নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১০ অগাস্ট, ২০১৮
বলা হয় ‘আইন সবার জন্য সমান।’ কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে অন্য রকম। একজন সাধারণ নাগরিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হবার সাথে সাথে তাকে গ্রেপ্তারের তোড়জোড় পরে যায়। ব্যাংকের মামলায়, চেকের মামলায় রাত দুপুরে ভদ্রলোকের বাড়িতে পুলিশ হানা দেয়। আর অন্য অপরাধ করলে তো কথাই নেই। কিন্তু রাজনীতিবিদদের বেলায় ঘটনা অন্য রকম। দিনের পর দিন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকার পরও অনেক রাজনীতিবিদ গ্রেপ্তার হন না। বরং তাঁরা সংবাদ সম্মেলন করে, সরকারকে তুলোধুনো করেন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ সাত মাস ধরে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। এই গ্রেপ্তারি পরোয়ান মাথায় নিয়ে দিব্যি রিজভী নিয়মিত প্রেস ব্রিফিং করছেন। সরকারকে যা ইচ্ছা বলছেন। মাঝে মধ্যে গেরিলা স্টাইলে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে মিছিলও করছেন। সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে উসকে দেয়ার অভিযোগে দু’টি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গুজব ও উস্কানি ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিনেত্রী নওশাবা কে। তাহলে রুহুল কবির রিজভী কেন আলাদা? তাঁর বিরুদ্ধে কেন আইনের যথাযথ প্রয়োগ নেই? শুধু রিজভী নয়, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অথচ তিনি দিব্যি ঘুরছেন, ফিরছেন। সরকারের আলোচনাও করছেন। কিন্তু দেখেও যেন তাঁকে দেখছে না আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন।
বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছাত্রদল নেতার সঙ্গে তাঁর একটি কথোপকখনের অডিও সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে। ঐ অডিও শুনলে দেখা যায়, নির্দেশ যা দেবার সব দিয়েছেন আমীর খসরুই। ছাত্রদলের নওমি নামের ছেলেটি শুধু নির্দেশ প্রতিপালনের অঙ্গীকার করেছে। কিন্তু দেখা গেল পুলিশ ওই ছেলেটিকে গ্রেপ্তার করলেও আমীর খসরু মাহমুদ ধরা ছোঁয়ার বাইরে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খসরু ঢাকাতেই আছেন। খসরুই ছেলেটিকে ঢাকায় এসে আরো বন্ধু বান্ধব নিয়ে রাস্তা দখল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আমীর খসরুকে গ্রেপ্তার করা হলে এই আন্দোলনকে অন্যখাতে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্র সম্পর্কে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যেত বলেই অনেকের ধারণা। অথচ কেউ খসরুকে ধরছে না।
সম্প্রতি আলোকচিত্রী শহীদুল আলমকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন গ্রেপ্তার করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি উস্কানি দিয়েছেন। আল-জাজিরা টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে সরকারের বিরুদ্ধে বিষেদাগার করেছেন। অথচ শহীদুল আলম যেদিন এই সাক্ষাৎকার দেন, সেদিনই ড. কামাল হোসেন এক অনুষ্ঠানে দেশে ‘গুন্ডাতন্ত্র’ চলছে বলে মন্তব্য করেন। এমনকি তাকে গুলি করে মারার কথা বলে উত্তেজনা ছড়ান। সাধারণ নাগরিকের প্রশ্ন, সরকার এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে শহীদুল আলম যা বলেছেন তার চেয়েও ভয়ংকর কথা বলেছেন ড. কামাল হোসেন। শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে মামলা হলেও ড. কামাল যেন সব কিছুর উর্ধ্বে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, রাজনীতিবিদরা কি তাহলে আইনের উর্ধ্বে?
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।