নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ১২ জুলাই, ২০১৮
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত শনিবার আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ আত্মত্যাগের ইতিহাস থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ত্যাগের কথা দলের নেতাকর্মী ও দেশবাসীর সামনে তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ দল ছাড়ে মন্ত্রিত্বের লোভে। আর জাতির পিতা মন্ত্রিত্ব ছেড়েছিলেন দলকে সংগঠিত করার জন্য।
বাংলাদেশের পদ লোভী রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রেক্ষাপটে বিরল এই কাজটি বাস্তবিকই করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। আজ থেকে প্রায় ছয় দশক আগে ১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়ে যুক্তফ্রন্ট সরকারের কৃষি ও বন মন্ত্রী হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর ১৯৫৬ সালে কোয়ালিশন সরকারের মন্ত্রিসভায় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান তিনি। কিন্তু সংগঠনকে সুসংগঠিত করার উদ্দেশ্যে ১৯৫৭ সালের ৩০ মে বঙ্গবন্ধু মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদটিকে ধরে রেখে মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন বঙ্গবন্ধু।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এটা চেতনার জায়গা ছিল যে, দল এবং সরকার আলাদা হবে। দল ও সরকার আলাদা হলে বেশ কয়েকটি লাভ হয়। এতে দল সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে, সরকারের ভুলত্রুটিগুলো ধরতে পারে। সরকার যদি কোনো অনিয়ম বা অন্যায় করে সেটাও চিহ্নিত করতে পারে দল। আর সবচেয়ে বড় লাভ যেটি হয় সেটি হলো, সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক সংগঠনটিও শক্তিশালী হয়। আর সংগঠন না থাকলে আপনি যত বড় মন্ত্রী বা রাজনীতিবিদই হন না কেন, আপনার কোনো ক্ষমতা থাকে না। শুধু ক্ষমতাই নয়, রাজনীতিতে আপনার কোনো অস্তিত্বই থাকে না। এ কারণেই সংগঠনের স্বার্থে বঙ্গবন্ধু মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করেছিলেন। দলের প্রতি তীব্র ভালোবাসা, দলের মঙ্গল কামনাই ছিল বঙ্গবন্ধুর এই সিদ্ধান্তের কারণ।
দূর্ভাগ্যজনক ভাবে বিভিন্ন টানাপড়েনের জন্য পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ এই ঐতিহ্য বজায় রাখতে পারেননি। কিন্তু ২০১৪ সালে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করার পর, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনের পর থেকেই আওয়ামী লীগ কিছুটা হলেও দল ও সরকারকে আলাদা রাখার এই প্রক্রিয়াটি আবার বাস্তবায়ন করা শুরু করেছে। বর্তমান মন্ত্রিসভার দিকে লক্ষ্য করলে বোঝা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাদের মন্ত্রিত্ব দিয়েছেন, দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মতো হাতে গোণা কয়েকজন বাদে তাঁদের কাউকে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে রাখা হয়নি।
এই উদ্দেশ্যে শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে বাদ দেওয়া হয়েছে, আর বর্ষীয়ান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কমিটিতে। সংগঠনটি শক্তিশালী হবে এমন প্রত্যাশা থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের ৪ জন যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমানকে মন্ত্রিত্ব দেননি। এছাড়া দলটির কোনো সাংগঠনিক সম্পাদকও মন্ত্রী পদে নেই। এর পেছনে কারণ হিসেবে কাজ করেছে একটি আকাঙ্ক্ষা - তাঁরা সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হবে, সংগঠনের জন্য সময় দেবে ও কাজ করবে। এই যেমন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আবার সেতুমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। দল ও মন্ত্রণালয়ের দ্বৈত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাঁর কাজে যদি বিঘ্ন ঘটে তাতে কিন্তু সেতুমন্ত্রীকে দোষ দেওয়া যাবে না। তাই সংগঠন ও মন্ত্রণালয় উভয়ের স্বার্থেই দল ও সরকারকে আলাদা করার প্রয়োজন বোধ করছেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আবার যদি ক্ষমতায় আসে তবে দল ও সরকারকে পুরোপুরি আলাদা করার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর চেতনার এই জায়গাটাকে বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সম্প্রতি। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণের কথা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার কমিটির সভায়ও আলোচনা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ বিষয়ে স্পষ্ট গাইডলাইন দিয়েছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন। সংগঠনটি দিনে দিনে আরও বড় হয়ে এখন আরও শক্তিশালী অবস্থায় পৌঁছেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে এখন রয়েছেন অসংখ্য যোগ্য নেতাকর্মী । যদি তাঁদেরকে কেবল মন্ত্রিত্ব প্রদানের মাধ্যমে মূল্যায়ন করতে হয় তাহলে আওয়ামী লীগকে দুটি মন্ত্রিসভা গঠন করতে হবে। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে, পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসলে একমাত্র দলের সভাপতি ছাড়া যারা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকবেন, তাঁরা মন্ত্রিসভায় থাকবেন না। আর এ নিয়মটি দলের সাধারণ সম্পাদক পদের জন্যও প্রযোজ্য হবে। তবে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ আলাদা মর্যাদা ও গুরুত্ব পাবেন। অন্যদিকে কোনো মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রিত্ব তাঁদের হাতেই দেওয়া হবে যারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ।
আমরা যদি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের দিকে তাকাই তাহলে দেখবো, পশ্চিম বাংলায় দীর্ঘদিন বামফ্রন্ট ক্ষমতায় ছিল এবং দল ও সরকারকে আলাদা রাখার কৌশলটা তাঁরা সফলতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করেছিল। যারা মন্ত্রিত্বে থাকতেন তাঁরা দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে, বিশেষ করে কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে থাকতে পারতেন না। এছাড়া ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির দিকে তাকালেও আমরা দেখি, বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ কোনো ধরনের মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নেই। অন্যদিকে বিজেপির কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে নেই ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার প্রধান দায়িত্ব ক্ষমতাসীন দলেরই। এরপর আসে জনগণ বা বিরোধী দলের প্রশ্ন। সরকারকে দায়িত্বশীল করা, সরকারকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য দল এবং সরকারকে আলাদা করার পদ্ধতি অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিল অধিবেশন থেকেই আসলে এ পদ্ধতি অনুসরণ করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘদিন ধরে বারবার বঙ্গবন্ধুর চেতনার এই জায়গাটা বাস্তবায়ন করার কথা বলে আসছেন। এই সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আরও শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের কাতারে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করে; জনকল্যাণে পরিকল্পনা গ্রহণ ও কর্মসূচি নির্ধারণ করে। আমরা সর্বদা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। অন্যদিকে বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে তারা জনগণকে শত্রুজ্ঞান করে শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আর এখন সাংবিধানিকভাবে বৈধ ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করে জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে তারা জনগণকে শত্রুজ্ঞান করে শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আর এখন সাংবিধানিকভাবে বৈধ ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করে জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।
বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে সরকারবিরোধী তথাকথিত আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস-সহিংসতার পথ বেছে নেয় বলে দাবি করে কাদের বলেন, বিএনপি ও তার দোসরদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনী সরকারের সুসমৃণ পথচলা এবং দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। তাদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু দেশের জনগণ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, পূর্বের ধারাবাহিকতায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের নামেও তারা অগ্নি সন্ত্রাসের মাধ্যমে নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে। আর দেশের আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ও মহামান্য আদালত জনগণের নিরাপত্তা ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বিএনপি নেতারা সেটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালায়।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি প্রকৃতপক্ষে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন, সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া তাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত। বিএনপি ক্ষমতায় থেকে নিজেদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনীর পাশাপাশি বাংলা ভাইয়ের মতো দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীর সৃষ্টি করেছিল এবং তাকে রক্ষা করার জন্য’ বাংলা ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকার জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর।
বিবৃতিতে কাদের বলেন, শেখ হাসিনা জগদ্দল পাথরের মতো জেঁকে বসা বিচারহীনতার সংস্কৃতির অর্গল ভেঙে বিচারের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। সন্ত্রাসী বা অপরাধী যে-ই হোক তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্যের আড়ালে সন্ত্রাসীদের রক্ষার অপকৌশল সফল হবে না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ক্ষমতা বিএনপি
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।