নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৮ জুলাই, ২০১৮
ঢাকার ২০ টি আসনের মধ্যে ১৩ টিতেই নতুন মুখ আনতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। একাধিক জরিপ, বিগত সময়ে বিভিন্ন এমপির কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করে এবং বার্ধক্য জনিত কারণে বর্তমানে এমপি অথবা গতবার নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করেছেন এমন অনেককে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে না। আওয়ামী সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকার আসনগুলোতে ব্যাপক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশ অনুযায়ী ঢাকার আসনগুলোর মধ্যে ৬৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই নতুন মুখ আসছে বলে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় নতুন মুখ নির্বাচনের ক্ষেত্রে পরিচিত মুখ ও ব্যবসায়ীরা প্রাধান্য পাবে। এছাড়া আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারক পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এবার ঢাকার মধ্যে জাতীয় পার্টিকে (জাপা) কোনো আসন দেওয়া হবে না। শুধু একটি ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হতে পারে সেটি হলো ঢাকা-৬। সেখানে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদকে হয়তো ছাড় দেওয়া হতে পারে। এর বাইরে সব আসনই আওয়ামী লীগ রাখতে চায়।
ঢাকার আসনগুলোতে আওয়ামী লীগের আসন বিন্যাস হতে পারে এমন:
ঢাকা ১ (১৭৪ তম সংসদীয় আসন)
বর্তমান এমপি: সালমা ইসলাম (জাতীয় পার্টি)
এলাকা: ঢাকা-১ আসনটি ঢাকা জেলার দোহার উপজেলা ও নবাবগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী: গতবার এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন আবদুল মান্নান খান। এবার তিনি আর মনোনয়ন পাচ্ছেন না। তাঁর স্থলে মনোনয়ন পেতে পারেন বেক্সিমকো গ্রুপের সালমান এফ রহমান।
ঢাকা ২ (১৭৫ তম সংসদীয় আসন)
বর্তমান এমপি: মো. কামরুল ইসলাম (আওয়ামী লীগ)
ঢাকা-২ আসনটি ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার আমিনবাজার ইউনিয়ন, তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন ও ভাকুর্তা ইউনিয়ন, কেরানিগঞ্জ উপজেলার কিছু অংশ, ঢাকা মেট্রোপলিটন কামরাঙ্গীরচর ও হাজারীবাগ থানার সুন্দরগঞ্জ ইউনিয়ন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৫, ৫৬ ও ৫৭ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী: এই আসনে বর্তমান এমপি অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামই আবার মনোনয়ন পেতে পারেন।
ঢাকা ৩ (১৭৬ তম সংসদীয় আসন)
বর্তমান এমপি: নসরুল হামিদ (আওয়ামী লীগ)
ঢাকা-৩ আসনটি ঢাকা জেলার কেরানিগঞ্জ উপজেলার জিনজিরা, আগানগর, তেঘরিয়া কোন্ডা ও শুভাঢ্যা এই ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী: ঢাকা-২ এর মতো এই আসনেও বর্তমান এমপি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদকেই মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
ঢাকা ৪ (১৭৭ তম সংসদীয় আসন)
বর্তমান এমপি: সৈয়দ আবু হোসেন (জাতীয় পার্টি)
ঢাকা-৪ আসনটি ঢাকা জেলার ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৪৭, ৫১, ৫২, ৫৩, ৫৪ নং ওয়ার্ড এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন শ্যামপুর থানার শ্যামপুর ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী: ২০০৮ সালে এই আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল বর্তমানে সংরক্ষিত মহিলা আসন-২৪ এর এমপি সানজিদা খানম। এবার এই আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ সভাপতির সাবেক সহকারী একান্ত সচিব ড. আওলাদ হোসেন এগিয়ে আছেন। তবে আওলাদ হোসেনও শেষ পর্যন্ত পাবেন কিনা নিশ্চিত নয়। তিনি না হলে এই আসনেও আসছে অন্য নতুন মুখ।
ঢাকা ৫ (১৭৮ তম সংসদীয় আসন)
বর্তমান এমপি: হাবিবুর রহমান মোল্লা (আওয়ামী লীগ)
এটি ঢাকা জেলার ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৪৮, ৪৯,ও ৫০ নং ওয়ার্ড এবং ঢাকা মেট্রোপলিটনের ডেমরা ইউনিয়ন, দনিয়া ইউনিয়ন, মাতুয়াইল ইউনিয়ন ও সারুলিয়া ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী: এই আসনে বর্তমান এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লা মনোনয়ন পাচ্ছেন না। পরিবর্তন করে এই আসনেও নতুন মুখ আনছে আওয়ামী লীগ। আর এই নতুন মুখ ব্যবসায়ী হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
ঢাকা ৬ (১৭৯ তম সংসদীয় আসন)
বর্তমান এমপি: কাজী ফিরোজ রশীদ (জাতীয় পার্টি)
ঢাকা-৬ আসন ঢাকা জেলার ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪, ৪৫ ও ৪৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী: এটি ছিল বর্তমান ঢাকা দক্ষিণ মেয়র সাঈদ খোকনের সিট। গতবার এই আসন দেওয়া হয়েছিল জাতীয় পার্টিকে। এবার এখানে নতুন মুখ আনতে পারে আওয়ামী লীগ।
ঢাকা ৭ (১৮০ তম সংসদীয় আসন)
বর্তমান এমপি: হাজী মোঃ সেলিম (স্বতন্ত্র)
ঢাকা-৭ আসনটি ঢাকা জেলার লালবাগ, চকবাজার, বংশাল ও কোতোয়ালি থানা নিয়ে গঠিত।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী: অসুস্থতার কারণে হাজী সেলিম আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাচ্ছেন না। মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন গতবার নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করেছে। এবার তিনিও মনোনয়ন পাচ্ছেন না। এখানেও নতুন মুখ আসতে পারে।
ঢাকা ৮ (১৮১ তম সংসদীয় আসন)
বর্তমান এমপি: রাশেদ খান মেনন (বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি)
ঢাকা-৮ আসনটি ঢাকা জেলার ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ০৮, ০৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৯, ২০, ২১ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী: এবারও এই আসনটি ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেননকে দেওয়া হতে পারে।
ঢাকা ৯ (১৮২ তম সংসদীয় আসন)
বর্তমান এমপি: সাবের হোসেন চৌধুরী (আওয়ামী লীগ)
ঢাকা-৯ আসনটি ঢাকা মেট্রপলিটন খিলগাঁও ও সবুজবাগ থানাধীন নাসিরাবাদ ইউনিয়ন, দক্ষিণগাঁও ইউনিয়ন ও মাণ্ডা ইউনিয়ন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ০১, ০২, ০৩, ০৪, ০৫, ০৬ ও ০৭ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী: বর্তমান এমপি সাবের হোসেন চৌধুরীকেই মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
ঢাকা ১০ (১৮৩ তম সংসদীয় আসন)
বর্তমান এমপি: শেখ ফজলে নূর তাপস (আওয়ামী লীগ)
ঢাকা-১০ আসনটি ঢাকা শহরের ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮ ও ২২ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী: বর্তমান এমপি শেখ ফজলে নূর তাপসই সব জরিপে এগিয়ে। তাই এই আসনে তাঁকেই আবার মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
ঢাকা ১১ (১৮৪ তম সংসদীয় আসন)
বর্তমান এমপি: এ কে এম রহমতুল্লাহ্ (আওয়ামী লীগ)
ঢাকা-১১ আসনটি ঢাকা মেট্রপলিটন বাড্ড থানা ও ভাটারা থানাধীন বেরাইদ ইউনিয়ন ভাটারা ইউনিয়ন ও সাঁতারকুল ইউনিয়ন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২১, ২২ ও ২৩ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী: বর্তমান এমপি এ কে এম রহমতুল্লাহ্র এবার মনোনয়ন না পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এখানেও নতুন মুখ আনতে পারে আওয়ামী লীগ।
ঢাকা ১২ (১৮৫ তম সংসদীয় আসন)
বর্তমান এমপি: আসাদুজ্জামান খাঁন (আওয়ামী লীগ)
ঢাকা-১২ আসনটি ঢাকা শহরের ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ৩৫ ও ৩৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী: বর্তমান এমপি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল আবার মনোনয়ন পেতে পারেন।
ঢাকা ১৩ (১৮৬ তম সংসদীয় আসন)
বর্তমান এমপি: জাহাঙ্গীর কবির নানক (আওয়ামী লীগ)
ঢাকা-১৩ আসনটি ঢাকা শহরের ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২, ৩৩ ও ৩৪ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী: ঢাকা-১২ এর মতোই এই আসনেও বর্তমান এমপি জাহাঙ্গীর কবির নানক মানোনয়ন পেতে পারেন।
ঢাকা ১৪ (১৮৭ তম সংসদীয় আসন)
বর্তমান এমপি: মো. আসলামুল হক (আওয়ামী লীগ)
ঢাকা-১৪ আসনটি ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার কাউন্দিয়া ইউনিয়ন এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ০৭, ০৮, ০৯, ১০, ১১ ও ১২ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী: বর্তমান এমপি মো. আসলামুল হকের বদলে এই আসনে নতুন মুখের কথা ভাবছে আওয়ামী লীগ।
ঢাকা ১৫ (১৮৮ তম সংসদীয় আসন)
বর্তমান এমপি: কামাল আহমেদ মজুমদার (আওয়ামী লীগ)
ঢাকা-১৫ আসনটি ঢাকা শহরের ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ০৪, ১৩, ১৪ ও ১৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী: কামাল আহমেদ মজুমদার এবার আর মানোনয়ন পাচ্ছেন না, এখানেও আসছে নতুন মুখ।
ঢাকা ১৬ (১৮৯ তম সংসদীয় আসন)
বর্তমান এমপি: মো. ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ্ (আওয়ামী লীগ)
ঢাকা-১৬ আসনটি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ০২, ০৩, ০৫ ও ০৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী: বর্তমান এমপি মো. ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ্ এর বদলে এখানেও নতুন মুখের কথা ভাবছে আওয়ামী লীগ।
ঢাকা ১৭ (১৯০ তম সংসদীয় আসন)
বর্তমান এমপি: এস. এম, আবুল কালাম আজাদ (বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ))
ঢাকা-১৭ আসনটি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ১৫,১৮, ১৯ ও ২০ এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানার ক্যান্টনমেন্ট এলাকা নিয়ে গঠিত।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী: বিএনপির সাবেক নেতা ও মন্ত্রী নাজমুল হুদা এই আসনটি চাচ্ছেন। তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিলে এই আসনে মনোনয়নও পেতে পারেন। সেটি না ঘটলে এই অসনেও নতুম মুখ আসছে। আর নতুন মুখ হতে পারেন একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী।
ঢাকা ১৮ (১৯১ তম সংসদীয় আসন)
বর্তমান এমপি: সাহারা খাতুন (আওয়ামী লীগ)
ঢাকা-১৮ আসনটি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ০১ ও ১৭ নং ওয়ার্ড এবং ঢাকা মেট্রপলিটন হরিরামপুর ইউনিয়ন, উত্তরখান ইউনিয়ন, দক্ষিণখান ইউনিয়ন, ডুমনি ইউনিয়ন ও বিমানবন্দর এলাকা নিয়ে গঠিত।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী: বর্তমান এমপি সাহারা খাতুন এবার হয়তো মনোনয়ন নাও পেতে পারেন। সেক্ষেত্রে এই আসনেও নতুন মুখ আনবে আওয়ামী লীগ।
ঢাকা ১৯ (১৯২ তম সংসদীয় আসন)
বর্তমান এমপি: ডা. মো. এনামুর রহমান (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ)
ঢাকা-১৯ আসনটি ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার শিমুলিয়া, ধামসোনা, পাথালিয়া ইয়ারপুর আশুলিয়া বিরুলিয়া বনগাঁও ইউনিয়ন এবং সাভার ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী: বিভিন্ন কারণে বিতর্কিত হওয়া বর্তমান এমপি ডা. মো. এনামুর রহমান যে এবার মনোনয়ন পাচ্ছেন না তা নিশ্চিত। এখানেও নতুন মুখ আনছে আওয়ামী লীগ।
ঢাকা ২০ (১৯৩ তম সংসদীয় আসন)
বর্তমান এমপি: এম এ মালেক (আওয়ামী লীগ)
ঢাকা-২ আসনটি ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলা নিয়ে গঠিত।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী: বর্তমান এমপি এম এ মালেক এবার মনোনয়ন নাও পেতে পারেন। এই আসনেও আওয়ামী লীগ নতুন মুখ আনতে পারে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়া বিএনপি ব্রিটিশ দূতাবাস সারা কুক
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন ড. আব্দুর রাজ্জাক শাহজাহান খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের তরফ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া
হয়েছে, মন্ত্রী ও দলীয় এমপির কোনো স্বজন উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দায়িত্বপ্রাপ্ত
নেতারা জরুরি ভিত্তিতে দলের সভাপতিমণ্ডলীর দুই প্রভাবশালী সদস্যের সঙ্গে কথা বলে স্বজনদের
নির্বাচন থেকে সরিয়ে নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন।
এদিকে, উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান
প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে দলের নির্দেশ কার্যকরে কয়েকজন মন্ত্রী, এমপি ও নেতার অনীহার কারণে
আওয়ামী লীগের ঢাকা, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের তৃণমূল নেতাদের পূর্বনির্ধারিত বৈঠক
স্থগিত হয়ে গেছে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন,
‘স্বজন’ প্রশ্নে দলের সিদ্ধান্ত না মানলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও দলীয় এমপির বিরুদ্ধে
সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে কেড়ে নেওয়া হতে পারে তাদের দলীয় পদ-পদবি।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের মনোনয়নও অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে। সব মিলিয়ে
এ ইস্যুতে দলীয়ভাবে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে। উপজেলা নির্বাচনে স্বজনকে
প্রার্থী করা নিয়ে দলের মন্ত্রী ও এমপিদের এরই মধ্যে কড়া ভাষায় সতর্ক করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) আওয়ামী
লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রীর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক
অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী ও দলীয় এমপির কোনো নিকটাত্মীয়
অংশ নিতে পারবেন না। এ বিষয়ে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয়
নির্দেশনা দিয়েছেন। ওবায়দুল কাদের মন্ত্রী ও দলীয় এমপির স্বজনকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে
আনার জন্য কার্যকর উদ্যোগ নিতে দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদেরও তাগিদ দেন।
এরপর সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠক থেকেই নিকটাত্মীয়দের
নির্বাচন থেকে সরিয়ে নিতে দলের সভাপতিমণ্ডলীর দুই সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক ও শাজাহান
খানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপির খালাতো ভাই হারুনার রশীদ টাঙ্গাইলের
ধনবাড়ীতে এবং শাজাহান খান এমপির ছেলে আসিবুর রহমান খান মাদারীপুর সদর উপজেলায় প্রার্থী
হয়েছেন।
এ ছাড়া নোয়াখালী-৪ আসনের এমপি একরামুল
করিম চৌধুরীর সঙ্গেও কথা বলেন কেন্দ্রীয় নেতারা। একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে আতাহার
ইশরাক সাবাব চৌধুরী সুবর্ণচরে প্রার্থী হয়েছেন।
এ ব্যাপারে নোয়াখালী-৪ আসনের এমপি একরামুল
করিম চৌধুরী বলেন, উপজেলা নির্বাচন থেকে তার ছেলেকে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে দলের সাধারণ
সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কথা বলেছেন। তিনি তাকে ঢাকায় ডেকেছেন।
তবে তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে
নৌকা প্রতীক পাওয়ার পরও প্রকাশ্যে তার বিরোধিতা করেছিলেন নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের
সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম। এ বিষয়টি কেন্দ্রে জানানো হলেও তিনি সুবিচার
পাননি। এ জন্যই তার ছেলে প্রার্থী হয়েছেন।
গতকাল দলের অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে চার
বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, এস এম কামাল হোসেন এমপি,
মির্জা আজম এমপি, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন এবং দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া
উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বিভিন্ন উপজেলায় কয়েকজন মন্ত্রী ও দলীয় এমপির স্বজনকে প্রার্থী
করানোর বিষয় নিয়ে অল্পবিস্তর আলোচনা হয়। সেই সঙ্গে দলের নির্দেশ উপেক্ষা করে নিকটাত্মীয়দের
প্রার্থী করানোর বিষয় নিয়ে নেতারা বিস্ময় প্রকাশ করেন। বিভিন্ন উপজেলায় সাংগঠনিকভাবে
অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি নিয়েও বিরক্তি প্রকাশ করেন নেতারা।
বৈঠকে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে রংপুর,
চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগের তৃণমূল নেতাদের বৈঠকে সাংগঠনিক বিরোধ নিষ্পত্তির তাগিদ দেওয়া
হলেও কার্যত তা হয়নি। উল্টো উপজেলা নির্বাচন নিয়ে গৃহদাহ পরিস্থিতি আরও প্রকট হয়েছে।
তৃণমূল নেতাকর্মী দ্বন্দ্ব-বিবাদে জড়িয়ে পড়ছেন। এ জন্য কিছুটা হতাশা ব্যক্ত করেন কেন্দ্রীয়
নেতারা। ওই সময়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঢাকা, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের
পূর্বনির্ধারিত সাংগঠনিক বৈঠক স্থগিত করার তথ্য জানান। সিলেট ও বরিশাল বিভাগের বৈঠকের
দিনক্ষণ এখনও নির্ধারণ হয়নি।
দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব
বড়ুয়া জানিয়েছেন, ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে কেন্দ্রীয়
কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক হওয়ার কথা। এ জন্য ঢাকা, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের বৈঠক
স্থগিত করা হয়েছে। আগামীকাল শনিবার রাজশাহী এবং ২২ এপ্রিল ময়মনসিংহ বিভাগের বৈঠক হওয়ার
কথা ছিল। ঢাকা বিভাগের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল দুই দিনে। প্রথম দিন ২৭ এপ্রিল এবং শেষ দিন
৪ মে।
এদিকে গতকালের অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে অংশ
নেওয়া তিন সাংগঠনিক সম্পাদক জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচন থেকে
আত্মীয়স্বজনকে সরিয়ে নিতে মন্ত্রী ও দলের এমপিদের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর
নির্দেশের কথা তাদের জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক। এর পর থেকে তারা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী
ও এমপির সঙ্গে কথা বলছেন। যেসব উপজেলায় মন্ত্রী ও দলীয় এমপির স্বজন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা
করছেন, কয়েক দিনের মধ্যেই তাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করে দলের সাধারণ সম্পাদকের কাছে
দেওয়া হবে।
আগামী ৮ মে অনুষ্ঠেয় প্রথম পর্বের ১৫০
উপজেলা নির্বাচনে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মন্ত্রী ও দলীয় এমপির আত্মীয়স্বজন চেয়ারম্যান পদে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ নিয়ে দলের ভেতরে নতুন করে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দানা বেঁধেছে।
নাটোরের সিংড়ায় চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে
প্রথমে মারধর ও পরে অপহরণের মতো ঘটনাও ঘটেছে। এ ঘটনায় সন্দেহ করা হচ্ছে ডাক, টেলিযোগাযোগ
ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল
হাবীব রুবেলকে।
এদিকে আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতা
জানিয়েছেন, এসব অপ্রত্যাশিত ঘটনায় খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের
নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য যে, আগামী ২ মে সংসদের অধিবেশন
শুরু হবে। ওই অধিবেশন চলাকালে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠক থেকে উপজেলা নির্বাচন
নিয়ে এমপিদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে নেতারা জানিয়েছেন।
তারা বলেছেন, নির্বাচনী এলাকায় প্রভাব
বাড়াতে কয়েকজন মন্ত্রী ও দলের এমপি নিকটাত্মীয় ছাড়াও নিজস্ব লোক তৈরির জন্য পছন্দের
প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। তাই শুধু সন্তান, পরিবার কিংবা আত্মীয়স্বজন
নয়; মন্ত্রী এবং দলের এমপিদের প্রকাশ্যে বা গোপনে উপজেলা নির্বাচনে সম্পৃক্ত না হওয়ার
কড়া নির্দেশনা দেওয়া হবে।
তবে দলীয়ভাবে কঠোর নির্দেশনা থাকলেও
মন্ত্রী ও দলীয় এমপির অনেকে তা মানবেন না বলে আভাস মিলেছে। এরই মধ্যে অনেক উপজেলায়
মন্ত্রী ও দলের এমপির নিকটাত্মীয়রা প্রার্থী হয়েছেন।
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে লড়ছেন
মাজহারুল ইসলাম সুজন এমপির দুই চাচা মোহাম্মদ আলী ও সফিকুল ইসলাম
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা
করছেন সাহাদারা মান্নান এমপির ছেলে শাখাওয়াত হোসেন সজল। একই জেলায় সোনাতলায় এমপির ভাই
মিনহাদুজ্জামান লিটন
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় নির্বাচন করছেন
আলী আজগার টগর এমপির ভাই আলী মুনসুর
নরসিংদীর পলাশে লড়ছেন ডা. আনোয়ারুল
আশরাফ খান দিলীপ এমপির শ্যালক শরীফুল হক
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় প্রার্থী হয়েছেন
শাহাব উদ্দিন এমপির ভাগনে সোয়েব আহমদ
নোয়াখালীর হাতিয়ায় লড়ছেন মোহাম্মদ আলী
এমপির স্ত্রী ও দুইবারের সাবেক এমপি আয়েশা ফেরদাউস ও ছেলে আশিক আলী।
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে ড. আব্দুর রাজ্জাক
এমপির খালাতো ভাই হারুনার রশীদ
মাদারীপুর সদর উপজেলায় শাজাহান খান
এমপির ছেলে আসিবুর রহমান খান প্রার্থী হয়েছেন
এ ছাড়া ধাপে ধাপে অনুষ্ঠেয় উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে অনেক মন্ত্রী-এমপির নিকটাত্মীয় প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ কৃষক
লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আগামীকাল আজ শুক্রবার।
১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল আজকের এদিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কৃষক লীগের ৫২ বছর পূর্তি
উপলক্ষে সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠার পর বঙ্গবন্ধু কৃষক নেতা শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতকে
কৃষক লীগের কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেন। বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশনায় ব্যারিস্টার বাদল রশিদকে
সভাপতি ও আব্দুর রউফকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠিত হয়।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কৃষক
লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলে কৃষিবিদ সমীর চন্দকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম
স্মৃতিকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
কৃষক লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের সভাপতি কৃষিবিদ
সমীর চন্দ দলের নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানান।
এসময় তিনি বলেছেন, দেশের কৃষির উন্নয়ন এবং কৃষকের স্বার্থ রক্ষার
জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ কৃষক
লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে কৃষক লীগ কৃষকদের সংগঠিত করা, তাদের দাবি আদায়
এবং দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করে আসছে।
আজ শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৬টায় সংগঠনটির ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
উপলক্ষে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা এবং দলীয়
পতাকা উত্তোলন। এছাড়াও সকাল ৭টায় মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে ধানমন্ডির ৩২ পর্যন্ত শোভাযাত্রা।
সকাল সাড়ে ৭টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। এছাড়াও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ
হাসিনাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর কর্মসূচি রয়েছে।
এদিন বিকাল ৩টায় কৃষি ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী
লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ্রের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী। আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করবেন কৃষক লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু।
কৃষক লীগ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
গতকাল ঢাকাস্থ ব্রিটিশ দূতাবাসে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন বিএনপির শীর্ষস্থানীয় তিন নেতা। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদকে দাওয়াত দেয়া হয়েছিল ব্রিটিশ দূতাবাসে। সেখানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা কুক এক ঘণ্টার বেশি সময় তাদের সাথে বৈঠক করেন। এসময় ব্রিটিশ দূতাবাসে অন্যান্য রাজনৈতিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে শেষ পর্যন্ত যদি স্বজনদেরকে প্রার্থী করেন তাহলে দলের পদ হারাতে পারেন আওয়ামী লীগের দুই প্রেসিডিয়াম সদস্য। গতকাল আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে এ রকম বার্তা দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাথে দলে বিশৃঙ্খলা এবং ভাই, ভাতিজা, শ্যালক, মামাদেরকে নির্বাচনে প্রার্থী করার তীব্র সমালোচনা করেন। এ ব্যাপারে তিনি কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করেন।
আওয়ামী লীগের তরফ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মন্ত্রী ও দলীয় এমপির কোনো স্বজন উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা জরুরি ভিত্তিতে দলের সভাপতিমণ্ডলীর দুই প্রভাবশালী সদস্যের সঙ্গে কথা বলে স্বজনদের নির্বাচন থেকে সরিয়ে নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। এদিকে, উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে দলের নির্দেশ কার্যকরে কয়েকজন মন্ত্রী, এমপি ও নেতার অনীহার কারণে আওয়ামী লীগের ঢাকা, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের তৃণমূল নেতাদের পূর্বনির্ধারিত বৈঠক স্থগিত হয়ে গেছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। আজ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনাটি জারি করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপি পরিবারের সদস্য স্বজনরা প্রার্থী হতে পারবেন না। এটি আওয়ামী লীগ সভাপতির একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল পর্যন্ত যে পরিবারতন্ত্র ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল এবং বিভিন্ন জায়গায় যে জমিদারি প্রথা তৈরির শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল সেটা প্রতিরোধের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতির এই উদ্যোগ তৃণমূলের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।