ইনসাইড থট

যাঁর আলোয় আলোকিত বাংলাদেশ


Thumbnail

নিপীড়িত, নিষ্পেষিত আর অধিকার বঞ্চিত বাঙালিকে নির্মম শাসন- শোষণ, অমানবিক নির্যাতন,সর্বোপরি দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে যিনি মুক্ত করেছিলেন, তিনিই বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজকের এই সুজলা - সুফলা, শস্য - শ্যামলা স্বাধীন দেশটি তাঁরই স্বপ্নের ফসল।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের আজকের দিনে ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার পাটগাতি ইউনিয়নের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে  জন্মগ্রহণ করেন।আজ জাতির পিতার  ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী।  তাঁর বাবা শেখ লুৎফর রহমান গোপালগঞ্জ দায়রা আদালতের সেরেস্তাদার (যিনি আদালতের হিসাব সংরক্ষণ করেন) ছিলেন। মাতা সায়েরা খাতুন। এই দম্পতির চার কন্যা এবং দুই পুত্রের সংসারে মুজিব ছিলেন তৃতীয় সন্তান। তার বড় বোন ফাতেমা বেগম, মেজ বোন আছিয়া বেগম, সেজ বোন হেলেন ও ছোট বোন লাইলী;তার ছোট ভাইয়ের নাম শেখ আবু নাসের।

টুঙ্গিপাড়া নামক  অজপাড়াগাঁয়ে জন্ম নেয়া শেখ পরিবারের সেই ছোট্ট খোকাই হয়ে উঠেছেন একটি জাতির মুক্তির মহানায়ক।

বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস দ্বন্দ্ব-সংগ্রামের ইতিহাস। ২৩ বছরের রাজনৈতিক আন্দোলন সংগ্রাম ও দীর্ঘ ৯ মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি তাদের সোনালি অর্জন স্বাধীনতার সূর্য ছিনিয়ে আনতে সচেষ্ট হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ডানাতে  ভর করেই বাঙালি বিশ্ব মানচিত্রে নিজেদের জন্মভূমিকে জায়গা করে দিয়েছে। পরাধীনতার এই শৃঙ্খল থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করার অদম্য সাহস জুগিয়েছিলেন জাতির পিতা।  রাজনৈতিক জীবনের প্রথম লগ্ন থেকেই নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন দেশের জন্য। দেশ এবং দেশের মানুষের কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দেয়াই ছিল তার প্রধান ব্রত। তাঁর এই দেশপ্রেম তাকে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও বাংলাদেশের জাতির জনক হিসেবে পরিচিত করে বিশ্বব্যাপী। ৫৫ বছরের সংগ্রামী জীবনে বঙ্গবন্ধু ৪ হাজার ৬৮২ দিন কারাভোগ করেছেন। যা তাঁর জীবনের সিকিভাগ। জেল-জুলুমের অমানবিক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে এবং ভাষা আন্দোলন ও বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে অবিস্মরণীয় অবদান রেখে তিনি পরিণত হন জাতির জনক ও বিশ্ব নেতৃত্বে।জাতির পিতার সমগ্র শৈশব পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাই, তিনি তাঁর শৈশব অতিবাহিত করেছেন এ বাংলার জল, কাদা আর পানিতে।মানুষের অত্যন্ত কাছাকাছি থেকেছেন সেই শিশুকাল থেকেই।শৈশব থেকেই তিনি মানুষের হৃদয়ের গভীরে ঠাঁই করে নিয়েছিলেন।যার প্রতিফলন আমরা তাঁর সমগ্র রাজনৈতিক জীবনে লক্ষ্য করি।   শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি রেসকোর্স ময়দানের সংবর্ধনায় বঙ্গবন্ধু উপাধি পান। ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বলেন, '... জনগণের পক্ষ থেকে আমি ঘোষণা করছি ... আজ থেকে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশটির নাম পূর্ব পাকিস্তানের পরিবর্তে শুধু বাংলাদেশ।'৭১- এর ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু তাঁরঐতিহাসিক ভাষণে বাঙালিকে ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেন - "এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম;এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম"। বঙ্গবন্ধুর ঐ ডাকে বাংলার আপামর জনতা মুক্তিযুদ্ধে প্রস্তুত হয়েছিল।তাঁরই প্রেরণায় এবং বজ্রকণ্ঠে অনুপ্রাণিত হয়ে নিরস্ত্র বাঙালি আমজনতা পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।  ২৬ মার্চ পাকবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। তিরিশ লক্ষ শহীদের রক্তের সাগরে উদিত হয়েছিল বাংলার স্বাধীনতার লাল সূর্য। কয়েক লক্ষ মা-বোনের লুণ্ঠিত সম্ভ্রম ও কোলশূন্য আর্তনাদে বিষাদময় আকাশে-বাতাসে উড্ডীন হয় স্বাধীন সোনার বাংলার লাল সবুজের পতাকা।

পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে বাঙালি মুক্তি লাভ করল। প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তান সরকার তাদের কারাগারে রাখতে পারল না। বন্দিজীবন থেকে তাঁকে মুক্তি দিতে বাধ্যই হয়েছিল পাকিস্তান সরকার। পাকি সরকারের বন্দিশালা থেকে সদ্য মুক্ত হওয়ার পর সাংবাদিকরা বঙ্গবন্ধুকে প্রশ্ন করেছিলেন-  " আপনি যে আপনার বাংলাদেশে ফিরে যাবেন সেই দেশ তো এখন ধ্বংসস্তূপ! তখন বঙ্গবন্ধু জবাবে বলেছিলেন, "আমার বাংলার মানুষ যদি থাকে, বাংলার মাটি যদি থাকে, একদিন এই ধ্বংসস্তূপ থেকেই আমি আমার বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, শস্য- শ্যামলা সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করব"।

বঙ্গবন্ধু সারাটি জীবন দেশের  মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের তাগিদে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। তিনি মনে - প্রাণে চেয়েছিলেন এদেশের খেটে খাওয়া,মেহনতি  মানুষ যেন সুখে থাকে, পেটে অন্ন থাকে, হাতে পয়সা থাকে। এককথায় বাঙালির জীবন যেন হাসি- খুশিতে ভরপুর থাকে। বঙ্গবন্ধু এমন একজন স্বাপ্নিক সত্ত্বা যিনি স্বপ্ন দেখতেন দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ নিজস্ব অর্জন দিয়ে সাফল্য লাভ করবে। এমনকি পৃথিবীর বুকে নিজস্ব - অর্জন, সম্পদ,কৃতিত্ব দিয়ে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা করবে। জাতির পিতা শোষণহীন- বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন। তিনি প্রতিনিয়ত ভাবতেন বাংলার মানুষ উন্নত জীবন পাবে। দারিদ্র্যের গ্লানি থেকে মুক্তি পাবে, বেকারত্ব ঘুঁচে যাবে,সমূলে উৎপাটন হবে  দুর্নীতির বিষদাঁত।সদ্য স্বাধীন দেশকে সোনার বাংলায় পরিনত করতে স্বপ্ন দেখেছেন।উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে পুনর্গঠন করতে বহুমুখী পরিকল্পনাও করেছিলেন।

বঙ্গবন্ধু চিরকাল মানুষকে  যোগ্য  সম্মান ও মর্যাদা দেয়ার কথা অকপটে বলে গেছেন। প্রতিটি নাগরিকের মর্যাদা নিশ্চিত করতে তাইতো বলেছেন, "এই স্বাধীন দেশে মানুষ যখন পেট ভরে খেতে পাবে,পাবে মর্যাদাপূর্ণ জীবন; তখনই শুধু এই লাখো আত্মা তৃপ্তি পাবে। প্রতিটি নাগরিকের মর্যাদা নিশ্চিত করা খুব জরুরি "।শেখ মুজিবুর রহমান আপাদমস্তক একজন সত্যিকারের বীর বাঙালি। তিনি চেয়েছিলেন সম্মানের সঙ্গেই  বাঙালি জাতি বেঁচে থাকবে। বাংলার  মানুষ প্রতিনিয়ত  বিভিন্ন ভাবে প্রাপ্ত সম্মান ও মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিশেষ করে  অফিস,আদালতসহ সরকারি - বেসরকারি বিভিন্ন সেক্টরে। সাধারণ জনগণ সরকারি- বেসরকারি বিভিন্ন  কর্মচারীর কাছে ইদানিং যেভাবে অপদস্থ হচ্ছে সেটা জাতির পিতাও  পছন্দ করতেন না।তাঁর এই উক্তিতে বিষয়টি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠে। " সরকারি কর্মচারীদের অনুরোধ করে বলেন, যাদের অর্থে আমাদের সংসার চলে, তাদের সেবা করুন"।

বঙ্গবন্ধু বাংলার সাধরণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দেখলে কখনো স্বাভাবিক থাকতেন না। দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোর,চোরাকারবারীদের কারণে বাংলার সহজ সরল মানুষগুলো যখন দুর্ভোগ পোহায় তখন অভিভাবক হয়ে এটা মানতে পারতেন না। তাই তো তিনি বলেছিলেন, " দীর্ঘ ৩ বছর পর্যন্ত এদের আমি অনুরোধ করেছি,আবেদন করেছি, হুমকি দিয়েছি, চোরে নাহি শুনে  ধর্মের কাহিনী। কিন্তু আর না। বাংলার মানুষের জন্য জীবনের যৌবন আমি কারাগারে কাটিয়ে দিয়েছি। এ মানুষের দুঃখ দেখলে আমি পাগল হয়ে যাই"।বঙ্গবন্ধু এমনই ছিলেন, দেশ ও দেশের মানুষের জন্য তাঁর মন হু হু কাঁদত।বঙ্গবন্ধু মনে-প্রাণে গণতন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন। গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তিনি বলেছিলেন, " আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি।জনগণের ভোটে জনগণের প্রতিনিধিরা দেশ চালায়, এর মধ্যে কারও কোনো হাত থাকা উচিত নয়"।

যুগে যুগে ধর্ম নিয়ে বহুদেশে হানাহানি,সংঘাত,রক্তপাত এমনকি জীবনও দিতে হয়েছে মানুষকে। জাতির জনক সবসময় একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছেন। " আমার রাষ্ট্র হবে ধর্মনিরপেক্ষ। মানে ধর্মহীনতা নয়।মুসলমান তার ধর্ম- কর্ম করবে, হিন্দু তার ধর্ম- কর্ম পালন করবে বুদ্ধিস্ট তার ধর্ম-কর্ম পালন করবে, খ্রিষ্টান তার ধর্ম-কর্ম পালন করবে। কেউ কাউকে বাধা দিতে পারবে না। কিন্তু ধর্মের নামে আর ব্যবসা করা যাবে না"।বাঙালি এই কথায় বঙ্গবন্ধুর চোখে  ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের স্বপ্নই দেখতে পেয়েছিল।  বাংলা,বাংলার ইতিহাস ও শেখ মুজিবুর রহমান তিনটি অবিচ্ছিন্ন সত্ত্বা। একটি ছাড়া অন্যটি যেমন অসম্পূর্ণ তেমনি একটি ছাড়া অন্যটি ব্যাখ্যা করা যায় না।অসাম্প্রদায়িক বঙ্গবন্ধু কখনো সাম্প্রদায়িকতাকে প্রশ্রয় দেন নি।বঙ্গবন্ধু যে সবসময়ে সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী ভূমিকা পালন করেছেন, তা ১৯৬৪ সালে পাকিস্তানি শাসকদের মদতে পূর্ব পাকিস্তানে, বিশেষ করে ঢাকায় একটি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়।সেই দাঙ্গাতে হিন্দু পরিবারকে নিরাপত্তা দেয়ার মাধ্যমে তাঁর অসাম্প্রদায়িক চেতনার পরিচয় আমরা পাই । এই যে মানুষের বিপদে এগিয়ে আসা, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাকারীদের সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করা এগুলো অসাম্প্রদায়িকতার চমৎকার উদাহরণ। বাংলার কৃষক,মজুর আজ বেশি লাঞ্চিত ও অবহেলিত। একশ্রেণির মুনাফালোভী, কালোবাজারী স্বার্থান্বেষী মহলের ন্যায্য মূল্য না দেয়া নামক  বিষাক্ত ছোবলে অতিষ্ঠ আমার কৃষক ভাইয়েরা। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা সেদিনই হবে  যেদিন থেকে বাংলার কৃষক ভাইয়েরা ফসলের ন্যায্য মূল্য পাবে। মনে রাখতে হবে কৃষক বাঁচলেই বাংলাদেশ বাঁচবে। কৃষকই দেশের আসল নায়ক। যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আমাদের মুখের অন্ন জোগায়। বঙ্গবন্ধুর আজীবনের লালিত স্বপ্ন ছিল শোষিত, বঞ্চিত, অবহেলিত কৃষকের মুখে হাসি ফোটানো। তাই তিনি সার্বিক কৃষিখাতকে বেশি গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন।

নারীর প্রতি যথাযথ আস্থা ও সম্মান প্রদর্শনের ব্যাপারে তিনি অধিক জোর দিয়েছিলেন। পুরুষের সফলতা বা কোন অর্জনে কোন না কোন নারীর ভূমিকা থাকেই।একজন পুরুষের জীবনে নারীর অবদান অনস্বীকার্য। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের দিকে দৃষ্টপাত করলেই সেটা আমরা উপলব্ধি করতে পারি। বঙ্গবন্ধু পুরুষদের উদ্দ্যেশে তাই বলেছেন, " পুরুষ ভাইরা আমার যখন কোনো রকমের সংগ্রাম করে নেতা হন বা দেশের কর্ণধার হন তাদের মনে রাখা উচিত, তাদের মহিলাদেরও যথেষ্ট দান রয়েছে এবং তাদের স্থান তাদের দিতে হবে "।শিক্ষা ছাড়া কোন জাতি উন্নতি করতে পারে না। শিক্ষার মাধ্যমেই সত্যিকার উন্নতি সম্ভব।  এই মহান নেতা দেশের মানুষকে  সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে,উন্নত রাষ্ট্রে পরিনত করার স্বপ্ন দেখতেন।নকল করে শিক্ষিত না হয়ে, বরং প্রকৃৃত জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে শিক্ষিত হওয়ার কথা বলেছেন। তাই ছাত্রদের এবং অভিভাবকদের উদ্দ্যেশে তিনি বলেছেন,  " ছাত্র ভাইয়েরা লেখাপড়া করেন। আপনাদের লজ্জা না হলেও আমার মাঝে মধ্যে লজ্জা হয় যখন নকলের কথা শুনি"।অভিভাবকদের উদ্দ্যেশে বলেন, " আমি খবর পাই বাপ- মা নকল নিয়া ছেলেদের - মেয়েদের এগিয়ে দিয়ে আসে। কত বড় জাতি! উঁহু!  জাতি কত নিচু হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু নকল মুক্ত শিক্ষার স্বপ্ন দেখতেন।বঙ্গবন্ধুর দেশে কোন বেকার থাকুক এটা  তিনি কোনভাবেই মানতে পারতেন না। বেকারত্বের অভিশাপ থেকে যুবক ভাইদের মুক্ত করার চেষ্টা উনি প্রতিনিয়ত করেছেন। তিনি বলেছিলেন, "এই স্বাধীনতা পূর্ণ হবে না যদি এদেশের মানুষ যারা আমার যুবক শ্রেণি আছে তারা চাকরি না পায় বা কাজ না পায়"। বাংলার যুবকরা বেকারত্বের হিংস্র থাবায় নিঃশেষ হোক এমনটা জাতির পিতা কখনো চাননি। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বদা  দুর্নীতি, চুরি, লুটপাট, অনিয়মের বিরুদ্ধে ছিলেন।দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতেন।

বঙ্গবন্ধু তাই বলেছিলেন, "এখনো কিছু সংখ্যক লোক এত রক্ত যাওয়ার পরেও যে সম্পদ আমি ভিক্ষা করে আনি, বাংলার গরিবকে দিয়ে পাঠাই, তার থেকে কিছু অংশ চুরি করে খায়।... এই চোরের দলকে বাংলার মাটিতে শেষ করতে হবে "। অত্যন্ত  দুঃখজনক এই যে, চুরি ও  দুর্নীতিমুক্ত দেশ আজও আমরা পাইনি। চুরি, দুর্নীতি নামক অপছায়া আজও বাংলার মাটিতে  জিইয়ে আছে।

বঙ্গবন্ধু ছিলেন মনেপ্রাণে তরুণ বাঙালি। অন্যায়ের কাছে তিনি কোনোদিন মাথা নত করেননি। শোষণহীন রাষ্ট্র ও সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি। তিনি দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি উৎখাত করার দৃঢ়প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেছেন একাধিক বক্তৃতায়।সামাজিক বৈষম্য কমাতে চেয়েছিলেন, চেয়েছিলেন দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার নির্মূল করতে। বঙ্গবন্ধু মনেপ্রাণে স্বীকার করতেন তিনি একজন বাঙালি, তার ভাষা বাংলা এবং দেশ বাংলাদেশ'।

৭৫- এর ১৫ আগস্ট ঘাতকের বুলেটে আমাদের স্বাধীনতার স্থপতিকে পরিবার পরিজনসহ হত্যা করা হয়।জাতির পিতার হত্যার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। ঘাতকদের দণ্ডাদেশ কার্যকর হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন ঘাতক বিভিন্ন দেশে পলাতক আছে। দুই দশকের বেশি সময় ধরে ভারতে আত্মগোপন করা বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি আবদুল মাজেদকে ঢাকার মিরপুর থেকে আটক এবং তার ফাঁসি কার্যকর মুজিববর্ষের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপহার। তিনি আজ জীবিত থাকলে হয়তো খুবই খুশি হতেন।

জাতির পিতার অসামান্য আত্মত্যাগ আর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমরা দেখেছি আলোর মুখ।মূলত তাঁরই আলোয় আলোকিত বাংলাদেশ।

"তোমার কীর্তির চেয়ে তুমি মহৎ/তাই তব জীবনের রথ /পশ্চাতে ফেলিয়া যায় কীর্তিরে তোমার /বারম্বার/তাই/চিহ্ন তব পড়ে আছে, তুমি হেথা নাই "।- (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

তিনি নেই ঠিকই কিন্তু তাঁর আদর্শ,তাঁর চেতনা,তাঁর মহৎ কীর্তি, তাঁর স্বপ্ন বুকে ধারণ করে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে অগ্রসরমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে,  পৃথিবীর বুকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সগৌরবে মাথা উঁচু করে দাঁড় করিয়েছেন।হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলে অভিহিত করেছিলেন।বাংলাদেশ আজ তলাবিহীন ঝুড়ি নাই। পিতা মুজিবের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাঁরই সুযোগ্য উত্তরসূরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলা দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে, দারিদ্র্যতা দূর করেছেন।তাঁর নেতৃত্বেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ এখন বিশ্বের কাছে রোল মডেল। শেখ হাসিনা সন্ত্রাস এবং জঙ্গি দমনেও সফল। এছাড়া মিয়ানমারে জাতিগত দাঙ্গায় পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মানবতার অনন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত হয়েছে,২০২১ সালের ডেল্টা প্ল্যানের মত মেগা প্ল্যান হাতে নিয়েছে। পদ্মা সেতু,মেট্রোরেল, বঙঙ্গবন্ধু টানেল,এলিভেটেড এক্সপ্রেস,৪ লেনের মহাসড়ক  সর্বোপরি জাতির পিতার প্রদর্শিত পথেই এগিয়ে যাচ্ছে আজকের বাংলাদেশ।

"সাবাস বাংলাদেশ / এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়/জ্বলে-পুড়ে ছারখার /তবু মাথা নোয়াবার নয় "।- (সুকান্ত ভট্টাচার্য)।

জাতির পিতার বাংলাদেশ কারো কাছে মাথা নোয়ায়নি আর নোয়াবেও না।

 আজকের তরুণ প্রজন্ম আগামী দিনের কাণ্ডারি হয়ে যে যার অবস্থান থেকে দেশের অগ্রযাত্রায় কাজ করবে। তাই আজ আমরা যারা নতুন প্রজন্ম আছি, তারা সবাই বঙ্গবন্ধুর অদম্য সাহস ও প্রজ্ঞায় অনুপ্রাণিত হয়ে হাজারো বঙ্গবন্ধু হয়ে বাংলার মাটিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকবো।আমরা যেন বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের মাধ্যমে জাতিকে উপহার দিতে পারি অর্থনৈতিক মুক্তি, দিতে পারি মানবিক মূল্যবোধের প্রকৃত স্বাধীনতা, নির্মূল করতে পারি জঙ্গিবাদ আর দূর করতে পারি হানাহানি।একই সঙ্গে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে তাঁর সুযোগ্য কন্যাকে সহায়তা করবো।জাতির পিতা জন্মদিনে এই হোক প্রত্যয় এই হোক অঙ্গীকার।

মো.আহসান হাবিব

তরুণ কলামিস্ট, সদস্য
বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম
সাবেক শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

এক বছরের রাষ্ট্রপতির যত অর্জন


Thumbnail

আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।

দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।

আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।

গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে, তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও একই ভাবে থেকেছেন।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।


রাষ্ট্রপতি   মো. সাহাবুদ্দিন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনা ছাড়া কেউই অপরিহার্য নয়


Thumbnail

প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।

আওয়ামী লীগ যদি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় সেটি ভিন্ন কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগ যদি টিকে থাকতে চায় তাহলে দলকে এবার কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। এটা এখন সময়ের দাবি। যারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি তারা ইনিয়ে বিনিয়ে এখন নানান অজুহাত তৈরি করছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের উচিত হবে এ সমস্ত অজুহাত না শোনা। কারণ যিনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত পরিপন্থি কাজ করেছেন এটা সুস্পষ্ট। সুতরাং এখানে দল উচিত তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দল করলে তাকে দলীয় শৃঙ্খলা মানতেই হবে। অনথায় দল থেকে বাদ দিতে হবে। যারা দলীয় সিদ্ধান্তের পরিপন্থী কাজ করেন তারা কখনই দলের জন্য মঙ্গলজনক নয়। এদের মত আট-দশ দলে না থাকলে আওয়ামী লীগের কিছু যায়-আসে না। একমাত্র আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক ছাড়া আর কেউই আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। শেখ হাসিনাই কেবল মাত্র আওয়ামী লীগ এবং দেশের স্বার্থে অপরিহার্য। সুতরাং, এখন আমরা দেখতে চাই শৃঙ্খলা পরিপন্থীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

যারা আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্দেশনা অমান্য করেছেন তিনি দলের যত বড় নেতাই হোন না কেন তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। দরকার হলে দল থেকে তাদেরকে বাদ দিতে হবে কিংবা বহিষ্কারের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। শুধু বহিষ্কারই নয়, তাদের প্রাথমিক সদস্য পদও বাতিল করতে হবে। এতে করে কারও যদি এমপিত্ব চলে যায় তো যাবে। কিন্তু দলের শৃঙ্খলা ধরে রাখতে হবে দলের স্বার্থে। তাদের আসনে যে কাউকে নির্বাচন করে জিতে আসতে পারবেন। কোন মন্ত্রী এমপি আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন উপজেলা গুলো প্রার্থী দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে দল কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখার জন্য গোটা দেশের মানুষ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দিকে তাকিয়ে আছে।

অতীতে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখেছি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কঠোর পদক্ষেপ নেবেন এমনটি আশা আওয়ামী লীগের প্রতিটি তৃণমূল নেতাকর্মীর। এখন আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেয় আমরা সেটার অপেক্ষা আছি।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনার সমালোচনা করলেও কেউই তার বিকল্প খুঁজে পান না


Thumbnail

দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। 

দার্শনিক শেখ হাসিনা এখন আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। এতদিন তিনি ছিলেন আগে রাষ্ট্রনায়ক পরে এবং দার্শনিক। এখন তিনি আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। কারণ তিনি একের পর এক দর্শনকে যেভাবে স্থায়ী রূপ দিয়ে যাচ্ছেন তাতে এদেশের সকলের মনোবলও বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন মন্ত্রিসভাতেও তিনি দর্শনের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। তিনি পুরনোদের সাথে নতুনদের যুক্ত করে নেতৃত্বের একটি চমৎকার ভারসাম্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। যা আমরা এই ১০০ দিনে বুঝতে পেরেছি এই নতুন মন্ত্রিসভার কাজকর্মে। সেদিক থেকে আমি অনুধাবন করতে পারি যে, এই ১০০ দিনে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এখন পর্যন্ত শতভাগ সফল।

গোটা বিশ্ব এখন যুদ্ধের মধ্যে পড়েছে। করোনার পর থেকে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ গোটা বিশ্ব অর্থনীতিতে টলটলয়মান করে দিয়েছে। এখন আবার নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে। বলা যায় বিশ্বে একটা মিনি বিশ্ব যুদ্ধ চলছে। গাজায় হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এরকম পরিস্থিতিতে দার্শনিক শেখ হাসিনার সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ। তবে আশার কথা যে, এখন পর্যন্ত তিনি সঠিক পথে আছেন এবং সফল ভাবে পুরো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যাচ্ছেন। বিশ্বের অস্থির পরিস্থির কথা অনুধাবন করে তিনি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম নির্দেশনা দিচ্ছেন। যেমন-বিশ্ব বাজারে নতুন নতুন বাজারের সন্ধান। আমাদের যেন খাদ্য ঘাটতি পড়তে না হয় সেজন্য তিনি আগাম আমাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন। পাশাপাশি আমাদের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়াতেও তিনি জোরালো ভাবে আহ্বান করেছেন। 

একজন জেনারেলকে কীভাবে বিচার করা হয়? তিনি কয়টি ব্যাটল জয় করলেন সেটা দিয়ে কিন্তু নয়। তাকে বিচার করা হয় যখন তিনি একটা ব্যাটলে হেরে যান এবং তার সৈন্যরা যখন পুরো ভেঙে পড়েন ঠিক সে সময় তিনি কীভাবে তার সৈন্যদের উজ্জীবিত করতে পারলেন সেটা বিবেচনায় নেওয়া হয়। দার্শনিক শেখ হাসিনাও সে রকম একজন জেনারেল, যে জেনারেল কঠিন সময়ে সাধারণ জনগণকে সবচেয়ে কম কষ্টে রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং ভবিষ্যতেও যেন তিনি সফল ভাবে নিয়ে যাবেন সেটা বলাই বাহুল্য। অনেকে তার সমালোচনা করছেন ঠিক কিন্তু কেউ তার বিকল্পের কথা বলতে পারছেন না। তিনি দলকে যেমন ধরে রেখেছেন বা নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঠিক তেমনিভাবে সরকারকেও সঠিক পথে পরিচালনা করছেন। সুতরাং শেখ হাসিনার বিকল্প যে শেখ হাসিনাই এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। নতুন সরকারের প্রথম ১০০ দিনের মত সামনের দিনগুলোতে সাফল্য ধরে রাখবে এটাই আমরা প্রত্যাশা করি।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

কতিপয় সাংবাদিক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও ক্ষমতাধর


Thumbnail

বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।

ভিন্ন চিত্র দেখলাম শনিবার সকালে বরিশাল সদর হাসপাতালে। দায়িত্বরত চিকিৎসক ওয়ার্ডে রাউন্ড দিতে যেয়ে দেখেন দুজন টিভি সাংবাদিক ওয়ার্ডে ভিডিও করছেন। ভিডিও শেষ হবার পর চিকিৎসক তাঁর রাউন্ড শুরু করলেন। রাউন্ড শুরু করতেই দুজন সাংবাদিক আবার ক্যামেরা ধরে চিকিৎসকের সাথে কথা বলা শুরু করলেন। চিকিৎসক তাদের পরিচয় জানতে চাইলেন। বিনয়ের সাথে নিচু স্বরে একে একে ২০ বার (গুনে নিশ্চিত হয়েই বলছি) সাংবাদিকের নাম জিজ্ঞেস করলেন, পরিচয় জানতে চাইলেন। উক্ত সাংবাদিক নাম বলেননি, পরিচয় দেননি। বরং উচ্চস্বরে উল্টা পাল্টা কথা বলেছেন, পাল্টা প্রশ্ন করেছেন। অবশেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক উর্ধতন কাউকে ফোন দেয়ার পর সাংবাদিক সাহেব তার নাম বলেছেন। এখানে দুটি প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে।  প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, সাংবাদিক দুজন কি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও ক্ষমতাধর হয়ে গেছেন ? দ্বিতীয় প্রশ্ন, সাংবাদিক দুজনকে কেন নাম বলতে হবে ? নাম, পদবি, পরিচয় থাকবে তাদের বুকে বা কোমরে প্রদর্শিত আই ডি কার্ডে। এখন দেখার বিষয়,  প্রদর্শিত স্থানে আই ডি ছিল কিনা ? না থাকলে থাকবে না কেন?

সাংবাদিক ও চিকিৎসকবৃন্দ ঘটনার ভিডিও চিত্র সমূহ পৃথকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়েছেন। সব গুলো ভিডিও কয়েকবার দেখেছি, পর্যালোচনা করেছি। দায়িত্বরত চিকিৎসক কখনোই উচ্চস্বরে কথা বলেননি। তিনি যথেষ্ট ধৈর্য্য, বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। পক্ষান্তরে সাংবাদিক দুজন বারবার উচ্চস্বরে কথা বলেছেন। তাদের কথা বলার ধরণ দেখে মনে হয়েছে, এটি একটি মগের মুল্লুক। কর্তব্যরত চিকিৎসক ওয়ার্ড রাউন্ড শুরু করার আগে প্রতি রোগীর সাথে একজন এটেন্ডেন্ট ব্যাতিরেকে সবাইকে বের হবার কথা বলেছেন। সবাই বেরিয়ে না গেলে তিনি চিকিৎসা শুরু করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। সেটাই নিয়ম।  সারা দুনিয়ায় সেটাই হয়ে থাকে। সাংবাদিকদ্বয় সেটি শুনতে নারাজ। এখানে তারা স্পষ্টতই সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি করেছেন, যা আইনত দণ্ডনীয়।  

দিন শেষে বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দেখলাম সাংবাদিকদের হেনস্থা করেছে ডাক্তার। অথচ ভিডিও গুলি পর্যালোচনা করলে যে কেউ বলবেন, ডাক্তারকে হেনস্থা করেছে সাংবাদিকরা। আসলেই মগের মুল্লুক। ঘটনা কি ? আর সংবাদ শিরোনাম কি? এসব মগের মুল্লুকের রাজত্ব  থেকে জাতিকে পরিত্রান দেয়া প্রয়োজন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিএমএ, এফডিএসএর, বিডিএফ ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ সমন্বয়ে একটি কমিটি করে দেয়া দরকার। কমিটি হাসপাতালে সাংবাদিক প্রবেশে ও তাদের দায়িত্ব নির্ধারণে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করবে। সে নীতিমালায় যাতে স্বাস্থ্য কর্মীদের কাজে বাধা প্রদান না করা হয়, রোগীর অনুমতি ব্যাতিরেকে তাদের ছবি, ভিডিও বা রোগ সংক্রান্ত কোন তথ্য প্রকাশ বা প্রচার না করা হয়, সেসব বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন। তা না হলে হাসপাতাল সমূহে এ ধরণের অরাজকতা হতেই থাকবে, বাড়তেই থাকবে।  

লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

প্রথম আলোর পর কী ডেইলি স্টারও বিক্রি হবে?


Thumbnail

এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন।

প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে অনেকেরই  ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী লোক।

এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।

তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।

এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।

আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম। সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায় যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।

ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।

তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।

তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।


প্রথম আলো   ডেইলি স্টার  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন