন্য অত্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। কারণ সেই নির্বাচনে ফয়সালা হবে দেশের যে উন্নয়ন অগ্রগতি চলমান সেটি অব্যাহত থাকবে না কি দেশ আবার পশ্চাৎপদ হবে। সে জন্য আমি তথ্যমন্ত্রী হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে আপনাদের সহযোগিতা চাই।’
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা একজন সাংবাদিকবান্ধব নেত্রী। তার সরকার সাংবাদিকবান্ধব সরকার। সে কারণেই সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে দল-মত নির্বিশেষে সাংবাদিকদের সহায়তা করা হচ্ছে। এর বাইরেও প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব ঐচ্ছিক তহবিল থেকে মাঝেমধ্যেই সাংবাদিকদের সহায়তা করে থাকেন। ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নসহ আরো গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় থাকলে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নিয়ে সমাধান করা হবে।’
এ সময় চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি তপন চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শামছুল ইসলামের সঞ্চালনয় সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ বাদল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি ওমর ফারুক, মহাসচিব দীপ আজাদ, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজা, সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এবং মন্ত্রীর সাথে চেক বিতরণে অংশ নেন।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ শান্তি সমাবেশ বিএনপি সাংবাদিক আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।