নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৮ অগাস্ট, ২০১৮
৯০’র ঘরে গিয়ে সেঞ্চুরির আগে একজন ব্যাটসম্যান যেমন নার্ভাস হয়ে পড়েন, তেমনি মেয়াদের শেষ প্রান্তে এসে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নার্ভাস। বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের অস্থিরতা, উৎকণ্ঠা দৃশ্যমান। যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সোমবারের ক্যাবিনেট মিটিংয়ে তাঁর সহকর্মীদের নার্ভ শক্ত করতে বলেছেন, কিন্তু দলের অধিকাংশ নেতাকর্মীর মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি। টানা ১০ বছর ক্ষমতায় থাকা দলটির অনেক নেতাই মনে করছেন, ‘সামনে কঠিন সময় আসছে।’
আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাম্প্রতিক কোটা আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন আওয়ামী লীগের বেশকিছু ক্ষত উন্মোচন করেছে। দলের নীতি নির্ধারক মহলও, নির্বাচনের বছরে আওয়ামী লীগের পাঁচ সমস্যা নিয়ে কিছুটা উদ্বিগ্ন। এই সমস্যাগুলো হলো:
এক. আওয়ামী লীগ এবং সরকার অতিরিক্ত শেখ হাসিনা নির্ভর হয়ে পরেছে। সব ব্যাপারে তিনিই একমাত্র ত্রাতা। তিনি ছাড়া সমস্যা সমাধান দেবার কেউ নেই। আওয়ামী লীগের মতো বড় দলের জন্য এটা খুবই উদ্বেগজনক।
দুই. আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কৌশল এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় দলের সিনিয়র নেতারা অন্ধকারে। অধিকাংশ নেতাই জানেন না, আগামী নির্বাচন কীভাবে হবে, বিএনপির সঙ্গে সরকারের কৌশল কি? ফলে রাজনৈতিক মাঠ থেকে দূরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের একটি বড় অংশ।
তিন. আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিশ্রমী, কর্মঠ। কিন্তু দলে এবং দলের বাইরে তিনি ইমেজ সংকটে ভুগছেন। তাঁর অতিকথনে সাধারণ মানুষ ইদানীং প্রকাশ্যে বিরক্তি প্রকাশ করে।
চার. আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গত ১০ বছর আরাম আয়েশে গা ভাসিয়েছেন। সংগঠন এখন হয়ে উঠেছে ব্যবসা এবং টাকা বানানোর মেশিন। ফলে ঐতিহ্যবাহী এই সংগঠনটি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে ক্রমশ। সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংগঠনের জনবিচ্ছিন্নতা বড় হয়ে ধরা হয়ে ধরা দেয়। সরকার বেশি রকম প্রশাসন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
পাঁচ. মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক শক্তি এবং সুশীল সমাজের সঙ্গেও আওয়ামী লীগের সম্পর্ক ভালো না। আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকা ১৪ দলের নেতারা পর্যন্ত একান্তে আওয়ামী লীগের অবহেলা এবং উপেক্ষার ফিরিস্তি দেন। মুক্ত চিন্তার যেসব মানুষ আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই বলে সোচ্চার থাকবেন, তাঁরাও আজকাল প্রকাশ্যেই বলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গিয়ে বদলে গেছে।
এছাড়া অঙ্গসংগঠন গুলোর কার্যক্রম, তৃণমূলের হতাশা, আন্তঃকলহ ইত্যাদি নানা সমস্যায় দলটি আগামী নির্বাচনে কীভাবে জনগণের সামনে আসবে, সেটি একটি বড় বিষয়। তবে, আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাই তাদের নেতা, দলের সভাপতি শেখ হাসিনার উপর আস্থাশীল। তাদের ধারণা,শেখ হাসিনা সব পরিস্থিতি সামাল দেয়ার মতো দূরদর্শী।
Read in English- https://bit.ly/2AUFMU8
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বেগম জিয়া আর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন না, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এ রকম একটি বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছেন শামীম ইস্কান্দার।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠিত করা এবং বিভেদ-বিভক্তির দূর করার জন্য যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তারপর একটু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল বলে বটে। কিন্তু এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে সারাদেশে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সামাল দেওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধ অন্যদিকে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়া আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তদারকির অভাবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ এখন সবচেয়ে সঙ্কটের মুখে পড়েছেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই।