নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৩ অগাস্ট, ২০১৮
রাজধানীতে ২৯ জুলাই বাসচাপায় রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মীম ও আব্দুল করিম সজিব নিহত হয়। এ ঘটনায় নিরাপদ সড়ক চেয়ে গত পাঁচ দিন ধরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। আন্দোলনকে স্বতঃস্ফূর্ত বলা হলেও এরই মধ্যে বিভিন্ন কারণে আন্দোলনের গতি-প্রকৃতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা তাদের নয় দফা দাবি জানিয়েছে। যে দাবিগুলোতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে, সেটা যৌক্তিক বলেই মনে করছে সরকারের দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে দাবিগুলো কিছু এরই মধ্যে মানা হয়েছে, কিছু মানার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আন্দোলন থেমে নেই। আর কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে উসকে দেওয়ায় মূল ধারার দাবিদার কয়েকটি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
প্রশ্ন আসছে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে আমরা কী অর্জন করতে চাই? আমরা চাই, সড়ক নিরাপদ হোক। যে নিরাপদ সড়কে মানুষ নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে, ঘর থেকে বেরিয়ে নির্বিঘ্নে ঘরে ফিরতে পারবে। আমাদের সড়কগুলোতে প্রায়ই নানা রকম দুর্ঘটনা ঘটছে। আর এই দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু একদম অনাকাঙ্ক্ষিত এবং কারোরই কাম্য নয়। শুধু এই ঘটনা নয় এর আগেও অনেক ঘটনা ঘটেছে। গত ৩ এপ্রিল দুই বেপরোয়া বাসের চাপায় সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব হোসেনের এক হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাজীব।প্রতিনিয়ত এটা ঘটছে, মহাসড়কগুলো মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। অবশ্যই এই পরিস্থিতির অবসান হওয়া দরকার। এটা অবসানে আমাদের কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটাই বাস্তব যে, এসব ঘটনা একদিনে অবসান ঘটানো সম্ভব না। এটা পর্যায়ক্রমে পদক্ষেপ নিয়ে, আস্তে আস্তে একটা জায়গায় পৌঁছাতে হবে। আর সেই জায়গাতে আসার জন্য আমাদের সবাইকেই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা কয়েকদিন যে প্রতিবাদ করেছে, সেটা ঠিকই আছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবাদ করে, রাজপথ অবরোধ করে আন্দোলন করলে সমস্যার কোনো সমাধান হবে না, বরং মানুষের দুর্ভোগই বাড়বে। সমস্যা সমাধানের জন্য যেটা প্রয়োজন, সেটা হলো সবাইকে উদ্যোগী, সচেতন ও দায়িত্বশীল হয়ে কাজ করা। আর সবার সম্মিলিত কাজ করার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমাদের গণমাধ্যমে যখন যে ইস্যু তৈরি হয়, তখন সেই ইস্যুর পিছনেই ছুটতে দেখা যায়। তারপর ইস্যুটা শেষ হলে গণমাধ্যমের ওই বিষয় নিয়ে পুরোই নিশ্চুপ হয়ে পড়ে
দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন মন্টু গাড়ি চাপায় মারা গিলেছিলেন। এটা নিয়ে আদালতে মামলা হয়েছে, দীর্ঘদিন মামলা চলেছে। মূল ধারার দাবিদার গণমাধ্যমগুলো তার খবর কি রেখেছে। এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের যেন কোনো মাথাব্যথা নেই। বাসসের সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক জগলুল আহমেদ চৌধুরী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বাস থেকে ফেলে দিয়ে তাঁকে হত্যা করা হলো। কিন্তু সে নিয়ে মূল ধারা কতদিন সরব ছিল? অথচ হঠাৎ করেই দেখা যাচ্ছে, আমাদের গণমাধ্যম শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে মহা উৎসাহী।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মূল ধারার দাবিদাররা আন্দোলন নিয়ে যতটা না উৎসাহী, তার চেয়ে এই আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে একটা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতেই বেশি আগ্রহী। দেশের অন্যতম জনপ্রিয় একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি পত্রিকা এই আন্দোলনকে এমন ভাবে উপস্থাপন করছে, যেটা সব দোষ, ক্ষোভ, আক্রোশ সরকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কিন্তু সড়কের সব বিষয়ই সরকারকে দায়ী করলেই মিটে যায়। নিরাপদ সড়ক কি সরকারের একার পক্ষে সম্ভব? নিরাপদ সড়কের জন্য যেমন একজন দক্ষ চালক লাগবে, একজন ভাল মালিক লাগবে, ফিট যানবাহন লাগবে, ভালে সড়কও লাগবে, তেমনি নাগরিকদের সচেতনতা লাগবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বিভিন্ন বানোয়াট খবরে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তবে দেখা যাচ্ছে, শুধু অনলাইন পোর্টাল না, কিছু মূল ধারা দাবিদার সংবাদপত্র এবং টেলিভিশন চ্যানেলও কৌশলে এমন খবর প্রচার করছে। যেমন, আন্দোলনে একজন ডিআইজিকে আপমান করা হয়েছে, একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিকে ‘জাগরণ’ বলছে। এমন জাগরণ কি তারা আরও চান? এই ধরনের উসকে দেওয়ার ঘটনাগুলোকে কতটুকু সৎ সাংবাদিকতা কিংবা সুস্থ সাংবাদিকতা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টদের মতে, মূল ধারার গণমাধ্যম বলে দাবিদার দুটি সংবাদপত্র পরিকল্পিতভাবে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনটাকে একটা নির্দিষ্ট দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করছে। একই সঙ্গে কিছু মূল ধারার টেলিভিশন চ্যানেল এমন ভাবে জিনিসগুলোকে উপস্থাপন করছে যা আন্দোলনকে ওই পথেই প্রবাহিত করছে। দুই বছর আগের পুলিশের একটি ছবি এখন দিয়ে বলা হচ্ছে এটি এখনকার। তেল-গ্যাস আন্দোলনের সময় পুলিশের সঙ্গে জনতার যে সংঘর্ষ, সেই সংঘর্ষকে প্রচার করে বলা হচ্ছে এটা শিক্ষার্থী আন্দোলনের। এই বিষয়গুলো আন্দোলনে উসকে দেয়, আন্দোলনকে অন্য খাতে প্রবাহিত করে, সহিংসতার দিকে নিয়ে যায়। আর এই ক্ষেত্রেই কয়েকটি গণমাধ্যমের যেন মূল আগ্রহ। অনেকের মতে, গণতন্ত্রকে বারবার বাধাগ্রস্তকারী শক্তি, যাঁদের জনসংশ্লিষ্টতার লেশমাত্র নেই, তারাই কোনো আন্দোলনকে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির অস্ত্র হিসেবে দেখে। গুটিকতক গণমাধ্যম ইচ্ছাকৃত ভাবে এমন স্বার্থসিদ্ধির ক্রীড়নক হচ্ছে, নাকি অনিচ্ছাকৃত ভাবে তাও ভেবে দেখা প্রয়োজন।
বাংলাদেশের মানুষ বরাবরই সচেতন। গণতন্ত্রকে ভুলুণ্ঠিত করার অব্যাহত প্রচেষ্টাকে তারা কখনোই সফল হতে দেয়নি। তাই দেশের সেই সচেতন মানুষকেই এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আমরা কী নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলন করছি, নাকি সরকারকে একটা বিব্রতকর পরিস্থিতি ফেলতে আন্দোলন করছি? যদি আমাদের উদ্দেশ্য হয় নিরাপদ সড়কের আন্দোলন, তাহলে সেখানে সবাইকে সহনশীলতার পরিচয় দিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। আর এক্ষেত্রে অব্যাহত আন্দোলনে দেশ অচল করে নয়, বরং সরকারকে সহযোগিতাই দাবি আদায় ত্বরান্বিত করতে পারে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
এমভি আবদুল্লাহ কবির গ্রুপ সোমালিয়া উপকূল
মন্তব্য করুন
ভারত বিরোধী বিএনপি রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
বিএনপি নেতারা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে যেসব কথা বলে তা শুনলে জিয়াউর
রহমানও কবরে শুয়ে লজ্জা পেয়ে যেতেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর প্রেসক্লাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
এ সময় তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান জীবদ্দশায় কখনো শুনেননি তিনি স্বাধীনতার ঘোষক।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, স্কুল ঘণ্টা যেমন দপ্তরি বাজায়, তেমনি জিয়াউর
রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর পক্ষে। আজকে বিএনপি নেতা আব্দুল মঈন
খান অনেক কথা বলেন। মঈন খানের বাবা আব্দুল মোমেন খান ৭৪ সালে খাদ্য সচিব ছিলেন। তিনি
ষড়যন্ত্র করে মার্কিন খাদ্যবাহী জাহাজ ফেরত পাঠিয়েছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান আব্দুল মোমেন খানকে মন্ত্রী
বানিয়েছিল। মঈন খান নিজেও সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিল, দরকার পড়লে দেশ বিক্রি করে দেব।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান
মাহমুদ বলেন, দেশ সমৃদ্ধির দিকে যখনই এগিয়ে যাচ্ছিল তখনই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়।
বিএনপি জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বানানোর জন্য যেভাবে দাবি করে জিয়াও সেভাবে
কখনো দাবি করেনি। জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ছত্রছায়া পাকিস্তানিদের পক্ষে কাজ করেছে।
জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগের অধীনেই মুক্তিযুদ্ধের সময় বেতন ভুক্ত কর্মচারী ছিলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের কথা হাস্যরসের সৃষ্টি করে। বিএনপির নেতা মঈন খানের বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, যার বাবার জন্য এদেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছে তার মুখে এসব কথা মানায় না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে ইতিহাস বিকৃতি করে বিএনপি নেতারা বিশদকার বিষোদগার করছে কিন্তু এখন সঠিক ইতিহাস জনগনের সামনে আসার পর তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। বিএনপির ইতিহাস বিকৃতির পাশাপাশি দেশের জনগণকেও বিভ্রান্তি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
বিএনপি ড. হাছান মাহমুদ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
বিএনপি ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করে, অপপ্রচার করে, মিথ্যাচার করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার (২৯ মার্চ) আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির উদ্যোগে ইফতার ও ঈদসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ নেত্রী নির্দেশ দিয়েছেন ইফতার পার্টি না করে, সাধারণ মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণ করতে। আর বিএনপি বড় বড় হোটেলে ইফতার পার্টির আয়োজন করে। আর সেই ইফতার পার্টিতে তারা আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করে, অপপ্রচার করে, মিথ্যাচার করে।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা বলে দিল্লির শাসন মেনে নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ পাকিস্তানে সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। আসলে বিএনপির হৃদয়ে এবং চেতনায় পাকিস্তান। আওয়ামী লীগের চেতনা এবং হৃদয়ে বাংলাদেশ, কোনো বিদেশিদের দাসত্ব নয়।
তিনি বলেন, বিএনপির চারদিকে অন্ধকার, শেখ হাসিনার জনকল্যাণমুখী বিচক্ষণ রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছে। বিএনপি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করেছিল। ব্যর্থ হয়ে এখনো অসংলগ্ন কথা বলছে। আশি ভাগ বিএনপি নেতাকর্মীকে দমন-পীড়ন করা হচ্ছে বলে তারা মিথ্যাচার করছে।
এসময় মির্জা ফখরুলকে মিথ্যাচার করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তাদের মিথ্যাচারের রাজনীতি কেউ গ্রহণ করছে না বলেই তারা সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব সংকটের প্রভাবের পরও শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বের কারণে অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ এখনো ভালো আছে।
ওবায়দুল কাদের রাজনীতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতি
মন্তব্য করুন