নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২১ মে, ২০১৮
খুলনা সিটি নির্বাচনে জয়ের পর ৪ সিটির দিকে নজর আওয়ামী লীগের। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গাজীপুরসহ চার সিটি করপোরেশন নির্বাচন করে বিজয় পতাকা উড়াতে চায় দলটি। দলের নীতি নির্ধারকরা মনে করছে, এর ফলে জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের মনোবল চাঙ্গা থাকবে। এছাড়া দলের কোন্দলও কমে আসবে বলে মনে করছেন দলের সিনিয়র নেতারা।
খুলনা বিজয়ের পর আওয়ামী লীগের চোখ এখন গাজীপুরে। গাজীপুরে জয় পেতে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগের ইঙ্গিত দিয়েছে দলের নীতি নির্ধারকরা। গতকাল রাতে প্রধানমন্ত্রী খুলনায় নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী এবং নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ঐ বৈঠকেই তিনি জাতীয় নির্বাচনের আগে আরও চারটি সিটি নির্বাচনও ঐক্যবদ্ধভাবে করার নির্দেশ দেন। গতকালই আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা গাজীপুরে আহসান উল্লাহ মাস্টারের ছেলে রাসেলের বাসায় দীর্ঘ বৈঠক করনে। ঐ বৈঠকে অবিলম্বে দলীয় কোন্দল এবং বিরোধ মিটিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। লে. কর্নেল (অব:) ফারুক খানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা গাজীপুরের আওয়ামী লীগকে কঠোর বার্তা দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, যেহেতু গাজীপুরে এখন নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞা নেই, তাই এখনই মন্ত্রীদের গাজীপুরে নিয়ে এসে জনসংযোগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রাতেই ফারুক খান এবং জাফর উল্লাহ চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে গাজীপুরের সর্বশেষ পরিস্থিতি অবহিত করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, শান্তি নিকেতন সফর শেষ করেই গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বসবেন। প্রধানমন্ত্রী যেকোনো মূল্যে গাজীপুরে দলের বিভক্তি এবং কোন্দল মিটিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে গাজীপুর জিতলে আওয়ামী লীগ চাইবে আরও তিনিটি (সিলেট, বরিশাল ও রাজশাহী) সিটি নির্বাচন করে ফেলতে। এ নিয়ে খুলনা নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের দ্বিধা ও সংশয় ছিল। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এই নির্বাচনের নেতিবাচক ফলাফল জাতীয় নির্বাচনের ওপর প্রভাব ফেলত বলেই আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের ধারণা। তাছাড়া তখন বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক চাপ বাড়তো। বিএনপি তখন জাতীয় নির্বাচন বর্জন করলে আওয়ামী লীগের জন্য অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রমাণ করা কঠিন হতো। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ৪ সিটিতে যদি আওয়ামী লীগ জয়ী হয় তাহলে ‘বিএনপি ছাড়া অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব না’- এই বক্তব্যের কোনো ভিত্তি থাকবে না।
তাছাড়া ৪ টির নির্বাচন দিয়ে জাতীয় নির্বাচনের একটি আবহ তৈরি করতে চায় আওয়ামী লীগ। যে নির্বাচনী আবহে সব রাজনৈতিক দলই নির্বাচনমুখী হবে। ২০১৪’র মতো রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন বর্জনের পথে পা বাড়াবে না। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করে, নির্বাচন বর্জনে বিএনপিকে একলা করতে পারলেই আওয়ামী লীগ সরকার একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে পেরেছে বলে প্রমাণ করতে পারবে। তাছাড়া ৫ সিটিতে হারার পর বিএনপি জনপ্রিয় দল তাকে বাদ দিয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব না- এমন বক্তব্যেও জোর থাকবে না। তাই ৫ সিটি দিয়ে বিএনপিকে ঘায়েল করতে চাইছে সরকার। যেন কারও কাছে এটা মনে না হয়, বিএনপি নেই তাই নির্বাচন অর্থহীন। বরং জনগণের কাছে বিএনপির আগের আবেদন নেই, এটা প্রমাণ করাই সরকারের প্রধান লক্ষ্য। যাতে আগামী নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ করা না করা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু না হয়।
Read In English: https://bit.ly/2KKaOye
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।