নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৬ অগাস্ট, ২০১৮
নির্বাচনের আগে ঢাকাকে সুরক্ষিত রাখাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান চ্যালেঞ্জ। আর এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ঢাকা মহানগরীকে সচল করার উদ্যোগ নেবে দলটি। খুব শিগগিরই ঢাকার এমপিদের সঙ্গে বসবেন দলের সভাপতি। অন্যদিকে, বিএনপির প্রধান লক্ষ্য ঢাকায় বড় ধরনের আন্দোলন এবং অবস্থান। বিএনপি মনে করে, ২০১৪’র আন্দোলনের ব্যর্থতার প্রধান কারণ ছিল ঢাকায় কোনো আন্দোলন সৃষ্টি করতে না পারা। কিন্তু এবার বিএনপির সব পরিকল্পনা ঢাকাকে ঘিরে।
আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সাম্প্রতিক সময় কোটা আন্দোলন এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে ঢাকা মহানগরীতে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে ঢাকার সংসদ সদস্যদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একজন নেতা বলেছেন, ‘মহানগরীর উত্তর ও দক্ষিণের কমিটির সঙ্গে ঢাকার এমপিদের কোনো সমন্বয় নেই। সমন্বয় নেই মেয়রের সঙ্গে।‘ ঐ নেতার মতে, কমিটি গুলোর সঙ্গে এমপিদের দূরত্ব ঢাকায় সংগঠনকে দুর্বল করে তুলেছে। আওয়ামী লীগ মনে করছে, নির্বাচনের আগে বিএনপি এবং জামাত ঢাকাকে টার্গেট করে বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করবে। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো তাঁর রিহার্সেল মাত্র। ঐ আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ওপর নির্ভর করতে চায় না সরকার। শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক আন্দোলনে ঢাকা মহানগরীর সাংগঠনিক দুর্বলতা দলের সভাপতিরও নজরে এসেছে। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, দলের সভাপতি শেখ হাসিনা অনতিবিলম্বে ঢাকা মহানগরী এবং ঢাকার এমপিদের নিয়ে বসতে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। যোগাযোগ করা হলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বীকার করেন যে, ঢাকা মহানগরীতে আওয়ামী লীগের কিছু সাংগঠনিক সমস্যা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘শিগগিরই আমরা বসবো।’ আওয়ামী লীগের একজন সিনিয়র নেতা বলেছেন, হানিফ এবং মায়া যুগের পর ঢাকা মহানগরীতে কোনো স্বীকৃত হেভিওয়েট নেতা নেই। তাই সাংগঠনিক ভাবে কিছু সমস্যা হচ্ছে।
অন্যদিকে, বিএনপির আন্দোলন পরিকল্পনা পুরোটাই ঢাকাকে ঘিরে। বিএনপির নেতারা খোলামেলাভাবেই বলছেন, ‘সারাদেশে আন্দোলনের কোনো দরকার নেই, ঢাকায় আন্দোলন গড়ে তুলতে পারলেই হলো।’ বিএনপি এবং জামাত বাইরে বৈরীতার অভিনয় করলেও গোপনে অক্টোবরের মধ্যে ঢাকা দখলের পরিকল্পনা করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে কোটা আন্দোলন এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে প্রমাণ হয়েছে যে, এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জনভিত্তি তৈরি হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘মানুষ এখন সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে প্রস্তুত।’ বিএনপি এখন ঢাকাকে ঘিরে আন্দোলনের সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিচ্ছে। মির্জা আব্বাস, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল সহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ ঢাকায় নানা আন্দোলন উসকে দেওয়ার কাজে ব্যস্ত। সে লক্ষ্যেই ওয়ার্ড কমিটিগুলো গঠন করা হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছে, নিরাপদ সড়কের আন্দোলনই শেষ নয়, সামনে আরও ইস্যু আসছে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।