নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০২ অগাস্ট, ২০১৮
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত তিন সিটি নির্বাচনে একমাত্র সিলেটে জয় পেয়েছে বিএনপি। অথচ এই সিটিতে মেয়র পদে প্রার্থী দেওয়া হয় রাজশাহী ও বরিশালের পর। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার অনিচ্ছা সত্বেও সিলেটে মনোনয়ন পান আরিফুল হক চৌধুরী। তাঁর বিপরীতে সিলেটে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান ছিল শক্ত অবস্থানে। কিন্তু ফলাফলে দেখা যায়, হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে বিএনপি প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীই মেয়র নির্বাচিত হন। এই নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতেই বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে বলে বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে। আর চলতি বছরের শেষে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনে সিলেট মডেলের প্রয়োগ চায় বিএনপি।
বিএনপির সিলেট মডেল আসলে কী? দলটি সূত্রে জানা গেছে, শক্তিশালী আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিপক্ষে ভোটের লড়াইয়ে ভিন্ন এক কৌশলের আশ্রয় নেয় বিএনপি। প্রথমে সিলেট আওয়ামী লীগ বিভক্ত করা হয়। পরে একটি অংশকে অর্থ দিয়ে, ভবিষ্যতে সহায়তার আশা দিয়ে হাত করে বিএনপি। এই অংশকে হাত করায় আওয়ামী লীগের ভোট যেমন কমে তেমন বিএনপির ভোট আশাতীতভাবে বেড়ে যায়। তিন সিটি নির্বাচনের মধ্যে একমাত্র সিলেটেই নৌকা স্লোগান দিয়ে ভোটকেন্দ্র দখল করে ধানের শীষে ভোট দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই পদ্ধতিতেই সিলেটে জয় এসেছে আরিফুলের। গাজীপুর ও অন্যান্য সিটি নির্বাচনে হারার পরই অভিজ্ঞতা অর্জনের মধ্য দিয়ে বিএনপি এই কৌশল নিয়েছে। এমনকি ভোটের আগে নির্বাচনী প্রচারণায়ও বিএনপি বলেছে, আমাদের হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া আমরা এটা করি না, ওটা করি না। দেখা গেছে, মুক্তিযুদ্ধের নাম, আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে তারা ভোট চেয়েছে। এভাবে আওয়ামী লীগকে ব্যবহার করেই তারা সিলেটে আওয়ামী লীগকে ধরাশায়ী করেছে। সিলেট সিটি নির্বাচনের মতো আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি একই মডেল ব্যবহার করতে চায়।
সিলেট সিটি নির্বাচন থেকে জামাত নিয়েও একটি সিদ্ধান্তে এসেছে বিএনপি। সিলেট নির্বাচনে জামাতের অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের প্রার্থী ছিল। জামাতের বিরুদ্ধাচারণে পরও বিএনপির জয় হয়েছে। আর মাত্র ১০ হাজার ভোট পেয়ে নিজেদের অপাংক্তেয় প্রমাণ করেছে। আর বরিশালে জামাতকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপির জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। সিলেটে জামাত ছাড়াই জয় বিএনপিকে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। বিএনপি এখন নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে বুঝতে পেরেছে যে জামাতকে সঙ্গে নিলে কোনো লাভ হবে না। এ কারণে, ২০ দলীয় জোটে বিএনপি তার শরিক দলগুলোকে এখন ৩০টির বেশি আসন দিতে রাজি না। আর নির্বাচনে জামাতের কোনো নিবন্ধণ না থাকায় তাদেরকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে হবে, এমন শর্তসহ বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হবে বিএনপি থেকে। অন্যান্য দলগুলোকেও কিছু শর্ত দেওয়া হতে পারে।
জাতীয় নির্বাচনে যাওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তের পরই জোরোসোরে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে বিএনপি। আর প্রস্তুতির শুরুতেই আগের অনেক পরিকল্পনা নতুন করে ঢেলে সাজাতে বসেছে তারা। জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়নের জন্য বিএনপি আগেই একটি খসড়া তালিকা তৈরি করেছিল, যেটি লন্ডনেও পাঠানো হয়েছিল। সেই তালিকায় ব্যাপক পরিবর্তন আনা হবে বলে জানা গেছে। চূড়ান্ত তালিকায় বিএনপির ১০০ সিনিয়র নেতাকে রেখে বাকিগুলোতে আসবে নতুন মুখ। আর নতুন মুখ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হবে জনপ্রিয় ও আওয়ামী লীগকে বিভক্ত করতে সক্ষম এমন নেতাদের। সর্বোপরি জাতীয় নির্বাচনে সিলেট মডেলের পূর্ণ বাস্তবায়ন চায় বিএনপি।
বাংলা ইনসাইডার/বিপি
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।