ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনগুলোর কাজ কী?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৬ জুলাই, ২০১৮


Thumbnail

সম্প্রতি বাংলাদেশ স্বাদু পানির মাছ উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্য, বাংলাদেশের মৎস্যজীবীদের জন্য, সর্বোপরি বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণের জন্য এ এক অসাধারণ অর্জন। যেহেতু মৎস্য খাতের এই অর্জনে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ ভূমিকা রেখেছে, তাই এটি প্রত্যাশা করা অস্বাভাবিক ছিল না যে আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জনগণকে অবহিত করে ক্যাম্পেইন করা হবে। আর ক্যাম্পেইন করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকাটি নিতে পারত বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ। বাংলাদেশের মৎস্যজীবী সম্প্রদায় ও মৎস্যখাতের বিপুল সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যেই আওয়ামী লীগের এই অঙ্গ সংগঠনটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু মৎস্যখাতে এত বড় অর্জনেও তাদের কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি।

শুধু আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগই নয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ বেশ পুরনো। আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মিছিল, মিটিং, সভা-সেমিনার করে পত্রিকার পাতা গরম রাখে। বাংলাদেশ যুবলীগও বেশ কিছু সৃজনশীল ও মননশীল উদ্যোগের কারণে বেশ প্রশংসিত। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক লীগ দিবস ভিত্তিক কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এর বাইরে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর কার্যক্রমের তেমন কোনো খবর পাওয়া যায় না। স্বাভাবিকভাবেই তাই আওয়ামী লীগের ওপর মহলে প্রশ্ন উঠেছে, এই সহযোগী সংগঠনগুলোর কাজ আসলে কী? কী তাঁদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য?

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবদ্দশায় আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন ছিল মাত্র ৫টি। এগুলো হলো ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগ। এদের মধ্যে অবশ্য ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগকে আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতিম সংগঠন হিসেবে অভিহিত করা হয়। সময়ে সময়ে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলটির অঙ্গ সংগঠনের সংখ্যা এখন বেড়েছে। দলটিতে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন পেশাজীবীদের সংগঠন যেমন - তাঁতি লীগ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ), আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ প্রভৃতি।

বঙ্গবন্ধু যখন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনগুলো প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তার পেছনে বঙ্গবন্ধুর একটি সুস্পষ্ট ও অতুলনীয় চেতনা ছিল। সেই চেতনার মূল কথা ছিল, আওয়ামীপন্থী বিভিন্ন পেশাজীবীদের নিয়ে দলটির যেসব অঙ্গ সংগঠন গঠন করা হবে তাদের নেতাকর্মীরা নিজেদের পেশাজীবী মধ্যে আদর্শ ও চেতনার গ্রুমিং করবেন।  এভাবেই দেশের সকল পেশাজীবীর মধ্যে দেশপ্রেমের চেতনা, রাজনৈতিক চেতনা ছড়িয়ে পড়বে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যে রাজনৈতিক চেতনা ধারণ করবে তা সকল অঙ্গ সংগঠনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে সেটাই প্রত্যাশা ছিল বঙ্গবন্ধুর। চেতনার প্রবাহমান এই পুরো প্রক্রিয়াটিকে মানবদেহের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়ার সঙ্গে তুলনা করা যায়। রক্ত হৃদপিণ্ড থেকে শিরা, ধমনীর মধ্য দিয়ে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পৌঁছে যায়। তেমনি কেন্দ্র থেকে পুরো দেশটির মধ্যে যাতে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক চেতনা পৌঁছে যায় তার জন্য দলটির অঙ্গ সংগঠনগুলো কাজ করবে সেই উদ্দেশ্যেই গঠন করা হয়েছিল অঙ্গ সংগঠনগুলো।

দেশে বিভিন্ন পেশা আছে, পেশাজীবী আছেন। এই পেশাজীবীদের মধ্যে আছেন কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবী, প্রকৌশলী ইত্যাদি। তাদের সবার মধ্যে যাতে আদর্শের চেতনাটা সঞ্চালিত হয় তা নিশ্চিত করাই ছিল আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনগুলোর দায়িত্ব। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, ক্ষমতাসীন দলটির অঙ্গ সংগঠনগুলো হয়ে গেছে দলবাজি, টেন্ডারবাজির আখড়া। এসব অঙ্গ সংগঠনে পদ পাওয়াকে অনেকে আরও বড় পদ-পদবী পাওয়ার সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করেন, বিবেচনা করেন বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ হিসেবে। অথচ নিজেদের পেশাদারি আদর্শ বাস্তবায়নের কাজে তাঁদের অনীহা দেখার মতো।

অথচ এই সংগঠনগুলো যদি ঠিকঠাক ভাবে কাজ করতো, আদর্শিক জায়গা থেকে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতো তবে তাঁরা সফলভাবে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারতো। সরকারকে পরামর্শ দিতে পারতো সংশ্লিষ্ট খাত ও পেশার উন্নয়নে।

বর্তমানে দেশের সড়কগুলোতে দুর্ঘটনায় মৃত্যু একটি নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন হিসেবে শ্রমিক লীগ আছে, পরিবহণ লীগ আছে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায় সে বিষয়ে কিন্তু এরা সহায়তা করতে পারে, সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে বিভিন্ন পরামর্শ দিতে পারে। কিন্তু এই সংগঠনগুলোর কাছ থেকে তেমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) আওয়ামী লীগের অফিশিয়াল চিকিৎসা বিষয়ক অঙ্গ সংগঠন। কিন্তু বাংলাদেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে যে নৈরাজ্য চলছে তা নিরসনে স্বাচিপের কোনো ভূমিকাই নেই।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি ক্যাম্পেইন শুরু করেছেন। এই ক্যাম্পেইনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আয়োজিত জনসভায় তিনি বারবার বলছেন, দেশের প্রত্যেকটি গ্রামকে তিনি শহরে রূপান্তরিত করবেন। শহরের অধিবাসীরা যে নাগরিক সুযোগ-সুবিধাগুলো পায় গ্রামের অধিবাসীদের জন্যও তিনি একই রকম সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করবেন। আর আমরা সবাই জানি, একটি গ্রামকে শহরে রূপান্তরিত করতে অবকাঠামো লাগে, লাগে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং অবশ্যই উন্নত স্বাস্থ্যসেবা। এই উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে স্বাচিপের চিকিৎসকরা নিতে পারে উদ্যোগী ভূমিকা। কিন্তু সেরকম কোনো ভূমিকার চিত্র এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না।

বর্তমানে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবার পরিস্থিতি ভালো নয়। জ্বর, সর্দি-কাশি ছাড়া অন্যসব জটিল অসুখে গ্রামের মানুষকে এখনো শহরের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে ছুটতে হয়। আমাদের চিকিৎসকরা যদি গ্রামের হাসপাতালগুলোতে গিয়ে সেবা দিত তাহলে এ পরিস্থিতি পাল্টে যেত। আর এ বিষয়ে সবচেয়ে উদ্যোগী ভূমিকা তো বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী চিকিৎসকদেরই নেওয়া উচিত। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে স্বাচিপ করা কোনো চিকিৎসক গ্রামে থাকতে চান না।

আরেকটি বিষয় না উল্লেখ করলেই নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি কখনো নোবেল পান তবে তার পেছনে অন্যতম কারণ হবে গ্রামে গ্রামে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা। এ বিষয়টি বৈশ্বিক পর্যায়েও আলোচনায় এসেছে। অথচ বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, স্বাচিপের এ বিষয়ে কোনো ধরনের প্রচার-প্রচারণা বা উদ্যোগ নেই। নেই কোনো প্রোগ্রাম। এই গাফিলতির কারণে আওয়ামী লীগের ভালো কাজগুলোর খবর জনগণের কাছে পৌঁছাচ্ছে না।

একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে আওয়ামী পন্থী প্রকৌশলীদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদেও। সরকারকে সহযোগিতা করা কিংবা সরকারের কার্যক্রম সংক্রান্ত প্রচার-প্রচারণা তাঁদেরকেও করতে দেখা যায় না। বরং পদ-পদবীর ভাগাভাগি নিয়ে সংগঠনটিতে ব্যস্ততা বেশি দেখা যায়।

আওয়ামী লীগ সভাপতির গ্রামকে শহরে রূপান্তর করার যে স্বপ্ন, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে দলটির প্রকৌশলীদের নিয়ে গঠিত অঙ্গ সংগঠনটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার কোনো বিকল্প নেই। অবকাঠামো নির্মাণ বা উন্নত যোগাযোগ ও যাতায়াত ব্যবস্থার সূচনার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের উচিত ছিল যথাসম্ভব দ্রুততার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর হাতে একটি মডেল তুলে দেওয়া। সে মডেলে গ্রামকে শহরে রূপান্তরিত করার সমস্ত খুঁটিনাটি সংযুক্ত থাকতে পারতো। কিন্তু এমন কোনো উদ্যোগ আওয়ামীপন্থী প্রকৌশলীদের এই সংগঠনটি গ্রহণ করেনি। এমনকি বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদ করা কোনো লোক ঢাকার বাইরে পোস্টিংই নিতে চান না।

ঢাকার বাইরে মফস্বলে যেতে চান না আওয়ামীপন্থী শিক্ষক সমিতির নেতারাও । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামীপন্থী নীল দলের শিক্ষকদের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, ছাত্র পড়ানোর চেয়ে তাঁদের নজর বেশি থাকে তদবির করে কীভাবে পদ-পদবি পাওয়া যায় তার দিকে।

আওয়ামীপন্থী বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনগুলোর এসব কার্যক্রম পর্যালোচনা করলে বোঝা যায়, এই অঙ্গ সংগঠনগুলো প্রতিষ্ঠার পেছনে বঙ্গবন্ধুর মূল চেতনার যে জায়গাটি ছিল, যে আকাঙ্ক্ষা থেকে অঙ্গ সংগঠনগুলো তৈরি করা হয়েছিল তা পূরণ হচ্ছে না।

একটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসে নির্বাচনী কর্মসূচি দিয়ে। এই কর্মসূচিগুলো দেখেই জনগণ তাঁদের ভোট দেন। তাই ক্ষমতায় আসার পর কর্মসূচিগুলোর বাস্তবায়নই হলো সরকারের প্রধান কাজ। কিন্তু সেই কর্মসূচির বাস্তবায়ন করা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এর জন্য বিভিন্ন পেশার মানুষের অংশগ্রহণ দরকার। সরকারের কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনগুলো যদি দায়িত্ব পালন না করে তাহলে কোনো ভাবেই সরকার সফলতার সঙ্গে তাঁদের কার্যক্রম চালাতে পারবে না।

মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিদের সাংস্কৃতিক সংগঠন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর এক সময় দারুণ রমরমা ছিল। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, উদ্যোগের কারণে তরুণদের মধ্যে আলাদা গ্রহণযোগ্যতা ছিল সংগঠনটির। চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব আলমগীর কুমকুম ছিলেন সংগঠনটির শেষ প্রদীপ। কিন্তু বর্তমানে এই সংগঠনের কোনো অস্তিত্বই যেন চোখে পড়ে না। অথচ আমাদের সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর একজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। আসাদুজ্জামান নূরের নেতৃত্বে সংস্কৃতি অঙ্গন আরও সমৃদ্ধ হয়ে ওঠার কথা ছিল।

বাস্তবতা হচ্ছে, সাংস্কৃতিক আন্দোলন ছাড়া কখনো চেতনার আন্দোলন সমৃদ্ধ হয় না। মুক্তিযুদ্ধ সফল হতো না যদি না সে সময় একটি সফল সাংস্কৃতিক আন্দোলন হতো। মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিজয়ে বড় একটি ভূমিকা রেখেছিল সে সময়ে গৃহীত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উদ্যোগ। মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রতিষ্ঠিত অস্থায়ী রেডিও স্টেশন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র আমাদের উজ্জীবিত করেছিল, উজ্জীবিত করেছিল শোনো একটি মুজিবুরের থেকে, জয় বাংলা বাংলার জয়ের মতো দেশাত্মবোধক গানগুলো। কিন্তু এখন আমাদের সাংস্কৃতিক চেতনার মান কোথায়? আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন করার স্বপ্ন দেখছি, সেই বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক মানটিও উন্নত হতে হবে, উন্নত একটি দেশের সঙ্গে মানানসই হতে হবে। না হলে উন্নত জাতিসত্তার একটি রাষ্ট্র গঠন করা সম্ভব হবে না। এই উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের এই অঙ্গ সংগঠনগুলোকে নিষ্ক্রিয়তার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এসে সংগঠনের কার্যক্রম গতিশীল করতে হবে।

একটি সময় ছিল যখন আওয়ামী লীগের বুদ্ধিজীবীরাই শিল্প-সাহিত্য, জ্ঞান-বিজ্ঞান তথা বুদ্ধিবৃত্তিক অঙ্গনের প্রতিভূ ছিলেন। শিক্ষাবিদ ও লেখক আনিসুজ্জামান, আইবিএর প্রতিষ্ঠাতা অর্থনীতিবিদ এম. শফিউল্লাহ প্রমুখের নাম এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায়। সাংস্কৃতিক অঙ্গন বা ক্রীড়া অঙ্গনের প্রতিভাবান এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও প্রতিনিধিত্ব করতেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা রাখা দল আওয়ামী লীগেরই। বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন আবাহনী লিমিটেডের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল। বিখ্যাত ফুটবলার শফিউল আলম টুটুল এবং কাজী সালাউদ্দিনও আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। ক্রিকেটার রকিবুল হাসান ১৯৭১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকায় কমনওয়েলথ একাদশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ম্যাচে পাকিস্তানের হয়ে ব্যাটিং ওপেন করেন। কিন্তু দুঃসাহসের পরিচয় দিয়ে সেদিন তিনি ব্যাটে জয় বাংলা লিখে নেমেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প-সংস্কৃতি ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে আওয়ামীপন্থীদের কোনো উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম দেখা যাচ্ছে না। ফলে দেশে একটি অদ্ভুত সুশীল সমাজের উদ্ভব হয়েছে যারা শিল্প-সংস্কৃতি চর্চার সঙ্গে রাষ্ট্রের বিরাজনীতিকরণকে গুলিয়ে ফেলছেন।

এসব দেখেশুনে এবং তৃণমূলে গণসংযোগ করার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি একটি উদ্যোগ নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করবেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

এটি প্রধানমন্ত্রীর নেওয়া অন্য অনেক দারুণ সিদ্ধান্তের মতোই একটি ভালো সিদ্ধান্ত কারণ আমরা যদি উন্নত জাতি-রাষ্ট্র হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াতে চাই তবে পেশীশক্তি, অস্ত্র-গোলাবারুদের ব্যবহার কমিয়ে এনে বাড়াতে হবে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা। দেশের উন্নয়নে সরকারকে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসতে হবে বিভিন্ন পেশাজীবীদের নিয়ে গঠিত অঙ্গ সংগঠনগুলোকেই। এই সংগঠনগুলো যদি থিংক ট্যাংক হিসেবে নিজেদের ভূমিকা পালন করতে পারে, নীতি নির্ধারণী ক্ষেত্রে এবং সরকারের উন্নয়ন-উদ্যোগ প্রচারে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিতে পারে তবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলা সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু সংগঠনগুলো যদি নিষ্ক্রিয়ই থেকে যায় তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে অদূর ভবিষ্যতেই মূল্য দিতে হতে পারে।


বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি 



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে গণ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত

প্রকাশ: ১০:৩০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। 

অবশ্য এসব প্রার্থীর অনেকে এটি ‘দলীয় নির্বাচন নয়’ বলে দাবি করছেন, আবার কেউ কেউ ‘জনগণ তাদের চাচ্ছে’– এমন অজুহাত দেখাচ্ছেন। এমনকি দল থেকে বহিষ্কার হতে পারেন– সেই ভয় উপেক্ষা করেই নিজেদের এ অবস্থান জানান দিচ্ছেন তারা। আবার অনেকের দলে কোনো পদপদবিও নেই। অনেকে বহিষ্কৃত। এর পরও যারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিএনপি হাইকমান্ড। শিগগির এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে বলেও জানা গেছে।

বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মতো দলের এমন সিদ্ধান্ত স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও বাস্তবায়ন করছে দলটি। এ জন্য দফায় দফায় তৃণমূল নেতাকর্মী ছাড়াও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গেও দফায় দফায় বৈঠক করেন নেতারা। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নেতারা এই নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মত তুলে ধরেন। সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ইচ্ছুকদের প্রথমে কাউন্সেলিং, নির্বাচনে না যাওয়ার আহ্বানের পাশাপাশি দলের কঠোর অবস্থানের বিষয়টি তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেন নেতারা। এর পরও যারা সিদ্ধান্ত অমান্য করবেন, তাদের বিষয়ে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি আগেই উচ্চারণ করেছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। 

এদিকে গত সোমবার রাতে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের বহিষ্কারের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী নেতারা বলছেন, স্থানীয় জনগণের চাপে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাছাড়া যেহেতু এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে না তাই তারা স্বতন্ত্র ভাবে নির্বাচন করছেন। আর তাই বহিষ্কারের বিষয়টি তারা আমলে নিচ্ছে না। তবে দল তাদের ব্যাপারে নমনীয় সিদ্ধান্ত নেবেন এমনটাও প্রত্যাশা নেতাকর্মীদের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দিনাজপুর জেলার একটি উপজেলার বিএনপির প্রার্থী বলেন, মনোনয়নপত্র দাখিল করার পরে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে নির্বাচনে না যাওয়ার। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন করব, দল যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয় নেবে।

বিএনপি   গণ বহিষ্কার   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় থানায় জিডি

প্রকাশ: ০৮:৪০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ ওরফে খোকন এ জিডি করেন।

জিডিতে বলা হয়েছে, গত ২০ এপ্রিল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ঈদ যাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এই সংবাদ সম্মেলনে সাংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ২০ বছর যাবৎ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তিনি পরিবহন সেক্টরে কোনো কাজ করেন নাই।’ 

একপর্যায়ে মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, ‘যেহেতু আমাদের দেশে পদত্যাগের সংস্কৃতি নেই। সেহেতু মন্ত্রী ইচ্ছা করলে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করতে পারেন।’

জিডিতে শ্রমিক লীগের ওই নেতা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি যাত্রীদের কল্যাণ করবে এটাই তাদের কাজ। কিন্তু সুপরিকল্পিতভাবে মোজাম্মেল হক চৌধুরী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এতে মন্ত্রীর সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। কারণ বর্তমান সরকার টানা চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন। এখন সরকারের ক্ষমতা থাকার বয়স ১৫ বছর ৩ মাস। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী সেখানে ২০ বছর মন্ত্রী থাকেন কীভাবে? মোজাম্মেল হক চৌধুরী সুপরিকল্পিতভাবে মন্ত্রী ও সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন। এই মিথ্যাচারের বক্তব্যগুলো দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশনসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। তার এই মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যে সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ন ও মন্ত্রীর মানহানি হয়েছে। তাই বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য জিডি করে রাখা একান্ত প্রয়োজন।’

ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

‘আপনি কখনোই কোনো কথা শোনেন না, এটা ঠিক না’

প্রকাশ: ০৭:৪০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের। 

গতকাল সন্ধ্যার পর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করতে তার কক্ষে যান শাজাহান খান। এ সময় তার উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনি তো কথা শুনলেন না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তও মানলেন না।’

এ সময় সেখানে উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতারা তিরস্কার করেন শাজাহান খানকে।

জানা গেছে, শাজাহান খান এক পর্যায়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশে বলেন, রাজনীতির ধারাবাহিকতায় ছেলে আসিবুর রাজনীতিতে এসেছে। এ জন্যই সে প্রার্থী হয়েছে। জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী ও এমপির স্বজনের নির্বাচন না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। প্রতিউত্তরে শাজাহান খান বলেন, অনেকেরই নিকটাত্মীয় রাজনীতিতে আছেন।

ওবায়দুল কাদের এ সময় শাজাহান খানকে বলেন, ‘আপনি কখনোই কোনো কথা শোনেন না। এটা ঠিক না।’ এর জবাবে শাজাহান খান বলেন, ‘আপনার সিদ্ধান্ত দেরিতে জানিয়েছেন। আগে জানালে ভালো হতো।’ তখন ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সিদ্ধান্তটি আমার নয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কোন সিদ্ধান্ত কখন দেবেন, সেটা কি আমাদের জিজ্ঞাসা করে দেবেন?’

শাজাহান খানের উচ্চস্বরে কথা বলা নিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। এ নিয়ে বিরক্ত হন ওবায়দুল কাদেরও। তিনি শাজাহান খানের উদ্দেশে বলেন, ‘এখানে দলের অনেক নেতাকর্মী রয়েছেন। এর পরও আপনি সবার সামনে এসব অপ্রিয় কথা কেন বলছেন?

এ সময় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুই সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, কার্যনির্বাহী সংসদের দুই সদস্য আনিসুর রহমান ও সাহাবুদ্দিন ফরাজী, মশিউর রহমান হুমায়ুন, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী লোটন, বলরাম পোদ্দার এবং শাহজাদা মহিউদ্দিন।

ওবায়দুল কাদের   শাজাহান খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভিডিও ভাইরাল হওয়া সেই চামেলীকে অব্যাহতি

প্রকাশ: ০৭:৩১ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ একটি সুসংগঠিত ও সুশৃঙ্খল সংগঠন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির গঠনতন্ত্রের ৪৭(৯) ধারা মোতাবেক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে সংগঠনের শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
 
এর আগে ওই নারী কাউন্সিলরের একটি নগ্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। কয়েকদিন ধরে নগর আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ঘুরপাক খায়। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

আওয়ামী লীগ   ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন   রাজনীতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভুল কৌশলের মাশুল গুনছে আওয়ামী লীগ?

প্রকাশ: ০৬:২৬ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগের অতীতে নেয়া কিছু সিদ্ধান্ত বা ঘটনা এর জন্য দায়ী হতে পারে। উদাহরণ দিয়ে কেউ কেউ বলছেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু পরে আবার তাকে দলে ফিরিয়ে আনা হয়। জাহাঙ্গীর আলমকে প্রথমবার বহিষ্কার করার পর যখন দলে ফিরিয়ে আনা হয় পরে দ্বিতীয়বার তিনি আবার একই ভুল করলেও তাকে সাধারণ ক্ষমা দিয়ে দলে ফেরত আনা হয়। বিষয়টি সে সময় আওয়ামী লীগের অনেক তৃণমূল নেতাকর্মীই ভালো ভাবে নেয়নি। 

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মেয়র জাহাঙ্গীরের মতো একাধিক ঘটনা অতীতে আওয়ামী লীগে ঘটেছে। ফলে নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের ধারণা তৈরি হয়েছে যে, প্রথমে দল তাদেরকে বহিষ্কার করলেও পরে তারা সাধারণ ক্ষমা পেয়ে আবার দলে ফেরত আসার সুযোগ পাবেন। আর সে কারণেই দলের নির্দেশনা থাকলেও সেটা অমান্য করে তারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি বলে মনে করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাছাড়া স্থানীয় রাজনীতিও নিয়ন্ত্রণ করে এমপিরা। সেখানে এমপিরাই যখন তাদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের মনোনয়ন দিচ্ছেন তাহলে তো কোন কথাই নাই। অতীতে আওয়ামী লীগ শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিলে দলের চেইন অব কমান্ড এভাবে ভেঙে পড়ত না। আওয়ামী লীগকে এখন ভুল কৌশলের মাশুল গুনছে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, দলীয় নির্দেশনার পরও যেসব এমপি-মন্ত্রীর আত্মীয়স্বজনরা নিজেদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি, তাদের নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার সময় কিন্তু এখনো শেষ হয়ে যায়নি। আমরা বিশ্বাস করি, দলীয় নির্দেশনা মেনে তারা নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেবেন। তবে কেউ যদি শেষ পর্যন্ত দলীয় নির্দেশনা না মানেন তাহলে অবশ্যই দল তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। দলের নিয়মনীতি ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের (এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়দের) বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটাই আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্ত।

তিনি আরও বলেন, কেউ যদি জাহাঙ্গীর আলমের বিষয়টি থেকে অনুপ্রাণিত হন তাহলে তিনি ভুল করছেন। এরা অচিরেই রাজনীতিতে হারিয়ে যাবে। দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে বা গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে কেউই এখন পর্যন্ত রাজনীতির চরম শিখরে পৌঁছাতে পারেনি। বরং যিনি দলের প্রতি অবিচল থেকেছেন, দলের সিদ্ধান্তকে মান্য করেছেন, দলের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি তারা ধাপের ধাপে রাজনীতিতে উন্নতি করেছেন দেশের জন্য অবদান রাখতে পেরেছেন, জনগণের নেতাতে পরিণত হয়েছেন, রাজনীতিতে অমরত্ব লাভ করেছেন। 

আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন