নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ১২ অগাস্ট, ২০২০
একটি দূর্লভ চিঠি আমাদের হাতে এসেছে। চিঠিটি ১৯৭১ এর ২৯ মে লেখা। চিঠি লিখেছেন তৎকালীন কর্ণেল বেগ, লিখেছেন, মেজর জিয়াউর রহমানকে। প্রথমেই চিঠির ভাষ্য পাঠকদের জন্য উপস্থাপন করছি:-
Major Ziaur Rahman, Pak Army, Dacca
We all happy with your job. We must say good job. you will get new job soon.
Don’t worrie about your family. Your wife and kids are fine
you have to be more carefull about major Jalil.
Col. Baig Pak Army
May 29. 1971
(মেজর জিয়াউর রহমান, পাক আর্মি, ঢাকা
তোমার কাজে আমরা সবাই খুশী। আমাদের অবশ্যই বলতে হবে তুমি ভালো কাজ করছো। খুব শিগ্গীরই তুমি নতুন কাজ পাবে।
তোমার পরিবার নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়োনা। তোমার স্ত্রী ও বাচ্চারা ভালো আছে। তোমাকে মেজর জলিল সম্পর্কে আরো সতর্ক থাকতে হবে।
কর্ণেল বেগ, পাক আর্মি
মে ২৯, ১৯৭১)
প্রিয় পাঠক একটু থামুন। ফিরে যান ১৯৭১। বাঙালী জাতি স্বাধীনতার জন্য মরণ প্রাণ সংগ্রাম করছে। অস্ত্র, গ্রেনেড, আর মৃত্যু-প্রতিদিনের চিত্র। মেজর জিয়া তখন সেক্টর কমান্ডার, মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছেন। আর কর্ণেল বেগ, পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর অন্যতম কর্তা। সকাল-সন্ধ্যা বাঙালী নিধনের নির্দেশ দিচ্ছেন, ব্লুপ্রীন্ট তৈরী করছেন। দুই জন সমর ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ। অথচ কর্ণেল বেগ বলছেন ‘তোমার কাজে আমরা খুশী।’ মুক্তিযোদ্ধা মেজর জিয়া কি কাজ করলেন যে তার কাজে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী খুশী হলো? মেজর জিয়া যে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন, সেই প্রতিপক্ষ তার সন্তানের দেখভাল করছে?
মুক্তিযুদ্ধের অকথিত অধ্যায়ের এটি এক বড় আবিস্কার। এর মানে কি এই যে, দৃশ্যত জিয়া মুক্তিযুদ্ধ করলেও আসলে তিনি ছিলেন পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর এজেন্ট? মুক্তিযুদ্ধের সময়ই খন্দকার মোশতাকদের ষড়যন্ত্রের কথা আজ জাতি জানে। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট ষড়যন্ত্রে মোশতাক চক্রের সংগে জিয়ার যোগাযোগের কথাও জাতি জানে। কিন্তু যেটি এই চিঠি স্পষ্ট করে দিয়েছে তা হলো ‘মুক্তিযোদ্ধা’ জিয়া আসলে ছিলেন স্বাধীনতা বিরোধী পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর এজেন্ট। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী ষড়যন্ত্রের অন্যতম অংশ ছিলেন মেজর জিয়া। মুক্তিযুদ্ধের সময়ই তাকে পাকিস্তানীরা ‘বিশেষ দায়িত্ব’ দিয়েছিল, যে দায়িত্ব তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে পালন করেছিলেন। ৭৫ এ জিয়ার ভূমিকায় যারা হিসেব মিলাতে পারেন না, তাদের জন্য এই চিঠি একটি বড় উম্নোচন।
এই চিঠি প্রামাণ করে, জিয়া কখনও বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলেন না, তিনি ছিলেন পাকিস্তানের ‘গুপ্তচর’। আর একারণেই ৭৫ এর ১৫ আগস্ট জিয়া মোশতাক চক্রকে সাথে নিয়ে ইতিহাসের বর্বোচিত ঘটনা ঘটান। একারণেই, ৭৫ এর পর জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করেছিলেন। যুদ্ধাপরাধে আটকদের মুক্তি দিয়েছিলেন। একারণেই, জিয়া গোলাম আযমকে দেশে ফিরিয়ে এনেছিলেন। একারণেই জিয়া আবার জামাতকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিলেন। একারণেই জিয়া, চিহ্নিত স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিলেন। যুদ্ধাপরাধী, স্বাধীনতা বিরোধীদের মন্ত্রী বানিয়েছিলেন, দলে নিয়েছিলেন। একারণেই জিয়া রক্তে ভেজা আমাদের সংবিধান কাঁটাছেড়া করে রক্তাক্ত করেছিলেন। একারণেই, জিয়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধুলিসাৎ করেছিলেন।
একারণেই, জিয়ার মৃত্যুর পরও ১৯৯১ এ ক্ষমতায় এসে বিএনপি ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করেনি, একারণেই বেগমজিয়া স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি জামাতকে নিয়ে জোট করেছেন। একারণেই, ক্ষমতায় এসে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়েছিলেন। একারণেই বেগমজিয়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। প্রকাশ্যেই যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। একারণেই তিনি জঙ্গী, মৌলবাদী সন্ত্রাসীদের মদদ ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন।
এই চিঠির যোগসূত্র আমরা পাই, পাকিস্তানের আদালতে দেয়া আইএসআই প্রধানের বক্তব্যে। কিছু দিন আগে আইএসআই প্রধান আদালতে এক লিখিত জবানবন্দীতে বলেছিলেন ‘বিএনপিকে আইএসআই নিয়মিত অর্থ দেয়।’
সম্প্রতি বেগম খালেদা জিয়া ‘ওয়াশিংটন টাইমস’ নামে একটি মৌলবাদী পত্রিকায় একটি নিবন্ধ লিখেছেন। ঐ নিবন্ধে তিনি যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে অবস্থান প্রকাশ্যে ঘোষণা করে, এব্যাপারে তিনি মার্কিন হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। অর্থাৎ জিয়া ‘গুপ্তচর’ হয়ে পাকিস্তানী আনুগত্যের যে বীজ বপন করেছিলেন, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে তা এখন মহিরুহে পরিণত হয়েছে। এই জন্যই জামাত-শিবিরের তান্ডব আর বেগম জিয়ার হাহাকার। এই চিঠির সংগে বেগম খালেদা জিয়ার নিবন্ধের যোগসূত্র পাওয়া যায়। খালেদা জিয়া তার নিবন্ধের শুরুতে বলেছেন ‘১৯৭১ সালে প্রথম সারির জাতিগুলোর মাঝে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের আত্ম সংকল্পের অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়।’ ৭১ এর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা আমরা সবাই জানি। অনেকে মনে করতে পারেন বেগম জিয়া কিভাবে এই মারাত্মক ভুল করলেন। কিন্তু জিয়ার কাছে লেখা কর্ণেল বেগের ৭১ এর চিঠি বলে দেয়, বেগম জিয়া যা লিখেছেন তা জেনে বুঝেই। ৭১ এ পাকিস্তানী হানাদারদের পক্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল ইয়াহিয়ার নির্দেশে। ইয়াহিয়া খানের গুপ্তচর জিয়ার গড়া দলের নেত্রী, বেগম জিয়া তাই মার্কিন ভূমিকার প্রশংসা তো করবেনই। একই কায়দায় তিনিও তো মার্কিন আগ্রাসনের আমন্ত্রণও জানাবেন।
এই একটি চিঠিই দিয়েছে অনেক প্রশ্নের উত্তর। অনেক অমীমাংসিত বিষয়ের সমাধান।
মন্তব্য করুন
ঢাকা মেট্রোপলিটন
পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২ অক্টোবর। নানা
কারণে বর্তমান ডিএমপি কমিশনারের চুক্তির মেয়াদ আর বাড়াতে চাচ্ছে না সরকার। আগামী জাতীয়
সংসদ নির্বাচন, নির্বাচনের আগে ও পরে রাজধানীর আইনশৃঙ্খলাসহ নানা কারণে এই পদটি অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ।
ডিএমপি কমিশনার
হওয়ার দৌড়ের তালিকায় সবচেয়ে বেশি আলোচিত নামটি হচ্ছে ট্যুরিস্ট পুলিশের প্রধান (অতিরিক্ত
আইজিপি) হাবিবুর রহমান। তার পুলিশ কমিশনার হিসেবে পদায়নের সিদ্ধান্তটি প্রধানমন্ত্রী
অনুমোদন করেছেন বলে সরকারের একটি দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
আগামী দুই-একদিনের
মধ্যেই হাবিবকে ডিএমপি কমিশনার করে গেজেট জারি করা হতে পারে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে
জানা গেছে।
উল্লেখ্য, হাবিবুর
রহমান পুলিশ বিভাগে ধারাবাহিক সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ এ পর্যন্ত তিনবার বাংলাদেশ পুলিশ
পদক (বিপিএম) ও দুইবার রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) পেয়েছেন।
একজন কর্মঠ
ও নিবেদিত উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তার বাইরে তিনি সফল ক্রীড়া সংগঠক, লেখক, গবেষক,
সমাজ সংস্কারক, সমাজ সেবক এবং বাংলাদেশ পুলিশ প্রকাশিত মাসিক পত্রিকা ‘ডিটেকটিভ’ এর
সম্পাদকও।
১৯৬৭ সালে গোপালগঞ্জের
চন্দ্র দিঘলিয়া গ্রামে জন্ম নেওয়া হাবিবুর রহমান ১৭তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে যোগ দেন
সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে। বরাবরই চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত এই পুলিশ কর্মকর্তা
বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সফলভাবে পালন করেছেন।
মন্তব্য করুন
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি আওয়ামী লীগ শুরু করেছে বহু আগে থেকেই। ৩০০ আসনেই চালানো হয়েছে একাধিক জরিপ। সবগুলো জরিপেই ৩০০ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপিদের মধ্যে ৯৭ জন সংসদ সদস্যের নিরঙ্কুশ জনপ্রিয়তা পাওয়া গেছে। যেকোন পরিস্থিতিতে নির্বাচন হলেও এই ৯৭ জনের মনোনয়ন নিশ্চিত। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই সব সংসদ সদস্যরা আবার দলীয় মনোনয়ন পাবেন। এই সব প্রার্থীদের ইতিমধ্যে সবুজ সংকেত দেয়া হয়েছে। কোন বড় রকমের নাটকীয়তা না হলে, ২০২৪ এর সংসদ নির্বাচনে তারা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন। বিভিন্ন জরিপের তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষন করে বাংলা ইনসাইডার এই ৯৭ জনের তালিকা তৈরী করেছে।
এই তালিকায় যাদের নাম আছে তাদের নাম এবং আসন এখানে উল্লেখ করা হলো: