নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৭ অগাস্ট, ২০১৮
কোটা আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের পর আসছে প্রশ্নপত্র ফাঁসের আন্দোলন। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজের ভর্তি যুদ্ধ। এই ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ছড়িয়ে নতুন করে ছাত্র আন্দোলন শুরুর প্রস্তুতি শুরু করছে জামাত-শিবির এমন তথ্য গোয়েন্দাদের। তাদের মতে, ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে প্রায় ২০ লাখ উচ্চমাধ্যমিক পাশ শিক্ষার্থীকে ক্ষেপিয়ে রাস্তায় নামানোর এক নীলনকশা চূড়ান্ত করা হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য কোচিং সেন্টারগুলোর সিংহভাগ পরিচালিত হয় শিবির দ্বারা। এসব কোচিং সেন্টার এখন থেকেই শিক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ব্যাপারে সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছে। কয়েকটি কোচিং সেন্টারে এরকমও বার্তা দেওয়া হচ্ছে, এই সরকার আমলে এটাই শেষ ভর্তি পরীক্ষা, তাই ব্যাপক প্রশ্নপত্র ফাঁস হবে। একাধিক কোচিং সেন্টারে ভর্তিচ্ছুদের নিয়ে ফেসবুকে গ্রুপ করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটলেই গ্রুপগুলোতে জানানো হবে এবং তাৎক্ষণিকভাবে পরীক্ষা বর্জন করে রাজপথে অবস্থান নেওয়া হবে। গোয়েন্দা সূত্রের খবর হলো, শিবির পরীক্ষার আগের দিন ভুয়া প্রশ্নপত্র সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রকাশ করে শিক্ষার্থীদের উত্তেজিত করবে। শিক্ষার্থীরাও প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে এই গুজবে পরীক্ষার হলে না গিয়ে, রাস্তায় অবস্থান নেবে। এর সঙ্গে আবার যুক্ত হবে বিএনপি এবং জামাত নিয়ন্ত্রিত কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবরে এরকম আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়েই ব্যস্ত শিবিরের শিক্ষার্থী নেটওয়ার্ক।
আজ শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে জানানোর জন্য এ সংক্রান্ত প্রস্তুতির জন্য কিছু সতর্কবার্তা একটি গোয়েন্দা সংস্থা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থা, কোচিং সেন্টারগুলোর কার্যক্রম বন্ধ এবং এগুলোকে নজরদারির আওতায় আনার প্রস্তাব করেছে। প্রশ্নপত্র প্রণয়নে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করার কথাও বলা হয়েছে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে। এছাড়াও ভর্তি পরীক্ষা গুলোর আগের রাতে ’ফেসবুক’ বন্ধ রাখা বা ধীরগতির ইন্টারনেট সেবা রাখারও সুপারিশ করেছে গোয়েন্দা সংস্থাটি।
সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি এবং জামাত ঢাকায় বড় ধরনের আন্দোলনের মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য শিক্ষার্থীদের টার্গেট করেছে। তাঁরা শিক্ষার্থীদের দিয়ে ঢাকাকে অচল করতে চায়। এজন্য শিবির শিক্ষার্থীদের জন্য স্পর্শকাতর কিছু ইস্যুকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস গত কয়েক বছরে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই সরকারের সময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়- এমন একটি ধারণা শিবির শিক্ষার্থীদের মধ্যে মোটামুটি প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে। গোয়েন্দারা বলছে, গত দুই বছর শিবির পরিকল্পিত ভাবে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে অথবা গুজব ছড়িয়েছে। এই ইস্যুটি নিয়ে এমনিতেই সাধারণ শিক্ষার্থীরা উদ্বিগ্ন। তাছাড়া সর্বশেষ দুটি আন্দোলনের ফলে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ আন্দোলন ভীতি কেটে গেছে। তাই যেকোনো ইস্যুতে রাস্তায় যেতে উৎসাহী শিক্ষার্থীর অভাব নেই। শিবির এই সুযোগটিকে কাজে লাগাতে চায় বলেও গোয়েন্দাদের তথ্যে জানা গেছে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।