নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৬ মে, ২০১৮
এক গ্লাস পানি, এক মুঠো গুড় আর এক চিমটি লবণ। তারপর ঘুটা, ঘুটা, ঘুটা। হয়ে গেল `খাবার স্যালাইন’। ৮০’র দশকে ওরাল স্যালাইনের এই ফর্মুলা পেয়েছিল দারুণ জনপ্রিয়তা। এটাই ছিল ডায়রিয়া জয়ের অব্যর্থ ফর্মুলা। ঠিক তেমনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও খুলনা নির্বাচনের মাধ্যমে আগামী জাতীয় নির্বাচনে জয়ের ফর্মুলা পেয়েছে। ঘরে বানানো স্যালাইনের মতো এই ফর্মুলারও উপাদান তিনটি, উন্নয়ন, ভালো প্রার্থী আর কোন্দলমুক্ত আওয়ামী লীগ। এক গ্লাস পানির মতো, একটি নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়নের দৃশ্যমান চিত্র, এক চিমটি লবণের মতো একজন সৎ, বিতর্কহীন প্রার্থী এবং এক মুঠো গুড়ের মতো দলের ঐক্য। এই তিন উপাদান একসঙ্গে মেলাতে পারলেই আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত, এটা মনে করছেন দলের সিনিয়র নেতারা এবং স্বয়ং দলের প্রধান শেখ হাসিনা।
সাম্প্রতিক সময়ে অনুষ্ঠিত চারটি সিটি নির্বাচনের দুটিতে জয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগ। নারায়ণগঞ্জ, খুলনাতে জয়ী হয়েছে এই স্যালাইন ফর্মুলার কারণেই। এই দুটি এলাকাতেই আওয়ামী লীগ কোন্দলে জর্জরিত ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতির কঠোর নির্দেশনার কারণে নির্বাচনের সময়টা কোন্দলমুক্ত থাকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। আবার রংপুর এবং কুমিল্লায় শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ কোন্দল মেটাতে পারেনি, যে কারণে স্যালাইন ফর্মুলা কার্যকর হয়নি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, আওয়ামী লীগ যে পরিমাণ উন্নয়ন করেছে তাতে আগামী নির্বাচনে আমাদের পরাজয়ের কোনো কারণ নেই। আমরা যদি নিজেরা না হারি তাহলে আমাদের কেউ হারাতে পারবে না।’
এতদিন আওয়ামী লীগের অনেকের ধারণা ছিল, উন্নয়ন দিয়েই সম্ভবত আগামী নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া যাবে। কিন্তু রংপুর সেই ভুল ভেঙ্গে দিয়েছিল। রংপুরে সাবেক মেয়র প্রয়াত শরফুদ্দিন ঝন্টু যে পরিমাণ উন্নয়ন করেছিলেন তা ছিল অকল্পনীয়। কিন্তু নির্বাচনে জয়ের ফর্মুলা না মেলায় শুধু উন্নয়ন কোনো কাজে লাগেনি। আওয়ামী লীগের সব নেতাই মনে করছেন, ‘আগামী নির্বাচনে জয়ী হতে হলে আগে নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হবে আওয়ামী লীগকে। কোন্দলমুক্ত থাকতে হবে দলকে।’ আওয়ামী লীগ মনে করছে, অন্ত:কলহই দলের প্রধান সমস্যা।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী অবশ্য মনে করেন, ‘আমাদের সভাপতি দলীয় কোন্দল বন্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। আমরা আশা করি, শেখ হাসিনার বার্তা তৃণমূল পেয়েছে।’ আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগে কোন্দল থাকবে না বলেই তাঁর আশাবাদ।’
আওয়ামী লীগের তৃতীয় সমস্যা হলো ভালো প্রার্থী। আওয়ামী লীগের দলীয় উদ্যোগে করা জরিপেই উঠে এসেছে যে, বর্তমান দলীয় এমপিদের প্রায় অর্ধেকই নানা কারণে এলাকায় বিতর্কিত হয়েছেন অথবা জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন। আওয়ামী লীগের অনেক নেতা স্পষ্ট করেই অর্ধেক আসনে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। আর এই পরিবর্তন করছেন স্বয়ং দলীয় প্রধান। আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রেও প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা, তাঁর সততা আর পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিত্বকে জোর দিয়েছেন। দলের সভাপতির তত্ত্বাবধানে নির্বাচনী এলাকাগুলোতে করা হচ্ছে একাধিক জরিপ।
আওয়ামী লীগ মনে করছে, খুলনার সাফল্য তাদের শুধু গাজীপুর নয় আগামী জাতীয় নির্বাচনেও উজ্জীবিত করবে। আওয়ামী লীগ এখন জয়ের ফর্মুলা পেয়ে গেছে।
Read in English- https://bit.ly/2INkJ8A
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন মন্ত্রী-এমপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিএনপি বিদ্রোহ উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
ঢাকার বনানীর বাসায় ফেরার পথে গাড়িচালক
আনসার আলীসহ ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল নিখোঁজ হন বিএনপির তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট
জেলা বিএনপির সভাপতি এম ইলিয়াস আলী। এক যুগ পার হলেও ইলিয়াস আলী জীবিত না মৃত সে খবর
কেউ দিতে পারেনি দীর্ঘ এই সময়ে।
তবে সিলেটের বিএনপি নেতারা মনে করেন,
ইলিয়াস সরকারের হেফাজতে অক্ষতই আছেন। তাকে ফিরে পেতে কেবল সরকারের সদিচ্ছার প্রয়োজন।
নিখোঁজের ১২ বছর পূর্তিতে তাকে ফিরে পেতে গতকাল নানা কর্মসূচি পালন করেছে সিলেট বিএনপি
ও অঙ্গ সংগঠন। ইলিয়াস আলী ‘নিখোঁজ’র পর সিলেটে গঠন করা হয় ‘ইলিয়াস মুক্তি সংগ্রাম
পরিষদ’। এ বছর ‘ইলিয়াস মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ’র কোনো কর্মসূচি না থাকলেও সমাবেশ, স্মারকলিপি
প্রদান এবং দোয়া ও মিলাদ মাহফিল করেছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন। এক যুগেও ইলিয়াসের সন্ধান
না মিললেও হাল ছাড়েননি বিএনপি নেতারা।
তাদের ধারণা, ইলিয়াস আলী এখনো জীবিত
আছেন। ইলিয়াসের অবস্থান সম্পর্কে সরকার জ্ঞাত আছে। কিন্তু সরকারের সদিচ্ছার অভাবে ইলিয়াস
আলীর সন্ধান মিলছে না। ইলিয়াস আলী নিখোঁজের এক যুগপূর্তির দিন গতকাল জেলা প্রশাসকের
মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে সিলেট বিএনপি। এ ছাড়া বাদ আসর জেলা
বিএনপির উদ্যোগে হজরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ মসজিদে ইলিয়াস আলীর সন্ধান কামনায় দোয়া
ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া ইলিয়াসকে ফিরে পেতে বাদ জোহর একই মসজিদে দোয়া ও
মিলাদের আয়োজন করে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল। স্মারকলিপি প্রদানের আগে গতকাল দুপুরে জেলা
প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে বিএনপি।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দীর্ঘ ১২ বছর
ধরে ইলিয়াস আলী ফেরার অপেক্ষায় আছেন সিলেটবাসী। ইলিয়াসের জনপ্রিয়তায় আতঙ্কিত হয়ে সরকার
তাকে গুম করেছে।
ইলিয়াস নিখোঁজ প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির
সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন বলেন, ইলিয়াস আলীর সন্ধান পেতে তার সহধর্মিণী
হাই কোর্টে রিট করেছিলেন। কিন্তু সরকারের অদৃশ্য হস্তক্ষেপে এক যুগেও সেই রিটের শুনানি
হয়নি। এতে প্রমাণিত হয় ইলিয়াস নিখোঁজের পেছনে সরকার জড়িত।
মন্তব্য করুন