নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:১৪ এএম, ০৫ অগাস্ট, ২০১৮
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র তিনি। ছিলেন দুর্দান্ত এক ক্রীড়া সংগঠক এবং সংস্কৃতিমনা ব্যক্তি। আরও ছিলেন মিথ্যাচারের রাজনীতির নির্মম এক শিকার। তিনি আর কেউ নন, তিনি মুক্তিযুদ্ধের সুদক্ষ সংগঠক শেখ কামাল। তারুণ্যের আইকন শেখ কামালের আজ জন্মদিন।
শেখ কামাল ১৯৪৯ সালের ৫ই আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ভাইবোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয় শেখ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে নিহত হওয়ার আগে তিনি গর্ব করার মতো অনেক কাজ করে গেছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে তাঁর চরিত্র হনন করেছে নোংরা ভাবে।
বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই অপপ্রচার ও মিথ্যাচার রাজনীতিকে দূষিত করে আসছে। বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালই এই মিথ্যাচারের রাজনীতির, অপপ্রচারের রাজনীতির সবচেয়ে বড় শিকার । হিটলারের সময় নাৎসিদের প্রপাগান্ডামন্ত্রী ও প্রচারণা বিশেষজ্ঞ গোয়েবলস একটি নীতি অনুসরণ করতেন। নীতিটি হলো, একটি মিথ্যাকে বার বার সত্য বলে প্রচার করলে ওই মিথ্যাটাই এক সময় সত্যে পরিণত হয়ে যায়। এই গোয়েবলসীয় নীতি শেখ কামালের বিরুদ্ধেও ব্যবহার করা হয়েছিল যে কারণে অকাট্য প্রমাণ থাকা স্বত্ত্বেও শেখ কামালের মৃত্যুর ৪৩ বছর পরও অনেকে তাঁকে অপরাধী বলে বিশ্বাস করে।
এই গোয়েবলসীয় প্রপাগান্ডার রাজনীতিতে একটি মানুষের যে কীভাবে দুর্নাম করা যায়, চরিত্রহনন করা হয় তার একটি বড় উদাহরণ শেখ কামাল। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টে সপরিবারে যখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর প্রচার করা হলো শেখ কামাল ব্যাংক ডাকাত ছিলেন, শেখ কামাল মেজর ডালিমের স্ত্রীকে অপহরন করেছিলেন। শেখ কামাল বদমাশ, শেখ কামাল লম্পট। অর্থ্যাৎ এমন কোনো অপবাদ নেই যা শেখ কামালকে দেওয়া হয়নি। বস্তুত, হৃদয় বিদারক ১৫ আগস্ট ছিল একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের ফলাফল। এই পরিকল্পনা ছিল বাঙালির স্বাধীনতার দূত শেখ মুজিবের পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলা। এই বিশাল পরিকল্পনার একটি অংশই ছিল শেখ কামালের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করা, তাঁর ওপর মিথ্যা অপবাদ আরোপ করা।
কিন্তু সত্য কোনোদিন চাপা থাকে না। সত্যির আলোতে এক সময় মিথ্যার অন্ধকার দূর হয়ে যায়। সময়ের আবর্তনে তাই প্রমাণিত হয়েছে শেখ কামাল কোনো অপরাধী ছিলেন না। ব্যাংক ডাকাতি কিংবা পরস্ত্রী হরণের মতো কোনো অপকর্মই তিনি করেননি। বরং শেখ কামাল ছিলেন ক্রীড়াপ্রেমী, সংস্কৃতিমনা এক মেধাবী তরুণ। যিনি নিজের জীবন ব্যয় করেছেন সৃজণশীল, মননশীল কাজের পেছনে।
মৃত্যুর সময় শেখ কামালের বয়স ছিল মাত্র ২৬। এই স্বল্পস্থায়ী জীবনে শেখ কামাল কত কিছুই না করেছেন। দুর্দান্ত ক্রীড়া সংগঠক ছিলেন শেখ কামাল। বাংলাদেশের বিখ্যাত ক্রীড়া ক্লাব আবাহনী ক্রীড়া চক্র প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। দক্ষ সংগঠক হিসেবে আবাহনীর জন্য তিনি খেলোয়াড় সৃষ্টি, বাছাই ও প্রশিক্ষণের সব বিষয় দেখাশোনা করতেন।
এছাড়া সংস্কৃতি অঙ্গনেও দারুণ সক্রিয় ছিলেন শেখ কামাল। ছায়ানটের সেতার বাদন বিভাগের ছাত্র শেখ কামাল মঞ্চ নাটকও করতেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিনেতা হিসেবে তাঁর সুখ্যাতি ছিল। ‘স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী’ নামে একটি সংগঠনও তৈরি করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র। এমনকি ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাও এই শেখ কামাল।
শেখ কামালের যদি অসময়ে মৃত্যু না হতো তাহলে দেশের ক্রীড়া ও সংস্কৃতি অঙ্গন তাঁর হাত ধরে অনেক দূর এগিয়ে যেত। বাংলাদেশে আবাহনীর মতো আরও ক্লাব হতো, স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠীর মতো আরও অনেক সাংস্কৃতিক সংগঠন হতো। কিন্তু তা আর সম্ভব হয়নি।
শেখ কামালের মৃত্যুতে বাংলাদেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। অমিত প্রতিভাবান শেখ কামাল ছিলেন সমসাময়িক তরুণদের আইকন। এখনো বাংলার তরুণরা যদি তাঁকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে তবে তরুণ সমাজের রূপই বদলে যাবে। কিন্তু যখন তিনি জীবিত ছিলেন তখন তাঁর প্রতিভাকে, তাঁর মেধাকে আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। এই আক্ষেপ আর পূরণ হবার নয়।
আজ শেখ কামালের জন্মদিনে আমাদের মনে রাখতে হবে, চরিত্র হননের রাজনীতি, কলঙ্ক লেপনের রাজনীতি বাংলাদেশে এখনো সচল আছে। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যাতে এমন অপরাজনীতির শিকার না হয়, সে ব্যাপারে আমাদের সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে। নতুবা শেখ কামালের মতো ব্যক্তিরা কখনোই তাঁদের প্রাপ্য সম্মান পাবে না যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের কাতারে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করে; জনকল্যাণে পরিকল্পনা গ্রহণ ও কর্মসূচি নির্ধারণ করে। আমরা সর্বদা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। অন্যদিকে বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে তারা জনগণকে শত্রুজ্ঞান করে শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আর এখন সাংবিধানিকভাবে বৈধ ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করে জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে তারা জনগণকে শত্রুজ্ঞান করে শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আর এখন সাংবিধানিকভাবে বৈধ ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করে জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।
বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে সরকারবিরোধী তথাকথিত আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস-সহিংসতার পথ বেছে নেয় বলে দাবি করে কাদের বলেন, বিএনপি ও তার দোসরদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনী সরকারের সুসমৃণ পথচলা এবং দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। তাদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু দেশের জনগণ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, পূর্বের ধারাবাহিকতায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের নামেও তারা অগ্নি সন্ত্রাসের মাধ্যমে নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে। আর দেশের আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ও মহামান্য আদালত জনগণের নিরাপত্তা ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বিএনপি নেতারা সেটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালায়।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি প্রকৃতপক্ষে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন, সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া তাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত। বিএনপি ক্ষমতায় থেকে নিজেদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনীর পাশাপাশি বাংলা ভাইয়ের মতো দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীর সৃষ্টি করেছিল এবং তাকে রক্ষা করার জন্য’ বাংলা ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকার জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর।
বিবৃতিতে কাদের বলেন, শেখ হাসিনা জগদ্দল পাথরের মতো জেঁকে বসা বিচারহীনতার সংস্কৃতির অর্গল ভেঙে বিচারের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। সন্ত্রাসী বা অপরাধী যে-ই হোক তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্যের আড়ালে সন্ত্রাসীদের রক্ষার অপকৌশল সফল হবে না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ক্ষমতা বিএনপি
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।