ইনসাইড পলিটিক্স

জামাতকে কি আমরা আবার সুযোগ দিচ্ছি?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৫ জুলাই, ২০১৮


Thumbnail

আজ থেকে ৯ বছর আগে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন নিজের অন্যতম প্রধান নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে তখন বিএনপি-জামাতের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার একটি রাজনৈতিক ইস্যু। জামায়াতে ইসলামীকে ধ্বংস করে দিতে, দলটিকে নেতৃত্বশূন্য করতে এটি আওয়ামী লীগের গৃহীত একটি রাজনৈতিক উদ্যোগ। কিন্তু এটি আসলে ছিল বাঙালির ৪০ বছরের অপূর্ণ স্বপ্ন পূরণের উদ্যোগ। একাত্তরে গণহত্যা, ধর্ষণের মতো যেসব অপকর্ম জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা করেছিল সেসব অপকর্মের বিচার হওয়া প্রয়োজন ছিল বাঙালি জাতিসত্ত্বার জন্য, বাংলাদেশের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য এবং বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য। আর সে কারণেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার।

গত ৮ বছর ধরে চলা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া যদি আমরা লক্ষ্য করি তাহলে দেখব, এতে রাজনৈতিকভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দলটির নাম জামায়াতে ইসলামী। তাদের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা যুদ্ধাপরাধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের সম্মুখীন হয়ে হয় মৃত্যুদণ্ড, নয়তো কারাদণ্ড ভোগ করছেন।

জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন দলনেতা বা আমীর মতিউর রহমান নিজামীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী আপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন যা ২০১৬ সালের ১১ই কার্যকর করা হয়। পাবনা থেকে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থনে ১৯৯১ ও ২০০১ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া নিজামী এক সময় বিএনপি-জামাত জোট সরকারের কৃষি ও শিল্প মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

জামায়াতে ইসলামীর সর্বোচ্চ পদধারী নিজামীর মতো একই ভাগ্য বরণ করতে হয় দলটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদধারী আলী আহসান মুজাহিদকেও। ফরিদপুরের রাজনীতিবিদ  জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সচিব মুজাহিদকে ২০১৩ সালের জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-২ গণহত্যা, বুদ্ধিজীবি হত্যার পরিকল্পনা, নির্যাতন ইত্যাদিসহ মোট উত্থাপিত ৭টি অভিযোগের মধ্যে ৫টিতে দোষী সাব্যস্ত করে দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। এ আদেশ ২০১৫ সালের ২২শে নভেম্বর কার্যকর করা হয়।

যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামাতের মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আরেক নেতা আবদুল কাদের মোল্লা। কাদের মোল্লা ছিলেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল। ফরিদপুর থেকে নির্বাচন করে দুইবার পরাজিত হওয়া কাদের মোল্লাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রথমে ৩৪৪ জন নিরীহ ব্যক্তি হত্যা ও অন্যান্য অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। পরবর্তীতে ২০১৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সর্বোচ্চ আদালত মানবতাবিরোধী অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন করাদণ্ডের পরিবর্তে মৃত্যুদণ্ডাদেশের নির্দেশ দেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডপ্রাপ্ত আরেক জামাত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ছিলেন দলটির নায়েবে-আমির বা ভাইস প্রেসিডেন্ট। ধর্মীয় নেতার ভাবমূর্তি কাজে লাগিয়ে তিনি দেশের নির্দিষ্ট একটি জনগোষ্ঠীর মধ্যে, বিশেষ করে নিজের নির্বাচনী এলাকা পিরোজপুরে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, লুটতরাজ ও সংখ্যালঘু হিন্দুদের জোড়পূর্বক ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরে বাধ্য করার মতো মানবতাবিরোধী ২০টি অভিযোগের মধ্যে আটটি অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করেন এবং দুটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়। এই রায়ের পর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করা হলে ২০১৪ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিলের রায় পর্যবেক্ষণ করে ফাঁসির সাজা কমিয়ে সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদাণ করেন। এখন সাঈদী কারাগারেই আছেন।

কিন্তু বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে এত বিপর্যয়ের পরও দলটি কিন্তু মোটেই দুর্বল হয়নি। ধারণা করা হচ্ছিল, এত প্রথম সারির নেতার মৃত্যুদণ্ড বা কারাদণ্ডের পর জামাত নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়বে। কিন্তু তেমনটা ঘটেনি। দলটিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সংগঠিত করে যাচ্ছেন বেশ কয়েকজন নেতা। এর আগে মুক্তিযুদ্ধের পরও দেশের শিক্ষাবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মন্তব্য করেছিলেন জামাত আর বাংলাদেশে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে উল্টোটা। জামাত এখনও বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য, বাংলাদেশের জন্য এবং বাঙালি জাতিসত্ত্বার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে টিকে আছে।

আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, আবারও বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি ও সেক্যুলার রাজনৈতিক দলগুলো জামাতকে অবহেলা করার মতো ভুল করছে। বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এটি একটি ক্ষতিকর প্রবণতা। যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে কথা বলেন কিংবা যারা দেশের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ বলে পরিচিত তাঁরা মনে করছেন জামাত দুর্বল হয়ে গেছে, শক্তিহীন হয়ে গেছে। এমনকি জামাত শেষ হয়ে গেছে বলেও অনেক সময় মন্তব্য করা হয়। কিন্তু এই চিন্তাটি সম্পূর্ণ ভুল।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, আমরা যে কোনো কাজ অর্ধেক সম্পন্ন করে রেখে দেই। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথমেই যে কাজটি করা জরুরী ছিল তা হলো একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা। কিন্তু দেখা গেছে,  সেসময় যুদ্ধাপরাধীদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্য প্রদর্শন করা হয়েছে। তারই ফলশ্রুতিতে ঘটেছে পচাত্তরের পনেরোই আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সপরিবারে নিহত হওয়ার মতো কলঙ্কজনক ঘটনা। এই পথ ধরেই যুদ্ধাপরাধীরা দেশে দোর্দণ্ডপ্রতাপে পুনর্বাসিত হয়েছেন, এক পর্যায়ে তাদের গাড়িতে উঠেছে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। এরপর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরুর মাধ্যমে এই লজ্জা ও কলঙ্ক মোছার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু এবারও আমরা পুরনো পথেই হাঁটছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শেষ করেই উচিত ছিল জামায়াতে ইসলামীকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে চিরতরে নিষিদ্ধ করা। কিন্তু সেটি করা হয়নি। অর্থ্যাৎ সেই একই ভুলের পুনরাবৃত্তি আবার ঘটছে। এই সুযোগে জামাত আবার সুযোগ পেয়েছে বড় দানব হয়ে সামনে আসার।

এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইসলাম খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি নিয়ামক। জামায়াতে ইসলামী দলটি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনে উপস্থিত ছিল না। কিন্তু উপস্থিত ছিল আরেকটি ইসলামী দল – ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন। এ দলটির কোনো রাজনৈতিক ঐতিহ্য নেই কিংবা এর নেতারা এলাকায় পরিচিতও নন। কিন্তু নির্বাচনী ফলাফল গণনায় দেখা গেছে, খুলনা সিটিতে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মো. মুজাম্মিল হক হাতপাখা প্রতীকে ১৪ হাজার ৩৬৩ ভোট পেয়েছেন। আর গাজীপুর সিটিতে ইসলামী আন্দোলনের মো. নাসির উদ্দিন হাতপাখা প্রতীকে পেয়েছেন ২৬ হাজার ৩৮১ ভোট। অর্থ্যাৎ শুধু ইসলাম ধর্মকে ব্যবহার করেই দেশের জনগণের একটি অংশের ভোট টানা যাচ্ছে। আর এই ভোটগুলো কিন্তু ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের ভোট নয়। এই ভোটগুলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ভোট। মুক্তিযুদ্ধের আগে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা যখন তুঙ্গে তখনও কিন্তু ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব বাংলায় ৩১ শতাংশের মতো ভোট পেয়েছিল মুসলিম লীগ। এ থেকেই প্রমাণিত হয়, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী একটি শক্তি সবসময়ই সক্রিয়।

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী অনেক পুরনো একটি দল। ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি চর্চাকে তারা শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে। এই প্রাচীণ ও সংঘবদ্ধ দলটি যদি ধর্ম পুঁজি করে আবার মাঠে নামে তবে এক শ্রেণির ধর্মান্ধ জনগোষ্ঠীর ভোট তারা পাবেই। সে লক্ষ্যেই নিজেদের দীর্ঘদিনের মিত্র বিএনপির বিরুদ্ধে গিয়ে আগামী ৩০ জুলাই অনুষ্ঠেয় সিলেট সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাচ্ছে জামাত। আর সিলেটে জামাতের করা ক্যাম্পেইনগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, একটি গোষ্ঠীর মধ্যে তাদের জনপ্রিয়তা এখনও অটুট।

এসব ঘটনা বিশ্লেষণ করে বলা যায়, জামায়াতে ইসলামী দলটির আবার উত্থান ঘটছে। তারা শক্তি সঞ্চয় করছে। দল গুছিয়ে জোরেসোরে মাঠে নামতে যাচ্ছে তারা। এখন যদি আবার জামাতকে অবজ্ঞা করা হয়, তাদের উত্থানকে গুরুত্ব না দেওয়া হয় তাহলে বাংলাদেশে যে সেক্যুলার রাজনীতির একটি স্বপ্ন বিদ্যমান রয়েছে তা হারিয়ে যাবে।

সেক্যুলার রাজনীতির অঙ্গনে বাংলাদেশের একমাত্র জনপ্রিয় সেক্যুলার শক্তি হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এছাড়া দেশের অন্য সব সেক্যুলার শক্তি যেমন সিপিবি, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি প্রভৃতি বাম দলগুলোর জনগণের মধ্যে তেমন গ্রহণযোগ্যতা নেই। সাম্প্রতিক সময়ে অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচনগুলোতে তাদের প্রাপ্ত ভোটের দিকে তাকালেই তা প্রমাণিত হয়। কিন্তু এই বাম দলগুলো সেক্যুলার রাজনীতির বিকাশে আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করছে না।

এটাই সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি যে, রাজনীতির এত বাঁক পরিবর্তন কিংবা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়ার মতো তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনার পরও বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক শক্তিগুলো বিকশিত হয়নি। বরং বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দিনকে দিন তারা জামাত-শিবিরের ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠছে। এ প্রসঙ্গে সাম্প্রতিক কোটা আন্দোলনের দিকে তাকানো যাক। এই কোটা আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্যই হলো মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের কোটা বাতিল। এটা এক অর্থে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের অসম্মান করা। এভাবেই জামাত তাদের আজীবনের এজেন্ডা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে। আর এ কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর কার্যক্রম সমর্থন দিচ্ছে জামাত-শিবিরকেই। কিন্তু এত কিছুর পরও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিটি মনে করছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ শেষ হয়ে গেছে তাই জামাতকে নিয়ে আর চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। এভাবেই মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিটি বারবার আদর্শিক লড়াইয়ে জামাতের কাছে পিছিয়ে পড়ছে।

এ কথা স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে, জামায়াতে ইসলামী আবার ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে, নিজেদের সংগঠনকে গুছিয়ে আনছে। এ সময়টাতে অতীতের মতো ভুল করলে আর শোধরানোর সুযোগ পাওয়া যাবে না। তাই লক্ষ্য রাখতে হবে জামাতের শক্তিকে যেন অবহেলা না করা হয়। নতুবা বাংলাদেশ আবার মুক্তিযুদ্ধের পরিপন্থী জায়গায় গিয়ে দাঁড়াবে।

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, বাংলাদেশের তথাকথিত সুশীল গোষ্ঠী জামাত ইস্যুটিকে একটি পরিত্যক্ত ইস্যু হিসেবে বিবেচনা করছে যা একটি ভয়াবহ প্রবণতা। সাম্প্রতিক বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এবং বিভিন্ন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, জামাতের সমর্থক গোষ্ঠী কমেনি বরং বেড়েছে। তাই ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপির বাইরে তৃতীয় শক্তি হিসেবে যদি ইসলামী শক্তির উত্থান হয় তবে বিস্মিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মতো একটি শেকড়বিহীন দল যদি সিটি নির্বাচনগুলোতে এতগুলো ভোট পেতে পারে তাহলে জামাত যদি এদের সঙ্গে যুক্ত হয় তবে ইসলামী রাজনীতির ধারা আরও শক্তিশালী হবে। এতে বাংলাদেশে সেক্যুলার রাজনীতির যে প্ল্যাটফর্মটি এখনও অবশিষ্ট আছে সেটিও ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাবে।

কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশে সেক্যুলার রাজনীতি চর্চাকারী দলগুলো ছোট ছোট ইস্যুতেও প্রাণভরে সমালোচনা করে যাচ্ছে কেবল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী প্রসঙ্গে কোনো বক্তব্য তাদের কাছ থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর মতো মৌলবাদী দলগুলো যতদিন সক্রিয় থাকবে তাদের নিজেদের বিকাশ ততদিন ঠিকঠাকভাবে হবে না। কিন্তু এই সত্যিটি এড়িয়ে গিয়ে তারা ক্রমাগত সমালোচনা করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগেরই। তাই তাদের দৃষ্টিভঙ্গির যদি পরিবর্তন না হয় তবে অদূর ভবিষ্যতেই বাংলাদেশের সেক্যুলার রাজনীতি হুমকির সম্মুখীন হতে যাচ্ছে।

অতীতের দিকে তাকালে দেখা যায়, জাতীয় নির্বাচনে যতবার স্বাধীনতা বিরোধী ও ধর্মান্ধ-মৌলবাদীরা এক হয়েছে ততবারই আওয়ামী লীগ নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে আবারও এমন একটি ঘটনা ঘটবে কীনা সেদিকে এখনই নজর দেওয়া উচিত কর্তৃপক্ষের।


বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ 



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

এখনই ভারত বিরোধী কর্মসূচিতে যাবে না বিএনপি

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি ভারতীয় পণ্য বর্জন বা প্রকাশ্য ভারত বিরোধী কর্মসূচিতে এখনই যাবে না। দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে চূড়ান্তভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দলের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। গতকাল লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া স্থায়ী কমিটির সদস্যদের এই বার্তা দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, এখনই ভারত বিরোধী কর্মসূচি প্রয়োজন নেই। তবে বিভিন্ন স্থানে যারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভারতের বিরোধিতা করবে ভারতীয় পণ্য বর্জন করবে, তাদের ব্যাপারে বিএনপি নির্লিপ্ত থাকবে। এমনকি ভারতের যে সমস্ত আগ্রাসন বা পক্ষপাতমূলক আচরণ সে ব্যাপারে বিএনপির অবস্থান সুস্পষ্ট থাকবে। বিএনপি বাংলাদেশের স্বার্থের জন্য যে কোন দেশের সমালোচনা করবে। তবে কোন দেশের পণ্য বর্জনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো কর্মসূচি নেবে না বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য যে, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর থেকেই বিএনপির মধ্যে একধরনের ভারত বিরোধিতার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। বিএনপির অনেক নেতাই প্রকাশ্যে বলেন যে, আওয়ামী লীগকে ভারত ক্ষমতায় রেখেছে এবং ভারত একটি অগণতান্ত্রিক সরকারকে বাংলাদেশে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। এ নিয়ে বিএনপির বেশ কিছু নেতা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখেছিলেন। তবে গত ২০ মার্চ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রকাশ্যে ভারতীয় পণ্য পুড়িয়ে ফেলে আলোচনায় আসেন। 

এর আগে বিদেশে পলাতক সাইবার সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত পিনাকী ভট্টাচার্য তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে যাচ্ছিলেন। তার এই পণ্য বর্জনের ডাকে তেমন কোন সাড়া না পড়লেও পিনাকীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবং পিনাকীর নেতৃত্ব মেনে রুহুল কবির রিজভীর এই ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। বিএনপির মধ্যে এই নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

বিষয়টি নিয়ে বিএনপি নেতাদের অনেকেই বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন। যেদিন রিজভী ভারতীয় পণ্য পুড়ানোর নাটক করেন তার ঠিক চারদিন পর ২৪ মার্চ বিএনপি ওয়েস্টিন হোটেলে বিদেশি কূটনৈতিকদের সম্মানে ইফতার পার্টির আয়োজন করে। সেই ইফতার অনুষ্ঠানে ভারতীয় ডেপুটি হাই কমিশনারও উপস্থিত ছিলেন এবং এটি বিএনপির অনেক জন্য একটি বিব্রতকর পরিস্থিতি বলেই উল্লেখ করা হয়।

বিষয়টি দলের স্থায়ী কমিটির সভা পর্যন্ত গড়ায় এবং এখানে অনেকেই এই সিদ্ধান্ত বিএনপি নিয়েছে কি না সেই প্রশ্ন উত্থাপন করেন। অবশ্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তখন রিজভীর পক্ষেই অবস্থান নেন। তিনি জানান, যে রিজভী যেটা করেছেন সেটি তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে এটি করেছে। এটি দলীয় অবস্থান নয়।

তবে এরপরে বিএনপির মধ্যে অনেক সিনিয়র নেতা প্রশ্ন করেন যে, একজন গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ব্যক্তি দলীয় অবস্থানের বাইরে গিয়ে ব্যক্তিগত অবস্থান নিতে পারেন কি না? এই বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে ওই স্থায়ী কমিটির বৈঠকে জানানো হয়েছিল। পরবর্তীতে গতকাল রাতে লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জানিয়ে দেন যে, তারা আপাতত কোন প্রকাশ্য কর্মসূচিতে যাবে না। তবে ব্যক্তিগতভাবে যদি কেউ ভারত বিরোধিতা করে বা ভারতের অবস্থানের সমালোচনা করে সেগুলো নিয়ে বিএনপি নীরব থাকবে। দলগতভাবে ভারতীয় পণ্য বর্জনের কোনো ডাক বিএনপির পক্ষ থেকে দেওয়া হবে না বলেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে- সীমান্ত হত্যা, ভারতের ভুল নীতি বা বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারতের আগ্রাসন ইত্যাদি ব্যাপারে বিএনপির অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। বিএনপি এই সমস্ত বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী, সার্বভৌমত্ব বিরোধী প্রতিটি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অবস্থান অতীতে নিয়েছে, ভবিষ্যতেও নেবে। তবে ভারতের পণ্য বর্জন বা ইন্ডিয়া আউটের মতো কোনও কর্মসূচিতে বিএনপি আপাতত যাবে না।

তাহলে বিএনপি নেতারা কী ভারতীয় পণ্য পুড়িয়ে ফেলবে এমন প্রশ্নের উত্তরে স্থায়ী কমিটির ওই সদস্য বলেন, আমরা কোন দেশের পণ্য পুড়ানো বা কোন দেশের পণ্য বর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করিনি। এ ধরনের কর্মসূচিতে বিএনপি যাচ্ছে না।

ভারত বিরোধী   বিএনপি   রুহুল কবির রিজভী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

‘বিএনপি নেতাদের কথা শুনলে জিয়াউর রহমানও লজ্জা পেয়ে যেতেন’

প্রকাশ: ০১:৩৯ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি নেতারা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে যেসব কথা বলে তা শুনলে জিয়াউর রহমানও কবরে শুয়ে লজ্জা পেয়ে যেতেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর প্রেসক্লাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান জীবদ্দশায় কখনো শুনেননি তিনি স্বাধীনতার ঘোষক।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, স্কুল ঘণ্টা যেমন দপ্তরি বাজায়, তেমনি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর পক্ষে। আজকে বিএনপি নেতা আব্দুল মঈন খান অনেক কথা বলেন। মঈন খানের বাবা আব্দুল মোমেন খান ৭৪ সালে খাদ্য সচিব ছিলেন। তিনি ষড়যন্ত্র করে মার্কিন খাদ্যবাহী জাহাজ ফেরত পাঠিয়েছিলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান আব্দুল মোমেন খানকে মন্ত্রী বানিয়েছিল। মঈন খান নিজেও সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিল, দরকার পড়লে দেশ বিক্রি করে দেব।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশ সমৃদ্ধির দিকে যখনই এগিয়ে যাচ্ছিল তখনই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। বিএনপি জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বানানোর জন্য যেভাবে দাবি করে জিয়াও সেভাবে কখনো দাবি করেনি। জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ছত্রছায়া পাকিস্তানিদের পক্ষে কাজ করেছে। জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগের অধীনেই মুক্তিযুদ্ধের সময় বেতন ভুক্ত কর্মচারী ছিলেন।

তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের কথা হাস্যরসের সৃষ্টি করে। বিএনপির নেতা মঈন খানের বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, যার বাবার জন্য এদেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছে তার মুখে এসব কথা মানায় না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে ইতিহাস বিকৃতি করে বিএনপি নেতারা বিশদকার বিষোদগার করছে কিন্তু এখন সঠিক ইতিহাস জনগনের সামনে আসার পর তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। বিএনপির ইতিহাস বিকৃতির পাশাপাশি দেশের জনগণকেও বিভ্রান্তি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।


বিএনপি   ড. হাছান মাহমুদ   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপি ইফতার পার্টিতেও মিথ্যাচার করছে: কাদের

প্রকাশ: ০১:০০ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করে, অপপ্রচার করে, মিথ্যাচার করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার (২৯ মার্চ) আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির উদ্যোগে ইফতার ও ঈদসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ নেত্রী নির্দেশ দিয়েছেন ইফতার পার্টি না করে, সাধারণ মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণ করতে। আর বিএনপি বড় বড় হোটেলে ইফতার পার্টির আয়োজন করে। আর সেই ইফতার পার্টিতে তারা আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করে, অপপ্রচার করে, মিথ্যাচার করে।

তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা বলে দিল্লির শাসন মেনে নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ পাকিস্তানে সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। আসলে বিএনপির হৃদয়ে এবং চেতনায় পাকিস্তান। আওয়ামী লীগের চেতনা এবং হৃদয়ে বাংলাদেশ, কোনো বিদেশিদের দাসত্ব নয়।

তিনি বলেন, বিএনপির চারদিকে অন্ধকার, শেখ হাসিনার জনকল্যাণমুখী বিচক্ষণ রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছে। বিএনপি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করেছিল। ব্যর্থ হয়ে এখনো অসংলগ্ন কথা বলছে। আশি ভাগ বিএনপি নেতাকর্মীকে দমন-পীড়ন করা হচ্ছে বলে তারা মিথ্যাচার করছে।

এসময় মির্জা ফখরুলকে মিথ্যাচার করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তাদের মিথ্যাচারের রাজনীতি কেউ গ্রহণ করছে না বলেই তারা সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব সংকটের প্রভাবের পরও শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বের কারণে অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ এখনো ভালো আছে।


ওবায়দুল কাদের   রাজনীতি   সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

এবার কি ব্যারিস্টার খোকনও বিদায় নেবেন বিএনপি থেকে?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির জনপ্রিয় নেতা ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন। শুধু তিনি নন, তার সঙ্গে আরও কয়েকজন এবারের নির্বাচনে চমক দেখিয়ে আওয়ামীপন্থী প্যানেলকে ধরাশায়ী করে সুপ্রিম কোর্টে জায়গা করে নিয়েছেন।

এ ধরনের পেশাজীবীদের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলকে হারিয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করা একটা বিরাট অর্জন এবং ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সেই অর্জনটি করেছেন। কিন্তু তার এই অর্জনের পরপরই বিএনপির মধ্যে তাকে নিয়ে নানারকম প্রশ্ন উঠেছে। মাহবুব উদ্দিন খোকন কেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেন তা নিয়েও বিএনপির কোনো কোনো উগ্রবাদী নেতা প্রশ্ন তুলেছেন। যেখানে বিএনপি সব ধরনের পেশাজীবীদের নির্বাচন বর্জন করছে সেখানে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কেন খোকন অংশগ্রহণ করল—এটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপির কেউ কেউ। 

অবশ্য ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট কৌশলগত কারণে বিএনপির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এই কারণেই তিনি এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে একজন জনপ্রিয় মুখ। তিনি একাধিকবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক পদে জয়ী হয়েছিলেন। বিএনপির বাইরেও তার একটা প্রভাব বলয় রয়েছে এবং জনপ্রিয়তা রয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে তিনি স্রোতের বিপরীতে থেকে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। কিন্তু তার জনপ্রিয়তা বিএনপির নেতারাই মেনে নিতে পারছেন না। খোকন যদি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সভাপতি হন, তাহলে অনেক বিএনপি নেতাই তার পিছনে চলে যাবে—এ রকম চিন্তা থেকেই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এই নির্বাচনকে বয়কট করার ডাক দিয়েছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। 

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম এক চিঠির মাধ্যমে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তাদেরকে পদ গ্রহণ না করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু মাহবুব উদ্দিন খোকন যেহেতু সুপ্রিম কোর্টে বেড়ে ওঠা একজন আইনজীবী এবং আইনজীবীদের সঙ্গে তার এক ধরনের আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে, তাই তিনি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি। কারণ সুপ্রিম কোর্ট কোন জাতীয় নির্বাচন নয়। এখানে যে সমস্ত আইনজীবীরা তাকে ভোট দিয়েছেন, তারা সকলেই বিএনপির কর্মীও নন, বরং এখানে বেশ কিছু সাধারণ ভোটার রয়েছেন যারা আওয়ামী লীগ, বিএনপি কোন দলই সমর্থন করেন না। তারা মাহবুব উদ্দিন খোকনকে ভোট দিয়েছেন। এখন যদি মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির দায়িত্ব গ্রহণ না করেন সেটা হবে তাদের সঙ্গে প্রতারণা। আর এটি মাহবুব উদ্দিন খোকন করতে চাননি। আর এটি করতে না চাওয়ার কারণে তিনি আইনজীবী ফোরামের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করবেন বলে আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। এর ফলে বিএনপির মধ্যে কী প্রতিক্রিয়া হয় সেটাই দেখার বিষয়। 

বিএনপি যেমন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি, একটি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। অনেকেই মনে করেন যে, বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং মির্জা ফখরুল বা অন্য নেতারা যদি সংসদে যান তাহলে তারেক জিয়ার কর্তৃত্ব খর্ব হয়ে যাবে। সে কারণেই তারেক জিয়া নির্বাচন থেকে তাদেরকে দূরে রাখছেন। একইভাবে যদি মাহবুব উদ্দিন খোকনও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হন সেক্ষেত্রে বিএনপির অনেক অপাঙ্ক্তেয় গুরুত্বহীন অজনপ্রিয় নেতাদের অবস্থা নড়বড়ে হয়ে যাবে এবং তারা খোকনের কাছে ম্লান হয়ে যাবেন—এরকম বিবেচনা থেকে তাকে নির্বাচন দায়িত্ব গ্রহণ থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মাহবুব উদ্দিন খোকন এটি মানছেন না। এরকম পরিস্থিতিতে সামনের দিনগুলোতে মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপির টার্গেট হন কিনা সেটা দেখার বিষয়। অতীতে দেখা গেছে যে, বিএনপিতে যারাই জনপ্রিয় হয়েছেন তাদেরকেই দল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে বা দলে কোণঠাসা করা হয়েছে। এবার কি মাহবুব উদ্দিন খোকনের পালা?

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন   সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি   সভাপতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ফ্যাসিবাদী শক্তি পুরো জাতির ওপর চেপে বসে আছে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ০৯:২৩ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা একটা কঠিন সময়, একটা দুঃসময় অতিক্রম করছি। ফ্যাসিবাদী শক্তি সমস্ত জাতির ওপর চেপে বসে আছে। আমাদের সকল আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলো ব্যর্থ করে দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করেছি।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে এক ইফতার মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সম্মানে বিএনপির উদ্যোগে ওই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এক দফার আন্দোলনে সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে সম্মিলিত করে। আমরা চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য কাজ করছি। সে আন্দোলনে বিজয় আমাদের হবেই, ইনশাআল্লাহ্।

অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেন, ১৮ কোটি মানুষের দেশে মানুষ আজ মজলুম। পুরো দেশের মানুষ আজ জুলুমের শিকার।

তিনি বলেন, লড়াই আমাদের চালিয়ে যেতে হবে। বিজয় আমাদের হবেই, ইনশাআল্লাহ্।

ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এতে আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক হারুনুর রশিদ, জাগপার একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম প্রমুখ।

অন্যদের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন্দ, বিকল্পধারা বাংলাদেশের একাংশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী, এবি পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণফোরামের একাংশের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম প্রমুখ এতে বক্তব্য রাখেন।

রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সম্মানে আয়োজিত ওই ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, আব্দুল হাই শিকদার, সাহেদা রফিক, বিজন কান্তি সরকার, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সালাম আজাদ, অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জহির উদ্দিন স্বপন, ডা. রফিকুল ইসলাম, রিয়াজ উদ্দিন নসু, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, মুনির হোসেন, চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার, তাঁতি দলের আবুল কালাম আজাদ, যুবদলের আব্দুল মোনায়েম মুন্না, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, ওলামা দলের মাওলানা শাহ নেছারুল হক, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ। 

এছাড়াও অন্যদের মধ্যে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মিয়া গোলাম পরোয়ার, মাওলানা আব্দুল হালিম, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, ১২ দলীয় জোটের জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) আহসান হাবিব লিংকন, নওয়াব আলী আব্বাস খান, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাগপার (একাংশ) রাশেদ প্রধান, অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, বাংলাদেশ লেবার পার্টির লায়ন ফারুক রহমান, জমিয়তের মহিউদ্দিন ইকরাম, কল্যাণ পার্টির শামসুদ্দিন পারভেজ, বাংলাদেশ এলডিপির মো. ফরিদ উদ্দিন, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের গণদলের এটিএম গোলাম মওলা চৌধুরী, এনডিপির কারী আবু তাহের, এনপিপির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, জাগপার (একাংশ) এস এম শাহাদাত, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের আবুল কালাম আজাদ, ডা. শামসুল আলম, এনডিএমের ববি হাজ্জাজ, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব ফারুক হাসান, অপরাংশের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, ফাতিমা তাসনিম, হাসান আল মামুন, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ।

এছাড়াও ইফতার মাহফিলে পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে অধ্যাপক ডা. আব্দুল কুদ্দুস, অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, সাংবাদিক কামাল উদ্দিন সবুজ, কাদের গনি চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম, খুরশিদ আলম, ড্যাবের ডা. আব্দুস সালাম, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের মো. জাকির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ইফতার পার্টি   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন