নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০১ পিএম, ২১ মে, ২০১৮
দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া জেলে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হুলিয়া মাথায় নিয়ে লন্ডনে। বিএনপির হিসেব অনুযায়ী দলের ২০ হাজারের বেশি নেতাকর্মী জেলে। দলের এরকম কঠিন দু:সময়ে বিএনপির ইফতার পার্টির নামে ‘বিলাসিতার উৎসব’ নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে খোদ বিএনপিতেই। শুধু তরুণ এবং তৃণমূলের নেতারা নন, সিনিয়র নেতারা এ ধরনের ইফতার উৎসবের তীব্র সমালোচনা করছে। বিএনপির সিনিয়র একাধিক নেতা মনে করেন, বেগম জিয়ার কারাদণ্ডের প্রতিবাদে এবার বিএনপির সব ইফতার অনুষ্ঠান বর্জন করা উচিত ছিল। কিন্তু তা করা হয়নি।’
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি মহাসচিবের ব্যক্তিগত আগ্রহ এবং উৎসাহের জন্যই এই ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। বিএনপি মহাসচিব অবশ্য দাবি করেছেন যে, ইফতার পার্টি করার ব্যাপারে বেগম জিয়ার সম্মতি নিয়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে তারেক জিয়ারও মতামত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমীর খসরু মাহমুদের মতো নেতারা বলছেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব ম্যাডামকে কীভাবে ইফতার পার্টির কথা বলেছেন, তা জানিনা। তবে, দেশের মানুষ ভালো নেই এখন। এটা না করলেই বড় বার্তা হতো।’ তবে ইফতার পার্টির পক্ষে যারা তাঁরা মনে করেছেন, বি. চৌধুরীকে ইফতারে ডাকা না হলে এই বিতর্ক হতো না। কিন্তু বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী তাঁর ঘনিষ্ঠদের কাছে ইফতারের ব্যাপারে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। রিজভী তাঁদের বলেছেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে যখন দেশের মানুষের নাভিশ্বাস, তখন আমাদের নেতারা ওয়েস্টিনে ইফতার করছে। কি বিচিত্র! রিজভীর মতো ইফতার পার্টিকে গুরুতর অপরাধ না দেখলেও বিএনপির আরেক সিনিয়র নেতা নজরুল ইসলাম খান এটাকে অপ্রয়োজনীয় মনে করছেন।
বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, নজরুল ইসলাম খান সহ কয়েকজন নেতা রোজার মধ্যে বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য বিভিন্ন মসজিদ এবং এতিমখানায় দোয়া মাহফিল এবং ইফতারের আয়োজন করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু নানা কারণে ঐ প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির একজন নেতা মনে করেন, ‘এই সব ইফতার পার্টি হচ্ছে মির্জা ফখরুলের নেতা বানানো মিশন। আগামী নির্বাচন বেগম জিয়াকে ছাড়া করে সরকারের ইচ্ছাপূরণের যে নীল নকশা, তারই একটা অংশ হলো এই ইফতার পার্টি।’
বিএনপির নেতাদের অনেকে অবশ্য প্রকাশ্যেই ইফতার পার্টির প্রতিবাদ করেছেন। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিব-উন-নবী খান সোহেল কাল রাতেই বিএনপি মহাসচিবকে ওয়েস্টিনের ইফতারের প্রতিবাদ করেন। মির্জা ফখরুলকে টেলিফোন করে সোহেল বলেন, ‘ম্যাডাম খাচ্ছেন ৩৯ টাকার ইফতার আর আপনারা ওয়েস্টিনে চার হাজার টাকার ইফতার খান। আপনাদের লজ্জা করে না?’ সোহেলের মত অনেক নেতাই মনে করেন, ‘বেগম জিয়া জেলে থাকা অবস্থা এরকম ইফতার পার্টি অরুচিকর।’
তবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সব সময় বলে আসছেন, বিএনপি একটা বড় রাজনৈতিক দল। তাই ইফতার মাহফিল বন্ধ করা ঠিক হতো না। কিন্তু বিএনপির সিংহভাগ নেতা ইফতার উৎসবকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়া বিএনপি ব্রিটিশ দূতাবাস সারা কুক
মন্তব্য করুন
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল ঢাকাস্থ ব্রিটিশ দূতাবাসে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন বিএনপির শীর্ষস্থানীয় তিন নেতা। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদকে দাওয়াত দেয়া হয়েছিল ব্রিটিশ দূতাবাসে। সেখানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা কুক এক ঘণ্টার বেশি সময় তাদের সাথে বৈঠক করেন। এসময় ব্রিটিশ দূতাবাসে অন্যান্য রাজনৈতিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।