নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৩০ পিএম, ১৭ মে, ২০১৮
গাজীপুর নির্বাচনে জিততে বিএনপি প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার দলের কাছে ১০ কোটি টাকা চেয়েছেন। দলের মহাসচিবকে এই মেয়র প্রার্থী বলেছেন,‘টাকা না পেলে, তাঁকে নির্বাচন থেকে সরে যেতে হবে।’ আজ দলের মহাসচিবকে টেলিফোন করে তিনি একথা বলেন।
বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্র এখবর নিশ্চিত করেছে। ঐ সূত্র জানায়, নির্বাচন পিছিয়ে যাওয়ার এবং ঈদের পর নির্বাচন হওয়ায় ‘টাকা’ এখন গাজীপুর নির্বাচনে বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাড়িয়েছে। কারণ গাজীপুরে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বিপুল বিত্তশালী। গতকাল গাজীপুরে বিএনপি প্রার্থী নির্বাচনী কৌশল নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকের আলোচনায় উঠে আসে যে, আনুষ্ঠানিক প্রচারণা বন্ধ থাকলেও আওয়ামী লীগ প্রার্থী জনসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। রোজায় প্রায় প্রতিদিন জাহাঙ্গীর আলমের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হবার কথা। ঈদ উপলক্ষে প্রতিবারই জাহাঙ্গীর বিপুল পরিমাণ যাকাত দেন। এবার তার অবয়ব বাড়বে। ঐ বৈঠকে কেউ কেউ জানান, টাকা দিয়ে জাহাঙ্গীর গাজীপুরে ইসলাম পছন্দ দলগুলোকে তাঁর বশে এনেছেন। হাসান উদ্দিন সরকারও বৈঠকে মন্তব্য করেন যে, ‘জাহাঙ্গীরের টাকার সঙ্গে অন্য কিছু দিয়ে পেরে ওঠা সম্ভব না।’ এখনই আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সঙ্গে পাল্লা দিতে টাকা প্রয়োজন। এ জন্যই দলের কাছে ১০ কোটি টাকা চেয়েছেন হাসান উদ্দিন সরকার।
এদিকে গাজীপুর আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ায় আওয়ামী লীগই লাভবান হয়েছে। কারণ প্রথমত: খুলনা জয়ের আত্মবিশ্বাসে গাজীপুরে আওয়ামী লীগ কর্মীরা উজ্জীবিত। দ্বিতীয়ত: নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ায় আওয়ামী লীগ আরও গুছিয়ে পরিকল্পিত প্রচারণা করতে পারছে।
অন্যদিকে গাজীপুরে বিএনপি এখন এই নির্বাচন নিয়ে আশা ছেড়েই দিয়েছে। কারণ বিএনপি মনে করছে, খুলনায় যে ‘স্টাইলে’ আওয়ামী লীগ জিতছে, সেই একই প্রক্রিয়া গাজীপুরেও অনুসরণ করা হবে। বিএনপি যতই অভিযোগ করুক, এখনো তাঁরা বুঝতে পারেনি যে কি ধরনের ‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং’ খুলনায় হয়েছে। নির্বাচন পিছিয়ে যাওয়ায় বিএনপিতে অনৈক্য আরও বেড়েছে। এই অবস্থায় গাজীপুর জয় করতে বিএনপিকে ‘অলৌকিক’ কিছু করতে হবে বলে বিএনপি নেতারা মনে করছেন।
অবশ্য দলের মহাসচিব তাঁর প্রার্থীকে বলেছেন, গাজীপুরে তাঁরা সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে। সব কেন্দ্রীয় নেতারা গাজীপুরের প্রচারণায় অংশ নিবে। নির্বাচন প্রচারণায় তাঁরা একটি জাগরণ তুলবে।
তবে, মহাসচিবের কথায় সন্তুষ্ট নন হাসান উদ্দিন সরকার। তিনি মনে করেন, একমাত্র বেগম খালেদা জিয়াই এরকম জোয়ার তুলতে পারতেন। অন্য নেতাদের পক্ষে এটা সম্ভব নয়। টাকা না পেলে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার কথাও ভাবছেন বিএনপির এই প্রার্থী।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।