নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৫৮ পিএম, ২৬ জুলাই, ২০১৮
পাকিস্তানে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গতকাল বুধবার। এখনো সবগুলো আসনের ফল ঘোষণা করা হয়নি, তবে স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খান। পাকিস্তানের রাজনীতিতে ধর্মীয় ভাবাবেগ খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও ইমরান কিন্তু ব্যক্তি জীবনে ইসলামি নৈতিকতার সম্পূর্ণ বিপরীত ধারার মানুষ।
সফল ক্রিকেটার ইমরান খান সারা জীবন পশ্চিমা ভাবধারায় জীবন কাটিয়েছেন। একের পর এক নারী কেলেঙ্কারি ও একাধিক বিয়ের ঘটনায় সমালোচিত তিনি। ইমরানের সাবেক স্ত্রী রেহাম খান নিজের আত্মজীবনীতে দাবি করেছেন, তেহরিক-ই-ইনসাফের নারী কর্মীদের বড় পদ দেওয়ার জন্য তাঁদের থেকে যৌন সুবিধে আদায় করেন ইমরান খান। আবার নির্বাচনকে সামনে রেখে এক ধর্মগুরুকে বিয়ে করলেও ইমরান খানের প্রথম স্ত্রী জেমিমা গোল্ডস্মিথ কিন্তু মুসলমান নন। জাতিগতভাবে তিনি ব্রিটিশ এবং ধর্মবিশ্বাসে ছিলেন খ্রিস্টান।
শুধু নতুন প্রধানমন্ত্রীই নয়, পাকিস্তানের জন্মলগ্ন থেকেই এর নেতারা বরাবরই ইসলামের সকল নিয়মকানুন পায়ে দলিয়ে জীবনযাপন করে গেছেন। পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর নাম এক্ষেত্রে উল্লেখ না করলেই নয়। ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ করে ফেলা জিন্নাহ দিন-রাত মদ্যপান করতেন। এছাড়াও নারী সংসর্গপ্রিয় ছিলেন তিনি। আর এই ব্যক্তিটিই ধর্মের নামে একাত্তরে বাংলাদেশে গণহত্যা চালানো দেশটির জাতির পিতা।
ইসলাম একটি পবিত্র ধর্ম। পাকিস্তানিরা বারবার দাবি করে যে, পাকিস্তান একটি ইসলামি রাষ্ট্র কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে ইসলামের মূল নীতিগুলো তাঁরা মানে না। ইসলামকে অপবত্রীকরণেই পাকিস্তানের নেতারা বরং বেশি আগ্রহী। ইসলাম হত্যা-রাহাজানি নিষিদ্ধ করলেও পাকিস্তান সবসময় জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দিয়েছে। জঙ্গিবাদের চারণভূমি হিসেবে, জঙ্গিদের লালন করার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের নাম সর্বাগ্রে আসে । আল-কায়েদা, তালেবানের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীর উত্থান হয়েছে পাকিস্তানের হাত ধরেই।
এটিই পাকিস্তানের প্রকৃত অবস্থা। অথচ দুর্ভাগ্য , বাংলাদেশের কেউ কেউ বলেন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানে যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয় তাহলে বাংলাদেশে কেন সম্ভব নয়। একথা ঠিক যে পাকিস্তানের একাদশতম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে কিন্তু সত্যিটা হচ্ছে পাকিস্তানের নির্বাচনটি ছিল পুরোপুরি সেনা নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন। তাই একে উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এছাড়া বাংলাদেশে একটি গোষ্ঠী আছে যারা কথায় কথায় সেনাবাহিনীকে রাজনীতিতে অংশগ্রহণের উসকানি দেয়। কিন্তু পানি এবং তেল যেমন একসঙ্গে মেশে না, তেমনি সেনাবাহিনী এবং গণতন্ত্রও কখনো একসঙ্গে মিশতে পারে না। সেনাবাহিনী সেনাবাহিনীর জায়গায় থাকবে, নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা রক্ষা করা এবং সব বিতর্কের উর্ধ্বে থাকাই সেনাবাহিনীর মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। সেনাবাহিনী যদি কোনো কারণে সরকারের কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ। এই কথাটি ওই বিশেষ গোষ্ঠীটিকে বুঝতে হবে।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর সেনাবাহিনীকে রাজনীতিতে নিয়ে আসার, বিতর্কিত ও কলুষিত করার একটি প্রক্রিয়া শুরু হয়। এই প্রক্রিয়া থেকে সেনাবাহিনীকে মুক্ত করাই ছিল বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। শুধু বাংলাদেশ নয়, তৃতীয় বিশ্বের সকল দেশের জন্যই রাজনীতি থেকে সেনাবাহিনীকে দূরে রাখা সবসময়ই বড় একটি চ্যালেঞ্জ। এই কাজটি ভারত খুব সাফল্যের সঙ্গে করেছে। বাংলাদেশেও গণতন্ত্রের পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠা তখনই সম্ভব হবে যখন সেনাবাহিনী রাজনৈতিক সকল কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকবে। গত এক দশকে সেই পথেই এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।