ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই কৌশল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১১ জুলাই, ২০১৮


Thumbnail

চলতি বছর অক্টোবরেই জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী দুই কৌশল নিয়ে আগাচ্ছে। প্রথম কৌশলটির ক্ষেত্রে ধরে নেওয়া হয়েছে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালের আদলে মহাজোট করবে। এই জোটে জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের বাইরেও অনেক দল যুক্ত হবে, যার মধ্যে আছে এলডিপি, সিপিবি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। এছাড়া বামফ্রন্টও আসতে পারে এই জোটে। জোট করা হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিদের নিয়ে। এই লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই কথাবার্তা শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। আর দ্বিতীয় কৌশলটি নেওয়া হবে বিএনপি নির্বাচনে না গেলে। জানা গেছে, নেতারা রাজি থাকলেও তৃণমূলের কারণে নির্বাচনে নাও যেতে হতে পারে বিএনপির। তৃণমূলের ভয়ে যদি শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে না যায়, তখন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের প্রত্যেকেই আলাদা আলাদা ভাবে নির্বাচন করবে এবং একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে। দ্বিতীয় কৌশলে জোটের সবাই আলাদা হয়ে মাঠে নেমে চাহিদামতো আসনে নির্বাচন করবে।

কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের মিত্র ছিল। গত নির্বাচনে তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের মতপার্থক্য হয়। আর এই মতপার্থক্য দূর করতেই এগিয়ে এসেছেন প্রাক্তন সিপিবি কিন্তু বর্তমানে আওয়ামী লীগ এমন কয়েকজন নেতা। এদের মধ্যে আছেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নূহ-উল-আলম লেনিন। সিপিবির সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তারা। সিপিবিও আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধে এগিয়ে আসছে। রমজানে আওয়ামী লীগের ইফতার পার্টিতে জোটের বলয়ের বাইরের একমাত্র দল হিসেবে উপস্থিত ছিল সিপিবি।  জানা গেছে, সিপিবির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের কথাবার্তা চলছে।

সম্প্রতি দেখা গেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের থাকলেও লিবারেলর ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ অনেকটাই নীরব। ২০ দলের সাম্প্রতিক কোনো কর্মকাণ্ডের তাঁর উপস্থিতি চোখে পড়ে না। জানা গেছে, নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছেন অলি আহমেদ। এছাড়া, সম্প্রতি সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে যান কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ। আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারক পর্যায়ের বক্তব্য হলো, বিএনপিতে শক্তিশালী অবস্থানে থাকার পরও অলি আহমেদ শুধুমাত্র একটি কারণেই দল ছেড়েছেন, তা হলো যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকারদের বিএনপি সংশ্লিষ্টতা। আর এই কারণেই অলি আহমেদকে জোটে আনার পক্ষে আওয়ামী লীগ।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের যোগাযোগ অনেক পুরোনো। এমনকি আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা শেখ রেহানার সঙ্গেও পারিবারিক ভাবে যোগাযোগ আছে কাদের সিদ্দিকীর। গত ১৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী কাদের সিদ্দিকীকে তো বাড়ি থেকেই ডেকে আনেন। তবে কাদের সিদ্দিকী হুটহাট বিতর্কিত কথা বলার জন্যও সমালোচিত। তাই আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা তাঁকে সরাসরি দলের না এনে বরং জোটে আনার পক্ষপাতী।

এছাড়া বিএনপি ত্যাগী তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাও সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে উপস্থিত দেখা যায় সাবেক বিএনপির এই ডাকসাইটে নেতাকে। তাঁকেও জোটে আনার পক্ষে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা। এর বাইরেও জোটবদ্ধ করতে আরও কিছু দলের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে আওয়ামী লীগের।

সর্বশেষ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে একঘরে করার পাঁয়তারা করেছিল বিএনপি। ওই সময় আওয়ামী লীগ পাশে পায়নি সমমনা অনেককেই। এবার আওয়ামী একই রকম একঘরে করতে চাচ্ছে বিএনপিকে। আওয়ামী লীগ নীতি নির্ধারণী মহলের বক্তব্য হলো, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে তারা কেন দূরে দূরে থাকবে? এক ছাতার নিচে তারা আসতেই পারে।

বাংলা ইনসাইডার/জেডএ



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বেগম জিয়াকে বিদেশ নিতে নতুন তৎপরতা

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বেগম জিয়া আর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন না, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এ রকম একটি বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছেন শামীম ইস্কান্দার।

সরকারের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে, শামীম ইস্কান্দার সম্প্রতি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং এই সাক্ষাতে তিনি তার বোন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়েছেন। সরকার যে সব শর্ত দেবে, যে কোন শর্তে বেগম জিয়া বিদেশ দিতে রাজি এমন বক্তব্য দেওয়া হয়েছে শামীম ইস্কান্দারের পক্ষ থেকে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, শামীম ইস্কান্দার সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তির কাছে বলেছেন যে, বেগম খালেদা জিয়া বিএনপির সব পদ থেকে ইস্তফা দিবেন। তিনি আর কখনও রাজনীতি করবেন না এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেবেন এবং চিকিৎসা শেষ করে দেশে চলে আসবেন। এই তিনটি বিষয়ে বেগম জিয়ার সম্মতি রয়েছে। এর বাইরেও যদি সরকার কোন শর্ত দেয় সেই শর্তটি পূরণ করতেও রাজি আছেন বেগম জিয়া- এমন বক্তব্য দিয়েছেন তার ছোট ভাই। 

উল্লেখ্য যে, এভারকেয়ার হাসপাতালে বেগম খালেদা জিয়া যখন মুমূর্ষু অবস্থায় পড়েছিল, সেই সময় যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিনস ইউনিভার্সিটি থেকে চিকিৎসক দল এসেছিল এবং সেই চিকিৎসক দল তার একটা ছোট অপারেশন করে তাকে কিছুটা সুস্থ করেছিল। সেই কারণেই বেগম খালেদা জিয়া সে সময় শঙ্কামুক্ত হয়েছিল। শামীম ইস্কান্দার এবং তার পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, সেটি ছিল একটি সাময়িক ব্যবস্থা এবং সেই সময় তারা বলেছিল যে, তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে আবার তাকে এই ধরনের চিকিৎসা দিতে হবে এবং এজন্য তাকে বিদেশ নেওয়ার প্রয়োজন। আর এ কারণেই শামীম ইস্কান্দার এখন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার ব্যাপারে নতুন করে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। 

তবে বিভিন্ন সূত্র বলছে, শামীম ইস্কান্দার এখনকার উদ্যোগ নেওয়ার কারণ ভিন্ন। যেহেতু দেশে নির্বাচন হয়ে গেছে, নির্বাচনের আগে সরকারের একটি পৃথক অবস্থান ছিল। সরকার মনে করত যে, নির্বাচনের আগে বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে গিয়ে একটি পরিস্থিতি তৈরি করবেন এবং বিদেশে গিয়ে প্রবাসী সরকার গঠন বা সরকারের বিরোধিতা করা বা আন্তর্জাতিক মহলে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এক ধরনের জনমত তৈরি করার ক্ষেত্রে কাজ করবেন। এজন্য সরকার বেগম জিয়াকে সে সময় বিদেশ যেতে দেয়নি। এখন যেহেতু নির্বাচন হয়ে গেছে এবং স্বস্তিদায়ক অবস্থায় রয়েছে সেজন্য এখন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক তেমন কোন ঝুঁকি নেই। আর এ কারণেই শামীম ইস্কান্দার এখন নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছেন। তবে বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, শামীম ইস্কান্দারের এই তৎপরতা সম্পর্কে তাদের কোন ধারণা নেই। তারা এ ব্যাপারে কোন কিছু জানেনও না। তবে বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা আবার খারাপ হতে শুরু করেছে বিএনপির নেতারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

বেগম খালেদা জিয়া   শামীম ইস্কান্দার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির নেতাদের স্ত্রীরা ভারতীয় শাড়ি কেনেন না: রিজভী

প্রকাশ: ০৬:৩৫ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি নেতাদের স্ত্রীরা ভারতীয় শাড়ি কেনেন না বলে দাবি করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এই দাবি করেন।

নিজের পুরনো স্মৃতি তুলে রিজভী বলেন, “আমার নানার বাড়ি হচ্ছে ইন্ডিয়া। বিয়ের পরে একবার গিয়েছিলাম। আমার ছোট মামা একটা শাড়ি দিয়েছিলেন। আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলাম যে ওই শাড়িটা কই? আমার মিসেস বললো, ‘কাঁথা সেলাই করতে কবে দিয়েছি সেটাও ছিঁড়ে গেছে।’ আমাদের দেশের মেয়েরা শাড়ি পুরনো হলে সেটা দিয়ে কাঁথা সেলাই করতে দেয়।

রিজভী বলেন, ‘এ দেশকে স্বনির্ভর হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। আমরা সেই প্রত্যয় সেই আদর্শ নিয়ে কাজ করছি। আমাদের নিজের বুনন করা যে ফসল সেটা আরো বেশি করে উৎপাদন করবো, আমাদের মিল-কারখানায় যে শাড়ি তৈরি হয় সেই শাড়ি আমাদের মেয়েরা পড়বে, আমাদের কল-কারখানায় যে লুঙ্গি তৈরি হয় সেই লুঙ্গি আমাদের দেশের ছেলেরা পরবে। কিন্তু আমরা অন্যের কাছে নতজানু হবো না, অন্যের কাছে দ্বারস্থ হব না। এই জাতীয়তাবাদী চিন্তা থেকে আমাদের কাজ করতে হবে।’

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ‘আমরা বিএনপি পরিবার সেল’-এর উদ্যোগে বিরোধী আন্দোলনে গুম-খুন-পঙ্গুত্বের শিকার পরিবারের সদস্যদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ঈদ উপহার প্রদান উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়। সেলের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে ও সদস্য নাজমুল হাসানের সঞ্চালনায় এই আলোচনাসভায় দলের কেন্দ্রীয় নেতা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, রশিদুজ্জামান মিল্লাত, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, মীর হেলাল, যুবদলের আবদুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের ইয়াসিন আলী, ছাত্রদলের রাকিবুল ইসলাম রাকিব, নাছির উদ্দীন নাছির, গুম-খুন হওয়া পরিবারের মধ্যে চৌধুরী আলমের ভাই খুরশীদ আলম মিন্টু, সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন সানজীদা ইসলাম তুলি, নুরে আলমের স্ত্রী রিনা আলম, মাহবুবুর রহমান বাপ্পীর বোন ঝুমুর আক্তার, পারভেজ রেজার ছোট মেয়ে হৃদি প্রমুখ বক্তব্য দেন।

পরে গুম হওয়া পরিবারের সদস্যদের হাতে তারেক রহমানের ঈদ উপহার তুলে দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রুহুল কবির রিজভী   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

তৃণমূলে তছনছ আওয়ামী লীগ

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের তৃণমূল ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠিত করা এবং বিভেদ-বিভক্তির দূর করার জন্য যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তারপর একটু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল বলে বটে। কিন্তু এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে সারাদেশে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সামাল দেওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধ অন্যদিকে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়া আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তদারকির অভাবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ এখন সবচেয়ে সঙ্কটের মুখে পড়েছেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই। 

আওয়ামী লীগের তৃণমূলের সঙ্কট শুরু হয়েছিল বহু আগে থেকেই। বিশেষ করে যখন আওয়ামী লীগের ভিতর হাইব্রিড এবং অনুপ্রবেশকারীরা ঢুকে পড়ছিল এবং দলের তৃণমূল এবং পরীক্ষিত নেতাদেরকে বাদ দিয়ে তারা নিজেরাই বিভিন্ন পদ পদবী দখল করছিল, সেসময় আওয়ামী লীগে তৃণমূলে বিভক্তি শুরু হয়। এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলে অনুপ্রবেশকারীদেরকে চিহ্নিত করা এবং বিএনপি-জামায়াত থেকে যারা এসেছেন তাদের বাদ দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেও সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি। এভাবে আওয়ামী লীগ একসময় দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। একটি হলো পুরনো আওয়ামী লীগ, যারা ত্যাগী, পরীক্ষিত এবং দুঃসময়ের সাথী। অন্যটি হলো সুবিধাবাদী, চাটুকার আওয়ামী লীগ, যারা ২০০৯ এর পরে বিভিন্ন দল থেকে নানা রকম সুযোগ সুবিধা পাওয়ার আশায় আওয়ামী লীগে যোগদান করেছিলেন। 

গত নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের এই বিভক্তি চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। নির্বাচনের আগে আগে কৌশলগত কারণে আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে উন্মুক্ত করে দেয়। নির্বাচনে যারা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি তাদেরকে স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়। আর এটি আওয়ামী লীগের ভিতর একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতারাই তাদের পরিচয় ব্যবহার করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে যান। এবং ৫৮ টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ধরাশায়ী করেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এর ফলে সারা দেশে আওয়ামী লীগের ভিতর বিভেদ এবং অনৈক্য ছড়িয়ে পড়ে। 

আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্বাচনের পরপরই এই বিভক্তি দূর করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি একাধিক বক্তৃতায় দলের নেতাকর্মীদেরকে নির্বাচনের বিভক্তি পাশ কাটিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকেও এ ব্যাপারে আহ্বান জানানো হয়। এর পর ডাকা হয় বর্ধিত সভা। বর্ধিত সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করেন। কিন্তু তারপরও বিভক্তি কমে না। 

আওয়ামী লীগের বিভক্তি যেন আর ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করেছিল। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে তারা দলীয় প্রতীক ব্যবহার করবে না। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের ধারণা ছিল, এর ফলে উন্মুক্ত নির্বাচনে বিভক্তি কমবে। কিন্তু উন্মুক্ত নির্বাচনে বিভক্তি কমেনি, বিভক্তি আরও প্রবল আকার ধারণ করেছে। এখন আওয়ামী লীগের মধ্যে প্রতিটি উপজেলায় বিভক্তি শুধু প্রকাশ্য রূপই ধারণ করেনি, একটি সহিংস উত্তপ্ত অবস্থা সৃষ্টি করেছে। যেকোন সময় যেকোন উপজেলায় যদি আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের সহিংসতা ঘটে তাহলে অবাক হওয়ার কিছুই নেই। 

আওয়ামী লীগের এই বিভক্তি মেটানোর জন্য, তৃণমূূলকে সংগঠিত করার জন্য সাংগঠনিক সম্পাদকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারাও এখন দায়িত্ব গুটিয়ে নিয়েছেন। 

আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক বলেছেন, এখন রোজার সময় এজন্য তারা সাংগঠনিক বিষয়ে মনোযোগ দিতে পারছেন না। কিন্তু ১৫২ টি উপজেলায় ইতোমধ্যে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আর এই উপজেলাগুলোতে সঙ্কট-সহিংসতা ব্যাপক আকার ধারণ করছে। সামনের দিনগুলোতে এই সহিংসতা কাটাতে না পারলে তৃণমূল আওয়ামী লীগের জন্য সবচেয়ে বড় সর্বনাশের কারণ হতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।   


তৃণমূল আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ফখরুলই হচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মঈন খান মহাসচিব

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

অবশেষে জিয়া পরিবার মুক্ত হচ্ছে বিএনপি। বিএনপির রাজনীতিতে একটি বড় ধরনের পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে ঠিক কবে, কখন, কীভাবে এ পরিবর্তন হবে সে সম্পর্কে কেউ কোন সুনির্দিষ্ট ধারণা দিতে পারেনি। তবে বেগম খালেদা জিয়া বিএনপিতে পরিবর্তনের ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিয়েছেন। 

বেশ কিছুদিন ধরে, বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পরে বিএনপিতে পরিবর্তনের আওয়াজ উঠেছিল। যেহেতু বেগম খালেদা জিয়া এখন অসুস্থ এবং তারেক জিয়া লন্ডনে পলাতক সেজন্য এমন একজনকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার দাবি উঠেছিলো যিনি দলের ভেতর আছেন এবং দলের জন্য সার্বক্ষণিকভাবে সময় দেন। এরকম বাস্তবতা থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নাম সামনে এসেছিলো। কিন্তু বিএনপির মধ্যে এ নিয়ে প্রচন্ড বিরোধীতাও ছিলো। 

বিএনপির অনেক নেতাই বলছিলেন যে, জিয়া পরিবারের নামেই বিএনপি চলে, জিয়া পরিবার ছাড়া বিএনপি কয়েক টুকরো ভেঙ্গে যাবে। তবে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া সাম্প্রতিক সময়ে দলের নির্বাহী নেতৃত্ব ছেড়ে দেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া দেন। যেহেতু তিনি লন্ডনে থাকছেন, দলের ব্যাপারে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নিতে পারছেন না। সেজন্য তিনি দলের উপদেষ্টা হিসেবে থাকার অভিপ্রায় ব্যক্ত করার পরেই বিএনপিতে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়। 

অন্যদিকে খালেদা জিয়াও যেহেতু দলের দায়িত্ব এখন পালন করতে পারছেন না সে কারণে তিনি দলের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে থাকার ব্যাপারে একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়া এ ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিলেও সকলে অপেক্ষা করছিলেন যে, এই ব্যাপারে বেগম খালেদা জিয়ার মনোভাব কি হবে। 

গতকাল বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো এবং সেখানে বিএনপির কয়েকজন সিনিয়র নেতা তাকে বিএনপির এই নতুন মেরুকরণের প্রস্তাব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। সে সময় বেগম জিয়ার উত্তর ছিলো ইতিবাচক। তিনি এখন মোটেই রাজনীতিতে আগ্রহী নন এবং দলের স্বার্থে যেটি নেতারা ভালো মনে করেন সেটিই করার ব্যাপারেই তিনি সবুজ সংকেত দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এর ফলে বিএনপিতে এখন পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আর কোন নিয়ন্ত্রণের বাঁধা থাকলো না। তবে এ পরিবর্তন প্রক্রিয়া বিএনপি কিভাবে করবে সে ব্যাপারে এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। 

বিএনপির একাধিক নেতা বলছেন, এ পরিবর্তন দুভাবে হতে পারে। প্রথমত, তাৎক্ষণিকভাবে এ পরিবর্তন করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে মঈন খান হতে পারেন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব। তবে বিএনপির অধিকাংশ নেতাই মনে করেন, বিএনপিতে এত বড় পরিবর্তন কোন সম্মেলন ছাড়া করা উচিত হবে না। তারা মনে করছেন যে, যথাশীঘ্র উচিত বিএনপির সম্মেলন ডাকা উচিত এবং এ সম্মেলনে সকলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিএনপিতে নতুন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব নির্ধারণ করা প্রয়োজন। 

তবে বিএনপিতে এ নিয়ে একটা প্রবল বিরুদ্ধ মতও রয়েছে। অনেকে মনে করেন যে, বেগম খালেদা জিয়া, তারেক জিয়ার বাইরে বিএনপিতে যদি কেউ নেতৃত্ব নেন তাহলে বিএনপির মধ্যে অনৈক্য দেখা দিতে পারে। এখন যেমন বেগম জিয়া বা তারেক জিয়াকে সকলে মানেন তখন হয়তো এরকম পরিস্থিতি নাও হতে পারে। এসমস্ত বাস্তবতাগুলো বিবেচনা করেই বিএনপির সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত বলে অনেকে মনে করেন।   

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর   বিএনপি   ড. মঈন খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে দায়িত্ব নিবেন ব্যারিস্টার খোকন!

প্রকাশ: ০৩:৪৬ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ নির্বাচনে বিএনপি প্যানেল থেকে নির্বাচিত হলেও দায়িত্বভার না নিতে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সহ চার আইনজীবীকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। তবে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এমন ইঙ্গিত দেন বিএনপিপন্থি এ আইনজীবী নেতা।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের চিঠির বিষয়ে মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, সংগঠনের দেওয়া চিঠিতে পুনর্নির্বাচনের দাবির সঙ্গে আমি একমত পোষণ করছি। তবে  আমি নির্বাচিত, দায়িত্ব নেওয়া বা না নেওয়ার কী আছে? কে কী বললো, সেটার দেখার বিষয় নয়। আমার পরাজয়ের কোনো ইতিহাস নাই। সে সময় তারা ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তা না হলে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসেবে জয়ী হতে পারতাম।’

এ সময় নিজের দলের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেন তিনি। মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমাদের ফোরামের একজন নেতার ভূমিকা রহস্যজনক। আমরা তার সম্পর্কে অনেক গুজব শুনে যাচ্ছি। খুব ইমপর্টেন্ট, শক্তিশালী নেতা। আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার আঁতাত ছিল কিনা- এ ব্যাপারে আমাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে খুব গুজব আছে। আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি এ ব্যাপারে কি করা যায়।’ তবে এ সময় সেই নেতা কে সে বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি ব্যারিস্টার খোকন।

উল্লেখ্য, গতকাল ২৭ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ মেয়াদের নির্বাচনে বিএনপির প্যানেল থেকে বিজয়ী সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ চারজনকে দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে চিঠি দিয়েছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র কেন্দ্রীয় নেতা, উপদেষ্টামণ্ডলী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বিগত ৬ ও ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের পর গত ১০মার্চ ঘোষিত ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে ন্যায়সংগত যৌক্তিক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে, এই মর্মে জানানো যাচ্ছে যে, আপনারা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ মেয়াদকালের দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন। দলের দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে দলীয় এই সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে পালন করবেন।’

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতি জায়েজ করতে আপনাদের নামকাওয়াস্তে বিজয়ী দেখানো হয়েছে। আইনজীবী সমাজ ও দেশের আপামর জনগণ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখান করেছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ সালের নির্বাচনে সভাপতি পদে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ চারটি পদে বিএনপি সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে সম্পাদক পদে শাহ মঞ্জুরুল হকসহ ১০টি পদে আওয়ামী লীগের প্যানেলের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।

কার্যনির্বাহী সদস্য পদে বিজয়ী বিএনপির অন্য তিনজন হলেন- সৈয়দ ফজলে এলাহি অভি, ফাতিমা আক্তার ও মো. শফিকুল ইসলাম।

আওয়ামী লীগের প্যানেল থেকে বিজয়ী অন্য ৯ জন হলেন- সহসভাপতি পদে রমজান আলী শিকদার ও ড. দেওয়ান মো. আবু ওবায়েদ হোসেন, ট্রেজারার পদে মোহাম্মদ নুরুল হুদা আনছারী, সহ-সম্পাদক পদে মো. হুমায়ুন কবির ও হুমায়ুন কবির (পল্লব), সদস্য পদে রাশেদুল হক খোকন, মো. রায়হান রনী, মো. বেল্লাল হোসেন (শাহীন) ও খালেদ মোশাররফ (রিপন)।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি   ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন