নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৬ মে, ২০১৮
আগামী ৮ মে অনুষ্ঠেয় বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদনের শুনানিতে সরকার পক্ষ জামিনের বিরোধিতা করবে। বেগম জিয়াকে জামিন না দেওয়ার ৭ টি কারণ তুলে ধরবে সরকার পক্ষ এবং দুর্নীতি দমন কমিশন। আজ সুপ্রিম কোর্টে মঙ্গলবারের জামিনের আবেদনের শুনানিতে সরকার পক্ষের যুক্তিগুলো চূড়ান্ত করা হয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলমের নেতৃত্বে সরকার পক্ষের কৌসুলিদের বৈঠকে এই যুক্তি বা পয়েন্ট চূড়ান্ত করা হয়। জামিনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষ যেসব যুক্তি উপস্থাপন করতে পারে, সেগুলো হলো:
এক. বেগম জিয়া অসুস্থ এটা এটা রাজনৈতিক বক্তব্য। দেশের প্রথিতযশা চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড তাঁকে পরীক্ষা করেছে। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর পরীক্ষা হয়েছে। সরকার প্রয়োজনে আরও উন্নত চিকিৎসা করবে। কাজেই সুনির্দিষ্ট ডাক্তারি সার্টিফিকেট ছাড়া বেগম জিয়া অসুস্থ এটা বলার কোনো সুযোগ নেই। সরকার পক্ষের কৌসুলিরা মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্ট আদালতে উপস্থাপন করবেন।
দুই. সরকার পক্ষের দ্বিতীয় যুক্তি হলো, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী বেগম জিয়া জামিন পেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাবেন। বেগম জিয়া বিদেশে গেলে এই মামলার কার্যক্রম অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলিদের যুক্তি হলো, এর আগে তাঁর ছেলে একই রকমভাবে চিকিৎসার জন্য বিদেশে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন। ওই মামলাগুলো দীর্ঘদিন ঝুলে আছে। এই বিবেচনায় খালেদা জিয়া জামিন পেতে পারেন না।
তিন. বেগম জিয়া অত্যন্ত প্রভাবশালী এবং একটি বড় রাজনৈতিক দলের নেতা। তাই তাঁর জামিন হলে আন্দোলন এবং ভয়ভীতির মাধ্যমে তিনি এই মামলাকে প্রভাবিত করতে পারবেন। এজন্য তিনি জামিন পাওয়ার অযোগ্য।
চার. এই মামলার সঙ্গে দেশের আইন শৃঙ্খলা ও জনগণের জানমালের প্রশ্ন জড়িত। জামিন পেলে তিনি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে ধ্বংসাত্মক পথ বেছে নিতে পারেন।
পাঁচ. এই মামলার রায়ের সঙ্গে বেগম জিয়ার আগামী নির্বাচনে অংশ করা না করার প্রশ্ন জড়িত। তাই জামিন পেলে তিনি এই নির্বাচনকে বানচালের চেষ্টা করতে পারবেন। জামিনে থাকা অবস্থায় যদি তিনি নির্বাচনের অযোগ্য বিবেচিত হন তাহলে তিনি নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করতে পারেন।
ছয়. বিএনপি নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন বক্তৃতা ও বিবৃতিতে বলেছেন, গণআন্দোলনের মাধ্যমে তারা বেগম জিয়াকে মুক্ত করে আনবেন। কোনো আইনের শাসনে বিশ্বাসী মানুষ এভাবে আদালতের উপর অনাস্থা আনতে পারে না। এটা আদালত অবমাননার সামিল। একারণে বেগম জিয়ার জামিন পাবার অযোগ্য।
সাত. বেগম জিয়ার ছেলে একজন ফেরারি। দুটি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত। সরকার তাঁকে বার বার দেশে আসতে বললেও সে দেশে আসছে না, আইনের কাছে নিজেকে সমর্পণ করছে না। মা জামিন পেলে ইন্টারপোলের লাল তালিকাভুক্ত এই দণ্ডিত আসামিকে বাংলাদেশের ফিরিয়ে আনা আরও কঠিন হয়ে যাবে।
অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস সূত্র জানা গেছে, আরও কিছু যুক্তি তাঁরা এই মূল পয়েন্টের সঙ্গে উত্থাপন করবে।
Read in English- https://bit.ly/2jwOPz3
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বেগম জিয়া আর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন না, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এ রকম একটি বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছেন শামীম ইস্কান্দার।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠিত করা এবং বিভেদ-বিভক্তির দূর করার জন্য যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তারপর একটু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল বলে বটে। কিন্তু এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে সারাদেশে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সামাল দেওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধ অন্যদিকে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়া আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তদারকির অভাবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ এখন সবচেয়ে সঙ্কটের মুখে পড়েছেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই।