নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ১১ অগাস্ট, ২০১৮
অবশেষে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। ঈদের পর আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সহায়ক সরকারের প্রস্তাব উপস্থাপন করবে বলে বিএনপির একটি দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তির নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সময়ে একটি দল নিরপেক্ষ সরকার গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, নির্বাচনকালীন সরকারের প্রস্তাবনায়। এই প্রস্তাবনায় অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুন:প্রবর্তনসহ ৫টি সুপারিশ করা হয়েছে। বিএনপির প্রস্তাবিত নির্বাচনকালীন সরকার ফর্মুলায় যে ৫টি সুপারিশ করা হয়েছে সেগুলো হলো:
১. যেহেতু বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংক্রান্ত রায়ে পরবর্তী দুই মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হয়েছে, তাই অবিলম্বে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের আলোকে পুনর্প্রবর্তন করতে হবে। যদি শেষ পর্যন্ত ক্ষমতাসীন দল সেটি না করে তাহলে আলোচনার ভিত্তিতে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। সমঝোতার শর্ত হবে যে, নির্বাচনের পর ৯১ এর মতো সকলে সম্মিলিত ভাবে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সাংবিধানিক বৈধতা দেবে।
২. নির্বাচনের ১৮০ দিন পূর্বে বর্তমান জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে।
৩. বর্তমান নির্বাচন কমিশন যেহেতু অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে ব্যর্থ হয়েছে, তাই বর্তমান নির্বাচন কমিশন ভেঙ্গে, সকলের মতামতের ভিত্তিতে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ও আস্থাভাজন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।
৪. সিভিল প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। দলীয় অনুগত প্রশাসন এবং পুলিশের লোকজনকে নির্বাচন কার্যক্রম থেকে সরিয়ে দিতে হবে।
৫. নির্বাচনে সেনা মোতায়েন নিশ্চিত করতে হবে।
বিএনপির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, বিএনপি এতদিন ধরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে আসার কথা বললেও নির্বাচনকালীন সরকার প্রস্তাবনায় পুরোনো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করেছে। তবে, বিএনপি বলছে, এজন্য সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন নেই। কারণ সংবিধান সংক্রান্ত আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণেই এ কথা বলা আছে। বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, সর্বশেষ অবসরে যাওয়া প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা অথবা শান্তিতে নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নির্বাচনকালীন সরকার প্রধান হিসেবে দেখতে চায় বিএনপি। তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় বিএনপি হয়তো নির্বাচনকালীন সরকার প্রধান হিসেবে কারও নাম উচ্চারণ করবে না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছে, তিনবছর অপেক্ষার পর বিএনপি যে নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা তৈরি করেছে, তা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ারই প্রস্তাবনা। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় ফিরতে ক্ষমতাসীন দল যে কোনোভাবেই রাজি হবে না, তা বিএনপিও জানে। এটি জানার পরও নতুন করে আন্দোলনের ইস্যু তৈরির জন্যই বিএনপি এটিকে সামনে আনছে এমনটাই ধারণা রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন মন্ত্রী-এমপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিএনপি বিদ্রোহ উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
ঢাকার বনানীর বাসায় ফেরার পথে গাড়িচালক
আনসার আলীসহ ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল নিখোঁজ হন বিএনপির তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট
জেলা বিএনপির সভাপতি এম ইলিয়াস আলী। এক যুগ পার হলেও ইলিয়াস আলী জীবিত না মৃত সে খবর
কেউ দিতে পারেনি দীর্ঘ এই সময়ে।
তবে সিলেটের বিএনপি নেতারা মনে করেন,
ইলিয়াস সরকারের হেফাজতে অক্ষতই আছেন। তাকে ফিরে পেতে কেবল সরকারের সদিচ্ছার প্রয়োজন।
নিখোঁজের ১২ বছর পূর্তিতে তাকে ফিরে পেতে গতকাল নানা কর্মসূচি পালন করেছে সিলেট বিএনপি
ও অঙ্গ সংগঠন। ইলিয়াস আলী ‘নিখোঁজ’র পর সিলেটে গঠন করা হয় ‘ইলিয়াস মুক্তি সংগ্রাম
পরিষদ’। এ বছর ‘ইলিয়াস মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ’র কোনো কর্মসূচি না থাকলেও সমাবেশ, স্মারকলিপি
প্রদান এবং দোয়া ও মিলাদ মাহফিল করেছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন। এক যুগেও ইলিয়াসের সন্ধান
না মিললেও হাল ছাড়েননি বিএনপি নেতারা।
তাদের ধারণা, ইলিয়াস আলী এখনো জীবিত
আছেন। ইলিয়াসের অবস্থান সম্পর্কে সরকার জ্ঞাত আছে। কিন্তু সরকারের সদিচ্ছার অভাবে ইলিয়াস
আলীর সন্ধান মিলছে না। ইলিয়াস আলী নিখোঁজের এক যুগপূর্তির দিন গতকাল জেলা প্রশাসকের
মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে সিলেট বিএনপি। এ ছাড়া বাদ আসর জেলা
বিএনপির উদ্যোগে হজরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ মসজিদে ইলিয়াস আলীর সন্ধান কামনায় দোয়া
ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া ইলিয়াসকে ফিরে পেতে বাদ জোহর একই মসজিদে দোয়া ও
মিলাদের আয়োজন করে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল। স্মারকলিপি প্রদানের আগে গতকাল দুপুরে জেলা
প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে বিএনপি।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দীর্ঘ ১২ বছর
ধরে ইলিয়াস আলী ফেরার অপেক্ষায় আছেন সিলেটবাসী। ইলিয়াসের জনপ্রিয়তায় আতঙ্কিত হয়ে সরকার
তাকে গুম করেছে।
ইলিয়াস নিখোঁজ প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির
সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন বলেন, ইলিয়াস আলীর সন্ধান পেতে তার সহধর্মিণী
হাই কোর্টে রিট করেছিলেন। কিন্তু সরকারের অদৃশ্য হস্তক্ষেপে এক যুগেও সেই রিটের শুনানি
হয়নি। এতে প্রমাণিত হয় ইলিয়াস নিখোঁজের পেছনে সরকার জড়িত।
মন্তব্য করুন