নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:০৩ পিএম, ০৬ অগাস্ট, ২০১৮
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দুটি অন্যতম ধারা-একটি বামপন্থী রাজনৈতিক ধারা অপরটি ডানপন্থী ধারা। মূল রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি ছাত্র সংগঠনগুলোও একই ধারায় বিভক্ত। বাম ঘরানার প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের মধ্যে আছে, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র-মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্র ফেডারেশন সহ অন্যান্য বামপন্থী ছাত্র সংগঠন। অন্যদিকে ডানপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে আছে ইসলামি ছাত্র শিবির, ইসলামী ছাত্রসেনা, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী ছাত্র মজলিশ।
বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, বামপন্থী ও ডানপন্থী ছাত্র সংগঠনের মধ্যে চিন্তা-চেতনা ও আদর্শের দিক থেকে সম্পূর্ণ বিপরীতে মেরুতে অবস্থান। তেল-আর জল যেমন একসঙ্গে মেশেনা তেমনি ডানপন্থী ও বামপন্থী ধারা কোনো সময় একসঙ্গে হয় না। বাম ও ডান একে অপরের সঙ্গে সাপ-নেউলের সম্পর্ক বলেও ভুল হবে না।
অতি সম্প্রতি কোটা আন্দোলন চলাকালে বামপন্থী ও ডানপন্থী ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীদের দেখা যায় একসঙ্গে কাজ করতে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে বিভিন্ন কর্মসূচিতে একপাশে ছাত্র-ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র-ফ্রন্ট আরেক পাশে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে দেখা যায়। ছাত্র শিবির পরিচালিত বাঁশের কেল্লা থেকে যে ফেসবুক পোস্ট শেয়ার করা হয়, সেই একই পোস্ট সাবেক নেত্রী লাকি আক্তারসহ ছাত্র ইউনিয়নন ও ছাত্রফ্রন্টের নেতা কর্মীরদেরকে নিজেদের ফেসবুকে শেয়ার করতে দেখা যায়। নিরাপদ সড়কের দাবিতে বর্তমান সময়ে চলা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনেও প্রায় একই চিত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই দুই আন্দোলনে এক কাতারে মিলে গিয়েছে দুই মেরুর দুই ছাত্র সংগঠন।
বাংলাদেশ ছাত্র-ইউনিয়নের মতো এমন একটা পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী সংগঠন যারা সবসময় প্রগতিশীল চিন্তা ভাবনার সাথে জড়িত। তাঁরা এই আন্দোলনে জড়িত হওয়ার আগে একটিবারের জন্যও কি ভাবেনি, যে আন্দোলনের সঙ্গে শিবির জড়িত সেইখানে অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে। শিবির এই দুই আন্দোলনে নানা ধরণের গুজব ও উস্কানি দিয়েছে এবং এখনও দিয়ে যাচ্ছে। এই দুই আন্দোলনে দেখা যায় চরম বামপন্থী ও চরম ডানপন্থী এক কাতারে মিশে যেতে।
জামায়তের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা ও যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের নেতাদের বিচার করার কারণে তাঁদের মধ্যে যে একটা ক্ষোভ আছে তা স্পষ্ট। তাঁরা যেকোন ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে একটা বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চাইবে, নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচিয়ে রাখার জন্য এটাই স্বাভাবিক। তবে ১৯৭১ সালে ন্যাপ-কমিউনিস্ট-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করা একটি সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কিভাবে অন্ধভাবে সেই আন্দোলনকে সমর্থন করে এবং যোগ দেয় তা বোধগম্য নয়। ছাত্র ইউনিয়নসহ অন্যান্য বামপন্থী ছাত্র সংগঠন ও বামপন্থী দলগুলোর বর্তমান এমন কর্ম-কান্ড দেখে রাজনীতি সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ আবার প্রশ্ন করছেন কেন, কি কারণে তাঁদের এই বিভ্রান্তি?
উল্লেখ্য, বামপন্থীদের রাজনীতি সবসময়ই আদর্শ নির্ভর রাজনীতি ছিল। তবে সম্প্রতি কোনো ইস্যুতে মাঠে নামতে দেখা যায় নাই বামপন্থীদের। যেমন, তেল গ্যাসের আন্দোলন, রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কোন প্রতিবাদ, কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি, পাঠ্যপুস্তকে ইসলামিকরণ, সাংস্কৃতিক আগ্রাসন ইত্যাদি কোন ইস্যুতে রাজপথে নামতে দেখা যায় নাই বামপন্থীদের।
বাংলা ইনসাইডার/আরকে
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন মন্ত্রী-এমপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিএনপি বিদ্রোহ উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
ঢাকার বনানীর বাসায় ফেরার পথে গাড়িচালক
আনসার আলীসহ ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল নিখোঁজ হন বিএনপির তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট
জেলা বিএনপির সভাপতি এম ইলিয়াস আলী। এক যুগ পার হলেও ইলিয়াস আলী জীবিত না মৃত সে খবর
কেউ দিতে পারেনি দীর্ঘ এই সময়ে।
তবে সিলেটের বিএনপি নেতারা মনে করেন,
ইলিয়াস সরকারের হেফাজতে অক্ষতই আছেন। তাকে ফিরে পেতে কেবল সরকারের সদিচ্ছার প্রয়োজন।
নিখোঁজের ১২ বছর পূর্তিতে তাকে ফিরে পেতে গতকাল নানা কর্মসূচি পালন করেছে সিলেট বিএনপি
ও অঙ্গ সংগঠন। ইলিয়াস আলী ‘নিখোঁজ’র পর সিলেটে গঠন করা হয় ‘ইলিয়াস মুক্তি সংগ্রাম
পরিষদ’। এ বছর ‘ইলিয়াস মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ’র কোনো কর্মসূচি না থাকলেও সমাবেশ, স্মারকলিপি
প্রদান এবং দোয়া ও মিলাদ মাহফিল করেছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন। এক যুগেও ইলিয়াসের সন্ধান
না মিললেও হাল ছাড়েননি বিএনপি নেতারা।
তাদের ধারণা, ইলিয়াস আলী এখনো জীবিত
আছেন। ইলিয়াসের অবস্থান সম্পর্কে সরকার জ্ঞাত আছে। কিন্তু সরকারের সদিচ্ছার অভাবে ইলিয়াস
আলীর সন্ধান মিলছে না। ইলিয়াস আলী নিখোঁজের এক যুগপূর্তির দিন গতকাল জেলা প্রশাসকের
মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে সিলেট বিএনপি। এ ছাড়া বাদ আসর জেলা
বিএনপির উদ্যোগে হজরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ মসজিদে ইলিয়াস আলীর সন্ধান কামনায় দোয়া
ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া ইলিয়াসকে ফিরে পেতে বাদ জোহর একই মসজিদে দোয়া ও
মিলাদের আয়োজন করে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল। স্মারকলিপি প্রদানের আগে গতকাল দুপুরে জেলা
প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে বিএনপি।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দীর্ঘ ১২ বছর
ধরে ইলিয়াস আলী ফেরার অপেক্ষায় আছেন সিলেটবাসী। ইলিয়াসের জনপ্রিয়তায় আতঙ্কিত হয়ে সরকার
তাকে গুম করেছে।
ইলিয়াস নিখোঁজ প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির
সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন বলেন, ইলিয়াস আলীর সন্ধান পেতে তার সহধর্মিণী
হাই কোর্টে রিট করেছিলেন। কিন্তু সরকারের অদৃশ্য হস্তক্ষেপে এক যুগেও সেই রিটের শুনানি
হয়নি। এতে প্রমাণিত হয় ইলিয়াস নিখোঁজের পেছনে সরকার জড়িত।
মন্তব্য করুন