নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০৫ পিএম, ১০ জুলাই, ২০১৮
গণভবনে গত শনিবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা উপলক্ষে ক্ষমতাসীন দলটির যুব সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ একটি বইমেলার আয়োজন করে। এ বইমেলায় পাঠক-ক্রেতার ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায়। বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের প্রচলিত রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রেক্ষাপটে এ বইমেলার আয়োজন নিঃসন্দেহে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। আর এ ধরনের উদ্যোগ যুবলীগ এবারই প্রথম নেয়নি। গত কয়েকবছর ধরেই সৃজনশীল, মননশীল বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের জন্য প্রশংসিত হচ্ছে আওয়ামী যুবলীগ।
বাংলাদেশের জনগণের প্রবণতা হচ্ছে, এদেশের কোনো ছাত্রসংগঠন, যুব সংগঠনের নাম শুনলেই আমাদের গা ঘিনঘিন করে ওঠে। এই সংগঠনগুলোর সদস্যরা চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি নিয়ে ব্যস্ত থাকে এমন একটা ধারণা প্রচলিত আছে আমাদের মধ্যে। তার ওপর কোনো যুব সংগঠন যদি ক্ষমতাসীন দলের হয় তাহলে সমালোচনা আরও বেশি হয়। হালুয়ারুটির ভাগ নিয়ে তাঁরা সর্বক্ষণ অপকর্মে লিপ্ত থাকে এটাই আমাদের বিশ্বাস।
কিন্তু গত তিন-চার বছর ধরে দেখা যাচ্ছে একটি ভিন্ন চিত্র। এই কয়েক বছরের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, যুবকদের সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ একটি সৃজনশীল ও যুক্তিবাদী সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। যুবলীগ এ সময়টাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীর ওপর অ্যালবাম প্রকাশ করেছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবনীর ওপর অ্যালবাম প্রকাশ করেছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ও বিশ্ব শান্তির মডেল হিসেবে শেখ হাসিনার যে অর্জন সে বিষয়ের ওপরও বই প্রকাশ করেছে তাঁরা। যুবলীগ রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার জীবনী গ্রন্থ বের করেছে যা একটি বিরাট ঘটনা। এসব কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে একটি মননশীল রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে আওয়ামী যুবলীগ।
এক সময় প্রচলিত ছিল, ১৫ আগস্টের শোক দিবসের কর্মসূচি মানেই জনসভা করা কিংবা শোক মিছিল করা। কিন্তু যুবলীগ শোক দিবস উপলক্ষে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে। ১৫ আগস্টে তাঁরা মাসব্যাপী আলোকচিত প্রদর্শনী করে, এ বিষয়ে গ্রন্থের প্রকাশনা করে। এছাড়া যুবলীগ একুশে বইমেলায়ও স্টল নেয়, বই প্রকাশ করে। যুবলীগ এ পর্যন্ত শতাধিক বই প্রকাশ করেছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো উপমহাদেশের কোনো যুব সংগঠনই এভাবে বই প্রকাশ বা মননশীলতার চর্চা করে থাকে এমন উদাহরণ দেখা যায় না।
গত তিন-চার বছরে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ উঠতে দেখা গেছে কিন্তু যুবলীগের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি কিংবা ছিনতাইয়ের কোনো অভিযোগ খুব একটা শোনা যায়নি। প্রকৃতপক্ষে যত চিন্তার চর্চা হয়, যত মননশীলতার চর্চা হয় ততই মানুষের মধ্যে আদিম প্রবণতাগুলো কমে যায়। আওয়ামী যুবলীগের মধ্যেও সে উদাহরণ পরিস্কার হয়ে উঠেছে।
এ মুহুর্তে যুবলীগের একটি রূপান্তর প্রক্রিয়া চলছে। যুব সংগঠনকে দেখলে মারামারি, দাঙ্গা-হাঙ্গামার কথা মনে হবে, তাদের দেখলে সবাই ভয় পাবে - এই জায়গাটা থেকে বেরিয়ে এসে সৃজনশীল, মননশীল, যুক্তিবাদী সংগঠনে পরিণত হচ্ছে আওয়ামী যুবলীগ। একে বাংলাদেশের রাজনীতির নীরব একটি নতুন ধারা হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। জ্বালাও-পোড়াও, জনসভা, মিছিল-মিটিংই যে কেবল রাজনীতি না, সৃজনশীলতার চর্চা, মননশীলতার বিকাশও রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের হাতিয়ার হতে পারে সেটাই মোহাম্মদ ওমর ফারুকে চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রমাণ করে যাচ্ছে যুবলীগ। ওমর ফারুক চৌধুরী যুবলীগের নেতৃত্বে আসার পরই সংগঠনটির কর্মকাণ্ডের ধরন বদলে যাচ্ছে। ক্রমাগত বিকাশ ঘটছে সংগঠনটির।
কিছুদিন আগে এই সংগঠনটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। ক্রোড়পত্রটিতে আওয়ামী লীগের দিনপঞ্জি প্রকাশ করে তাঁরা। এই ক্রোড়পত্র থেকে আওয়ামী লীগের ইতিহাসের অনেক অজানা অধ্যায় উন্মোচিত হয়েছে। অনেকেই জানতো না বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংগ্রাম ও ত্যাগের ইতিহাস। কিন্তু এই উদ্যোগের মাধ্যমে এই ইতিহাসকে জনগণের সামনে নিয়ে এসেছে যুবলীগ।
এসবই যুবলীগের রাজনীতির একটি উল্লেখযোগ্য বাঁক পরিবর্তন। আগে মানুষ জানত, যুবলীগ টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, ছিনতাইয়ের মতো কাজ করে। কিন্তু এই অভিযোগগুলো গত কয়েক বছর ধরে আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একবার বলেছিলেন,একটি সংগঠন যদি শিক্ষিত হয়, একটি সংগঠনের যদি আদর্শিক চেতনা উন্নত হয় তাহলে সংগঠনটির মধ্যে অপতৎপরতা কমে যায়। বর্তমানের যুবলীগ জাতির পিতার সেই কথারই প্রতিফলন ঘটাচ্ছে। জাতির পিতার আদর্শেরই বাস্তবায়ন করছে তাঁরা। এটাই যুবলীগের স্মরণীয় রূপান্তর প্রক্রিয়া।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।