নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০১ জুন, ২০১৮
তিন সিটি কর্পোরেশনে আওয়ামী লীগ তাঁর মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে। আর বিএনপি তাকিয়ে আছে তারেক জিয়ার দিকে। আগামী ৩০ জুলাই সিলেট, রাজশাহী এবং বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য এই তিন সিটি কর্পোরেশন হবে জনপ্রিয়তার যাচাই। আওয়ামী লীগ তিনটি সিটি এবং গাজীপুরে ২৬ জুন অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে জিততে বদ্ধ পরিকর। অন্যদিকে বিএনপি এই সিটি নির্বাচনের মাধ্যমে সর্বাত্নক আন্দোলনের ক্ষেত্র করতে চায়। তিন সিটিতে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলেও বিএনপির প্রধান শরীক জামাত সিলেট এবং রাজশাহীতে আলাদা প্রার্থী ঘোষণা করেছে। ২০ দল ঐক্যবদ্ধ নির্বাচন করলে অন্তত একটি সিটিতে জামাত তাঁর প্রার্থী চায়।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগ তিনটি সিটিতেই তাদের প্রার্থীতা মোটামুটি চূড়ান্ত করেছে। কয়েকমাস আগেই এনিয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা চূড়ান্ত হয়েছে। রাজশাহী সিটিতে খায়রুজ্জামান লিটনকে ইতিমধ্যেই সবুজ সংকেত দেয়া হয়েছে। তিনি নির্বাচনী প্রচারাভিযান শুরুও করে দিয়েছেন। যোগাযোগ করা হলে লিটন বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, ‘নেত্রী ছয়মাস আগেই আমাকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। আমিও কাজ শুরু করেছি’। খায়রুজ্জামান লিটন ২০০৮ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করছিলেন। সেসময় রাজশাহীতে দৃশ্যমান উন্নতি হয়েছিল। সেই উন্নয়নই এবার আওয়ামী লীগের প্রধান স্লোগান ‘চলো বদলে দেই সেই রাজশাহী।’ এটাই এবার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মূল বার্তা।
সিলেটের সাবেক মেয়র বদুরুদ্দিন কামরানই আওয়ামী লীগের প্রার্থী হচ্ছেন, তা মোটামুটি নিশ্চিত। দলের হাই কমান্ড থেকে কামরানকেই সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। কামরানও নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছেন।
বরিশালে আওয়ামী লীগের প্রার্থিতা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে, শেষ পর্যন্ত সাদিক আব্দুল্লাহই মনোনয়ন পাবেন। প্রধানমন্ত্রী কয়েকদিন আগে সাদিক আব্দুল্লাহকে ডেকে মেয়র মেয়র নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
আওয়ামী লীগ দলীয় কোন্দল নিয়ন্ত্রণে এনে মনোনয়ন চূড়ান্ত করলেও বিএনপি এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি। প্রার্থিতা চূড়ান্ত করবেন তারেক জিয়া।
রাজশাহীতে বর্তমান মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন আবার প্রার্থী হতে আগ্রহী। কিন্তু তারেক জিয়ার পছন্দ মিজানুর রহমান মিনু। তারেক জিয়া সম্ভাব্য আন্দোলনকে মাথায় রেখে মিনুর মতো হেভিওয়েট প্রার্থী দিতে চান বলে বিএনপির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে রাজশাহীতে বিএনপির বড় মাথাব্যাথা হয়ে দাড়িয়েছে জামাত। রাজশাহী মহানগর জামাতের নেতা আবু ইউসুফ সেলিম ইতিমধ্যে নিজেকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন। তিনি নির্বাচনী প্রচারনাও শুরু করেছেন।
সিলেটেও বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর মনোনয়ন নিশ্চিত নয়। তারেক এখানেও নতুন প্রার্থীর কথা ভাবছেন বলে জানা গেছে। আরিফের সাথে নিঁখোজ ইলিয়াস আলীর দ্বন্ধ এবং অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের মাখামাখির কারণে আরিফ এখন তারেকের পছন্দের তালিকায় নেই। এখাানে নাসিম হোসাইন বা বদরুজ্জামান সেলিম আসতে পারেন। এরা দুজন সিলেট বিএনপির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক। তবে, বিএনপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, আরিফকে তারেক জাতীয় নির্বাচনের জন্য রিজার্ভ রাখতে চান। স্পর্শকাতর সিলেট ১ আসনে যে দল জয়ী হয়, তারাই সরকার গঠন করে। এখানেও বিএনপির প্রধান মাথাব্যাথা জামাত। সিলেট জামাতের আমীর এহসানুল মাহাবুব জুয়েলকে দলটি মেয়র প্রার্থী হিসেবে ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে। জামাত বলেছে, দুটির মধ্যে অন্তত একটি মেয়র পদ না পেলে তারা স্বতন্ত্র নির্বাচন করবে।
বরিশালেও বিএনপির টিকেটে নির্বাচিত বর্তমান মেয়র আহসান হাবীব কামাল তারেকের পছন্দের তালিকায় নেই। তারেক মজিবর রহমান সারোয়ারকে মেয়র পদে মনোনয়ন দিচ্ছেন বলে বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে। মজিবর রহমানের সঙ্গে তারেক নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন বলেও জানা গেছে।
তারেক জিয়া হেভীওয়েট প্রার্থী দিয়ে সরকারকে চাপে ফেলতে চাইছে, এমন দাবী বিএনপি নেতাদের। যাতে বিএনপি ভবিষ্যতে এই নির্বাচনকে ইস্যু করে আন্দোলন গড়ে তুলতে পারে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।