নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০১৮
পতিত স্বৈরাচার হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে জোটে বিএনপিকে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। সাম্প্রতিক সিঙ্গাপুর সফরে বিএনপির প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এরশাদ এই প্রস্তাব দেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এরশাদ তারেক জিয়ার ঐ দুই প্রতিনিধিকে বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটানোর একটাই রাস্তা আছে, সেটা হলো তাঁর (জাতীয় পার্টি) নির্বাচনে অংশ নেওয়া। এরশাদ মনে করেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেগম জিয়া অংশগ্রহণ করতে পারবে না। আর তাই বিএনপি একটি দুর্বল এবং খণ্ডিত দল হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিলে তৃতীয় হবে। এরশাদ মনে করেন, বিএনপি যদি নির্বাচন বর্জন করে তাহলে দলটির নিবন্ধন বাতিল হবে এবং বিএনপি অস্তিত্বের সংকটে পড়তে পারে। সাবেক এই একনায়ক এটাও বলেছেন, নির্বাচন ছাড়া আওয়ামী লীগকে হটানোর আর কোনো পথ নেই। কারণ প্রশাসন থেকে শুরু করে সব কিছু আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বিএনপিকে বলেছে, একমাত্র ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমেই এই সরকারকে পরাস্ত করা সম্ভব। তিনি বলেছেন, জাতীয় পার্টি আর বিএনপি ঐক্যবদ্ধ হলে দুই-তৃতীয়াংশ ভোটার এই জোটকে সমর্থন করবে। তখন সরকারে পক্ষে নির্বাচনে কারচুপি করা অসম্ভব হবে। তবে, এরশাদ মনে করেন, এই জোটের নেতা হতে হবে তাঁকেই। কারণ বেগম জিয়াকে বাদ দিয়ে বিএনপিতে তাঁর সমকক্ষ কোনো নেতা নেই। এরশাদ এটাও জানিয়েছেন যে, তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি তাই মির্জা ফখরুল বা অন্যকোন নেতার অধীনে গিয়ে তিনি জোট গঠন করতে পারবেন না। অবশ্য, এরশাদ তাঁর প্রস্তাবিত জোটে বিএনপিকে বেশি আসন দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন। এরশাদ তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন, ক্ষমতায় গেলে সব হবে, খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন, তারেকও সসম্মানে দেশে ফিরতে পারবেন।
একাধিক সূত্র বলছে, এরশাদের এই প্রস্তাব এতটাই আচমকা এবং অপ্রত্যাশিত ছিল যে, তারেক জিয়ার দুই প্রতিনিধি এনিয়ে আর আলোচনা বাড়াননি। বরং তারা বলেছেন, এনিয়ে তারা তারেক জিয়ার সঙ্গে কথা বলে তারপর তাঁকে (এরশাদকে) জানাবে। এরশাদ তাদের সতর্ক করে বলেছেন, এনিয়ে খুব বেশি সময় নষ্ট করলে ‘সুযোগ হাতছাড়া’ হয়ে যাবে। সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেছেন, বিএনপিতো ২০১৪ তে ক্ষমতায় আসতে চায়নি, তৃতীয় শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে চেয়েছিল। আওয়ামী লীগকে হটিয়ে সরাসরি বিএনপির ক্ষমতায় আসার সুযোগ নেই বলে এরশাদ মনে করেন। এ কারণেই তাঁর এই প্রস্তাব দ্রুত বিবেচনা করতে বলেন। অবশ্য এরশাদের এই প্রস্তাব ঢাকাতেও বিএনপির কয়েকজন নেতা জেনেছেন। তাঁরা এটাকে ‘অবাস্তব’ এবং ‘হাস্যকর’বলে মন্তব্য করেছেন। বিএনপির একজন নেতা বলেছেন,‘এরশাদকেই আমাদের সঙ্গে ভোটের জোটে নেওয়ার জন্য আমরা দশবার ভাবছি। সেখানে তার অধীনে জোটে যাবে বিএনপি ? এরচেয়ে বিএনপি নির্বাচনেই যাবে না।’ তবে বিএনপির একটি ক্ষুদ্র অংশ মনে করছে, কার নেতৃত্বে সেটা বড় কথা নয়, তবে বিএনপি-জাতীয় পার্টি- জামাত ঐক্যবদ্ধ হলে সরকারের পরাজয় অনিবার্য। তাই এখনই প্রস্তাব নাকচ না করে এনিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।’ এই ক্ষুদ্র অংশের একজন নেতা বলেছেন‘বাড়িতে ডাকাত পড়লে এলাকার চোর, ছিচকে চোর, পকেটমার সবাইকে নিয়েই ডাকাত ঠেকাতে হয়। তাই আওয়ামী লীগকে ঠেকাতে বৃহত্তর ঐক্যের বিকল্প নেই।’
Read In English: https://bit.ly/2JAj435
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ব্রিটিশ হাইকমিশনার বিএনপি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী শামা ওবায়েদ সারাহ কুক
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন মন্ত্রী-এমপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। আজ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনাটি জারি করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপি পরিবারের সদস্য স্বজনরা প্রার্থী হতে পারবেন না। এটি আওয়ামী লীগ সভাপতির একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল পর্যন্ত যে পরিবারতন্ত্র ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল এবং বিভিন্ন জায়গায় যে জমিদারি প্রথা তৈরির শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল সেটা প্রতিরোধের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতির এই উদ্যোগ তৃণমূলের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।