নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ৩১ জুলাই, ২০১৮
সিলেট সিটি নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। গতকাল অনুষ্ঠিত তিন সিটি নির্বাচনে একমাত্র সিলেটেই পরাজিত হয়েছে আওয়ামী লীগ। যখনই আওয়ামী লীগে অনৈক্য হয়, অভ্যন্তরীণ কোন্দল হয় তখনই যে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি ঘটে এই পরাজয় তার জ্বলন্ত প্রমাণ।
শুধু সিটি নির্বাচনেই নয়, এর আগে জাতীয় নির্বাচনেও দলীয় কোন্দলের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আওয়ামী লীগ। ১৯৯১ সালে নির্বাচনের সময় মনোনয়ন নিয়ে গ্রুপিং এর সমস্যা ছিল আওয়ামী লীগে। এর ফলে নির্বাচনে পরাজিত হয় আওয়ামী লীগ। পরবর্তী নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ হয়েই জয় পায় আওয়ামী লীগ। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল দলটি। কিন্তু ২০০১ সালের নির্বাচনে তাঁরা বিএনপি-জামাত জোট সরকারের কাছে পরাজিত হয়। সেবারও দলে অন্তর্দ্বন্দ্ব ও অন্তর্কোন্দলের সমস্যা ছিল।
এবার আসন্ন একাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন দলীয় ঐক্যের ওপর। নেতাকর্মীদের প্রতি শেখ হাসিনার স্পষ্ট নির্দেশ, কোনো রকম অন্তঃকলহ করা যাবে না। নির্দেশটির প্রতিফলন আমরা সাম্প্রতিক সময়ে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন সিটি নির্বাচনে দেখেছি।
এই বছর অনুষ্ঠিত খুলনা, গাজীপুর, সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল সিটি নির্বাচনে একমাত্র সিলেট ছাড়া সবগুলোতেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। এর কারণ হিসেবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ওই চারটি সিটিতে আওয়ামী নিজেদের দলীয় কোন্দল নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছিল। কিন্তু সিলেটে দলীয়ে নেতাকর্মীদের সহযোগিতা না পাওয়ায় পরাজিত হয়েছেন কামরান। একই ঘটনা ঘটেছিল কুমিল্লা সিটি নির্বাচনেও।
তাই দলীয় কোন্দল নিয়ন্ত্রণে সব সিটি নির্বাচনের আগেই বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এই উদ্দেশ্যে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের আগে দফায় দফায় মিটিং হয়েছে। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের প্রতিদ্বন্দ্বী আজমতউল্লাহকে ঢাকায় ডেকে নিয়ে আসা হয়েছে। পরবর্তীতে জাহাঙ্গীরের পক্ষে কাজ করায় তাঁকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করে পুরস্কৃতও করা হয়েছে। এছাড়া খুলনা সিটি নির্বাচনের আগে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, যারাই দলীয় কোন্দল সৃষ্টি করবে তাঁদের বহিষ্কার করা হবে।
কিন্তু সিলেটে অন্তর্কোন্দল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। আওয়ামী লীগ যখন বিভক্ত হয়ে যায় তখন আওয়ামী লীগের পরাজয় যে একেবারে নিশ্চিত, তা আরেকবার সিলেটে সিটি নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণিত হলো যা জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের জন্য একটি সতর্ক সংকেত।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় সংসদের ১৬৭টি থেকে ১৭৫টি আসনে আওয়ামী লীগের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ আছে। এই আসনগুলোতে একাধিক প্রার্থী রয়েছেন এবং আশঙ্কার বিষয় হলো দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আগেই তাঁরা নিজেদের স্বপক্ষে প্রচারণা শুরু করেছেন। এসব প্রচারণা যদি এখনই বন্ধ না করা যায় তাহলে সামনে আওয়ামী লীগকে কঠিন মূল্য দিতে হবে। অতি সত্ত্বর বিরোধপূর্ণ আসনগুলোতে একক প্রার্থী দেওয়া এবং সকল বিরোধ মিটিয়ে মনোনীত প্রার্থীদের হয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করাই এখন আওয়ামী লীগের সামনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জে জিততে না পারলে জাতীয় নির্বাচনেও আওয়ামী লীগকে সিলেট সিটি নির্বাচনের মতো ফল ভোগ করতে হবে।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশবিরোধী একটি অপশক্তি নানা ভাবে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তারা নির্বাচন, শান্তি ও উন্নয়নের বিরোধীতায় লিপ্ত। সারাদেশে তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে গুলিস্তানের ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি আয়োজিত প্রচারপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, গণতন্ত্র, শান্তি, উন্নয়ন নির্বাচনবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বান মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের ও প্রগতিশীল শক্তির কাছে, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব বিরোধী অপশক্তি আমাদের ভিত্তিমূলে আঘাত করতে যাচ্ছে। তাদের আমাদের প্রতিহত করতে হবে, সেজন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের মাধ্যমে সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগের জন্য জনগণকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা আহ্বান জানিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ভোট দিয়ে আপনার নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করুন। আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে জনগণ সব শক্তির উৎস।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশবিরোধী অপশক্তি জাতির পিতার পরিবারকে হত্যা করে জনগণকে সামরিক স্বৈরশাসনের জাঁতাকলে দীর্ঘকাল পিষ্ঠ করেছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে হত্যার রাজনীতি বন্ধ করেছেন।
আওয়ামী লীগ ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটে আগামী ৮ মে। গতকাল সোমবার (২২ এপ্রিল) ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এদিন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা সরে দাঁড়ানোয় তিন উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ কয়েকজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
জানা গেছে, নোয়াখালীর হাতিয়া ও ফেনীর পরশুরাম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। এ ছাড়া বান্দরবানে উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে রোয়াংছড়ি উপজেলায় আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী চহ্লামং মারমা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হচ্ছেন। সোমবার ( ২২ এপ্রিল ) মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা সরে দাঁড়ানোয় তিন উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ বেশ কয়েকজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
হাতিয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তিনজন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। তাঁরা হলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর ছেলে আশিক আলী, স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস ও জাতীয় পার্টির নেতা মুশফিকুর রহমান। গতকাল আশিক আলী ছাড়া বাকি দুজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। হাতিয়া উপজেলা পরিষদের বাকি দুটি পদে একজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।
জানতে চাইলে মুশফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর রাজনীতির হাতেখড়ি সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর হাতে। তিনি ওই পরিবারের একজন সদস্যের মতো। মাঝখানে কিছু ভুল–বোঝাবুঝির কারণে দূরত্ব থাকলেও তা ঘুচে গেছে। আশিক আলীর সমর্থনে তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জোড় করাতে তাঁর ছেলে প্রার্থী হয়েছেন। দলের অন্য কেউ আগ্রহ দেখাননি। ছেলের প্রতিদ্বন্দ্বীরা নিজ থেকেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন।
ফেনীর পরশুরাম উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থীর মধ্যে দুজন গতকাল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। এতে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন কেবল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ফিরোজ আহমেদ মজুমদার। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন উপজেলা পরিষদের তিনবারের চেয়ারম্যান ও পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন মজুমদার ও উপজেলার বক্সমাহমুদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হাসেম চৌধুরী।
ভাইস চেয়ারম্যান পদের চারজনের মধ্যে তিনজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। বর্তমানে একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নুর মোহাম্মদ শফিকুল হোসেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন ইকরামুল করিম মজুমদার, নজরুল ইসলাম ও আবদুল রসুল মজুমদার।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেত্রী শামসুন নাহার পাপিয়া। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন নিলুফা ইয়াসমিন।
এদিকে বান্দরবানে উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে রোয়াংছড়ি উপজেলায় আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী চহ্লামং মারমা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। গতকাল চারজন প্রার্থীর মধ্যে তিনজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় চহ্লামং মারমা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন বলে রিটার্নিং এস এম কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানিয়েছেন।
তবে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের অনুরোধ ও প্রচ্ছন্ন চাপে তাঁরা প্রার্থিতা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছেন। রোয়াংছড়ি উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগের তিনজন ও জনসংহতি সমিতির সাবেক এক নেতা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। চারজনের মনোনয়নই রিটার্নিং কর্মকর্তা বৈধ ঘোষণা করেছিলেন। প্রার্থীরা নিজেদের মতো করে প্রস্তুতিও নিয়েছেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর প্রার্থীরা জানিয়েছেন, গতকাল প্রত্যাহারের শেষ দিনে হঠাৎ করে আওয়ামী লীগের নেতারা তৎপর হয়ে ওঠেন। প্রার্থিতা তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করে এবং প্রচ্ছন্নভাবে চাপ দিতে থাকেন।
মন্তব্য করুন
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহসভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবে ব্যক্তিগত বিরোধ ও তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে মত বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের অনেকের। সুপ্রিম কোর্ট অঙ্গনে তুমুল জনপ্রিয় এই নেতাকে বাদ দেওয়ায় ফোরামের নেতাদের ওপর ক্ষুব্ধ বিএনপির সিনিয়র নেতারাও। এ নিয়ে বিএনপিতে এখন বিভক্ত স্পষ্ট।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশবিরোধী একটি অপশক্তি নানা ভাবে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তারা নির্বাচন, শান্তি ও উন্নয়নের বিরোধীতায় লিপ্ত। সারাদেশে তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে গুলিস্তানের ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি আয়োজিত প্রচারপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।