নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০১ পিএম, ২৪ জুন, ২০১৮
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারণার শেষ দিন ছিল আজ। দিনের শুরুতে গাজীপুরের কিছু অংশে বৃষ্টি হলেও দিনটি ছিল মোটামুটি রৌদ্রজ্জ্বল। এমন দিনে প্রচারণা নিয়ে দুই রকম চিত্র দেখা যায় প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ ও বিএনপি শিবিরে।
গাজীপুরের শালনায় দিনের প্রথম কর্মসূচি পালন করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী নৌকা প্রতীকের জাহাঙ্গীর আলম। সকাল নয়টার দিকে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। অসংখ্য মানুষ পথসভায় উপস্থিত ছিলেন। জাহাঙ্গীর আলম শালনায় বললেন, নির্বাচনে নৌকার পক্ষে একটি জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। গাজীপুরের মানুষ উন্নয়নের পক্ষে ভোট দেবেন। গাজীপুরের মানুষ আর অনুন্নয়ের পথে থাকতে চান না। শালনার পর জাহাঙ্গীর আলম কোনাবাড়ি যান। সেখান থেকে বাসন এলাকার চৌরাস্তায় পথসভা করেন। এই পথসভাতেও অসংখ্য মানুষ যোগ দেন। এখানে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এখন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সরকার। নির্বাচিত হলে তাঁর পরিকল্পনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরে তা বাস্তবায়নের কথা তিনি বলবেন। বাসনের সভার পর জাহাঙ্গীর আলম জয়দেবপুরে ২৪ নম্বরও ওয়ার্ডে যান। সেখানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। তারপর কোনাবাড়িতে গিয়ে সভা করেন। দুপুরে হারিকেনের নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন জাহাঙ্গীর আলম। তিনি আবারও উন্নয়নের স্বার্থে তাঁকে নির্বাচিত করার জন্য সাংবাদিকদের মাধ্যমে জনগণের কাছে আবেদন করেন। এসময় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ও মহানগর সভাপতি মো. আজমত উল্লাহ খান উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনের পর জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুর শহরের শিববাড়ি এবং আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে, টঙ্গী মিলগেট, গাছা বাজার ও বোর্ডবাজার এলাকায় পথসভায় বক্তব্য দেন। বিকেলে মহানগরীর ৫৭টি ওয়ার্ডে ৪২৫ কেন্দ্র কমিটির নেতাকর্মীরা মিছিল করেন।
এ তো গেল জাহাঙ্গীর আলমের দিনের ফিরিস্তি কী করেছেন বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার? হাসান উদ্দিন সরকার আজ প্রচারণার কাজেই নামেন বেশ দেরি করে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিনে তিনি কেবল একটি প্রেস ব্রিফিং করেছেন। আজ বেলা ১১টার দিকে টঙ্গীর কাদেরিয়া টেক্সটাইল মিল সংলগ্ন বিএনপি কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংটি অনুষ্ঠিত হয়। এরপর অনেকটা সময় কেটে গেলেও হাসান সরকারকে জনসংযোগ করতে বা অন্য কোনো ধরনের প্রচারণা কাজে অংশ নিতে দেখা যায়নি। বেলা ২ টা পর্যন্ত গাজীপুরে বিএনপি কার্যালয়ে নিশ্চল বসে ছিলেন হাসান সরকার। দিনের বাকি সময়টাতেও উল্লেখযোগ্য কোনো নির্বাচনী প্রচারণা দেখা যায়নি বিএনপি প্রার্থীর। বরং দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিভিন্ন আলোচনায়ই ব্যস্ত দেখা যায় তাঁকে।
গাজীপুরে প্রচারণার শেষ দিকে এমন কর্মকাণ্ডের পরও আজ বিকেলে রাজধানীর গুলশানস্থ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গাজীপুরে যদি ন্যূনতম নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়, তাহলে বিএনপির প্রার্থী বড় ব্যবধানে জয়ী হবেন।
এদিকে গাজীপুরের আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বলছেন ভিন্নকথা। তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, বিএনপি প্রার্থী হাসান সরকার প্রচারণায় ভোট পর্যন্ত চাচ্ছে না। করছেন সরকারের সমালোচনা। বিএনপি বিভিন্ন দাবি জনগণের কাছে বলতেই সময় পার করেছেন হাসান সরকার।
অবস্থাদৃষ্টে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত, তবে কি বিএনপি গাজীপুর নির্বাচনে অংশগ্রহণ শুধু সরকারের সমালোচনার জন্যই। এলাকার উন্নয়ন ও পরিকল্পনার কোনো কথা না বলে সরকারের সমালোচনাতেই তারা মন ভোলাতে চান গাজীপুরবাসীর। বিশ্লেষকদের প্রশ্ন, তবে কি গাজীপুরে হার মেনে নিয়ে এখন নির্বাচন পরবর্তী সরকারের সমালোচনার গতাণুগতিক কর্মকাণ্ডের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি?
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।