নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১২ জুন, ২০১৮
বিএনপির তিন নেতার ভারত সফর নিয়ে এখন বিএনপিতেই তোলপাড় চলছে। বিএনপির সিনিয়র নেতাদের অন্ধকারে রেখে আবদুল আউয়াল মিন্টু, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং হুমায়ুন কবীর সাতদিন দিল্লিতে একাধিক বৈঠক করেছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশররফ হোসেন বলেছেন, ‘এই বৈঠকের ব্যাপারে তিনি কিছু্ই জানেন না।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, দিল্লী থেকে দেশে ফিরে এই তিননেতা তাঁর সতীর্থদের তোপের মুখে পড়েছেন। বিএনপির নেতারাই প্রশ্ন করেছেন, ‘ভারতের সঙ্গে কি গোপন চুক্তি হলো বিএনপির?’ শুধু বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগের নেতারাও প্রশ্ন করেছেন, ‘বিএনপি ভারতের কাছে কি মুচলেকা দিলো।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বিএনপি নেতাদের এই সফরকে ২০০১ এর জুনের সফরের সঙ্গে তুলনা করছে। ২০০১ সালের জুনে তারেক জিয়ার নেতৃত্বে একটি দল ভারতে গিয়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করে এসেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিক বক্তৃতায় অভিযোগ করেছেন যে, ‘গ্যাস বিক্রির দাসখত দিয়েই ২০০১ এ বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল।’ তাই বিএনপির নেতারা রাখঢাক না রেখেই বলছেন, ‘এবারের ভারত সফর বাংলাদেশের রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট।’
এই সফরের মূল উদ্যোক্তা হলেন আবদুল আউয়াল মিন্টু। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল, একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা ভারতকে বোঝানো।’ মিন্টু বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমরা ভারতকে বোঝাতে পেরেছি যে বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রয়োজন।’ বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশে ২০১৪ এর মতো নির্বাচন দেখতে চায়না।’
তবে, একাধিক সূত্র বলছে ভারতের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির তিন নেতা আনুষ্ঠানিক ভাবে ২০০১-০৬ এর ভূমিকার জন্য ক্ষমা চেয়েছে। তাঁরা স্বীকার করেছেন, ‘এ সময় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে বিএনপি সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারেনি।’
সূত্রমতে, ভারত তিনটি বিষয়ে বিএনপির স্পষ্ট অবস্থান জানতে চেয়েছে, প্রথমত, বিএনপির সঙ্গে ভারতীয় বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর যোগাযোগ। আবার ক্ষমতায় এলে বিএনপি বাংলাদেশকে করিডোর হিসেবে ব্যবহার করতে দেবে কিনা।
দ্বিতীয়ত, জামাতসহ উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক। এই সম্পর্ক বিএনপি ত্যাগ করবে কিনা।
তৃতীয়ত, তারেক জিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে মত কী।
জানা গেছে, প্রথম দুটি বিষয়ে বিএনপি তাৎক্ষণিক জবাব দিলেও তারেক জিয়ার ব্যাপারে কোনো মতামত দেয়নি। তবে, অন্তত: দুটি বৈঠকে আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন, আপাতত সরাসরি রাজনীতিতে তারেক থাকবেন না।
তবে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপির বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পক্ষে ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাইলেও আগামীতে এমন ঘটনা আর ঘটবে না – এমন প্রতিশ্রুতির গ্যারান্টি চায় ভারত।
কিন্তু বিএনপির নেতারা ঢাকায় এসে তাদের সতীর্থদের সঙ্গেই এই বৈঠক নিয়ে গোপনীয়তা বজায় রাখছেন। বিএনপির একাধিক নেতা বলেছে, বিএনপির রাজনীতির প্রধান শক্তিই হলো ভারত বিরোধিতা। আর এই শক্তি যদি তোষামোদে পরিণত হয়, তাহলে আর বিএনপি থাকলো কীভাবে?
বাংলা ইনসাইডার/ জেডএ
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।