নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৬ মে, ২০১৮
২০০১ সালের নির্বাচনের আগে বনানীতে তারেক গড়ে তুলেছিলেন হাওয়া ভবন। ওয়ান ইলেভেনের সময় ২০০৭ সালে যৌথ বহিনী হাওয়া ভবনে অভিযান চালায়। ঐ অভিযানে সুসজ্জিত হাওয়া ভবনে পাওয়া গিয়েছিল ‘এলিট ক্লাব’ বলে একটি রুম। ঐ রুমে পাসওয়ার্ড ছাড়া কেউ ঢুকতে পারতো না। সেখানে ছিল বিলিয়ার্ড বোর্ড, বড় প্রজেক্টর, বার। তারেক জিয়া এবং মামুন গ্রেপ্তারের পর জিঙ্গাসাবাদে দুজনই এলিট ক্লাবের কথা স্বীকার করেন।
মামুন তাঁর জবানবন্দিতে বলেছিলেন, ‘তারেক তাঁর একান্ত বিশ্বস্ত ৫ জনকে নিয়ে এখানে নিয়মিত বৈঠক করতেন, মাঝে মধ্যে বিশেষ আমন্ত্রণে কাউকে কাউকে ডাকা হতো। এই এলিট ক্লাবেই ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার নীল নকশা প্রণয়ন করা হয়েছিল। বিএনপি সরকারের মন্ত্রী থেকে আমলা সকলেই এলিট ক্লাবের সদস্যদের চিনতেন। তাঁদের বলা হয়েছিল, এদের কোনো নির্দেশ তারেক জিয়ার নির্দেশ বলে মনে করতে হবে। এখান থেকেই নিয়ন্ত্রিত হতো ব্যবসা, চাঁদাবাজি। বিএনপি সরকার ক্ষমতাচ্যুত হবার ১০ বছর পর এলিট ক্লাবও নেই, তাদের সদস্যরাও দুর্দিনে। এলিট ক্লাবের পাঁচজন সদস্য হলেন তারেক জিয়া, গিয়াসউদ্দিন আল মামুন, হারিছ চৌধুরী, সিলভার সেলিম এবং লুৎফুজ্জামান বাবর।
এলিট ক্লাবের সভাপতি তারেক জিয়া লন্ডনে পলাতক। দুই মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড তাঁর মাথায়। লন্ডনে বসে পাকিস্তানি গোয়েন্দা আইএসআইয়ের পরামর্শে বাংলাদেশ বিরোধী পরিকল্পনা করাই তাঁর একমাত্র কাজ।
গিয়াসউদ্দিন আল মামুন ৩৭ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। কারাগারে তিনি ভালোই আছেন। মোবাইল ফোন অবৈধভাবে ব্যবহারের জন্য দু’দফা শাস্তি পেয়েছিলো কারাগারে। এখনো আগের মতোই দুষ্ট বুদ্ধি তাঁর মাথায় বিদ্যুতের মতো খেলে। বিএনপির লোকজন জেলে গেলে তাঁদের দেখভাল করেন। জেলে মামুন একরকম নেতা-গিরি করেন। বাইরের সঙ্গে তাঁর ভালোই যোগাযোগ আছে। মজা করে বলা হয়, জেলে মামুনই বিএনপির চেয়ারপারসন।
হারিছ চৌধুরী মাথায় ২০ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে দীর্ঘদিন বিদেশে পলাতক ছিলেন। এখন হারিছ লন্ডনে আছে বলে নিশ্চিত খবর পাওয়া গেছে। তবে বিএনপির লোকজনই তাঁর ওপর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। এ কারণেই লন্ডনেও হারিছ চৌধুরী একরকম লোকচক্ষুর আড়ালেই থাকে।
সিলভার সেলিম ছিলেন গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিজনেস পার্টনার তারেক জিয়ার অন্যতম অর্থ যোগানদাতা। কমিশন বাণিজ্যের টাকা সিলভার সেলিমের কাছেই জমা থাকতো বলে জানা যায়। ঐ টাকা দিয়ে গড়ে ওঠে ওয়ান গ্রুপ এবং চ্যানেল ওয়ান। ২০০১ সালে সিলভার সেলিম বাগেরহাটের একটি আসন থেকে বিএনপির টিকিটে এমপি হয়েছিলেন। ওয়ান ইলেভেনে গ্রেপ্তার হন। মুক্তি পাবার পর ‘তওবা করে রাজনীতি ছেড়েছেন। এখন ব্যবসা বাণিজ্য নিয়েই ব্যস্ত দিন কাটান। তারেক আর মামুনকে গালাগালি করাই তাঁর প্রধান বিনোদন।
লুৎফুজ্জামান বাবর আসলে ছিলেন চোরাচালানকারী। তারেকের চোরাচালান নেটওয়ার্ক দেখাশোনা করতেই বাবরকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বানানো হয়েছিল। বাবর এখন জেলে এক বদলে যাওয়া মানুষ। তাবলীগ, নামাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। হঠাৎ দেখে তাঁকে চেনার উপায় নেই। এক কাপড়েই কাটে তার দিন। অথচ ওয়ান ইলেভেনে তার বাসায় এক হাজার শার্ট পাওয়া গিয়েছিল।
বিএনপির সবচেয়ে পাঁচ ক্ষমতাবানদের এই দুরবস্থা নিয়ে অবশ্য বিএনপিতে হতাশা নেই বরং চাপা উল্লাস। কান পাতলেই শোনা যায়, বিএনপির নেতারাই বলেন ‘ এদের জন্যই বিএনপির এই পরিণতি।’
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।