নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ০৭ অগাস্ট, ২০১৮
‘উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজ’ ব্যানারে জাতীয় প্রেসক্লাবে গতকাল সোমবার এক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। শিক্ষার্থীদের ওপর সরকারের কথিত নির্যাতনের প্রতিবাদে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন রাজনৈতিক দল বিকল্প ধারার সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বক্তব্য শেষ করে ফখরুল ও বি. চৌধুরী অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করলে অনুষ্ঠানে যোগ দেন গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেন।
এই অনুষ্ঠানে নিজ দলের মহাসচিবের উপস্থিত হওয়ার ঘটনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া খুবই অসন্তুষ্ট হয়েছেন। বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সঙ্গে একই মঞ্চে ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উপস্থিত হওয়াকে তিনি ভালো চোখে দেখেননি। একে তিনি বি. চৌধুরীর সঙ্গে ফখরুলের ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি লন্ডন থেকে মির্জা ফখরুলকে ফোন করেছেন। ফোন করে ভবিষ্যতে বি. চৌধুরীর সঙ্গে কোনো মঞ্চে যেতে ফখরুলকে নিষেধ করে দিয়েছেন তারেক জিয়া।
গত রমজানে বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে নিজেদের ইফতার পার্টিতে নিয়ে এসেছিল, এমনকি তাঁকে ‘অভিভাবক’ হিসেবেও অভিহিত করেছিল মির্জা ফখরুল। কিন্তু সেই পার্টিতে এসে বি. চৌধুরী বিএনপির কারান্তরীণ চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি চাননি। এই ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়েছিলেন তারেক। সে সময় আবার যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে বিএনপির কথা চলছিল যে তাঁরা যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে একটি ঐক্যজোট গঠন করবে। সে সময়ে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিকল্পধারা ও যুক্তফ্রন্টের অন্যান্য দলগুলোর জন্য জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫০ আসন চেয়েছিলেন। এতেও তারেক খুব ক্ষুদ্ধ হন। তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি একাই অংশগ্রহণ করবে। তার ওপর সিলেট সিটি নির্বাচনের পর বিএনপির আত্নবিশ্বাস অনেক বেড়ে গেছে। এখন বিএনপি একাই বিজয়ী হতে পারে এমন আত্মবিশ্বাসের হাওয়াও দলে বইছে।
এছাড়া গতকালের অনুষ্ঠানটি তারেক জিয়াকে আরও বেশি ক্ষুদ্ধ করে কারণ হলো অতীতের মতো কালকের অনুষ্ঠানেও বি. চৌধুরীর মুখে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি উচ্চারিত হয়নি। নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ৮ দফা যে দাবি দিয়েছেন এর মধ্যেও কোথাও খালেদা জিয়াসহ অন্যান্য রাজবন্দীদের মুক্তির প্রসঙ্গ নেই। তারেকের বক্তব্য হচ্ছে, যে প্ল্যাটফর্মে খালেদা জিয়ার মুক্তি, রাজবন্দীদের মুক্তি ও বিভিন্ন হয়রানিমূলক মামলার ইস্যু থাকবে না সেখানে বিএনপি কখনোই যাবে না।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সঙ্গে ফখরুলের সম্পর্ক নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তারেক জিয়া। ভবিষ্যতে যদি এরকম কোনো ঘটনা ঘটে তাহলে ফখরুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবেন বলেও বিএনপি মহাসচিবকে সতর্ক করে দিয়েছেন তারেক।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।