নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৭ অগাস্ট, ২০১৮
আওয়ামী লীগ বিরোধী একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক প্লাটফরম গঠনের লক্ষ্যে কাজ করছে মার্কিন দূতাবাস। দেশের সুশীল সমাজের একাংশের পৃষ্ঠপোষকতায় এই জোট গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই জোটে বিএনপি থাকলেও জোটের নেতৃত্ব বিএনপির হাতে থাকবে না। এরকম একটি জোটের নেতৃত্ব ড. কামাল হোসেন অথবা অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা চলছে। তবে, এ ধরনের মোর্চার ব্যাপারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সায় নেই। মার্কিন দূতাবাস অবশ্য এটাই চাইছে। বেগম জিয়া ও তারেক জিয়াকে বাদ দিয়ে বিএনপির একটি অংশকে নিয়ে এরকম একটি জোট আওয়ামী লীগকে আগামী নির্বাচনে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলের সঙ্গে আলাপ করে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে, তারেক জিয়ার তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এরকম একটি ঐক্যের পক্ষে। ঐক্যের স্বার্থে তিনি বিএনপির নেতৃত্বও ছাড়তে প্রস্তুত। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, বর্তমান সরকারকে হটাতে নূন্যতম ইস্যুতে এরকম একটি ঐক্য প্রক্রিয়ার জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই কাজ চলছে। তবে সম্প্রতি এরকম ঐক্য প্রক্রিয়ার তাগিদ দিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া বার্নিকাট। জানা গেছে, তিনি চাইছেন, ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে এরকম একটি মোর্চা গড়ে উঠুক। গত শনিবার সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের বাসায় নৈশভোজে এরকম একটি উদ্যোগের ব্যাপারে মার্কিন আগ্রহের কথা রাখ ঢাক ছাড়াই উল্লেখ করেন বার্নিকাট। জামাত এবং ইসলামী দলগুলোকে এই জোটের বাইরে রাখা উচিত বলেও ঐ নৈশভোজে বার্নিকাট মত প্রকাশ করেন। সূত্রমতে, যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে গণফোরাম এবং বিএনপির একাংশকে নিয়ে এ ধরনের একটি প্ল্যাটফর্ম ‘রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণে’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে সুশীল সমাজও মনে করেন। সুশীল সমাজের একটি অংশ এনিয়ে বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গেও কথা বলেছেন। বিএনপির একটি অংশ এরকম একটি জোটে আগ্রহী হলেও, একটি বড় অংশ এতে যোগদানের পক্ষপাতী নয়। বিএনপির অনাগ্রহী অংশ মনে করে, বৃহত্তর জোটের নেতৃত্ব অবশ্যই বিএনপির হাতে থাকতে হবে। তারা এটাও মনে করেন, এরকম জোটের কর্মসূচিতে বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি এবং তারেক জিয়াসহ সকল রাজবন্দীর মুক্তির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। কিন্তু যুক্তফ্রন্ট বা ড: কামাল এই দুই ইস্যুর একটিও ঐক্য প্লাটফর্মে রাখার পক্ষপাতী নন। বরং তারা সুশাসন, দুর্নীতিমুক্ত দেশ এবং সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যমত চান। একটি সূত্র বলছে, ৬ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত ‘সংক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ’ এই জোটের অবয়ব পরিষ্কার করেছে। শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নয়, কয়েকটি পশ্চিমা দেশও এরকম একটি তৃতীয় শক্তির উত্থানে আগ্রহী। সম্প্রতি পাকিস্তান নির্বাচন তাদের এ ব্যাপারে উৎসাহী করেছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এরকম একটি জোটে যাবার জন্য দলের ভেতর লড়াই করছেন বলেও তাঁর ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছে। এজন্য বিএনপিকে ত্যাগ স্বীকার করা উচিত বলেও তিনি মনে করেন। কিন্তু সকলের প্রবল আগ্রহ সত্ত্বেও জোটের নেতার প্রশ্নেই এই ঐক্য প্রক্রিয়া এখনো অনিশ্চিত। কূটনৈতিক মহল জোটের নেতৃত্বে ড. কামাল হোসেনকে দেখতে চাইলেও আগ্রহী রাজনৈতিক দলগুলোর পছন্দ অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী। ইতিমধ্যে যে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়েছে তাঁর নেতৃত্বে রয়েছেন অধ্যাপক চৌধুরী। তবে, বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত এরকম একটি জোটে যোগ দেয় তবে, তাদেরও অধ্যাপক বি. চৌধুরীর ব্যাপারে আপত্তি রয়েছে। নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব এবং নির্বাচনে আসন ভাগাভাগির হিসেব নিকেশে শেষ পর্যন্ত মার্কিন পৃষ্ঠপোষকতায় নতুন জোট আলোর মুখ দেখে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।