নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৮ অক্টোবর, ২০২১
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিএনপি সাম্প্রদায়িকতার ট্রাম্পকার্ড ব্যবহার করেছে। বিভিন্ন সময় এই ট্রাম্পকার্ড ব্যবহার করে বিএনপি জয়ী হয়েছে। এবারও সাম্প্রদায়িক ট্রাম্পকার্ড বিএনপির শেষ অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এবার কি বিএনপি পারবে? এই প্রশ্ন এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে। ১৯৭৯ সালে বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর বাংলাদেশকে একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বানানোর চেষ্টা করেছিল। সেই চেষ্টার অংশ হিসেবেই বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করেছিল। যুদ্ধাপরাধী গোলাম আজমকে বাংলাদেশে এনেছিল। স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি জামায়াতে ইসলামকে আবার রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিল। সবচেয়ে বড় কথা আমাদের সংবিধান থেকে ধর্ম নিরপেক্ষতা উপড়ে ফেলেছিল। বাংলাদেশে জিয়াউর রহমানের শাসনামলেই একজন রাজাকারকে প্রধানমন্ত্রীত্ব দেয়া হয়েছিল। এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের মাধ্যমে বিভক্তি সৃষ্টির কৌশলে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় ছিল। ভারত বিরোধিতা ও উগ্র সাম্প্রদায়িকতাকে লালনই ছিল বিএনপির মূল মন্ত্র। বিএনপি বারবার সেই প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই দেশের ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করেছে।
জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতায় আসেন। তিনিও সাম্প্রদায়িকতার কার্ডই ব্যবহার করেন। হিন্দু-মুসলমানের বিরোধ সৃষ্টি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট ইত্যাদির মাধ্যমে এরশাদও ক্ষমতায় ছিলেন ৯ বছর। ১৯৯১ সালে বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসে ধর্মান্ধতার ট্রাম্পকার্ড ব্যবহার করেই। সেসময় উগ্র সাম্প্রদায়িক নির্বাচনী স্লোগান, যেমন- নির্বাচনে যদি আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয় তবে বাংলাদেশের ফেনী ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে, মসজিদে উলু ধ্বনি দেয়া হবে ইত্যাদি বক্তৃতা বেগম খালেদা জিয়া দিয়েছিলেন। সেসব বক্তৃতার মাধ্যমেই জনগণকে বিভ্রান্ত করে ক্ষমতায় এসেছিল বিএনপি। আবার ২০০১ সালের নির্বাচনের আগেও বিএনপি একই ট্রাম্পকার্ড ব্যবহার করেছিল। ‘সাবাস বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানে অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী কোরআন হাতে নিয়ে বলেছিলেন যে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে ইসলাম ধ্বংস হয়ে যাবে। ২০০১ এর নির্বাচনের ফলাফল দেশবাসী জানে। ২০০১ এ বিজয়ী হবার পর বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সহিংসতার এক মহামারী প্রত্যক্ষ করেছিল। নির্বাচনে বিজয়ী হবার পর পরই বিএনপি জামায়াত জোট সারাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্মম পাশবিকতা ও তাণ্ডব শুরু করে। এই তাণ্ডবে বহু সংখ্যালঘু মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল শুধু মাত্র নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য। এমনকি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এদেশে থাকতে পারবে না এমন ঘোষণাও দেয়া হয়েছিল বিএনপির অনেক প্রভাবশালী নেতার পক্ষ থেকে। পরবর্তীতে এর বাস্তবতায় বিএনপি জামায়াতের ৫ বছরের দুঃশাসনে বহু সংখ্যালঘু দেশত্যাগে বাধ্য হন এবং তাদের মৌলিক অধিকারগুলো লঙ্ঘিত হয়েছিল।
২০০৮ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে জাতীয় ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয় এবং আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে এবং সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প আস্তে আস্তে উপড়ে ফেলার চেষ্টা করে। এসময়ের মধ্যেও যে উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তি নানা রকম ভাবে মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেনি তা নয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোরভাবে এই পরিস্থিতি দমন করেছেন। গত কিছুদিন ধরে আবার দেখা যাচ্ছে, উগ্র সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প। বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ করা হচ্ছে ও তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি কখনোই কাম্য নয়। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এই বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী। আর একারণেই এই অপতৎপরতার বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিএনপি জামায়াত গোষ্ঠী আবার সেই একই খেলায় মেতেছে। সেই খেলায় কি এবার তারা সফল হবে?
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।