ইনসাইড পলিটিক্স

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড: যারা সেদিন প্রতিবাদ করেছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৪ অগাস্ট, ২০১৮


Thumbnail

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু একজন জনদরদী ও দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন যাকে নেতা হিসেবে পাওয়াকে যে কোনো জাতিই পরম সৌভাগ্য হিসেবে বিবেচনা করবে। কিন্তু বাঙালি যেমন বীরের জাতি, তেমনই বেইমানের জাতি। এই কারণেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার অবিসংবাদিত নায়ককে বরণ করতে হয় স্বদেশীদের হাতে মৃত্যু। ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে সেনবাহিনীর একদল সদস্য। এই অপরাধ আরও ডালপালা বিস্তার করে যখন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন সহচর পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সঙ্গে হাত মেলায়। এসব ঘটনা পরিক্রমার দিকে লক্ষ্য রাখলে মনে হতে পারে ’৭৫ এর সেই অন্ধকার সময়ে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডে দুঃখিত হওয়ার মতো, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করার মতো একটি মানুষও বাংলাদেশে ছিলেন না। এই বিষয়টি আরও জোরালো হয় বঙ্গবন্ধু হতাকাণ্ডের পর দীর্ঘ দুই দশক ধরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধীরা যখন এমন তথ্য সজ্ঞানে, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে প্রচার করতে থাকে। স্বাধীনতা বিরোধীদের জাতির পিতার মৃত্যুতে কারও কোনো প্রতিক্রিয়া হয়নি এমন তথ্য প্রচারের মূল উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর সময় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের মানুষের প্রচণ্ড অজনপ্রিয় ছিলেন এমন কথা প্রতিষ্ঠিত করা। কিন্তু কালের স্রোতে এসব অপপ্রচার ধুলোয় মিলিয়ে গেছে। প্রমাণিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ কেউ করেনি, এমন দাবি সর্বৈব মিথ্যা। সেই গুমোট, অন্ধকার সময়েও সামরিক শাসকদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দেশপ্রেমিক, মুজিব প্রেমী মানুষ ঠিকই এই ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করেছিল।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করেছেন অনেক মানুষ যাদেরকে জেল-জুলুম সহ্য করতে হয়েছে অথবা বরণ করে নিতে হয়েছে মৃত্যুকে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সেই আশাহীন রাতেই প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছিলেন বিগ্রেডিয়ার জামিল উদ্দিন আহমেদ, কিন্তু সফল হতে পারেননি। প্রিয় রাষ্ট্রনায়ককে বাঁচাতে গিয়ে তাঁর মতোই নিহত হতে হয় ব্রিগেডিয়ার জামিলকে। ব্রিগেডিয়ার জামিল আগে থেকেই বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত ছিলেন। এই কারণেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোররাত তিনটা কিংবা সাড়ে তিনটার দিকে ব্রিগেডিয়ার জামিলকে ফোন করেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর ফোন পেয়েই ধানমণ্ডি ৩২ এর বাড়ির দিকে ছুটে যান তিনি। যাওয়ার আগে সেনাবাহিনীর প্রধান সফিউল্লাহ, পুলিশ সুপার ও রক্ষীবাহিনীর প্রধান তোফায়েল আহমেদকেও ফোন করেন।। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর বাড়ির পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেননি তিনি। পথিমধ্যেই গাড়িতে থাকা অবস্থায় পাঁচ-ছয়জন অস্ত্রধারী সেনা সদস্য গুলি করে হত্যা করেন ব্রিগেডিয়ার জামিলকে।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড পরবর্তী সময়ে আরেক বীরের নাম বীর উত্তম কাদের সিদ্দিকী। জাতির পিতার মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি তিনি। তাই বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। ১৭ হাজার মুজিব ভক্তকে সঙ্গে নিয়ে রংপুর চিলমারী পর্যন্ত সাতটি ফ্রন্টে বিভক্ত হয়ে কাদের সিদ্দিকী দীর্ঘ ২২ মাস যাবৎ প্রতিরোধ যুদ্ধ চালিয়ে যান। এই প্রতিরোধ যুদ্ধে নিহত হন ১০৪ জন মুজিব প্রেমী যোদ্ধা। নিহতদের মধে যেমন ছিলেন চট্টগ্রামের মৌলভী সৈয়দ, গাইবান্ধার মুন্না, দুলাল দে বিপ্লব, বগুড়ার সারিয়াকান্দির আবদুল খালেক খসরুর মতো সমতলের মানুষেরা, তেমনি ছিলেন ফনেস সাংমা, অ্যালসিন মারাক, সুধীন মারাকরাদের মতো আদিবাসীরা। জাতির পিতার জন্য যাদের আত্মত্যাগ আমাদের বলে দেয়, বাংলাদেশের প্রতিটি কোণে জাতির পিতার প্রতি মানুষের ভালোবাসা ছড়িয়ে আছে।

প্রায় দুই বছর ব্যাপী চলমান সেই প্রতিরোধ যুদ্ধে আহত যোদ্ধার সংখ্যা পাঁচ শতাধিক। এছাড়াও শুধু পিতা মুজিবকে ভালোবাসেন বলে সেনাবাহিনীর অকথ্য নির্যাতন ও জেল-জুলুমের স্বীকার হন অগণিত যোদ্ধা ।

বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করায় মৃতদের তালিকা এখানেই সীমাবদ্ধ নয়। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করায় ১৯৭৬ সালের ১৮ আগস্ট সেনা অভিযান চালিয়ে মুক্তাগাছার প্রতিবাদী ৫ মুক্তিযোদ্ধা জাবেদ আলী, নিখিল দত্ত, সুবোধ ধর, দিপাল দাস, মফিজ উদ্দিনকে হত্যা করা হয়। সেই অভিযানে বেঁচে যান বিশ্বজিৎ নন্দী নামের এক কিশোর যোদ্ধা। কিন্তু গুরুতর আহত অবস্থায় আটক করা হয় তাঁকে। এরপরই শুরু হয় বিশ্বজিৎ এর দুর্বিষহ জীবন। বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসার অপরাধে ১৯৭৭ সালের ১৮ মে সামরিক আদালতে ফাঁসির দণ্ড দেওয়া হয় ১৯ বছরের তরুণ বিশ্বজিৎকে। ফাঁসির দণ্ড মাথায় নিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে ৭ বছর কাটাতে হয় বিশ্বজিৎকে। তবে বিশ্বজিৎ সৌভাগ্যবান। বিশ্বজিৎ এর মুক্তির জন্য বিশ্বব্যাপী আন্দোলন শুরু হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ প্রভাবশালী বিশ্বনেতারা বিশ্বজিৎকে সমর্থন করেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন সেনা সরকার বিশ্বজিতের ফাঁসি মওকুফ করে তাঁকে যাবজ্জীবন দেয়। পরে ১৯৮৯ সালে তিনি মুক্তি লাভ করেন।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সময় আওয়ামী লীগের অনেক নেতার ভূমিকা বিতর্কিত হলেও সব নেতাই কিন্তু চুপ করে থাকেননি। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করেছিলেন আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যার কারণে তাঁকে কারাভোগ করতে হয়। এছাড়া আওয়ামী নেতা আ. লতিফ সিদ্দিকী, বজলুর রহমান, মানু মজুমদারও কারাভোগ করেন।

শুধু রাজনৈতিক নেতারাই নয়, বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে দীর্ঘ ১০ বছর কারাভোগ করেন শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার কান্দা গ্রামের আজগর আলী, যিনি পরিচয়ে সাধারণ কিন্তু কর্মের দ্বারা অসাধারণ হয়ে উঠেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য দেশের ৮-১০ হাজার প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে আজগর আলীও প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিলেন। এক পর্যায়ে শেরপুরের নকলা উপজেলার ধামনা গ্রামে প্রতিরোধ যোদ্ধার একটি দল গ্রামের একটি বাড়িতে রাতে আশ্রয় নিলে গুপ্তচর মারফত খবর পেয়ে আজগর আলীকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরপর কারাবাসই হয় তাঁর নিয়তি।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সামরিক জান্তা যাকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুগামী মনে করেছে তাঁর ওপরই ধরপাকড় চালিয়েছে। এই কারণে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আবদুর রাজ্জাক ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত কারাবন্দি ছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আরও আছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত জাতীয় চার নেতা তাজউদ্দীন আহমেদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মনসুর আলী ও কামরুজ্জামানকে নিয়েও অস্বস্তি ছিল সামরিক সরকারের। এই কারণেই তাঁদের কারাবন্দী করা হয়, পরবর্তীতে হত্যা করা হয় অন্ধকার কারা প্রকোষ্ঠে।

জাতির পিতার মৃত্যুতে তাঁর সন্তানদের যেমন প্রতিক্রিয়া দেখানোর কথা ছিল বাংলাদেশে তেমনটি দেখা যায়নি একথা সত্যি। কিন্তু এই বিষয়ে সমালোচনা করার আগে মোশতাক, জিয়ার শাসনামলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামরিক পরিস্থিতির কথাও আমাদের মাথায় রাখতে হবে। সেই দিনগুলোতে বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের নাম উচ্চারণ করা নিষিদ্ধ ছিল। বাংলাদেশ পরিণত হয়েছিল মত প্রকাশের স্বাধীনতাহীন এক কারাগারে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ঢাকায় কার্ফু জারি করা হয়েছে অসংখ্যবার, রাজপথ দাপিয়ে বেড়িয়েছে সেনাবাহিনী। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতেও ’৭৫ এর ১৮ই অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন, মধুর ক্যান্টিনসহ পুরো বিশ্ববিদ্যালয় পোস্টার ও দেয়াল লিখনে ভরিয়ে দিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ জানায় ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা৷ এরপর ২০শে অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে একটি প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। তৎকালীন ত্রাসের রাজত্বে এসব প্রতিবাদ-প্রতিরোধ সম্ভব হয়েছিল পিতার প্রতি সন্তানের নিঃস্বার্থ ভালোবাসার কারণেই।

এমনকি ১৯৭৬ সালের ২৩ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর বাসভবনস্থ অফিসের কর্মকর্তা মুহিতুল ইসলাম লালবাগ থানায় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা রুজু করতেও গিয়েছিলেন। কিন্তু মামলা নেয়নি ডিউটি অফিসার, বরং অফিসারের হাতে চড় খেয়ে বিদায় নিতে হয় মুহিতুল ইসলামকে। এভাবেই অপমান, নির্যাতন, হত্যা ও জেল-জুলুমের মধ্যে চলতে থাকে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ।

মৃত্যুর ভয় মাথায় নিয়ে যে মুজিব প্রেমীরা ’৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর মুজিব হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ করেছিল, ২০১০ সালের ২৬ জানুয়ারি দিবাগত রাতে বঙ্গবন্ধুর পাঁচ খুনির ফাঁসি কার্যকর করার মাধ্যমে তাঁদের যন্ত্রণার কিছুটা হলেও উপশম করা সম্ভব হয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর যে খুনিরা এখনো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিয়ে আছে তাঁদের দেশে এনে বিচারের সম্মুখীন করা সম্ভব না হলে বাঙালির পিতা হত্যার গ্লানি কখনোই দূর হবে না।


বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ 



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ব্যারিস্টার খোকনের অব্যাহতি নিয়ে বিএনপিতে বিভক্তি

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহসভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবে ব্যক্তিগত বিরোধ ও তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে মত বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের অনেকের। সুপ্রিম কোর্ট অঙ্গনে তুমুল জনপ্রিয় এই নেতাকে বাদ দেওয়ায় ফোরামের নেতাদের ওপর ক্ষুব্ধ বিএনপির সিনিয়র নেতারাও। এ নিয়ে বিএনপিতে এখন বিভক্ত স্পষ্ট।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলটির দুজন স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, তাদের কাছে মনে হয়েছে বিষয়টি নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করা হচ্ছে। ব্যারিস্টার খোকন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাতবারের সম্পাদক। তিনি দলেরও একজন সিনিয়র নেতা। তার মতো নেতাকে এভাবে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দিয়ে অসম্মানিত করাটা মোটেই ঠিক হয়নি। 

বিএনপি নেতারা বলছেন, ফোরামের ভেতরকার অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে মাহবুবউদ্দিন খোকনকে কোণঠাসা করার অপচেষ্টা করছে একটি পক্ষ। ওই পক্ষটি ফোরামের একক নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইছে। যেটি খোকনের জনপ্রিয়তার কাছে আদৌ সম্ভবপর হয়ে উঠছে না, সেটিও তারা জানে।  

অন্যদিকে ব্যারিস্টার খোকনের সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের সেক্রেটারি ব্যারিস্টার কায়সার কামালকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বক্তব্য দেওয়াটাও সমীচীন হয়নি বলে মনে করেন কেউ কেউ। 

বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন তার অব্যাহতি নিয়ে কোনো কথা বলেননি। তিনি ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন ব্যারিস্টার কায়সার কামালের বিরুদ্ধে। যা নিন্দনীয় ও অরুচিকর। তার মতো সিনিয়র নেতার কাছে এমনটা আশা করিনি। 

উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার কায়সার কামালকে অর্বাচীন বালক ও কুলাঙ্গার আখ্যায়িত করে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন বলেন, সময় এসেছে তাকে দল থেকে বহিস্কারের। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশেই তিনি বার নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন এবং দ্বায়িত্ব গ্রহণ করেছেন বলেও দাবি করেন খোকন। কায়সার কামালের নৈতিক স্খলনের দায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটিকে অনুসন্ধানের আহবানও জানান বিএনপি থেকে নবনির্বাচিত বার সভাপতি খোকন। 

এর আগে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করায় বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব খোকনকে ফোরামের সিনিয়র সহসভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে চিঠি দেওয়া হয় গত শনিবার। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জিয়াউর রহমান স্বাক্ষরিত এক পত্রে তাকে অব্যাহতির কথা জানানো হয়। এ নিয়ে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামালের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন খোকন। তিনি কায়সার কামালকে ‘অর্বাচীন বালক’ বলে আখ্যায়িত করেন। নৈতিক স্খলনের কারণে দল থেকে কায়সার কামালের বহিষ্কারও দাবি করেন।

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড নেওয়া হচ্ছে বিএনপি নেতা মিন্টুকে

প্রকাশ: ০৫:৫৪ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে মঙ্গলবার দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে তিনি থাই এয়ারওয়েজের একটি উড়োজাহাজে থাইল্যান্ড রওনা হয়েছেন।

বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে তার চিকিৎসা সেবা নেওয়ার কথা হয়েছে।

এর আগে গত ২০ এপ্রিল বুকে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মিন্টু ।

১৯ এপ্রিল রাত ২টার দিকে বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করলে তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

থাইল্যান্ড   আবদুল আউয়াল মিন্টু  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

জামায়াতে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা

প্রকাশ: ০৪:১৩ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সারা দেশে তীব্র তাপপ্রবাহে হিট অ্যালার্টের মধ্যে আল্লাহর রহমতের বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়ের কর্মসূচি দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, সম্প্রতি প্রচণ্ড দাবদাহ ও অনাবৃষ্টিতে দেশের আবহাওয়া অত্যন্ত উষ্ণ হয়ে পড়েছে। উচ্চ তাপমাত্রার কারণে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। একদিকে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে প্রচণ্ড গরম, অন্যদিকে অনাবৃষ্টিতে মানুষ, পশু-পাখি ও জীব-জন্তুর জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। একমাত্র মহান রাব্বুল আলামীনই আমাদেরকে এহেন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ দিতে পারেন। 

তিনি আরও বলেন, সারা দেশের মানুষ গরমে কষ্ট পাচ্ছে। বিশেষ করে কৃষক-শ্রমিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার শ্রমজীবী মানুষ কর্মক্ষেত্রে প্রচণ্ড গরমে কষ্ট পাচ্ছে। গত ২২ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে একজন রিকশাওয়ালা প্রচণ্ড গরমে মারা গেছেন। দেশে বিরাজমান এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য মহান আল্লাহ তাআলার অবারিত রহমত তথা বৃষ্টি কামনা করে সালাতুল ইস্তিসকার নামাজ করার জন্য ওলামায়ে কেরাম, জামায়াতের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও দেশবাসী সবার প্রতি আমরা উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। 

এই জামায়াত নেতা বলেন, এ জন্য আগামীকাল বুধবার ও বৃহস্পতিবার (২৪ ও ২৫ এপ্রিল) জামায়াতে ইসলামীর সকল সাংগঠনিক শাখার উদ্যোগে জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে সালাতুল ইস্তিসকার আদায়ের কর্মসূচি সফল করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

জামায়াত  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

দেশবিরোধী অপশক্তি ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে: কাদের

প্রকাশ: ০১:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশবিরোধী একটি অপশক্তি নানা ভাবে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তারা নির্বাচন, শান্তি ও উন্নয়নের বিরোধীতায় লিপ্ত। সারাদেশে তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। 

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে গুলিস্তানের ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি আয়োজিত প্রচারপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, গণতন্ত্র, শান্তি, উন্নয়ন নির্বাচনবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বান মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের ও প্রগতিশীল শক্তির কাছে, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব বিরোধী অপশক্তি আমাদের ভিত্তিমূলে আঘাত করতে যাচ্ছে। তাদের আমাদের প্রতিহত করতে হবে, সেজন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের মাধ্যমে সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগের জন্য জনগণকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা আহ্বান জানিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ভোট দিয়ে আপনার নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করুন। আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে জনগণ সব শক্তির উৎস।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশবিরোধী অপশক্তি জাতির পিতার পরিবারকে হত্যা করে জনগণকে সামরিক স্বৈরশাসনের জাঁতাকলে দীর্ঘকাল পিষ্ঠ করেছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে হত্যার রাজনীতি বন্ধ করেছেন।


আওয়ামী লীগ   ওবায়দুল কাদের   প্রধানমন্ত্রী   শেখ হাসিনা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচন: ভোট ছাড়াই তারা চেয়ারম্যান হচ্ছেন

প্রকাশ: ১০:৫২ এএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটে আগামী  ৮ মে। গতকাল সোমবার (২২ এপ্রিল) ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এদিন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা সরে দাঁড়ানোয় তিন উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ কয়েকজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

জানা গেছে, নোয়াখালীর হাতিয়া ও ফেনীর পরশুরাম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। এ ছাড়া বান্দরবানে উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে রোয়াংছড়ি উপজেলায় আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী চহ্লামং মারমা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হচ্ছেন। সোমবার ( ২২ এপ্রিল ) মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা সরে দাঁড়ানোয় তিন উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ বেশ কয়েকজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

হাতিয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তিনজন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। তাঁরা হলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর ছেলে আশিক আলী, স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস ও জাতীয় পার্টির নেতা মুশফিকুর রহমান। গতকাল আশিক আলী ছাড়া বাকি দুজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। হাতিয়া উপজেলা পরিষদের বাকি দুটি পদে একজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।

জানতে চাইলে মুশফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর রাজনীতির হাতেখড়ি সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর হাতে। তিনি ওই পরিবারের একজন সদস্যের মতো। মাঝখানে কিছু ভুল–বোঝাবুঝির কারণে দূরত্ব থাকলেও তা ঘুচে গেছে। আশিক আলীর সমর্থনে তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন।

স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জোড় করাতে তাঁর ছেলে প্রার্থী হয়েছেন। দলের অন্য কেউ আগ্রহ দেখাননি। ছেলের প্রতিদ্বন্দ্বীরা নিজ থেকেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন।

ফেনীর পরশুরাম উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থীর মধ্যে দুজন গতকাল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। এতে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন কেবল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ফিরোজ আহমেদ মজুমদার। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন উপজেলা পরিষদের তিনবারের চেয়ারম্যান ও পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন মজুমদার ও উপজেলার বক্সমাহমুদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হাসেম চৌধুরী।

ভাইস চেয়ারম্যান পদের চারজনের মধ্যে তিনজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। বর্তমানে একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নুর মোহাম্মদ শফিকুল হোসেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন ইকরামুল করিম মজুমদার, নজরুল ইসলাম ও আবদুল রসুল মজুমদার।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেত্রী শামসুন নাহার পাপিয়া। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন নিলুফা ইয়াসমিন।

এদিকে বান্দরবানে উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে রোয়াংছড়ি উপজেলায় আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী চহ্লামং মারমা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। গতকাল চারজন প্রার্থীর মধ্যে তিনজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় চহ্লামং মারমা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন বলে রিটার্নিং এস এম কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানিয়েছেন।

তবে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের অনুরোধ ও প্রচ্ছন্ন চাপে তাঁরা প্রার্থিতা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছেন। রোয়াংছড়ি উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগের তিনজন ও জনসংহতি সমিতির সাবেক এক নেতা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। চারজনের মনোনয়নই রিটার্নিং কর্মকর্তা বৈধ ঘোষণা করেছিলেন। প্রার্থীরা নিজেদের মতো করে প্রস্তুতিও নিয়েছেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর প্রার্থীরা জানিয়েছেন, গতকাল প্রত্যাহারের শেষ দিনে হঠাৎ করে আওয়ামী লীগের নেতারা তৎপর হয়ে ওঠেন। প্রার্থিতা তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করে এবং প্রচ্ছন্নভাবে চাপ দিতে থাকেন।



উপজেলা নির্বাচন   চেয়ারম্যান  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন