ইনসাইড পলিটিক্স

অবিশ্বাসে বসবাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ১২ জুলাই, ২০১৮


Thumbnail

নামকরা রাজনৈতিক নেতা। দলের মধ্যে বেশ ‘পাওয়ারফুল’। দলের কোনো নীতি নির্ধারণ তাঁকে ছাড়া হয় না। কিন্তু এতকিছুর পরও দলের নেতাকর্মীরা তাঁকে বিশ্বাস করেন না। তাঁকে নিয়ে আস্থার সংকট। তাঁর ওপর বিশ্বাস রাখতে পারে না কেউ। তাঁকে সবসময়ই অন্য কারও এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী বলেই মনে করা হয়। সব দলের এমন কিছু নেতার দেখা যায়।

প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ. টি. ইমাম। সাবেক প্রভাবশালী এই আমলা মুক্তিযুদ্ধের সময়ই মুজিবনগর সরকারের ক্যাবিনেট সচিব নিযুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু ৭৫ পরবর্তী সময়ে তিনি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ বলেই মনে করেন অনেকে। খুনি মোশতাককে শপথ পড়ান এইচ. টি. ইমাম। অবশ্য এজন্য তিনি নিজেও ভুগেছেন অনেক। কারাবরণ করতে হয়েছে। জিয়াউর রহমানের সময় তাঁর পদাবনতিও ঘটেছে। আবার তাঁকে জয়েন্ট সেক্রেটারি করা হয়। সেখান থেকে তিনি আবার সচিব হন। কিন্তু ৭৫ এ ১৫ আগস্টের নীরব ভূমিকার কারণেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাঁকে বিশ্বাস করে না। সম্প্রতি এইচ. টি. ইমাম ভারতে গিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাকে ব্যক্তিগত বক্তব্য বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এইচ. টি. ইমামকে নিয়ে অনেকেই ভিন্নমত পোষণ করেন। দলের অনেকে মনে করেন তিনি যেকোনো সময় ডিগবাজি দিতে পারেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে এইচ. টি. ইমামকে নিয়ে আস্থার সংকটের বিষয়টি স্পষ্ট।

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীরের উপরও নেতাকর্মীদের কোনো আস্থা নেই। ১৯৯৬ সালে জনতার মঞ্চে যখন বিএনপির গদি টালমাটাল, তখন এই মহিউদ্দিন খান আলমগীরই মিছিল করে জনতার মঞ্চে যোগ দেন। এর পুরস্কারও পেয়েছিলেন তিনি। হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সচিব। পরে প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রী হয়েছেন। এরপরও আওয়ামী লীগ তাঁকে বিশ্বাস করে না। কারণ জিয়াউর রহমানের খাল কাটা তত্ত্বের ওপর ডক্টরেট ডিগ্রিধারী মহিউদ্দিন খান আলমগীর একাত্তরের নয় মাস পাকিস্তান সরকারের হয়ে ময়মনসিংহের ডিসির দায়িত্ব পালন করেছেন। আর আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব থেকে দেওয়া কোনো দায়িত্বই বিশ্বস্ততার সঙ্গে পালন করতে পারেননি মহিউদ্দিন খান আলমগীর। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকা অবস্থায় খান সাহেবের অনেক কর্মকাণ্ডই প্রশ্নবিদ্ধ। পরে তাঁকে দেওয়া হলো ফারমার্স ব্যাংক। ব্যাংক ডুবিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করলেন এই সাবেক আমলা। সরকারের অডিট কমিটির চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায়ও মহিউদ্দিন খান আলমগীরের কর্মকাণ্ড নিয়ে সরকারের মধ্যে নানারকম প্রশ্ন উঠেছে। দলের লোকজনই মহিউদ্দিনকে বিশ্বাস করেন না।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। বর্তমান বিএনপির অতি গুরুত্বপূর্ণ এই নেতার সঙ্গে খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান দুজনেরই ভালো সম্পর্ক। কিন্তু বিএনপিরই নেতাকর্মীরা তাঁকে বিশ্বাস করেন না। বিএনপির অনেক নেতাকর্মীর বদ্ধমূল ধারণা আবদুল আউয়াল মিন্টু আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার লোক। কারণ একসময় আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপি গিয়েছেন মিন্টু। আবার অনেক বিএনপি নেতাকর্মীর ধারণা তিনি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার লোক। বিএনপির অনেকেই মনে করেন, আবদুল আউয়াল মিন্টুর কারণেই ২০১৪ নির্বাচনে বিএনপি যায়নি। যে কারণে এখনো মাশুল দিতে হচ্ছে দলকে। সীমাহীন এই মাশুল দিতে গিয়ে এখন অস্তিত্বেরই সংকটে পড়েছে বিএনপি।

আস্থার সংকটে থাকা আরেক নেতা বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান। সাবেক সেনাপ্রধান থেকে আসেন বিএনপি। একসময় যে বিএনপির সঙ্গে সেনাবাহিনীর ‘গ্যারান্টেড’ ও ‘ট্রাস্টেড’ সম্পর্ক ছিল তার শেষ প্রতিনিধি লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান। কিন্তু তাঁকে বিএনপির লোকজন বিশ্বাস করে না। ওয়ান ইলেভেনে সংস্কারপন্থীদের দলে থাকার কারণেই এই অবিশ্বাস। লে. জেনারেল (অব.) মাহবুব বিএনপির নেতৃত্বে পরিবর্তন চেয়েছিলেন। ওয়ান ইলেভেনের পর দলের ফিরলেও জিয়ার কবরের সামনে তাঁকে দিগম্বর করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ আছে। এখনো লে. জেনারেল মাহবুব খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচন ও তারেক মুক্ত বিএনপি- এমন কথাবার্তা বলেন। তাই বিএনপিতে থাকলেও লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবকে বিশ্বাস করেন না বিএনপির নেতাকর্মীরাই। 

বিএনপির আরেক অবিশ্বাসের নাম ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। বাংলাদেশে ডিগবাজির রাজনীতির বরপুত্র ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদকে বিএনপি নেতাকর্মীরা বিশ্বাস করতে পারেন না সঙ্গত কারণেই। বঙ্গবন্ধুর সময় তিনি ছিলেন পোস্টমাস্টার জেনারেল। আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে যান এরশাদের জাতীয় পার্টিতে। পরে যান বিএনপিতে। কিন্তু কদিন পরই আবার জাতীয় পার্টিতে। এখানেই শেষ নয় আবার জাতীয় পার্টি ছেড়ে বিএনপিতে। বিএনপির নেতাকর্মীদের মনে প্রশ্ন তিনি কবে আবার দল ছেড়ে অন্য কোথাও যোগ দেন তার কোনো ঠিক ঠিকানা আছে। ব্যারিস্টার মওদুদ সম্পর্কে একটি বিষয়ই প্রচলিত সবসময় তিনি দলের ভাঙ্গন, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বিএনপির নেতাকর্মীরা ব্যারিস্টার মওদুদকে বিশ্বাস করার কোনো কারণই খুঁজে পায় না।   

শুধু প্রধান দুই রাজনৈতিক দলই নয়। এর বাইরে জাতীয় পার্টিতেও (জাপা) আছে অবিশ্বাসে বসবাস। দুষ্টু লোকের কথা, এরশাদের সবচেয়ে বড় অবিশ্বাস তাঁর স্ত্রী রওশন এরশাদ। রওশন হলেন জাপার কো-চেয়ার। কিন্তু রওশনের ক্ষমতা খর্ব করার জন্যই জিএম কাদেরকে কো-চেয়ার করেছেন এরশাদ। জাপার ওপেন সিক্রেট, এরশাদের কথা শোনেন না রওশন। সবসময়ই রওশন এরশাদের কাছে কিছু লোক রেখে দেন এরশাদ। এরশাদের এই ফেউরা সবসময় রওশনের সঙ্গে লেগে থাকে। রওশনের প্রতিটি কথা কাজের খবর চয়ে যায় এরশাদের কাছে। জাপার মধ্যে এমন কথা প্রচলিত, দলের একমাত্র রওশনই যেকোনো সময় এরশাদকে উড়িয়ে দিতে পারেন। এরশাদ একই সঙ্গে রওশনকে ভয় পান এবং সন্দেহ করেন।

জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। দলের নেতাকর্মীদের বিশ্বাস আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেন তিনি। কারণ এই বাবলুর কারণে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাপার বর্তমান এই সম্পর্ক। আর এরশাদও জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর উপর সন্দিহান। একারণে কখনো কাছ ছাড়া করেন না বাবলুকে। জিয়াউদ্দিন বাবলু মহাসচিব থেকে সরে গিয়ে রুহুল আমিন হাওলাদার জাপা মহাসচিব হলেও এখনো এরশাদের সবচেয়ে কাছেই থাকেন। তবে এরশাদ ও জাতীয় পার্টির নেতারা সবসময়ই চোখে চোখে রাখেন তাঁকে, যেন কখনো দলের বাইরে কিছু করতে না পারেন।

উল্লিখিত কয়েকজনের কথা বলা হলো মাত্র। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে এমন অবিশ্বাসের মানুষের সংখ্যা কম না। এদের অনেকেই সংশ্লিষ্ট দলের নীতিনির্ধারক হলেও নেতাকর্মীদের অবিশ্বাস কাটাতে পারেননি। ভবিষ্যতেও কাটাতে পারবেন এমন সম্ভাবনাও নেই। 



বাংলা ইনসাইডার/জেডএ




মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে গণ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত

প্রকাশ: ১০:৩০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। 

অবশ্য এসব প্রার্থীর অনেকে এটি ‘দলীয় নির্বাচন নয়’ বলে দাবি করছেন, আবার কেউ কেউ ‘জনগণ তাদের চাচ্ছে’– এমন অজুহাত দেখাচ্ছেন। এমনকি দল থেকে বহিষ্কার হতে পারেন– সেই ভয় উপেক্ষা করেই নিজেদের এ অবস্থান জানান দিচ্ছেন তারা। আবার অনেকের দলে কোনো পদপদবিও নেই। অনেকে বহিষ্কৃত। এর পরও যারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিএনপি হাইকমান্ড। শিগগির এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে বলেও জানা গেছে।

বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মতো দলের এমন সিদ্ধান্ত স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও বাস্তবায়ন করছে দলটি। এ জন্য দফায় দফায় তৃণমূল নেতাকর্মী ছাড়াও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গেও দফায় দফায় বৈঠক করেন নেতারা। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নেতারা এই নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মত তুলে ধরেন। সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ইচ্ছুকদের প্রথমে কাউন্সেলিং, নির্বাচনে না যাওয়ার আহ্বানের পাশাপাশি দলের কঠোর অবস্থানের বিষয়টি তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেন নেতারা। এর পরও যারা সিদ্ধান্ত অমান্য করবেন, তাদের বিষয়ে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি আগেই উচ্চারণ করেছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। 

এদিকে গত সোমবার রাতে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের বহিষ্কারের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী নেতারা বলছেন, স্থানীয় জনগণের চাপে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাছাড়া যেহেতু এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে না তাই তারা স্বতন্ত্র ভাবে নির্বাচন করছেন। আর তাই বহিষ্কারের বিষয়টি তারা আমলে নিচ্ছে না। তবে দল তাদের ব্যাপারে নমনীয় সিদ্ধান্ত নেবেন এমনটাও প্রত্যাশা নেতাকর্মীদের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দিনাজপুর জেলার একটি উপজেলার বিএনপির প্রার্থী বলেন, মনোনয়নপত্র দাখিল করার পরে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে নির্বাচনে না যাওয়ার। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন করব, দল যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয় নেবে।

বিএনপি   গণ বহিষ্কার   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় থানায় জিডি

প্রকাশ: ০৮:৪০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ ওরফে খোকন এ জিডি করেন।

জিডিতে বলা হয়েছে, গত ২০ এপ্রিল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ঈদ যাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এই সংবাদ সম্মেলনে সাংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ২০ বছর যাবৎ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তিনি পরিবহন সেক্টরে কোনো কাজ করেন নাই।’ 

একপর্যায়ে মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, ‘যেহেতু আমাদের দেশে পদত্যাগের সংস্কৃতি নেই। সেহেতু মন্ত্রী ইচ্ছা করলে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করতে পারেন।’

জিডিতে শ্রমিক লীগের ওই নেতা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি যাত্রীদের কল্যাণ করবে এটাই তাদের কাজ। কিন্তু সুপরিকল্পিতভাবে মোজাম্মেল হক চৌধুরী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এতে মন্ত্রীর সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। কারণ বর্তমান সরকার টানা চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন। এখন সরকারের ক্ষমতা থাকার বয়স ১৫ বছর ৩ মাস। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী সেখানে ২০ বছর মন্ত্রী থাকেন কীভাবে? মোজাম্মেল হক চৌধুরী সুপরিকল্পিতভাবে মন্ত্রী ও সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন। এই মিথ্যাচারের বক্তব্যগুলো দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশনসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। তার এই মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যে সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ন ও মন্ত্রীর মানহানি হয়েছে। তাই বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য জিডি করে রাখা একান্ত প্রয়োজন।’

ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

‘আপনি কখনোই কোনো কথা শোনেন না, এটা ঠিক না’

প্রকাশ: ০৭:৪০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের। 

গতকাল সন্ধ্যার পর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করতে তার কক্ষে যান শাজাহান খান। এ সময় তার উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনি তো কথা শুনলেন না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তও মানলেন না।’

এ সময় সেখানে উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতারা তিরস্কার করেন শাজাহান খানকে।

জানা গেছে, শাজাহান খান এক পর্যায়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশে বলেন, রাজনীতির ধারাবাহিকতায় ছেলে আসিবুর রাজনীতিতে এসেছে। এ জন্যই সে প্রার্থী হয়েছে। জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী ও এমপির স্বজনের নির্বাচন না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। প্রতিউত্তরে শাজাহান খান বলেন, অনেকেরই নিকটাত্মীয় রাজনীতিতে আছেন।

ওবায়দুল কাদের এ সময় শাজাহান খানকে বলেন, ‘আপনি কখনোই কোনো কথা শোনেন না। এটা ঠিক না।’ এর জবাবে শাজাহান খান বলেন, ‘আপনার সিদ্ধান্ত দেরিতে জানিয়েছেন। আগে জানালে ভালো হতো।’ তখন ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সিদ্ধান্তটি আমার নয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কোন সিদ্ধান্ত কখন দেবেন, সেটা কি আমাদের জিজ্ঞাসা করে দেবেন?’

শাজাহান খানের উচ্চস্বরে কথা বলা নিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। এ নিয়ে বিরক্ত হন ওবায়দুল কাদেরও। তিনি শাজাহান খানের উদ্দেশে বলেন, ‘এখানে দলের অনেক নেতাকর্মী রয়েছেন। এর পরও আপনি সবার সামনে এসব অপ্রিয় কথা কেন বলছেন?

এ সময় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুই সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, কার্যনির্বাহী সংসদের দুই সদস্য আনিসুর রহমান ও সাহাবুদ্দিন ফরাজী, মশিউর রহমান হুমায়ুন, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী লোটন, বলরাম পোদ্দার এবং শাহজাদা মহিউদ্দিন।

ওবায়দুল কাদের   শাজাহান খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভিডিও ভাইরাল হওয়া সেই চামেলীকে অব্যাহতি

প্রকাশ: ০৭:৩১ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ একটি সুসংগঠিত ও সুশৃঙ্খল সংগঠন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির গঠনতন্ত্রের ৪৭(৯) ধারা মোতাবেক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে সংগঠনের শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
 
এর আগে ওই নারী কাউন্সিলরের একটি নগ্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। কয়েকদিন ধরে নগর আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ঘুরপাক খায়। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

আওয়ামী লীগ   ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন   রাজনীতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভুল কৌশলের মাশুল গুনছে আওয়ামী লীগ?

প্রকাশ: ০৬:২৬ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগের অতীতে নেয়া কিছু সিদ্ধান্ত বা ঘটনা এর জন্য দায়ী হতে পারে। উদাহরণ দিয়ে কেউ কেউ বলছেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু পরে আবার তাকে দলে ফিরিয়ে আনা হয়। জাহাঙ্গীর আলমকে প্রথমবার বহিষ্কার করার পর যখন দলে ফিরিয়ে আনা হয় পরে দ্বিতীয়বার তিনি আবার একই ভুল করলেও তাকে সাধারণ ক্ষমা দিয়ে দলে ফেরত আনা হয়। বিষয়টি সে সময় আওয়ামী লীগের অনেক তৃণমূল নেতাকর্মীই ভালো ভাবে নেয়নি। 

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মেয়র জাহাঙ্গীরের মতো একাধিক ঘটনা অতীতে আওয়ামী লীগে ঘটেছে। ফলে নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের ধারণা তৈরি হয়েছে যে, প্রথমে দল তাদেরকে বহিষ্কার করলেও পরে তারা সাধারণ ক্ষমা পেয়ে আবার দলে ফেরত আসার সুযোগ পাবেন। আর সে কারণেই দলের নির্দেশনা থাকলেও সেটা অমান্য করে তারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি বলে মনে করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাছাড়া স্থানীয় রাজনীতিও নিয়ন্ত্রণ করে এমপিরা। সেখানে এমপিরাই যখন তাদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের মনোনয়ন দিচ্ছেন তাহলে তো কোন কথাই নাই। অতীতে আওয়ামী লীগ শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিলে দলের চেইন অব কমান্ড এভাবে ভেঙে পড়ত না। আওয়ামী লীগকে এখন ভুল কৌশলের মাশুল গুনছে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, দলীয় নির্দেশনার পরও যেসব এমপি-মন্ত্রীর আত্মীয়স্বজনরা নিজেদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি, তাদের নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার সময় কিন্তু এখনো শেষ হয়ে যায়নি। আমরা বিশ্বাস করি, দলীয় নির্দেশনা মেনে তারা নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেবেন। তবে কেউ যদি শেষ পর্যন্ত দলীয় নির্দেশনা না মানেন তাহলে অবশ্যই দল তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। দলের নিয়মনীতি ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের (এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়দের) বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটাই আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্ত।

তিনি আরও বলেন, কেউ যদি জাহাঙ্গীর আলমের বিষয়টি থেকে অনুপ্রাণিত হন তাহলে তিনি ভুল করছেন। এরা অচিরেই রাজনীতিতে হারিয়ে যাবে। দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে বা গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে কেউই এখন পর্যন্ত রাজনীতির চরম শিখরে পৌঁছাতে পারেনি। বরং যিনি দলের প্রতি অবিচল থেকেছেন, দলের সিদ্ধান্তকে মান্য করেছেন, দলের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি তারা ধাপের ধাপে রাজনীতিতে উন্নতি করেছেন দেশের জন্য অবদান রাখতে পেরেছেন, জনগণের নেতাতে পরিণত হয়েছেন, রাজনীতিতে অমরত্ব লাভ করেছেন। 

আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন