নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৩ মে, ২০১৮
বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা কথা ইদানীং প্রায়ই বলা হয়, তা হলো আওয়ামী লীগ ভারতমুখী। আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় টিকেই আছে ভারতের বদান্যতায়। একটু গভীরে গিয়ে দেখা যায়, ভারতই বরং শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ মুখী। কে কার উপর নির্ভরশীল, সে বিতর্কে না গিয়ে বলা যায়, আগামী ২৫ মে থেকে অনুষ্ঠেয় শেখ হাসিনার শান্তিনিকেতন সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ভারতের সঙ্গে একসময় আমাদের বহু অমীমাংসিত ইস্যু ছিল। শেখ হাসিনার ১০ বছর এবং আগে (৯৬-২০০১) ৫ বছরে এই তালিকা ছোট হয়ে এসেছে। এখন ছোট অমীমাংসিত বিষয়ের তালিকায় সবচেয়ে বড় ইস্যু তিস্তার পানি চুক্তি। অর্থনৈতিক এবং নিরাপত্তার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ছাপিয়ে এখন এই পানি-চুক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে স্পর্শকাতর বিষয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শান্তিনিকেতন সফরে এই ইস্যুটি আরও বড় হয়ে এসেছে এ কারণে যে, শান্তিনিকেতনে ‘বাংলাদেশ ভবন’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছাড়াও থাকবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। মমতা ব্যানার্জির আপত্তির কারণেই ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার তিস্তার পানি চুক্তি করতে পারছে না। এবার কি মমতার মমতা হবে? তিনি কি এবার তিস্তার চুক্তি করতে সম্মতি দেবেন? শেখ হাসিনার ভারত সফরে অন্যসব বিষয় ছাড়িয়ে এই প্রসঙ্গটি বড় হয়ে উঠেছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেছেন, নির্বাচনের আগে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি হলে, সেটা হবে আওয়ামী লীগের জন্য প্লাস-পয়েন্ট।’ আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা বলেছেন, তিস্তা পানি চুক্তি হলে জনগণ বুঝবে আওয়ামী লীগই একমাত্র দল যারা ভারতের কাছ থেকে তার ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে পারে।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলছিলেন, আওয়ামী লীগ সরকারই পার্বত্য শান্তি চুক্তি করেছে, আমরাই গঙ্গা চুক্তি করেছি, সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করেছি, ছিটমহল সমস্যার সমাধান করেছি, সমুদ্র বিরোধ মীমাংসা করেছি। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে আমরা সব দ্বিপাক্ষিক ইস্যুর মীমাংসা করেছি। তিস্তাও করবো।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ বলেছেন, ‘এবারের সফরের আঙ্গিক ও প্রেক্ষাপট ভিন্ন। তবে যেহেতু ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী একসঙ্গে থাকবেন, তাই এই প্রসঙ্গটি উঠতে পারে। একাধিক কূটনৈতিক সূত্র বলছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে তিস্তার চুক্তির জন্য কূটনৈতিক চাপ দেবেন।
তবে, আওয়ামী লীগ যখন তিস্তার পানি নিয়েই ভাবছে তখন বিএনপির চিন্তা হলো ভিন্ন। বিএনপি মনে করছে, এই সফরের মাধ্যমে বর্তমান সরকার আরও পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার গ্যারান্টি পেতে চায়। বিএনপির নেতা নজরুল ইসলাম খান বলছিলেন,‘ এই সরকার তো জনগণ নয় ভারতে উপর নির্ভরশীল। তাই নির্বাচনের আগে ঘন ঘন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন।’
ভারতের আশীর্বাদ পাওয়াই এই সরকারের প্রধান উদ্দেশ্য বলে তিনি মনে করেন। বিএনপির আরেক নেতা গয়েশ্বয় চন্দ্র রায়ও মনে করেন ‘সরকার এখন ভারতের কৃপায় ক্ষমতায় আছে।’ কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী এসব বক্তব্যকে ‘অরুচিকর’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন ‘ দেনা-পাওনার হিসেব দিয়ে বন্ধুত্ব হয় না। আর ভারতের ইচ্ছায় বাংলাদেশের সরকার গঠন বা পরিবর্তন হয় না। বাংলাদেশের সরকার গঠন হবে, এদেশের নাগরিকের ভোটে। এখানে ভারতের কোনো ভূমিকা নেই।’তিনি বলেন‘প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক থাকলে সবচেয়ে বেশী লাভবান হবে, দুই দেশের জনগণ। আমরা জনগণের জন্যই দুই দেশের সম্পর্কে নতুন থেকে নতুনতর উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছি। তবে, শেখ হাসিনার ভারত সফরে তিস্তা হোক আর না হোক, রাজনীতিতে এই বার্তা নিশ্চিতভাবেই দেবে যে, আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গেই ভারত কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। সেটাই নির্বাচনে দলটিকে হয়তো বাড়তি শক্তি দেবে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের সব রকম কমিটি গঠন ও সম্মেলন বন্ধ থাকবে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন হচ্ছে। সামনে প্রথম পর্যায়ের নির্বাচন হবে। এই নির্বাচন চলাকালে উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে কোনো সম্মেলন, মেয়াদোত্তীর্ণ সম্মেলন, কমিটি গঠন এই প্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে’।
মন্ত্রী-এমপির নিকটাত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, নিকটজনদেরকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হবে। যারা ভবিষ্যতে করতে চায় তাদেরও নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। যারা আছে তাদের তালিকা তৈরি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
নির্দেশনা দেওয়া হলেও অনেকেই এখনো নির্বাচনে আছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রত্যাহারের তারিখ শেষ হোক, তার আগে এ বিষয়ে কীভাবে বলা যাবে।
ওবায়দুল কাদের উপজেলা নির্বাচন সেতুমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।