নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০১ পিএম, ২৭ জুলাই, ২০১৮
আধুনিক মালেয়শিয়ার প্রতিষ্ঠাতা মাহাথির মোহাম্মদ বলেছিলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে দেশের ব্যাপারে তৎপর হয়, সে দেশ ধ্বংস হয়ে যায়। সে দেশের গণতন্ত্র নষ্ট হয়ে যায়। সে দেশের উন্নয়ন ব্যাহত হয়ে যায়।
গত কিছুদিন ধরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজনীতিতে হঠাৎ তৎপর হয়ে উঠেছে। ২০১৪ সালে নির্বাচনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতা কিছুটা কম ছিল। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ব্যাপারে তেমন নাক গলায়নি। নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, দেখা যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দৌড়ঁযাপ-তৎপরতা তত বেড়েই চলেছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, এই যে মার্কিন তৎপরতা। এগুলো কি কূটনৈতিক শিষ্টাচার বিরোধী কিনা সে প্রশ্ন রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক মহলে উঠেছে। গতকাল মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া ব্লুম বার্নিকাট প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করে তিনি তিনটা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে অবাধ ও নিরপেক্ষ করার জন্য তাগিদ দিয়েছে।
একই সঙ্গে বার্নিকাট বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা আছে। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হতে পারে।
প্রশ্ন হচ্ছে বার্নিকাট একজন রাষ্ট্রদূত, তিনি বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক সুরক্ষার জন্য মার্কিন প্রতিনিধি হিসেবে আছেন। একটা দেশের সিটি করপোরেশন নির্বাচন, সেই দেশের পুরোপুরি অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। সেই অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে মার্কিন রাষ্ট্রদূত কিভাবে নাক গলায়। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে তিনি কোন প্রটোকলে বৈঠক করেন? এটা নিয়ে বিভিন্ন কূটনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে।
প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ডেফিনিটলি বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু হচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে তাঁর নিজস্ব মতামত দিতে পারেন। মনিটরিং করতে পারেন। কিন্তু একটা দেশের নির্বাচন কীভাবে হবে, রাজনৈতিক দলগুলো কিভাবে চলবে- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ ব্যাপারে কোন নির্দেশনা দিতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন,‘ দীর্ঘদিন আমাদের যে বিদেশী রাষ্ট্রের প্রতি নির্ভরশীলতার সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। সে সংস্কৃতির কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশগুলো তৎপরতা দেখাচ্ছে। আমরা আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বলে আসছি আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার নিয়ে কথা না বলার। বিশ্বের কতগুলো সুস্পষ্ট গ্লোবাল ইস্যু রয়েছে, যেমন মানবাধিকার, সুশাষণ- এ সমস্ত বিষয় নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবশ্যই বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগি হিসেবে কথা বলতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশের নির্বাচন কি পদ্ধতিতে হবে। নির্বাচন কমিশন কীভাবে কাজ করবে সেটা দেখার দায়িত্ব তাদের না।’
গাজীপুর নির্বাচন নিয়েও মার্কিন যুক্তরাষ্ট বিভিন্ন মন্তব্য করেছিল। মন্তব্য করার পর সরকার তার সমলোচনা করেছে। এখনো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তিনটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে যে তৎপরতা দেখাচ্ছে, সেটা নিয়ে জনমনে ও কূটনৈতিক মহলে অনেক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে? এটা একটা স্বাধীন দেশের জন্য কতটা মর্যাদাপূর্ণ! এই প্রশ্নটা উঠেছে। শুধু এটাই না, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা ছাড়াও বিএনপি এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করছে। এমন বৈঠকগুলো আমাদের রাজনীতিতে একটা অশুভ ইঙ্গিত বহন করছে। সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে তৎপরতা সে দিকে সরকার সজাগ দৃষ্টি রেখেছে এবং যখনি তারা সীমা লঙ্ঘন করবে। বাংলাদেশ সরকার এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিতে কুন্ঠাবোধ করবে না।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বেগম জিয়া আর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন না, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এ রকম একটি বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছেন শামীম ইস্কান্দার।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠিত করা এবং বিভেদ-বিভক্তির দূর করার জন্য যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তারপর একটু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল বলে বটে। কিন্তু এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে সারাদেশে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সামাল দেওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধ অন্যদিকে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়া আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তদারকির অভাবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ এখন সবচেয়ে সঙ্কটের মুখে পড়েছেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই।