বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। বহিষ্কারের প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিক এ নেতা বলেছেন, দু-একদিনের মধ্যে এ বিষয়ে তিনি তার বক্তব্য তুলে ধরবেন। বহিষ্কারের কারণ হিসেবে জানা যায়, শওকত মাহমুদকে নিয়ে বহুদিন ধরেই বিএনপির উচ্চ পর্যায়ে এক ধরনের অস্বস্তি কাজ করছিল। তার কার্যক্রম মনিটরিং করা হচ্ছিল। এর আগে তাকে দু’দফা শোকজ করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে সূত্র। সূত্রটি বলছে, সবশেষ বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) রাজধানী বনানীর এক হোটেলে ন্যাশনাল কমিটি ফর সিভিল রাইটস জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির এক সুধী সমাবেশ ও নৈশভোজের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিএনপির সন্দেহের সৃষ্টি হয়। সংগঠনটির আহ্বায়ক বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ও কলামিস্ট ফরহাদ মজহার এবং সদস্য সচিব বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ কারণেই শওকত মাহমুদকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
তবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদকে বহিষ্কারের পর থেকেই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন- বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো সরকার বিরোধী আন্দোলন করছে। জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটিও সরকারের পতন চায়। সেক্ষেত্রে জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি নিশ্চয়ই বিএনপি বা সমমনা দলগুলোর একটি অংশ। তবে শওকত মাহমুদকে কেন বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হলো? তবে কি এটি বিএনপির নতুন কোনো ষড়যন্ত্রের কৌশল? আবার কেউ বলছেন, ইনসাফ কায়েম কমিটি যদি বিএনপি বা সমমনা দলগুলোর অংশ না হয়, তবে কারা এরা?
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির নেপথ্যে থেকে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তারা নিজেদেরকে আমেরিকান সিআইএ-তে কর্মরত বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন। যারা আয়োজক তাদের মতে, ১৯১৩ সালে তারা এই কমিটি গঠন করেছেন। নৈশভোজ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নতুন করে তারা এই কমিটি পুনরুজ্জীবিত করলেন। ল্যাংলে-তে কাজ করেন বলে যিনি পরিচয় দেন, অর্থাৎ আমেরিকাতে সিআইএ হেডকোয়ার্টারে তিনি কাজ করেন, নাম মাসুদ করিম। অনেক দিন থেকেই এই অঞ্চলে তাকে দেখা যায়, কখনও ব্যাংককে কখনও কাডমান্ডুতে, কখনও কলোম্বতে এবং দুবাইয়ে এসব জায়গায়- তিনি বাংলাদেশি আমেরিকান, তার এলাকা সিলেটে। আমাদের দেশের প্রথিতযশা অ্যাক্টিভিস্ট যারা রয়েছেন, তাদের সঙ্গে বিভিন্ন সময় তিনি বৈঠকে মিলিত হন। যাদের সঙ্গে তিনি (মাসুদ করিম) বৈঠকে মিলিত হয়েছেন, তাদের অনেকেই ওই নৈশভোজে উপস্থিত ছিলেন। তাকে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী একাধিক ব্যক্তি, যারা সোশ্যাল মিডিয়াতে সক্রিয় উপস্থাপক- তারা তাকে বিতর্কিতভাবে উপস্থাপন করেছেন। ফলে তাকে জড়িয়ে একটা রহস্য, একটা ধোঁয়াশা ওয়াকিবহাল মহলের মধ্যে আছে।
সূত্র জানায়, তাদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখিও হয়েছে। তারা বিভিন্ন বিরোধী নেতা-নেত্রীদের কাছে ‘সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (সিআইএ) কাজ করেন’- এই বলে গল্প দেয় যে, তাদেরকে নাকি মার্কিন সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি কাজ দিয়েছে বাংলাদেশের সরকার হটানোর। যা পুরোপুরি বানোয়াট ও কল্পনা প্রসূত। আশ্চর্য হলেও সত্য এই যে, সিআইএ’র নাম বিক্রি করে তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা- আমলাদের বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন।
সূত্র আরও জানায়, নৈশভোজ আয়োজনের বিষয়টি বিএনপির হাইকমান্ড বা সিনিয়র পর্যায়ের কোনো নেতাকে জানানো হয়নি। যে কারণে এই অনুষ্ঠানের ওপর দলটির বিভিন্ন পর্যায় থেকে তীক্ষ্ণ নজর ছিল। শওকত মাহমুদের ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতাকে দলের পক্ষ থেকে ফোন করে অনুষ্ঠানে না যেতে বলা হয়। যারা নৈশভোজে আমন্ত্রিত ছিলেন, পরে তারা অংশ নেননি। এলডিপির কর্নেল অলি আহমেদ অনুষ্ঠানে গিয়েও অংশগ্রহণ না করে ফিরে আসেন। এমনকি আমন্ত্রিত অতিথিদের নজরদারি করতে সেখানে দুই সাবেক ছাত্রনেতাকে পাঠানো হয়, যাদের মধ্যে একজন অনুষ্ঠানের ভিডিও ধারণ করেন। আর অন্যজন সরাসরি লাইভে বিএনপির শীর্ষ নেতা তারেক রহমানকে দেখান।
বিএনপির সূত্রমতে, সোমবার (২০ মার্চ) বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ অনুষ্ঠান নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। সেখানে নেতারা বলেন, গত বছরের এপ্রিলে পেশাজীবী সমাজের ব্যানারে একটি সমাবেশ ডেকে সরকার পতনের ডাক দিয়েছিলেন শওকত মাহমুদ। সেই পটভূমিতে তখন ওই সমাবেশের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক ছিল না। এর আগে ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বরও হাইকমান্ডকে না জানিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে একটি মিছিল বের করে মুক্তাঙ্গনে গিয়ে অবস্থান নেন। দুই কর্মসূচির নেতৃত্বেই ছিলেন শওকত মাহমুদ। দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে ‘সরকার পরিবর্তন আন্দোলন’-এর সঙ্গে যুক্ত থাকা বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। তাকে দুবার শোকজ করা হলেও এসব থেকে তিনি বের হতে পারেননি। ফলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদকে বহিষ্কার করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নেতা বলেন, যেখানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্বাচনে বিজয়ী হলে রাজপথে আন্দোলনে থাকা দলগুলো নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের কথা ঘোষণা করেছেন, সেখানে ইনসাফ কায়েম কমিটির ব্যানারে শওকত মাহমুদ তার প্রস্তাবনায় অন্তর্বর্তীকালীন একটি জাতীয় সরকার গঠনের দাবি করেছেন। শুধু তাই নয়, প্রস্তাবনায় জাতীয় সরকার গঠনের পর সেই সরকারকে বাংলাদেশের নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং তার অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানানো হয়। দলের পদে থেকে ভিন্ন ব্যানারে শীর্ষ নেতার সিদ্ধান্তকে অমান্য করেছেন তিনি। জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির ব্যানারে যে অনুষ্ঠান হয়েছে, সেখানে একাধিক অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা ছিলেন, যাদের শওকত মাহমুদের আগের দুই বিতর্কিত কর্মসূচিতেও দেখা গেছে। আগে ক্ষমা করা হলেও এখন ব্যবস্থা নেওয়া না হলে দলে ভিন্ন মেসেজ যেতে পারে। পরে স্থায়ী কমিটির সবার মতামতের ভিত্তিতে শওকত মাহমুদকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা হলেও কেউ নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। তিনজন ভাইস চেয়ারম্যান ও দুজন যুগ্ম মহাসচিব জানান, বনানীর হোটেলে সুধী সমাবেশে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অন্তত ২৬ নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল দলের একজন ভাইস চেয়ারম্যান ও অঙ্গ সংগঠনের একজন শীর্ষ নেতাকে ফোকাস করা। কিন্তু তারা দলের হাইকমান্ডকে বিষয়টি আগেই জানিয়ে দেন এবং সেখানে অংশ নেবেন না বলেও নিশ্চিত করেন।
সূত্র জানায়, জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির এই আয়োজনটার টাকা কোত্থেকে এসেছে?- এটা নিয়েও অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা করেছেন। প্রায় ১২ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু এই টাকা কোত্থেকে এসেছে সেটাতো কেউ বলেন নাই। তবে এইটা বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা হয়তো সহায়তা করেছেন বলে জানিয়েছে সূত্র।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির ওই নেতারা জানান, তাদের অনুষ্ঠানে অর্থের উৎস নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। বিএনপির কাছে তথ্য রয়েছে, এর পেছনে একটি শক্তি কাজ করছে। এর আগেও নানা তৎপরতায় তাদের নাম এসেছে। এখন আবারও নতুন করে কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। বিএনপির নেতৃত্ব ও আন্দোলন নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করাই হলো তাদের মূল উদ্দেশ্য। এর সঙ্গে বিএনপির কিছু নেতা ছাড়াও বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও কিছু পেশাজীবী নেতা জড়িত আছেন। যারা ফেব্রুয়ারিতেও থাইল্যান্ডে গোপন বৈঠক করেছেন বলেও তথ্য আছে।
এসব বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, কার্যত বিএনপি অস্বীকার করলেও বিএনপিকে কেন্দ্র করেই জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি ফোকাস হতে চেয়েছে এবং এ ক্ষেত্রে তারা সফলও হয়েছে। যদিও বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যানকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, এ ঘটনাও সন্দেহের উর্ধ্বে নয়। হতে পারে এটি বিএনপির নতুন কোনো ষড়যন্ত্র। আবার এ-ও হতে পারে, যেহেতু জামায়াতের সাথে বিএনপির একটা সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে, তাই বিএনপির নেতাদের সামনে রেখে নতুন একটা পরিকল্পনা করছে জামায়াত। তবে ইনসাফ কায়েম কিমিটির পেছনে বিএনপি না জামায়াত ইন্দন দিচ্ছে- সেটাই দেখার বিষয়।
জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি নৈশভোজ শওকত মাহমুদ বিএনপি জামায়াত সিআইএ
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের কাতারে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করে; জনকল্যাণে পরিকল্পনা গ্রহণ ও কর্মসূচি নির্ধারণ করে। আমরা সর্বদা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। অন্যদিকে বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে তারা জনগণকে শত্রুজ্ঞান করে শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আর এখন সাংবিধানিকভাবে বৈধ ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করে জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে তারা জনগণকে শত্রুজ্ঞান করে শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আর এখন সাংবিধানিকভাবে বৈধ ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করে জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।
বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে সরকারবিরোধী তথাকথিত আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস-সহিংসতার পথ বেছে নেয় বলে দাবি করে কাদের বলেন, বিএনপি ও তার দোসরদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনী সরকারের সুসমৃণ পথচলা এবং দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। তাদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু দেশের জনগণ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, পূর্বের ধারাবাহিকতায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের নামেও তারা অগ্নি সন্ত্রাসের মাধ্যমে নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে। আর দেশের আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ও মহামান্য আদালত জনগণের নিরাপত্তা ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বিএনপি নেতারা সেটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালায়।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি প্রকৃতপক্ষে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন, সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া তাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত। বিএনপি ক্ষমতায় থেকে নিজেদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনীর পাশাপাশি বাংলা ভাইয়ের মতো দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীর সৃষ্টি করেছিল এবং তাকে রক্ষা করার জন্য’ বাংলা ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকার জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর।
বিবৃতিতে কাদের বলেন, শেখ হাসিনা জগদ্দল পাথরের মতো জেঁকে বসা বিচারহীনতার সংস্কৃতির অর্গল ভেঙে বিচারের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। সন্ত্রাসী বা অপরাধী যে-ই হোক তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্যের আড়ালে সন্ত্রাসীদের রক্ষার অপকৌশল সফল হবে না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ক্ষমতা বিএনপি
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।